মঙ্গলবার, ২৮ মে, ২০১৩

অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হোক

দেশের চারটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচন আসন্ন। ইতোমধ্যে প্রার্থী মনোনয়ন ও বাছাই সম্পন্ন হওয়ায় নির্বাচনী প্রতীকও বরাদ্দ হয়েছে। নানা কায়দা-কৌশলে প্রার্থীদের প্রচারণা চলছে নির্বাচনের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার আগে থেকেই। দেশের চারটি অঞ্চলের যেসব নগরী এখন মেয়র নির্বাচনের তোড়জোড়-তৎপরতায় সরগরম, সেগুলো হচ্ছেÑ রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও রংপুর। এ ছাড়া রাজধানীসংলগ্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনের প্রস্তুতির হাওয়া বইতে শুরু করেছে। মহানগর, শহর, ইউনিয়ন পরিষদ প্রভৃতি নির্বাচন অরাজনৈতিক স্থানীয় সরকারের হলেও এগুলোতে বাস্তবে জাতীয় নির্বাচনের মতোই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মাঝে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়ে থাকে। এবারো হয়নি এর অন্যথা। সব কটি মহানগরীতে দেশের প্রধান দুটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির এসব পরোক্ষ প্রার্থীকে সংশ্লিষ্ট জোটের পক্ষ থেকে সমর্থন দেয়া হয়েছে স্বাভাবিকভাবেই। রাজশাহীতে ক্ষমতাসীন মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা খায়রুজ্জামান লিটন এবং বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, খুলনায় বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা তালুকদার আবদুল খালেক এবং বিএনপির মনিরুজ্জামান মনি, সিলেটে ক্ষমতাসীন মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা বদরউদ্দিন আহমদ কামরান এবং বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী, বরিশালে বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা শওকত হোসেন হিরণ ও বিএনপি নেতা আহসান হাবীব কামালের মধ্যেই নির্বাচনী লড়াই হবে। সদ্যবিগত মেয়াদে চারটি নগরীতেই যারা মেয়র ছিলেন, তাদের ব্যক্তিগত আয় বেড়েছে বহু গুণ, জনগণ সদুত্তর পায়নি এসবের অনেক ক্ষেত্রেই। এ দিকে তারা নিজ নিজ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও সাফল্যের খতিয়ান দিয়ে আবার তাদের নির্বাচিত করার আবেদন জানাচ্ছেন। অপর দিকে, তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা আওয়ামী লীগভুক্ত মেয়রদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থতা ও জনজীবনের নানা দুর্ভোগের ফিরিস্তি দিয়ে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে তৎপর রয়েছেন। উল্লেখ্য, সিটি মেয়র পদের মূল প্রতিযোগীরা নিজ নিজ দলের বা জোটের নাম সরাসরি ব্যবহারে আইনগত সমস্যা থাকায় নাগরিকদের নামে গড়ে ওঠা প্লাটফরম থেকে মাঠে অবতীর্ণ হয়েছেন। একেকটি দিন পার হচ্ছে, সেই সাথে নির্বাচনী ব্যস্ততা ও উত্তেজনা বাড়ছে। প্রতীক বরাদ্দের পর এবার আনুষ্ঠানিকভাবেই প্রচারকার্যক্রম চলবে রাতদিন।

পার্লামেন্ট নির্বাচনের সাথে হুবহু তুলনীয় না হলেও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় স্থানীয় সরকারÑ বিশেষ করে মহানগরীগুলোর নির্বাচনও বেশ গুরুত্ববহ। উন্নয়নকার্যক্রমে জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সার্বিক প্রশাসনে জনকল্যাণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকারপর্যায়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশালের আলোচ্য নির্বাচনের বেলায়ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ কথা উপলব্ধি করতে হবে।
দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই আমরা আশা করি, এই সিটি করপোরেশনগুলোর আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হবে এবং এতে সরকার বা অন্য কোনো মহলের অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ বা অপপ্রভাব থাকবে না। নির্বাচনী বিধিবিধান মেনে গণতান্ত্রিকভাবে প্রচার ও অন্যান্য তৎপরতা পরিচালনা করাও একান্ত অপরিহার্য।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads