বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৩

সিনেট নির্বাচন : যোগ্যপ্রার্থীকে ভোট দিন


প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৪, ২১ ও ২৮ সেপ্টেম্বর তিন দফায় ঢাবি সিনেটে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন। এতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ৩৪ হাজার ৫৪৫ জন। ভোটারেরা সবাই সচেতন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে যোগ্য ও সৎপ্রার্থীকেই তারা ভোট দেবেন। নিজ নিজ বিবেচনায় প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন, এটাই স্বাভাবিক। নিজ নিজ পেশা ও যোগ্যতার আলোকে ভোটপ্রার্থীরা সমৃদ্ধ সবাই। এবং সবাই ভোট পাওয়ার যোগ্যতাও রাখেন। তবুও কথা থেকে যায়। ৩৪ হাজার ৫৪৫ জন ভোটারের মধ্যে কতজনই বা জানেন প্রত্যেক প্রার্থীর খবর। কতজনই বা তাদের কাছে চেনাজানা। কতজনই বা প্রার্থীদের সম্পর্কে খোঁজখবর রাখেন, কিংবা রাখতে পারেন। বর্তমানে গোটা দেশই অনেকটা ডিজিটালাইজড। বর্তমান সরকারের এটি বড় সফলতা অনেকগুলো সফলতার মধ্যে। যদিও ব্যর্থতাও রয়েছে অনেক। তথ্য, প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ব্যবহার এবং শিা-জ্ঞানে উজ্জীবিত ও আলোকিত প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েট ভোটার। তাই প্রার্থী সম্পর্কে খোঁজখবর পাওয়া, জানা ও তথ্য সংগ্রহ করা খুব একটা কষ্টকর হবে না। এ েেত্র কেবল ভোটারদের একটু সময় ও আগ্রহই যথেষ্ট। তারা যেন এই তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে যাচাই-বাছাই করেই প্রকৃত যোগ্য ও সৎপ্রার্থীকেই ভোট দেনÑ সেটাই জাতির প্রত্যাশা। যোগ্য ও সৎ প্রার্থীর পে কলম ধরলাম দায়িত্ব ও কর্তব্যের তাগিদে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে প্রাক্তনদের বিরাট ভূমিকা আছে এবং থাকে প্রতিটি বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়েই। এই প্রাক্তনরাই নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো থেকে শুরু করে গবেষণা, শিার্থী ও শিক বৃত্তি, নানা ধরনের সাহিত্য-সংস্কৃতি ও খেলাধুলায় পৃষ্ঠপোষকতা দেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিার্থী ও শিকদের আবাসিক ভবনগুলোও তারা নির্মাণ করে দেন। নির্মাণ করেন শিাভবনগুলোও বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সৌজন্যে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনরা এ ধরনের কোনো অবদান রেখেছেন বলে জানা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনগুলোও শুধু বছরে এক দিন পুনর্মিলনী ও আনন্দ-হইচই-উৎসব করেই দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিার্থী ও শিকদের তেমন কাজে লাগে না, বরং অনেক েেত্রই দলাদলি, কর্তৃত্ব ও আধিপত্য বিস্তার নিয়েই বিশৃঙ্খলা দেখা যায় মাঝেমধ্যেই। এ প্রোপটে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট প্রতিনিধি নির্বাচিত হন, তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য অনেক বেশি। প্রার্থীদের অনেকেই দেশ-বিদেশে সুপ্রতিষ্ঠিত, সুপরিচিত। লাখ লাখ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনরা আরো সুপরিচিত এবং নিজ নিজ েেত্র সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়, বাণিজ্য, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনীতি, শিকতা, সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন অঙ্গনে। নির্বাচিত সিনেট প্রতিনিধিরা ইচ্ছা করলেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ, প্রাক্তন এবং সরকারের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বিরাট ভূমিকা ও অবদান রাখতে পারেন; যা বিদেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ঘটে থাকে এবং নানা ধরনের যৌথ ও পরিকল্পিতভাবে সমন্বিত কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। এসব দিক বিচার করেই সিনেট প্রতিনিধিকে ভোট দেয়া উচিত। আগেই বলেছি, সব প্রার্থীর মধ্যে অধিকতর যোগ্য ও সৎ প্রার্থীকেই বেছে নিতে হবে। এ জন্য যারা দলীয় পরিচয় ও সঙ্কীর্ণতার ঊর্ধ্বে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে কাজ করার জন্য সম ও আগ্রহীÑ কেবল তাদেরকেই সত্যিকার অর্থে নির্বাচিত করা উচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ ডাকসু আছে। দীর্ঘকাল ধরে (১৯৮২-২০১৩) এই ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয় না। এই স্থবিরতা ছাত্ররাজনীতিকে ভয়ঙ্কর করে তুলেছে। এতে জাতীয়ভাবে তিকর প্রভাবও পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও অগ্রগতির েেত্র, বিশেষ করে পরিবেশ ও ছাত্ররাজনীতির সুস্থতা ও বিকাশের জন্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির অন্যতম সহায়ক শক্তির জন্যও ডাকসু নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি। ছাত্ররাজনীতিকে সুস্থ ও স্বাভাবিক করতে এর কোনো বিকল্প নেই। অথচ যাঁরা সিনেট প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত আছেন কিংবা নির্বাচিত হবেনÑ তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই এসব বিষয়ে। তবে কেন এই প্রতিনিধি নির্বাচন? কেনই বা এত আয়োজন! শিার্থী-শিক-কর্মচারীদের আবাসিক সমস্যা, যাতায়াত সমস্যা, গবেষণা সমস্যা, সাহিত্য-সংস্কৃতি-ক্রীড়া সমস্যা বর্ণনাতীত। তবুও কেন দীর্ঘকাল ধরে এসবের সমাধানের বস্তুনিষ্ঠ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেই। এসব েেত্র উপাচার্য ও প্রশাসন অসহায় কেন? তবুও আমরা যারা প্রাক্তন, নিরাশ হতে চাই না। এগিয়ে যাবোই। 


0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads