আওয়ামী মহাজোট সরকারের আমলে অন্য অনেক ক্ষেত্রের মতো ব্যবসা-বাণিজ্যের সূচকেও বাংলাদেশ ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে। বিগত মাত্র এক বছরেই পিছিয়ে পড়েছে ১০ ধাপ। জেনেভাভিত্তিক অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম তার ‘গ্লোবাল কম্পিটিটিভনেস রিপোর্ট ২০১২-১৩’-এ জানিয়েছে, ১৪৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৮ নম্বরে। অর্থনৈতিক কোনো সূচকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এত বড় অবনমন আর কখনও হয়নি। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, মহাজোট ক্ষমতায় আসার বছর অর্থাত্ ২০০৯-১০ থেকেই বাংলাদেশের পেছন দিকে যাত্রা শুরু হয়েছে। সেবছর এবং ২০১০-১১ সালে অবস্থান ছিল ১০৭ ও ১০৮ নম্বরে। পরের এক বছরেই এক লাফে অবস্থান নেমে গেছে ১১৮ নম্বরে। রিপোর্টে প্রধান যে কয়েকটি উপ-সূচককে ভিত্তি ধরা হয়েছে সেগুলোর কোনো কোনোটিতে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক বেশি পেছনে। যেমন আর্থিক বাজারের সংবেদনশীলতায় ২৮ ধাপ এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় ২৫ ধাপ পর্যন্ত পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। রিপোর্টে আরও কিছু উদ্বেগজনক তথ্যও রয়েছে। যেমন জরিপে অংশগ্রহণকারী ব্যবসায়ীদের অভিমতের ভিত্তিতে বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থতা দেখিয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসিও শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণে চরমভাবেই ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলে শেয়ারবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করাই শুধু অসম্ভব হয়ে পড়েনি, দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতিরও মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৯৪ শতাংশ বলেছেন, বিদ্যুত্ ও জ্বালানি উত্পাদনে সরকারের উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। ৯০ শতাংশ বলেছেন ব্যবসার ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগে বিদেশি বিনিয়োগ পাওয়া যায় না, আর ৭২ শতাংশ বলেছেন ব্যাংক ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ৭৫ শতাংশ ব্যবসায়ীর মতে, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত দুর্বল। মামলার ক্ষেত্রে রায় পক্ষে নেয়ার জন্য যে ঘুষ দিতে হয় সেকথাও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া ঘুষ-দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তার, অবকাঠামো সমস্যা, পরিবহনগত জটিলতার কারণে পণ্য সরবরাহে বিলম্ব হওয়া, উত্পাদনে ব্যবহৃত প্রযুক্তির ঘাটতির মতো অন্য কিছু কারণেরও উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে। সব মিলিয়েই ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলেছে, বাংলাদেশ পেছনের দিকে যাত্রা শুরু করেছে।
ক্ষমতাসীনরা সাফাই গাইতেই পারেন কিন্তু আমরা মনে করি, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এই রিপোর্টের সঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশ করার কোনো সুযোগ নেই। শেয়ারবাজার ও ব্যাংক ঋণ থেকে শুরু করে ঘুষ-দুর্নীতি, জ্বালানি ও বিদেশি বিনিয়াগ পর্যন্ত কোনো একটি বিষয়েই রিপোর্টে সামান্য বাড়িয়ে বলা হয়নি। প্রতিটি বিষয়ে আমরাও প্রথম থেকে বলে এসেছি, সবকিছু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছি। শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা না থাকলে মূলধন সংগ্রহ করা এবং নতুন শিল্প-কারখানা স্থাপনসহ ব্যবসা-বাণিজ্যে যে উন্নতি করা যায় না, সেকথা বোঝার জন্য নিশ্চয়ই মুহিত সাহেবের মতো অর্থনীতিতে পণ্ডিত হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু সব জেনে-বুঝেও আমাদের অর্থমন্ত্রী শেয়ারবাজারে লুণ্ঠন চালাতে দিয়েছেন। চিহ্নিত লুটেরা-দস্যুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পরিবর্তে তিনি উল্টো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদেরই ‘ধান্দাবাজ’ বলেছেন। ৩৩ লাখ মানুষকেও তার ‘কিছু মানুষ’ মনে হয়েছে। এর ফলেই আছাড় খেয়ে পড়েছে দেশের পুঁজি বাজার। এরই পাশাপাশি একদিকে ঘুষ ছাড়া ব্যাংক ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে এবং বিদ্যুতের লোডশেডিং ও গ্যাসের অভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে উত্পাদন ব্যাহত হয়েছে, অন্যদিকে জ্বালানি ও অবকাঠামোর মতো অত্যাবশ্যকীয় বিভিন্ন বিষয়ে আশ্বস্ত না হওয়ায় পিছিয়ে গেছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠেনি বলে দেশে চাকরির সুযোগ তৈরি হয়নি, ওদিকে লাফিয়ে বেড়েছে প্রতিটি পণ্যের মূল্য। ফলে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এভাবে সব মিলিয়েই দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে।
বলা দরকার, দুর্নীতি আগেও হয়েছে কিন্তু বর্তমান সরকারের আমলে দুর্নীতি বিস্তৃত হয়েছে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে। পদ্মা সেতুর মতো অনেক ক্ষেত্রেই এর খেসারত দিতে হচ্ছে জাতিকে। বিদেশি বিনিয়োগ প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার আসল কারণও দুর্নীতি, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে অর্থনীতির ওপর। এদিকে বেতন-ভাতা দেয়ার জন্যও গলদঘর্ম সরকারকে ব্যাংকের ওপর চেপে বসতে হয়েছে। এরও পরিণতি জাতীয় অর্থনীতির জন্য মারাত্মকই হয়েছে। সব মিলিয়ে অনস্বীকার্য সত্য হলো, বর্তমান সরকারের আমলে দেশ শুধু পিছিয়েই পড়েনি, পিছিয়ে পড়ার ব্যাপারে রেকর্ডও করেছে। আমরা মনে করি, বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থেই সরকারের উচিত অবস্থায় পরিবর্তন ঘটানোর চেষ্টা করা। ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ করার পাশাপাশি সরকার নিজে যদি ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া বন্ধ করে, ব্যবসায়ী-শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য ঋণ পাওয়া যদি সহজ হয় এবং বিদেশি বিনিয়োগ আসার মতো অনুকূল পরিবেশ যদি তৈরি করা যায়—তাহলে এখনও দেশের অর্থনৈতিক সূচককে ওপরের দিকে তুলে আনা সম্ভব। সরকারের উচিত সে চেষ্টার ব্যাপারেই আন্তরিকতা দেখানো। না হলে আরও পেছনের দিকেই যেতে থাকবে দেশ।
ক্ষমতাসীনরা সাফাই গাইতেই পারেন কিন্তু আমরা মনে করি, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এই রিপোর্টের সঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশ করার কোনো সুযোগ নেই। শেয়ারবাজার ও ব্যাংক ঋণ থেকে শুরু করে ঘুষ-দুর্নীতি, জ্বালানি ও বিদেশি বিনিয়াগ পর্যন্ত কোনো একটি বিষয়েই রিপোর্টে সামান্য বাড়িয়ে বলা হয়নি। প্রতিটি বিষয়ে আমরাও প্রথম থেকে বলে এসেছি, সবকিছু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছি। শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা না থাকলে মূলধন সংগ্রহ করা এবং নতুন শিল্প-কারখানা স্থাপনসহ ব্যবসা-বাণিজ্যে যে উন্নতি করা যায় না, সেকথা বোঝার জন্য নিশ্চয়ই মুহিত সাহেবের মতো অর্থনীতিতে পণ্ডিত হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু সব জেনে-বুঝেও আমাদের অর্থমন্ত্রী শেয়ারবাজারে লুণ্ঠন চালাতে দিয়েছেন। চিহ্নিত লুটেরা-দস্যুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পরিবর্তে তিনি উল্টো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদেরই ‘ধান্দাবাজ’ বলেছেন। ৩৩ লাখ মানুষকেও তার ‘কিছু মানুষ’ মনে হয়েছে। এর ফলেই আছাড় খেয়ে পড়েছে দেশের পুঁজি বাজার। এরই পাশাপাশি একদিকে ঘুষ ছাড়া ব্যাংক ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে এবং বিদ্যুতের লোডশেডিং ও গ্যাসের অভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে উত্পাদন ব্যাহত হয়েছে, অন্যদিকে জ্বালানি ও অবকাঠামোর মতো অত্যাবশ্যকীয় বিভিন্ন বিষয়ে আশ্বস্ত না হওয়ায় পিছিয়ে গেছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠেনি বলে দেশে চাকরির সুযোগ তৈরি হয়নি, ওদিকে লাফিয়ে বেড়েছে প্রতিটি পণ্যের মূল্য। ফলে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এভাবে সব মিলিয়েই দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে।
বলা দরকার, দুর্নীতি আগেও হয়েছে কিন্তু বর্তমান সরকারের আমলে দুর্নীতি বিস্তৃত হয়েছে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে। পদ্মা সেতুর মতো অনেক ক্ষেত্রেই এর খেসারত দিতে হচ্ছে জাতিকে। বিদেশি বিনিয়োগ প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার আসল কারণও দুর্নীতি, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে অর্থনীতির ওপর। এদিকে বেতন-ভাতা দেয়ার জন্যও গলদঘর্ম সরকারকে ব্যাংকের ওপর চেপে বসতে হয়েছে। এরও পরিণতি জাতীয় অর্থনীতির জন্য মারাত্মকই হয়েছে। সব মিলিয়ে অনস্বীকার্য সত্য হলো, বর্তমান সরকারের আমলে দেশ শুধু পিছিয়েই পড়েনি, পিছিয়ে পড়ার ব্যাপারে রেকর্ডও করেছে। আমরা মনে করি, বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থেই সরকারের উচিত অবস্থায় পরিবর্তন ঘটানোর চেষ্টা করা। ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ করার পাশাপাশি সরকার নিজে যদি ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া বন্ধ করে, ব্যবসায়ী-শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য ঋণ পাওয়া যদি সহজ হয় এবং বিদেশি বিনিয়োগ আসার মতো অনুকূল পরিবেশ যদি তৈরি করা যায়—তাহলে এখনও দেশের অর্থনৈতিক সূচককে ওপরের দিকে তুলে আনা সম্ভব। সরকারের উচিত সে চেষ্টার ব্যাপারেই আন্তরিকতা দেখানো। না হলে আরও পেছনের দিকেই যেতে থাকবে দেশ।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন