রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৩

৩ নভেম্বর থেকে কোন খেলা?


সংলাপ সংলাপ খেলার মধ্যে আটকে আছে দেশের ভয়াবহ চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট। দুই পক্ষের অনড় অবস্থান এ সঙ্কট নিয়ে জনমনে সঙ্ঘাতের আশঙ্কার পারদমাত্রা কেবলই ্ওপরে উঠছে। সরকার এর পরও নির্বিকার। বিরোধী দল তাদের আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে। বলা হচ্ছে, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি না মানলে বিরোধী দল কঠোর থেকে কঠোরতর আন্দোলন কর্মসূচি দিয়ে তাদের দাবি মানাতে সরকারকে বাধ্য করবে। অন্য দিকে সরকারপক্ষ একদলীয় ও একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এর প্রয়োজনে সরকারের খেলার শেষ নেই। সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে দেয়ার মধ্য দিয়ে এ খেলার যে শুরু হয়েছিল; এর নানা মাত্রিক ক্রিয়া-প্রক্রিয়া সরকারপক্ষ জারি রেখেছে। নির্বাচন কমিশনকে যথাসম্ভব দুর্বল করা, সংসদীয় নির্বাচনের আসন কাটছাঁট, আরপিওর যথেচ্ছ সংশোধন, বিরোধী দলকে দমনপীড়ন, রাজনৈতিক দল ভাঙনের পথ সহজ করে তোলার জন্য দলে যোগ নিয়ে সংসদ সদস্যপদে নির্বাচন করার নতুন সুযোগ সৃষ্টি করা, বিরোধী দলকে কোণঠাসা করার অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে বিএনএফ নামে ফাঁদ সৃষ্টি করা, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে চরম দলীয়করণসহ নানা কূটকৌশলের খেলা সরকার চালিয়ে যাচ্ছে অনড় অবস্থান নিয়েই। আবার বলা হচ্ছেÑ জামায়াত, বিএনপি ও হেফাজত হচ্ছে বাংলাদেশের তিন অপশক্তি। এদের দেশ থেকে বিতাড়িত করেই তথাকথিত সর্বদলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবেই। সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের মুখ থেকে উচ্চারিত হচ্ছে এসব কথা। সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সর্বসাম্প্রতিক ঘোষণা : ৩ নভেম্বর থেকে খেলা শুরু করবে আওয়ামী লীগ। জানি না আওয়ামী লীগের এ খেলা দেশকে কোন তলানিতে নিয়ে দাঁড় করবে। তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেখান থেকেই ৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগ তার খেলা শুরু করবে। 
জানি না কোন খুঁটির জোরে কোন ভরসায় আওয়ামী লীগ ও এর নেতৃত্বাধীন জোটের নেতারা এখন কোন খেলা শুরু করার কথা ঘোষণা করছেন। এরা কি ভেবে দেখছেন তাদের এ ধরনের হুমকি-ধমকি দেশের মানুষ পছন্দ করছে না। জনমত ক্রমেই প্রবল থেকে প্রবলতা হচ্ছে এ সরকারের ধ্যানধারণার বিপরীতে। এ সরকারের আমলে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান যেসব জনমত জরিপ প্রকাশ করেছে, তাতে এ সত্যের প্রতিফলন রয়েছে। যদিও সরকারি দলের বাকপটু নেতানেত্রীরা এসব জনমত নিয়ে অহেতুক ও অযৌক্তিক প্রশ্ন তুলে বলার চেষ্টা করেছেনÑ এসব জনমত পক্ষপাতপুষ্ট। কিন্তু এদের প্রশ্ন তোলার বিষয়টি হালে পানি পায়নি। সাধারণ মানুষ তা আমলে নিচ্ছে না। বিশেষ করে যখন মানুষ দেখছে, এসব জনমত জরিপকারী পত্রিকাগুলো সরকারি নীতি ও ধানধারণারই সমর্থক। 
এ সরকার প্রথম আলোর জনমত জরিপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ইনকিলাবের জনমত জরিপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সর্বসাম্প্রতিক ডেইলি স্টারের জনমত জরিপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ও তুলছে। কিন্তু কয়েক মাস আগে বিগত পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে ইনকিলাব এ নির্বাচনসংশ্লিষ্ট যে জনমত জরিপটি প্রকাশ করে, তা নিয়ে সরকারপক্ষ প্রবল বিরূপ সমালোচনা করলেও নির্বাচনী ফলাফলে তা প্রায় অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণিত হয়েছে। তখন সরকার মুখে না বললেও মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে পেরেছেÑ আসলেই সরকারি দল ও জোটের পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেছে। এর ফলে এখন সরকার মরিয়া একতরফা নির্বাচন সম্পন্ন করার ব্যাপারে। এর ফলে এক দিকে চলছে সংলাপ সংলাপ খেলা, অন্য দিকে চলছে বিরোধী দলবিহীন একতরফা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের খেলা। তার ওপর বেগম মতিয়া চৌধুরী ৩ নভেম্বর কোন নতুন খেলা নিয়ে মাঠে নামছেন, তাও রয়ে গেল এক বড় প্রশ্ন। 
বলছিলাম ডেইলি স্টার ও এশিয়া ফাউন্ডেশনের যৌথ সর্বসাম্প্রতিক জনমত জরিপের কথা। এ জনমত জরিপের ফলাফল দু-এক দিন আগে সব গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় দেশবাসী জেনে গেছেন। এ জনমত জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছেÑ এ মুহূর্তে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হলে বিএনপি পাবে ৫৫ শতাংশ ভোট আর আওয়ামী লীগ পাবে ২৮ শতাংশ। এ ছাড়া দেশের ৭৭ শতাংশ মানুষই মনে করেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হওয়া উচিত। এই জনমত জরিপ যদি সঠিক হয়, তবে আসন বিবেচনায় বলা যায় এ মুহূর্তে নির্বাচন হলে আওয়ামী যত আসন পাবে, বিএনপি পাবে তার প্রায় দ্বিগুণ। 
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহজুড়ে দেশের ১৪টি জেলায় ১৪০০ মানুষের মতামতের ওপর ভিত্তি করে এই জরিপ সম্পন্ন হয়। জরিপ মতে, বেশ কিছু উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকার মোবারকবাদ পেয়েছে। জরিপের ফলাফল গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ প্রকৃতপক্ষে সরকার পরিচালনা এবং দুর্নীতির মতো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে মানুষের আস্থা হারিয়েছে। আর এ কারণেই জনগণ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে বিএনপির দিকে ঝুঁকে পড়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা থেকে সরে আসাই আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর সবচেয়ে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে এ জরিপে উঠে এসেছে। জরিপ মতে, দেশের ৭৭ শতাংশ মানুষই চান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। এর আগে প্রথম আলোর প্রকাশিত জরিপে বলা হয়েছিল, দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ চান তত্ত্বাবধায়ক সরকার। 
কেন মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন চান, এর কারণ অনুসন্ধান খুব কঠিন কাজ নয়। কারণ, মানুষ দেশে বিদ্যমান অসহিষ্ণু রাজনৈতিক পরিবেশ সম্পর্কে সম্যক অবহিত। দেশের প্রধান দুই বড় দল কেউ কাউকে আস্থায় আনতে পারেনি। এ অনাস্থার পরিপ্রেক্ষিতেই জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার সূচনা হয়েছিল। এ দেশে নানা মাত্রিক স্বার্থতাড়িত সমালোচনা সত্ত্বেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোতে ক্ষমতাসীন দলগুলোর জন্য ভোট কারচুপি সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এ ধরনের প্রতিটি নির্বাচনে বিরোধী দলই জয় পেয়েছে। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা গণতান্ত্রিক না অগণতান্ত্রিক, তা নিয়ে বিতর্ক উঠতেই পারেÑ সেটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার। তা ছাড়া এ দেশের মানুষ দেখেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার অধীনে নির্বাচনে সব দলের সমান সুযোগ নিয়ে একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পায় নির্বাচনী প্রতিযোগিতার লড়াইয়ে, যা আমাদের দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের সময় এখনো সম্ভব নয়; তেমন পরিস্থিতি আমরা যে কারণেই হোক সৃষ্টি করতে পারিনি। পারিনি বলেই দলীয় সরকারের অধীনে (তা একদলীয় কিংবা সর্বদলীয়ই হোক) সুষ্ঠু নির্বাচনে আস্থা রাখতে পারছেন না দেশের সাধারণ মানুষ; বিরোধী দল তো বটেই। কারণ সেখানে রয়েছেন এক স্বর্বেসর্বা দলীয় প্রধানমন্ত্রী। তাই জনমতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে হলেও সরকারের উচিত দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার অনড় অবস্থান থেকে সরে এসে বিরোধী দলের সাথে সমঝোতা সৃষ্টির কার্যকর ও আন্তরিক প্রয়াস চালানো। আর সরকারের উপলব্ধিতে রাখা উচিত, জনমতের প্রতি সম্মান জানানোর মধ্যে নিহিত একটি রাজনৈতিক দলের জনআস্থা অর্জনের সর্বোত্তম উপায়। আমাদের দেশের সরকারগুলোর মধ্যে এ উপলব্ধির অভাবটুকুই প্রবল বলেই মনে হয়। আর এ জন্যই আমরা কারণে-অকারণে মুখোমুখি হই নানা ধরনের অহেতুক রাজনৈতিক বিপত্তির। 
আমরা আওয়ামী লীগ নেতাদের মুখে এখন শুধু সংবিধান রক্ষার একটি কথাই বারবার উচ্চারিত হতে শুনছি। এ সংবিধান নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের শরিক দলগুলোও। এরা সংবিধানের নানা অসঙ্গতি নিয়ে নানা কথা বলছেÑ সে এক ভিন্ন প্রশ্ন, যার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে যাওয়ার অবকাশ এ লেখায় একেবারেই নেই। তবে বলা দরকার, বর্তমান সংবিধান যে সর্বসম্মত ও জাতীয় ঐকমত্যভিত্তিক নয়, সে বিষয়ে বিতর্ক সৃষ্টির সুযোগ কম। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধান যথেচ্ছ কাটাছেঁড়া করেছে একদলীয় সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। এমনকি এর শরিক দলগুলোর মতের প্রতিফলন ঘটেনি এ সংশোধনীতে। বিরোধী দল ও জোটের সাথে আলোচনা করার প্রয়োজন বোধ করেনি সরকার। পঞ্চদশ সংশোধনীতে অসঙ্গতির যেমন অভাব নেই, তেমনি এ নিয়ে বিতর্কেরও শেষ নেই। 
সংবিধানের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণও চলছে যথেচ্ছভাবে। সংবিধানের ১২৩(৩)(ক) অনুচ্ছেদ স্পষ্টত বলছে, মেয়াদ অবসানের কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়ার ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে সংসদ নির্বাচন হতে হবে। আর ১২৩(৩)(খ) অনুচ্ছেদ মতে, মেয়াদ অবসান ছাড়া অন্য কোনো কারণে সংসদ ভেঙে গেলে ভেঙে যাওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে আমাদের ক্ষেত্রে ১২৩(৩)(ক) অনুচ্ছেদের ক্ষেত্রটি প্রযোজ্য। অতএব সংবিধান মতে চলতি বছরের ২৭ অক্টোবর থেকে আগামী বছরের ২৪ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হবে। আর সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদ মতে, তা আয়োজনের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। এই ৯০ দিন হচ্ছে নির্বাচনের জন্য ডেডিকেটেড পিরিয়ড। কিন্তু এই ৯০ দিন গণনা শুরু হবে ২৫ অক্টোবর থেকে, এমন ভুল তথ্য গণমাধ্যমে প্রচার হতে দেখা গেছে। সংবিধান মোতাবেক এই ৯০ দিন শুরু হবে ২৭ অক্টোবর থেকে। শেষ হবে ২৪ জানুয়ারি। এর মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। এ ধরনের ভ্রান্তি সৃষ্টির একটি কারণ হতে পারেÑ গত বছর প্রধানমন্ত্রী সংসদের ভেতরে ও বাইরে বলেছিলেন, চলতি বছরের ২৫ অক্টোবরের আগে পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়া হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তা করেননি। তার এ কথা না রাখায় নানা সন্দেহ জনমনে উদ্রেক হয়েছে। আসলে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে একটি বিতর্কের জন্ম দেয়া হয়েছে। এ সংশোধনী মতে, এখন পার্লামেন্টের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর অর্থ এমপিরা এমপি পদে বহাল থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এর ফলে বড় ধরনের কয়েকটি সমস্যার সৃষ্টি হবে। প্রথমত, সংবিধানের ৬৬(২) (চ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বলা আছেÑ প্রজাতন্ত্রের লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকা কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচনের যোগ্য হবেন না। আবার ৬৬(৩) অনুচ্ছেদে লাভজনক পদগুলোর নাম উল্লেখ আছে। সে মতে, কেবল রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী হওয়ার কারণে প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত বলে গণ্য হবে না। লক্ষণীয়, এখানে এমপি পদটির কথা উল্লেখ নেই। অতএব সংসদ সদস্য পদটির প্রজাতন্ত্রের লাভজনক পদ বলে বিবেচিত হবে। তাই সংসদ সদস্য থেকে নির্বাচন করার যোগ্যতা অবশ্যই তিনি হারাবেন। কিন্তু পঞ্চদশ সংশোধনীতে সংসদ সদস্য থেকে সংসদ নির্বাচন করার ব্যবস্থাই রাখা হয়েছে। কী অবাক করা বৈপরীত্য। দ্বিতীয়ত, এর ফলে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে একই সময়ে একই আসনে দুজন এমপি অস্তিত্বশীল থাকতে পারেন, যদিও এমনটি ঘটতে পারে স্বল্প সময়ের জন্য পূর্ববর্তী এমপির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত। এমনটি সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে হতে পারে নতুন এক উদাহরণ। 
তা ছাড়া বিষয়টি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পলিসিকেও ব্যাহত করবে নিঃসন্দেহে। একজন এমপি পদে বহাল থেকে নির্বাচন করবেন, আর অন্যজন করবেন সাধারণ নাগরিক হিসেবেÑ তা সমসুযোগ নীতির বিরোধী। এ ধরনের অসঙ্গতি কার্যত বিরোধী দলকে সরকারি দলের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কে আস্থাহীনতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। তা ছাড়া বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর হাজার হাজার মামলা দিয়ে, তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দৌড়ের ওপর রেখে, গণগ্রেফতার করে সরকার যে নির্বাচন করতে যাচ্ছে; তাতে বিরোধী দলের যাওয়ার জায়গাটা কোথায়? 
সর্বশেষ ব্যবসায়ী সমাজ দুই দলের মহাসচিবপর্যায়ে সংলাপে বসার উদ্যোগ নিয়েছে। বিএনপি তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়েছে। এখন সরকারপক্ষ তাতে আন্তরিক সাড়া দিলেই মঙ্গল। আর তা না করে সংলাপ সংলাপ খেলে মতিয়া চৌধুরীর ঘোষিত নতুন খেলা শুরুর উদ্যোগ হবে আত্মঘাতী। এটুকু বোঝার উপলব্ধি সবার মধ্যে থাকা উচিত। আর যারা উচিত-অনুচিতের ধার ধারেন না, তাদের কথা আলাদা।


0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads