মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৩

নির্বাচন কমিশন স্বাধীন নাকি অধীন


নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা। এ সাংবিধানিক সংস্থাটি সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী-পরবর্তী একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার সমন্বয়ে গঠিত। পঞ্চদশ সংশোধনী পূর্ববর্তী কমিশনার সংখ্যা বিষয়ে কোনো শর্তারোপ ছিল না। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারেরা তাদের নিয়োগ বিষয়ে প্রণীত কোনো আইনের বিধি-বিধান সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ লাভ করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় সংবিধান প্রণয়ন পরবর্তী ৪১ বছরের অধিক সময় অতিবাহিত হলেও অদ্যাবধি এ বিষয়ে কোনো আইন প্রণীত হয়নি। স্বভাবতই আইনের অনুপস্থিতিতে সংবিধানের অনুচ্ছেদ নং ৪৮(৩) এর বিধানাবলির আলোকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নিয়োগসংক্রান্ত কার্যটি সমাধা করে থাকেন। 
বর্তমান নির্বাচন কমিশন ২০১২ সালের প্রথম দিকে গঠিত হয়। বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে দেখা যায় অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগ দান করা হয়েছে দেশবাসীকে এমন ধারণা দেয়া হয়েছে। কিন্তু নিয়োগসংক্রান্ত সামগ্রিক কার্যক্রমটি যে অনির্বাচিত ব্যক্তি সমন্বয়ে গঠিত অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় নিয়ন্ত্রণ করেছে সে বিষয়ে দেশের সচেতন জনগোষ্ঠীর মধ্যে কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে বলে প্রতীয়মান হয় না। 
দেশবাসীর অনুসন্ধিৎসু প্রশ্ন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে মতবিনিময়কালে আওয়ামী লীগ ছাড়াও অন্যান্য দলের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে যে তালিকা দেয়া হয়েছিল তার মধ্য থেকে কোনো ব্যক্তি কি অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশে ঠাঁই পেয়েছিল? তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেয়া হয় ঠাঁই পেয়েছিল, সে ক্ষেত্রেও রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশ থেকে প্রতি দুজনের বিপরীতে একজনকে নিয়োগদানের সময় অন্যান্য দলের তালিকায় উল্লিখিত ব্যক্তিদের বাদ দেয়ার অবকাশ ছিল। তা ছাড়া মূল কথা হলো- সংবিধানে বর্ণিত নিয়োগসংক্রান্ত আইনের অনুপস্থিতিতে সরকারের নির্বাহী আদেশ দ্বারা গঠিত অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতার প্রয়োগে নিয়োগের ক্ষেত্রে সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদের বিধানাবলি যে উপেক্ষার সুযোগ নেই সে বিষয়ে সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মধ্যে দ্বিমত থাকার কথা নয়। তাই নির্দ্বিধায় বলা যায়, প্রধানমন্ত্রীর আকাক্সার প্রতিফলনে রাষ্ট্রপতি নিয়োগসংক্রান্ত কাজটি সমাধা করেছেন। 
নিয়োগ-পরবর্তী দেখা গেল, দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারপারসনসহ শীর্ষ নেতারা এবং জাতীয় পার্টির প্রেসিডেন্ট এ কমিশনকে আজ্ঞাবহ, অনভিজ্ঞ, অথর্ব ও মেরুদণ্ডহীন আখ্যা দিয়েছেন। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কার্যাবলি অবলোকনে দেখা যাক বিরোধী নেতাদের উক্তি সঠিক কি না। আর সঠিক হয়ে থাকলে তা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে অন্তরায় হিসেবে দেখা দেবে কি না। 
সংবিধানে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা বিষয়ে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকবেন এবং কেবল এ সংবিধান ও আইনের অধীন হবেন। তা ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের বিচারকেরা যেরূপ পদ্ধতি ও কারণে অপসারিত হতে পারেন সেরূপ পদ্ধতি ও কারণ ছাড়া নির্বাচন কমিশনারদের অপসারণের সুযোগ না থাকায় এটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও একনিষ্ঠভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে রক্ষাকবচ হিসেবে পরিগণিত। 
সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশনকে যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা হলো- রাষ্ট্রপতি পদের ও সংসদের নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণের জন্য তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ এবং অনুরূপ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পালন এবং সংবিধান ও আইন অনুযায়ী (ক) রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠান; (খ) সংসদ সদস্যদের নির্বাচন অনুষ্ঠান; (গ) সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ এবং (ঘ) রাষ্ট্রপতির পদের এবং সংসদের নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণ। তা ছাড়া উপরোল্লিখিত নির্ধারিত দায়িত্বগুলোর অতিরিক্ত অপর কোনো দায়িত্ব সংবিধান বা অন্য কোনো আইনের অধীনে দেয়া হলে নির্বাচন কমিশন সে দায়িত্বও পালন করে থাকে। 
জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় বিষয়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী-পরবর্তী সংবিধানে যে বাধ্যবাধকতা দেয়া হয়েছে তা হলো মেয়াদ অবসানের কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভেঙে যাওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে এবং মেয়াদ অবসান ছাড়া অন্য কোনো কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভেঙে যাওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে হবে। 
নবম সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী ২৫ জানুয়ারি, ২০০৯ সালে সংসদের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সংবিধানের অনুচ্ছেদ নং ৭২(৩) এর বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি আগে ভেঙে না দিয়ে থাকলে প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে পাঁচ বছর অতিবাহিত হলে সংসদ ভেঙে যাবে। ৯ম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হবে ২৪ জানুয়ারি ২০১৪। ২৪ জানুয়ারি ২০১৪ থেকে পূর্ববর্তী ৯০ দিন সময়ের ক্ষণগণনার আগে রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে না দেয়ায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যে মেয়াদ অবসানের কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে, এ বিষয়টি এখন নিশ্চিত। নির্বাচনকালীন এ ৯০ দিন সময়ের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে ২৭ অক্টোবর ২০১৩ থেকে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি, পরিচালনা ও অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সাংবিধানিকভাবে যে ৯০ দিন সময় দেয়া হয়েছে এ ৯০ দিন সময়ে উপনীত হওয়া পরবর্তী অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে প্রতিদ্বন্দ্বী সব দলের জন্য সমসুযোগ সংবলিত মাঠের ব্যবস্থা করা নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব। এ ৯০ দিন সময়ে উপনীত হওয়ার পর নির্বাচনসংক্রান্ত দায়িত্ব পালনের জন্য নির্বাচন কমিশনের অনুরোধ সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক কর্মচারী সংস্থান এবং নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের সহায়তার নিশ্চয়তা প্রদান সংবিধান দ্বারা স্বীকৃত। কিন্তু নির্বাচনকালীন ৯০ দিন সময়ে উপনীত পরবর্তী সরকারের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, সংসদ অধিবেশন চলছে এবং সংসদ আইন প্রণয়ন করছে, মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে, মন্ত্রিসভা অন্তর্বর্তী রূপ ধারণ না করে পূর্ণ কলেবরে আগের মতো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনসহ মন্ত্রিসভার সদস্যদের বাসভবনে দলীয় কার্যক্রম চালানো অব্যাহত রয়েছে এবং সরকার প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার থেকে নির্বাচন সময়ে উপনীত হওয়া সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা নিবৃত্ত নন। 
উপরিউক্ত কার্যাবলি নির্বাচনকালীন ৯০ দিন সময়ে উপনীত হওয়া পরবর্তী যদিও নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনসংক্রান্ত দায়িত্ব স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে পালনের ক্ষেত্রে অন্তরায় হিসেবে দেখা দিচ্ছে কিন্তু নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নতুন আচরণবিধি প্রণয়ন পরবর্তী তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী সব দলের জন্য সমসুযোগ সংবলিত মাঠের ব্যবস্থা করবেন। নির্বাচন কমিশনের এ যুক্তিটিকে খোঁড়া যুক্তি (খধসব বীপঁংব) হিসেবে বিবেচিত হয় এ কারণে যে, নতুন আচরণবিধি প্রণীত না হলেও ২০০৮-এ প্রণীত আচরণবিধিটি এখনো বহাল আছে এবং সে আচরণবিধিতে নির্বাচন পূর্ব সময়বলতে সাধারণ নির্বাচনের ক্ষেত্রে সংসদের মেয়াদ উত্তীর্ণ কিংবা সংসদ ভেঙে যাওয়ার পর থেকে পরবর্তী সংসদ নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত সময়কালকে বুঝানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে এ আচরণবিধিটি প্রণয়নকালীন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে বিধান ছিল তা হলো মেয়াদ অবসান বা মেয়াদ অবসান ছাড়া অন্য কোনো কারণে সংসদ ভেঙে যাওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই সংবিধানের বর্তমান ব্যবস্থায় সংসদ ভেঙে যাওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে আমরা যেদিন নির্বাচনকালীন পূর্ববর্তী ৯০ দিন সময়ে উপনীত হয়েছি সেদিন থেকে যে নির্বাচন পূর্ব সময়ের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে সে বিষয়ে কোনো সংশয় নেই। আর নির্বাচন-পূর্ব সময়ের ক্ষণগণনার অর্থ আচরণবিধি কার্যকর হওয়া। নতুন আচরণবিধি প্রণীত হবে এ কারণে আগের আচরণবিধি কার্যকর নয় এ ধরনের কোনো যুক্তি দেয়ার অবকাশ আছে বলে প্রতীয়মান হয় না। 
নির্বাচন কমিশনের পক্ষে একটি জেলায় রিটার্নিং অফিসার এবং একটি নির্বাচনী এলাকায় একজন সহকারী রিটার্নিং অফিসার নির্বাচন পরিচালনা ও অনুষ্ঠান সংক্রান্ত সার্বিক দায়িত্ব পালন করে থাকেন। যেদিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সংবিধান নির্ধারিত ৯০ দিন সময়ে প্রবেশ ঘটে সেদিনই নির্বাচন কমিশন রিটার্নিং অফিসার এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ দিতে পারেন। নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্বাচন কর্মকর্তা বলা হয় এবং নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ অনুযায়ী নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে ওই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি না পাওয়া পর্যন্ত কমিশনের অধীনে প্রেষণে চাকরিরত হিসেবে গণ্য হন এবং কমিশন এবং ক্ষেত্রমতে রিটার্নিং অফিসারদের নিয়ন্ত্রণে থেকে যাবতীয় আইনানুগ আদেশ বা নির্দেশ পালনে বাধ্য থাকেন। 
গণ প্রতিনিধিত্ব আদেশ নম্বর ৩৯(৪) অনুযায়ী যতক্ষণ পর্যন্ত না নির্বাচন কমিশন একজন প্রার্থীর নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার বিষয়টি গেজেট বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ না করে ততক্ষণ পর্যন্ত বিজয়ী হওয়া সত্ত্বেও তিনি সংসদ সদস্য নন। তাই সংসদ নির্বাচনে যেকোনো ধরনের অনিয়ম হয়ে থাকলে নির্বাচন কমিশন তদন্তপূর্বক অনিয়মের বিষয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ স্থগিত রাখতে পারে। তা ছাড়া অবৈধ বল প্রয়োগ অথবা ভীতি প্রদর্শনের কারণে ভোট প্রদান বিঘিœত হলে আদেশ নম্বর ৯১-এর বিধান অনুযায়ী যেকোনো ভোটকেন্দ্র অথবা সমগ্র নির্বাচনী এলাকার ভোটগ্রহণ বন্ধ করতে পারে। আদেশ নম্বর ৯১ঙ তে নির্বাচন কমিশনকে একজন প্রার্থী অথবা তার প্রতিনিধি অথবা তার পক্ষে অপর কোনো ব্যক্তি কর্তৃক এ আদেশ বা আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে ওই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। কিন্তু অতীতে দেখা গেছে, কোনো নির্বাচন কমিশনই উপরিউক্ত ক্ষমতাগুলো প্রয়োগের ক্ষেত্রে আন্তরিক ছিল না। বর্তমান নির্বাচন কমিশন যে আন্তরিক হবে তাদের কার্যক্রমে সে ধরনের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না বরং সবাইকে হতবাক করে তারা কেন ৯১ঙ তে প্রদত্ত ক্ষমতা স্বেচ্ছায় বিসর্জন দিতে চেয়েছিল সে প্রশ্নটির উত্তর এখনো দেশবাসীর কাছে অজানা। 
বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ের পর এ যাবৎকাল পর্যন্ত ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালীন নির্বাচন কমিশন ছাড়া অপর সব নির্বাচন কমিশন সংসদ সদস্যের সাধারণ নির্বাচনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বেতার ও টেলিভিশন ঘোষণার মাধ্যমে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে দেশবাসীকে অবহিত করেছেন। এ বিষয়ে বিগত কমিশনের মতো বর্তমান কমিশন যদি একই পথে হাঁটে তা এক দিকে দেশবাসীকে হতাশ করবে অপর দিকে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ক্ষুণœ করবে। 
বর্তমান নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে চাইলে সংবিধান ও অন্যান্য আইনের অধীনে তাদের যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে তার যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে তারা সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেন। আর নিশ্চিতের পথে কোনো ধরনের অন্তরায় থাকলে তারা রাষ্ট্রপতির কাছে অনুযোগ করতে পারেন। নির্বাচনকালীন ৯০ দিন সময়ে উপনীত হওয়া পরবর্তী নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনারদের বক্তব্য অবলোকনে প্রতীয়মান হয় প্রতিদ্বন্দ্বী সব দলের জন্য সমসুযোগ সংবলিত মাঠের ব্যবস্থা করে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে যে আন্তরিকতা, বিশ্বস্ততা, একাগ্রতা, একনিষ্ঠতা, দৃঢ়তা ও ন্যায়পরায়ণতার প্রয়োজন তাদের মধ্যে এর ঘাটতি বিদ্যমান। আর এ অবস্থায় প্রধান বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারপারসনসহ শীর্ষ নেতারা এবং জাতীয় পার্টির প্রেসিডেন্ট এ কমিশনকে যে আজ্ঞাবহ, অনভিজ্ঞ, অথর্ব ও মেরুদণ্ডহীন আখ্যা দিয়েছেন সে আলোকে কমিশনকে স্বাধীন না বলে অধীন বলা কি ভুল হবে? 


0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads