সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৩

দশম সংসদ : নির্বাচন হবে তো?


খমতাসীন জোট গদিতে থেকে বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন করার ধনুকভাঙা পণ খোদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর। বিরোধী জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ঘোষণা, ‘নির্দলীয় ও নিরপে সরকার ছাড়া দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচনে বিরোধী দল অংশ তো নেবেই না, নির্বাচন হতেও দেবে না।এরই মধ্যে সরকারের সর্বাঙ্গে দলীয়করণ পুরোপুরি সম্পন্ন। সরকার জামায়াতে ইসলামীকে বিএনপি জোট থেকে আলাদা করতে ব্যর্থ হয়ে আদালতের মাধ্যমে দলটিকে নিষিদ্ধ করার প্রায় দ্বারপ্রান্তে। পাঁচ সিটি করপোরেশনে সরকারপ গো হারার পর নষ্ট বামেরা পরাজয়ের কুষ্ঠিনামা ঘেটে দেখতে পায়, পরাজয়ের মূল কারণ, হেফাজতে ইসলাম। এ অরাজনৈতিক সংগঠনটির প্রধান আল্লামা আহমদ শফী এখন সরকারের ত্রিশূলের ল্যবস্তু। এদিকে দুই জোটের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে শঙ্কিত জনগণ জানতে চায়Ñ নির্বাচন হবে তো? কিসসা কুরসি কা : ৬ জুন সংসদ অধিবেশন শেষে আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের সভায় প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, ২৫ অক্টোবরের পর নবম সংসদের আর কোনো অধিবেশন বসবে না। ২৫ অক্টোবর এ সরকারের মেয়াদ শেষ হবে। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে। সেই সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বের সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, সেভাবেই হবে। উল্লেখ্য, সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিন আগ থেকেই নির্বাচনপ্রক্রিয়া শুরু হবে। এই ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০০৯ সালের ২৫ জানুয়ারি নবম সংসদের প্রথম অধিবেশন বসেছিল। সে অনুযায়ী আগামী ২৫ জানুয়ারি সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হবে। ২৩ জুলাই যুবলীগের এক ইফতার পার্টিতে সজীব ওয়াজেদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ আগামীতে আবারো মতায় আসবে বলে তার কাছে তথ্য আছে। সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, একটি মতামত জরিপে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ এগিয়ে আছে। এ দলের ওপর জনগণের পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। ওই জরিপ অনুযায়ী, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভালো করবে। মতায়ও আবার তারাই আসবে। তিনি আরো বলেন, ডিজিএফআই, এনএসআই পরিচালিত জরিপ ছাড়াও চতুর্থ জরিপ রয়েছে। এ জরিপ দলও তার নিজের করা। দলের অবস্থান জানার জন্য এটা করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, সব ঠিক আছে। ২৯ জুলাই ঢাকার লেডিস কাবে দলের প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির এক ইফতার মাহফিলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমার কাছে কোনো তথ্য নেই নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে। তবে বলতে পারি, নির্বাচন হবেই। আর একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে গন্ধ পাচ্ছি, আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবারো মতায় যাবে। তিনি আরো বলেন, আগামী নির্বাচন হবেই। আমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। ঈদের পর দুর্বার গতিতে নির্বাচনের কাজ শুরু করব। বাংলাদেশে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।বিচারপতি এম মোয়াজ্জেম হোসেন, বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কাজী রেজাউল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ১ আগস্ট বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেয়া নিবন্ধন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করেছেন। দুজন এ রায়ের সাথে একমত পোষণ করেন এবং একজন বিচারপতি ভিন্নমত পোষণ করেন। প্রিজাইডিং জাজ এম মোয়াজ্জেম হোসেন সংপ্তি রায়ে বলেন, ‘বাই মেজরিটি রুল ইন মেইড অ্যাবসিলিউট অ্যান্ড রেজিস্ট্রেশন গিভেন টু জামায়াত বাই ইলেকশন কমিশন ইজ ডিকিয়ার্ড ইলিগ্যাল অ্যান্ড ভয়েড। বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, এ রায় দিয়ে হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে। কারণ ইসি জামায়াতকে নিবন্ধন দিয়েছিল। একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইসি যে নিবন্ধন দিয়েছিল, এ রায়ের মধ্য দিয়ে সে ইসির অমতা প্রকাশ করা হয়েছে। ইসি যেকোনো দলের গঠনতন্ত্র দেখে নিবন্ধন দেয়। এ নিবন্ধনের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে রাজনৈতিক বিপর্যয় আদালতে টেনে আনা অনভিপ্রেত। ২ আগস্ট বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ স্বদেশ মঞ্চআয়োজিত এক আলোচনা সভায় বলেন, ঈদের পর সরকার পতন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ঘেরাও অবরোধ ও লাগাতার হরতালই হবে একমাত্র আন্দোলন। এতে সরকারের বিরুদ্ধে গণবিস্ফোরণ সৃষ্টি হবে। তিনি আরো বলেন, ‘প্রয়োজন হলে সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করব। এত দিন আমরা অনেক নমনীয় কর্মসূচি দিয়েছি; এখন আর তা হবে না। বাংলাদেশে গণতন্ত্র রা করতে হলে এ আন্দোলন অপরিহার্য।৩১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী রংপুরে এক জনসভায় বলেন, আমার ছেলে জয়ের কাছ থেকে ডিজিটাল আইডিয়া নিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কাজ করছি। আজকে আমার ছেলের সেই আইডিয়াতেই এখান থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে আপনাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড উদ্বোধন করলাম। ২০২১ সাল পর্যন্ত মতায় থাকার আশা ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জনগণ নৌকায় ভোট দিয়ে আবারো আমাদেরকে সরকার গঠনের সুযোগ দিলে অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করব। ুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ গড়ে ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করব। ডিসি সম্মেলন উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী দলীয় সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন হবে বলে উল্লেখ করে বলেছেন, অন্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সেভাবেই আগামী সংসদ নির্বাচন হবে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনার পাশাপাশি অসাংবিধানিক সরকারের ব্যাপারে ডিসিদের সতর্ক করে দেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচন না করেও মতায় থাকার সাংবিধানিক উপায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানের চতুর্থ ভাগে নির্বাহী বিভাগ অংশে প্রধানমন্ত্রী পদের মেয়াদ প্রসঙ্গে ৫৭(৩) অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে স্বীয় পদে বহাল থাকিতে এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই অযোগ্য করিবে না।’ (Nothing in this article shall disqualify Prime Minister for holding office until his successor has entered upon office.) রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ প্রসঙ্গে ৫০(১) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘এই সংবিধানের বিধানাবলী সাপেে রাষ্ট্রপতি কার্যভার গ্রহণের তারিখ হইতে পাঁচ বৎসরের মেয়াদে তাঁহার পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন : তবে শর্ত থাকে যে, রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও তাঁহার উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তিনি স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন।জরুরি অবস্থা ঘোষণা বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী অনুচ্ছেদ ১৪১ ক(১) রাষ্ট্রপতির নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এমন জরুরি অবস্থা বিদ্যমান রহিয়াছে যে, যাহাতে যুদ্ধ বা বহিরাক্রমন বা অভ্যন্তরীণ গোলযোগের দ্বারা বাংলাদেশ বা উহার যে কোন অংশের নিরাপত্তা বা অর্থনৈতিক জীবন বিপদের সম্মুখীন, তাহা হইলে তিনি (অনধিক একশত কুড়ি দিনের জন্য) জরুরি অবস্থা ঘোষণা করিতে পারিবেন : তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ ঘোষণা বৈধতার জন্য পূর্বেই প্রধানমন্ত্রীর প্রতিস্বার প্রয়োজন হইবে।সর্বশেষ সংবাদ নবম জাতীয় সংসদ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর। ২০০৯ সালের ২৫ জানুয়ারি বসেছিল প্রথম অধিবেশন। সে অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর থেকে ২০১৪ সালের ২৪ জানুয়ারির মধ্যেই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে কমিশনকে। খবরে প্রকাশ, কমিশন অনেকটাই নিশ্চিত যে, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অনুযায়ী বর্তমান সংসদ বহাল রেখেই দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে সংসদ নেতা, সংসদ সদস্যরা, স্পিকার, হুইপসহ সবাই নিজ নিজ পদে বহাল থেকেই নির্বাচনে অংশ নেবেন। আর এ কারণেই নির্বাচনী আচরণবিধিতেও সংশোধনী আনতে হচ্ছে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের গত অধিবেশনে দাঁড়িয়ে ঘোষণা দিয়েছেন, চলতি বছরের ২৪ অক্টোবরেই শেষ হচ্ছে বর্তমান সরকারের মেয়াদ। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ২৪ জানুয়ারি নবম সংসদ ভেঙে দেয়া হবে এবং নির্বাচন হবে বর্তমান সরকারের অধীনেই। সংবিধানের ১২৩(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংসদ ভেঙে যাওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান রয়েছে। নির্বাচনের প্রস্তুতি জানাতে ২৫ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ দিকে প্রধানমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিলেন, সংবিধান অনুযায়ী আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধান থেকে আমাদের সরকার এক চুলও নড়বে না। জনগণ আমাদের মতায় বসিয়েছে; আমরা সংবিধান সংশোধন করেছি। তিনি আরো বলেন, বিরোধী দল তত্ত্বাবধায়ক তত্ত্বাবধায়ককরে আদালত অবমাননা করছে। ১২ সেপ্টেম্বর নবম জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশন ডাকা হয়েছে। এ অধিবেশন সম্ভবত এ সরকারের শেষ সংসদ অধিবেশন। বিরোধী দল থেকে হুঙ্কার ছাড়া হয়েছিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধানে পুনঃস্থাপনের জন্য দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলনে যাবে। এখন বলা হচ্ছে, ঈদুল আজহার পর ঢাকায় মহাসমাবেশ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারকে চূড়ান্ত আলটিমেটাম দেবে বিএনপি। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপি আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে সরকারের আচরণ ও গতিবিধি পর্যবেণ করবে। সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত বিভাগীয় শহরগুলোতে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সমাবেশ ও গণসংযোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বলা হচ্ছে, ‘একটি বিশেষ দেশের অনুরোধেই আপাতত সহিংস কর্মসূচি এড়িয়ে চলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ওই দেশের রাষ্ট্রদূত পরিস্থিতি পর্যবেণ করার পরামর্শ দিয়েছেন। একটি সমঝোতার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।আমার মনে হয়, বিএনপির হাইকমান্ড দেখি না কী হয়ব্যামোতে আক্রান্ত। একজন মন্ত্রী ইতোমধ্যে হুমকি দিয়েছেন, কেউ হরতাল করলে তাকে ঘরে ঢুকে হত্যা করা হবে। হরতালের সময় বিশ্বজিৎকে প্রকাশ্য কুপিয়ে হত্যা করার দৃশ্য বিশ্ব প্রত্য করেছে। সুতরাং মন্ত্রীর বক্তব্যকে উড়িয়ে দেয়ারও কোনো সুযোগ নেই। হরতালের সময় কর্মীদের রাজপথে গুলি করে হত্যার দৃশ্য তো পরিচিত ব্যাপার। ১৮ দলীয় জোটের একাধিক নেতা এখন ফাঁসিতে ঝোলার অপোয়। জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ হওয়ার পথে। জামায়াতের পর অরাজনৈতিক ধর্মীয় সামাজিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম এখন দ্বিতীয় টার্গেট। এসব ঝিকে মেরে বউকে শিখানো। বিএনপি নামক দলটি হবে বর্তমান শাসক চক্রের অব্যর্থ তীরের নিশানা। কটি সিটি করপোরেশনে জিতে বিএনপির যেসব নেতা আগামী জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জেতার স্বপ্নে বিভোর, তারা রাজনৈতিক প্রতিপরে ক্যাডারদের সহিংসতার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সম্ভবত অজ্ঞ। সরকারপ থেকে বলা হচ্ছে, দেশে কেউ বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে রাজনৈতিক ক্যাডাররাও তা শক্ত হাতে মোকাবেলা করবে। সন্দেহ হয় এসব হুমকি-ধমকিতে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে এক দফা আন্দোলন থেকে পিছু হটা হচ্ছে কি না? মনে হচ্ছে সমঝোতাও দিল্লি দূর অস্ত! তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবি সরকার মেনে নেবে না বলে ধারণা করা যায়। টাই পরে পরনের কাপড়ের ইস্ত্রির ভাঁজ যারা ভাঙতে নারাজ, তাদের নিয়ে জনগণের মধ্যে এরই মধ্যে কানাঘুষা শুরু হয়েছে। ২০২১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ মতায় থাকার আকাক্সক্ষা তাদের গত নির্বাচনী ইশতেহারেই উল্লেখ করেছিল। ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আদায়ে তৎকালীন বিরোধী দলের আন্দোলনের তীব্রতার সেই পুরনো খবরগুলোর ওপর আলোকপাত করা বর্তমান বিরোধী দলের জন্য খুবই জরুরি। আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতা পাওয়ার সাথে সাথেই ২০২১ সাল পর্যন্ত মতায় থাকার রোডম্যাপ চূড়ান্ত করে সেভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের আন্দোলনের রোডম্যাপ ছিল না বলেই এ পর্যন্ত তাদের তেমন আন্দোলনে সাফল্য আসেনি। আওয়ামী লীগ নির্বাচন না করেও মতায় থাকার সব প্রক্রিয়া সংবিধানে সংযুক্ত করে রেখেছে। জনমনে প্রশ্ন জাগছে, নির্বাচন আদৌ হবে তো? পর্যবেণে মনে হয় দেশ এক দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক সঙ্কট, সঙ্ঘাতের দিকে দ্রুত ধাবমান। দশম সংসদের নির্বাচন এখন দেশের জন্য শাঁখের করাত হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিরোধীদলীয় জোটের দাবিকে উপো করে একতরফা নির্বাচন হলে সঙ্কট হবে আরো দীর্ঘস্থায়ী। 


0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads