শা হ আ হ ম দ রে জা
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে অথচ বিরোধী কোনো দল বা সংগঠন বিনা বাধায় মিছিল-সমাবেশ করতে পারবে তা বিশ্বাস করা যায় না। এ সংক্রান্ত সর্বশেষ প্রমাণ পাওয়া গেছে ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর। পল্টন ময়দানে ইসলামী ও সমমনা ১২টি সংগঠনের সমাবেশ করার কথা ছিল ২২ সেপ্টেম্বর। একমাস আগে ঘোষিত এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষানীতিসহ সরকারের ইসলামবিরোধী বিভিন্ন নীতি ও কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো। তার সঙ্গে সবশেষে যুক্ত হয়েছিল মহানবীকে (সা.) অবমাননা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র্রে নির্মিত সিনেমার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর উদ্দেশ্য। যে কোনো বিচারে সম্পূর্ণ গণতন্ত্রসম্মত কর্মসূচি হলেও আওয়ামী লীগ সরকারের পুলিশ যথারীতি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বসেছে। আগেরদিন ডিএমপির কমিশনার হঠাত্ ঘোষণা করেছেন, পল্টন ময়দানে তো বটেই, বায়তুল মোকাররম, দৈনিক বাংলা ও পল্টন মোড়ে এমনকি কাকরাইলের আশপাশেও কোনো সমাবেশ করা চলবে না। এই স্বৈরতান্ত্রিক নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল করতে গিয়েও পুলিশের প্রচণ্ড ধাওয়ার মুখে পড়তে হয়েছে। ইসলামী ও সমমনা ১২টি সংগঠনের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের নিষ্ঠুরভাবে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। সবই ঘটেছে হাজার হাজার মানুষের চোখের সামনে। বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেলের ক্যামেরাও ছিল সেখানে। কোনো টিভির ছবিতেই কিন্তু নেতা-কর্মীদের মারমুখী হতে দেখা যায়নি। তাদের সবাইকে বরং নিজেদের বাঁচাতেই প্রাণান্তকর চেষ্টা করতে দেখা গেছে। শেষ পর্যন্ত তারা গিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তারপরও রেহাই পাননি তারা। ১২ সংগঠনের তিনজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ দেড় শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে গাড়ি পোড়ানো এবং পুলিশের ওপর হামলা চালানোসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই নির্যাতন এবং সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিবাদে ইসলামী ও সমমনা ১২টি সংগঠনের আহ্বানে সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে ২৩ সেপ্টেম্বর। হরতালের সময়ও পুলিশকে মারমুখীই দেখা গেছে। মিছিল-সমাবেশ তো পণ্ড করেছেই, ১২ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। দেশের কোনো এলাকাতেই নির্বিঘ্নে মিছিল-সমাবেশ করতে পারেনি ১২ সংগঠন। বিএনপি ও জামায়াতের পাশাপাশি শিবির ও ছাত্রদলের অনেককেও গ্রেফতার করা হয়েছে। ওদিকে ক্ষমতাসীনরা ফ্যাসিস্ট সরকারের সুরে আন্দোলন দমনের হুমকিই শুধু দেননি, একযোগে মিথ্যাচারও যথেষ্টই করেছেন। জনগণকে স্তম্ভিত করে বলে বসেছেন, কথিত যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য অরাজকতা সৃষ্টি করাই নাকি ইসলামী ও সমমনা ১২ সংগঠনের উদ্দেশ্য! মিথ্যাচার করতে গিয়ে তারা লক্ষ্যই করেননি যে, বিএনপি বা জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে এসব ইসলামী ও সমমনা সংগঠনের কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক নেই।
ঘটনাপ্রবাহে পুলিশের বিষয়টি নতুন করে প্রাধান্যে এসেছে। কারণ, জনগণের ‘সেবক’ হিসেবে পুলিশের দায়িত্ব জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা বিধান করা। ইসলামী ও সমমনা ১২ সংগঠনের বা কোনো রাজনৈতিক দলের গণতন্ত্রসম্মত কর্মসূচি ভণ্ডুল করা এবং নেতা-কর্মীদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন চালানো পুলিশের কাজ হতে পারে না। তাছাড়া মিছিল-সমাবেশ, পিকেটিং, মানববন্ধন, হরতাল প্রভৃতি মানুষের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার। এসব কর্মসূচিতে বাধা দেয়া গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকার লংঘনের শামিল। অন্যদিকে পুলিশ এমনকি অনেক আগে থেকে ঘোষিত শান্তিপূর্ণ মিছিল-সমাবেশও করতে দিচ্ছে না। ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর পুলিশ ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের যেভাবে লাঠিপেটা করেছে তা দেখে মনে হয়েছে, পুলিশ সরকারের ঠ্যাঙ্গাড়ে বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। ক্ষমতাসীনরা রাজনৈতিক স্বার্থে পুলিশকে দলীয় কর্মীর মতো ব্যবহার করেছেন। বলা দরকার, পুলিশকে দিয়ে এভাবে নির্যাতন চালানো এবং মিছিল-সমাবেশ ও হরতাল ঠেকানোর চেষ্টা আদালতের রায়কেও অস্বীকার করার শামিল। কারণ সর্বোচ্চ আদালত অনেক আগেই বলে দিয়েছে, হরতাল করা রাজনৈতিক অধিকার। কোনো কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ থাকলে পুলিশ বাধা দিতে পারে না। লাঠিপেটা ও গ্রেফতার করারও কোনো অধিকার নেই পুলিশের। বলা দরকার, হুমকি-ধমকির কৌশল থেকে গণতন্ত্রসম্মত অবস্থানে ফিরে আসার পরিবর্তে কল্পিত অরাজকতা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড প্রতিহত করার নামে এভাবে দমন-নির্যাতনের পথে পা বাড়াতে থাকলে সরকারের বিপদই বাড়বে। ২৩ সেপ্টেম্বর পালিত হরতালের মধ্যেও ক্ষমতাসীনদের জন্য শিক্ষা নেয়ার উপাদান রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষে এ সত্যই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, বর্তমান সরকার সম্পূর্ণরূপে জনসর্থন হারিয়ে ফেলেছে। না হলে ইসলামী ও সমমনা ১২টি সংগঠনের আহ্বানে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ঘোষণায় এত সফলভাবে হরতাল পালিত হতো না। ১২টি সংগঠনের আহ্বানেই যেখানে এই অবস্থা, সেখানে বিএনপি ও জামায়াতের মতো বড় দলগুলো আন্দোলনের ডাক দিলে তারা পালানোর পথ খুঁজে পাবেন কিনা ক্ষমতাসীনরা তা ভেবে দেখতে পারেন।
কথাটা অবশ্য আমাদের নয়, ২৩ সেপ্টেম্বর দিনাজপুরের বিশাল সমাবেশে পালানোর কথাটা বলেছেন বেগম খালেদা জিয়া। মুহুর্মুহু করতালি ও স্লোগানের মধ্যে সাবধান করতে গিয়ে বেগম জিয়া বলেছেন, সময় থাকতে নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে না নেয়া হলে জনগণের আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাসীনরা পালানোর পথও পাবেন না। শেয়ারবাজার, পদ্মাসেতু, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল এবং হলমার্ক কেলেঙ্কারীসহ সীমা ছাড়ানো বিভিন্ন দুর্নীতির মাধ্যমে লক্ষ-হাজার কোটি টাকা লোপাট ও বিদেশে পাচার করার তথ্য উল্লেখ করে বেগম জিয়া বলেছেন, ক্ষমতার পালাবদল হলে দুর্নীতিবাজদের কারাগারে ঢোকানো হবে। প্রত্যেককে বিচার করে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। দলবাজ পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তাদেরও তালিকা তৈরি করা হচ্ছে এবং সময় এলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। খালেদা জিয়া ঘোষণা করেছেন, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আয়োজন না করা হলে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। ‘নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার পুনর্বহাল, অন্যথায় সরকারের পতন’— এই লক্ষ্য নিয়ে আন্দোলনের সূচনা উপলক্ষে ১৮ দলীয় জোটের এ সমাবেশে বেগম জিয়া অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিচারপতিদের দিয়ে নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী রায় তৈরি করিয়েছে এবং তার ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধন করেছে। বিচারপতিরাও নিজেদের সীমা অতিক্রম করে রায় দেয়ার মাধ্যমে ‘মিসকন্ডাক্ট’ বা অসদাচরণ করেছেন। আবারও ক্ষমতায় যাওয়া এবং ক্ষমতা স্থায়ী করাই ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্য। কিন্তু জনগণ তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে দেবে না। জাতীয় জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্ধারণী আরও অনেক কথার সঙ্গে খালেদা জিয়া বিশেষ করে নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন। রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে সংসদ ভেঙে দেয়ার এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনুরোধ জানানোসহ নির্বাচনের ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি জাতীয় সংসদে যে ভাষণ দিয়েছেন তার তীব্র সমালোচনা করে বেগম জিয়া বলেছেন, এ ধরনের কোনো ‘ফর্মুলা’য় কাজ হবে না। কোনো দলীয় সরকারের অধীনে দেশে নির্বাচন হতে পারবে না। নির্বাচনের সময় ছোট আকারের মন্ত্রিসভা গঠনের যে প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন তারও বিরোধিতা করেছেন বেগম জিয়া। বলেছেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কোনো মন্ত্রিসভাকে মেনে নেয়া হবে না। কারণ, শেখ হাসিনার মতো নেত্রীর অধীনে প্রভাবমুক্ত ও সুষ্ঠু কোনো নির্বাচনের কথা কল্পনা করা যায় না। দিনাজপুরের সমাবেশে মূল কথায় বেগম জিয়া অবিলম্বে সংবিধানে নতুন একটি সংশোধনী আনার এবং নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের জোর দাবি জানিয়েছেন।
বলার অপেক্ষা রাখে না, বেগম খালেদা জিয়া সাধারণ মানুষের মনের কথারই প্রতিধ্বনি করেছেন। তার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের দুর্নীতি ও লুটপাট সম্পর্কে যত কম বলা যায় ততই ভালো। এ ব্যাপারে পদ্মাসেতুকেন্দ্রিক অতি লজ্জাকর ঘটনাপ্রবাহ স্মরণ করাই যথেষ্ট। অনেক নাটকীয়তার পর বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি পদ্মাসেতুর জন্য ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে সত্য কিন্তু এই ঋণ পাওয়ার এবং বিশ্বব্যাংককে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারকে ন্যক্কারজনকভাবে নতি স্বীকার করতে হয়েছে। খালেদা জিয়ার ভাষায় সরকার ‘নাকে খত দিয়েছে।’ বিষয়টি পুরো জাতির জন্যই নিঃসন্দেহে অসম্মানজনক। কিন্তু সর্বব্যাপী দুর্নীতি করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার দেশ ও জাতিকে লজ্জায় ডুবিয়ে ছেড়েছে। খালেদা জিয়া নাম ধরে ধরে দুর্নীতিবাজদের সম্পর্কে বলেছেন। তার সে তালিকায় আবুল হোসেন ও মশিউর রহমানের মতো মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের নাম যেমন রয়েছে তেমনি এসেছে কোনো এক বিশেষজনের ‘সুপুত্র’ ও ‘জামাইবাবুর’ কথাও। প্রধানমন্ত্রী ও তার সমর্থক অনুসারীরা পারলে তথ্য ও দলিলপত্রসহ এর প্রতিবাদ করে দেখাতে পারেন—যদিও তেমন কোনো সুযোগই রাখেননি কীর্তিমানরা। এজন্যই সর্বশেষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ছুটি চেয়ে যে দরখাস্ত পেশ করেছেন তার ‘অরিজিনাল’ কপিটিই দেখাতে হয়েছে বিশ্বব্যাংককে। দেখিয়ে এসেছেন আরেক গুণধর উপদেষ্টা গওহর রিজভী। এর মধ্য দিয়েও প্রমাণিত হয়েছে, বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ ঠিক কোন কোন বিশেষজনের গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ছিল। তাছাড়া কানাডা থেকে পাওয়া বিভিন্ন খবরেও তো অনেকের সম্পর্কেই জানা যাচ্ছে। বিশ্বব্যাংক অসত্য বলেনি, আসলেও ‘উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতিমূলক ষড়যন্ত্র’ হয়েছিল। সেজন্যই নিজেদের লেখা ছয়টি চিঠি প্রকাশ করলেও সরকার বিশ্বব্যাংকের দুটি রিপোর্ট প্রকাশ করেনি। দুর্নীতি হয়েছিল বলেই সরকারকে শেষ পর্যন্ত বিশ্বব্যাংকের কাছে নতিস্বীকার করতে হয়েছে। এমনকি নতুন পর্যায়ে চারটি কঠিন ও অসম্মানজনক শর্তও মেনে নিতে হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াও সে কথাগুলোই জনগণকে জানিয়েছেন।
দিনাজপুরের সমাবেশে নির্বাচনকালীন সরকারসহ সংবিধান সম্পর্কেও বেগম জিয়া জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষারই প্রতিধ্বনি করেছেন। এ ব্যাপারেও আগ বাড়িয়ে সমস্যা তৈরি করেছেন ক্ষমতাসীনরা। সর্বোচ্চ আদালতের সংক্ষিপ্ত আদেশের ভিত্তিতেই তারা সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনী এনেছেন। বিরোধী দলকে বাইরে তো রেখেছেনই, আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ের জন্যও অপেক্ষা করেননি। অথচ পূর্ণাঙ্গ রায়ে ভাষার মারপ্যাঁচ খাটিয়ে গুরুত্বহীন করে ফেলা হলেও সংক্ষিপ্ত আদেশে সুস্পষ্টভাবেই বলা হয়েছিল, পরবর্তী দুটি সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে। কিন্তু আদেশের এই অংশটুকুর ধারে-কাছে যাননি ক্ষমতাসীনরা। শুধু তা-ই নয়, সংসদে প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি যে ‘ফর্মুলা’ পেশ করেছেন সেটাও আসলে সংবিধানসম্মত নয়। কারণ, পঞ্চদশ সংশোধনীসংবলিত সংবিধানে বিদ্যমান সংসদকে বহাল রেখেই পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান রাখা হয়েছে, যে ব্যবস্থায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সম্ভব নয়। ওদিকে সংক্ষিপ্ত আদেশের দীর্ঘ ১৬ মাস পর যে পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষণা করা হয়েছে সেখানেও নির্বাচনের ৪২ দিন আগে সংসদ ভেঙে দেয়ার এবং ‘নির্বাচিত’ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ছোট আকারের মন্ত্রিসভা গঠনের নির্দেশনা রয়েছে। অথচ সংসদই যদি না থাকে তাহলে ‘নির্বাচিত’ ব্যক্তিদেরও পাওয়া যাবে না, যাদের সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে। এভাবেই একদিকে সর্বোচ্চ আদালতের বিতর্কিত সাবেক প্রধান বিচারপতি এবং অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের অনেক বাইরে চলে গেছেন—যাকে সংবিধান লংঘন বলা যায়। এ কথাগুলোই দিনাজপুরের সমাবেশে বলেছেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি তাই বলে কেবলই সমালোচনা ও আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানোর হুমকি দিয়ে থেমে যাননি, প্রকৃত দেশপ্রেমিক জাতীয় নেত্রীর অবস্থান থেকে একই সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের জন্য সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার পথও দেখিয়েছেন। বলেছেন, সংবিধানে আরও একবার সংশোধনী আনতে হবে এবং সেই সংশোধনীতে এমন একটি নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের বিধান রাখতে হবে, যার অধীনে জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বেগম জিয়া বলেছেন বলে নয়, দ্রুত ঘনীভূত হতে থাকা রাজনৈতিক সঙ্কট এবং আগামী দিনের সম্ভাব্য সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতেও বলা দরকার, এ প্রস্তাবটির মধ্যেই রয়েছে সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার এবং নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণকে নিশ্চিত করার গ্রহণযোগ্য পন্থা। সংসদীয় পদ্ধতির বহুদলীয় গণতন্ত্রের বিকাশকে বাধাহীন করার সদিচ্ছা থাকলে এবং সত্যিই জনগণের ধাওয়ার মুখে পড়তে না চাইলে ক্ষমতাসীনদের উচিত বেগম খালেদা জিয়ার দেখানো পথে পা বাড়ানো। প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনায় লগি-বৈঠার হত্যা-সন্ত্রাসের মতো ধ্বংসাত্মক কিছু থাকলে অবশ্য ভিন্ন কথা!
লেখক : সাংবাদিক ও ইতিহাস গবেষক
shahahmadreza@yahoo.com
ঘটনাপ্রবাহে পুলিশের বিষয়টি নতুন করে প্রাধান্যে এসেছে। কারণ, জনগণের ‘সেবক’ হিসেবে পুলিশের দায়িত্ব জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা বিধান করা। ইসলামী ও সমমনা ১২ সংগঠনের বা কোনো রাজনৈতিক দলের গণতন্ত্রসম্মত কর্মসূচি ভণ্ডুল করা এবং নেতা-কর্মীদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন চালানো পুলিশের কাজ হতে পারে না। তাছাড়া মিছিল-সমাবেশ, পিকেটিং, মানববন্ধন, হরতাল প্রভৃতি মানুষের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার। এসব কর্মসূচিতে বাধা দেয়া গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকার লংঘনের শামিল। অন্যদিকে পুলিশ এমনকি অনেক আগে থেকে ঘোষিত শান্তিপূর্ণ মিছিল-সমাবেশও করতে দিচ্ছে না। ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর পুলিশ ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের যেভাবে লাঠিপেটা করেছে তা দেখে মনে হয়েছে, পুলিশ সরকারের ঠ্যাঙ্গাড়ে বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। ক্ষমতাসীনরা রাজনৈতিক স্বার্থে পুলিশকে দলীয় কর্মীর মতো ব্যবহার করেছেন। বলা দরকার, পুলিশকে দিয়ে এভাবে নির্যাতন চালানো এবং মিছিল-সমাবেশ ও হরতাল ঠেকানোর চেষ্টা আদালতের রায়কেও অস্বীকার করার শামিল। কারণ সর্বোচ্চ আদালত অনেক আগেই বলে দিয়েছে, হরতাল করা রাজনৈতিক অধিকার। কোনো কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ থাকলে পুলিশ বাধা দিতে পারে না। লাঠিপেটা ও গ্রেফতার করারও কোনো অধিকার নেই পুলিশের। বলা দরকার, হুমকি-ধমকির কৌশল থেকে গণতন্ত্রসম্মত অবস্থানে ফিরে আসার পরিবর্তে কল্পিত অরাজকতা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড প্রতিহত করার নামে এভাবে দমন-নির্যাতনের পথে পা বাড়াতে থাকলে সরকারের বিপদই বাড়বে। ২৩ সেপ্টেম্বর পালিত হরতালের মধ্যেও ক্ষমতাসীনদের জন্য শিক্ষা নেয়ার উপাদান রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষে এ সত্যই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, বর্তমান সরকার সম্পূর্ণরূপে জনসর্থন হারিয়ে ফেলেছে। না হলে ইসলামী ও সমমনা ১২টি সংগঠনের আহ্বানে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ঘোষণায় এত সফলভাবে হরতাল পালিত হতো না। ১২টি সংগঠনের আহ্বানেই যেখানে এই অবস্থা, সেখানে বিএনপি ও জামায়াতের মতো বড় দলগুলো আন্দোলনের ডাক দিলে তারা পালানোর পথ খুঁজে পাবেন কিনা ক্ষমতাসীনরা তা ভেবে দেখতে পারেন।
কথাটা অবশ্য আমাদের নয়, ২৩ সেপ্টেম্বর দিনাজপুরের বিশাল সমাবেশে পালানোর কথাটা বলেছেন বেগম খালেদা জিয়া। মুহুর্মুহু করতালি ও স্লোগানের মধ্যে সাবধান করতে গিয়ে বেগম জিয়া বলেছেন, সময় থাকতে নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে না নেয়া হলে জনগণের আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাসীনরা পালানোর পথও পাবেন না। শেয়ারবাজার, পদ্মাসেতু, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল এবং হলমার্ক কেলেঙ্কারীসহ সীমা ছাড়ানো বিভিন্ন দুর্নীতির মাধ্যমে লক্ষ-হাজার কোটি টাকা লোপাট ও বিদেশে পাচার করার তথ্য উল্লেখ করে বেগম জিয়া বলেছেন, ক্ষমতার পালাবদল হলে দুর্নীতিবাজদের কারাগারে ঢোকানো হবে। প্রত্যেককে বিচার করে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। দলবাজ পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তাদেরও তালিকা তৈরি করা হচ্ছে এবং সময় এলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। খালেদা জিয়া ঘোষণা করেছেন, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আয়োজন না করা হলে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। ‘নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার পুনর্বহাল, অন্যথায় সরকারের পতন’— এই লক্ষ্য নিয়ে আন্দোলনের সূচনা উপলক্ষে ১৮ দলীয় জোটের এ সমাবেশে বেগম জিয়া অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিচারপতিদের দিয়ে নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী রায় তৈরি করিয়েছে এবং তার ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধন করেছে। বিচারপতিরাও নিজেদের সীমা অতিক্রম করে রায় দেয়ার মাধ্যমে ‘মিসকন্ডাক্ট’ বা অসদাচরণ করেছেন। আবারও ক্ষমতায় যাওয়া এবং ক্ষমতা স্থায়ী করাই ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশ্য। কিন্তু জনগণ তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে দেবে না। জাতীয় জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্ধারণী আরও অনেক কথার সঙ্গে খালেদা জিয়া বিশেষ করে নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন। রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে সংসদ ভেঙে দেয়ার এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনুরোধ জানানোসহ নির্বাচনের ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি জাতীয় সংসদে যে ভাষণ দিয়েছেন তার তীব্র সমালোচনা করে বেগম জিয়া বলেছেন, এ ধরনের কোনো ‘ফর্মুলা’য় কাজ হবে না। কোনো দলীয় সরকারের অধীনে দেশে নির্বাচন হতে পারবে না। নির্বাচনের সময় ছোট আকারের মন্ত্রিসভা গঠনের যে প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন তারও বিরোধিতা করেছেন বেগম জিয়া। বলেছেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কোনো মন্ত্রিসভাকে মেনে নেয়া হবে না। কারণ, শেখ হাসিনার মতো নেত্রীর অধীনে প্রভাবমুক্ত ও সুষ্ঠু কোনো নির্বাচনের কথা কল্পনা করা যায় না। দিনাজপুরের সমাবেশে মূল কথায় বেগম জিয়া অবিলম্বে সংবিধানে নতুন একটি সংশোধনী আনার এবং নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের জোর দাবি জানিয়েছেন।
বলার অপেক্ষা রাখে না, বেগম খালেদা জিয়া সাধারণ মানুষের মনের কথারই প্রতিধ্বনি করেছেন। তার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের দুর্নীতি ও লুটপাট সম্পর্কে যত কম বলা যায় ততই ভালো। এ ব্যাপারে পদ্মাসেতুকেন্দ্রিক অতি লজ্জাকর ঘটনাপ্রবাহ স্মরণ করাই যথেষ্ট। অনেক নাটকীয়তার পর বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি পদ্মাসেতুর জন্য ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে সত্য কিন্তু এই ঋণ পাওয়ার এবং বিশ্বব্যাংককে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারকে ন্যক্কারজনকভাবে নতি স্বীকার করতে হয়েছে। খালেদা জিয়ার ভাষায় সরকার ‘নাকে খত দিয়েছে।’ বিষয়টি পুরো জাতির জন্যই নিঃসন্দেহে অসম্মানজনক। কিন্তু সর্বব্যাপী দুর্নীতি করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার দেশ ও জাতিকে লজ্জায় ডুবিয়ে ছেড়েছে। খালেদা জিয়া নাম ধরে ধরে দুর্নীতিবাজদের সম্পর্কে বলেছেন। তার সে তালিকায় আবুল হোসেন ও মশিউর রহমানের মতো মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের নাম যেমন রয়েছে তেমনি এসেছে কোনো এক বিশেষজনের ‘সুপুত্র’ ও ‘জামাইবাবুর’ কথাও। প্রধানমন্ত্রী ও তার সমর্থক অনুসারীরা পারলে তথ্য ও দলিলপত্রসহ এর প্রতিবাদ করে দেখাতে পারেন—যদিও তেমন কোনো সুযোগই রাখেননি কীর্তিমানরা। এজন্যই সর্বশেষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ছুটি চেয়ে যে দরখাস্ত পেশ করেছেন তার ‘অরিজিনাল’ কপিটিই দেখাতে হয়েছে বিশ্বব্যাংককে। দেখিয়ে এসেছেন আরেক গুণধর উপদেষ্টা গওহর রিজভী। এর মধ্য দিয়েও প্রমাণিত হয়েছে, বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ ঠিক কোন কোন বিশেষজনের গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ছিল। তাছাড়া কানাডা থেকে পাওয়া বিভিন্ন খবরেও তো অনেকের সম্পর্কেই জানা যাচ্ছে। বিশ্বব্যাংক অসত্য বলেনি, আসলেও ‘উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতিমূলক ষড়যন্ত্র’ হয়েছিল। সেজন্যই নিজেদের লেখা ছয়টি চিঠি প্রকাশ করলেও সরকার বিশ্বব্যাংকের দুটি রিপোর্ট প্রকাশ করেনি। দুর্নীতি হয়েছিল বলেই সরকারকে শেষ পর্যন্ত বিশ্বব্যাংকের কাছে নতিস্বীকার করতে হয়েছে। এমনকি নতুন পর্যায়ে চারটি কঠিন ও অসম্মানজনক শর্তও মেনে নিতে হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াও সে কথাগুলোই জনগণকে জানিয়েছেন।
দিনাজপুরের সমাবেশে নির্বাচনকালীন সরকারসহ সংবিধান সম্পর্কেও বেগম জিয়া জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষারই প্রতিধ্বনি করেছেন। এ ব্যাপারেও আগ বাড়িয়ে সমস্যা তৈরি করেছেন ক্ষমতাসীনরা। সর্বোচ্চ আদালতের সংক্ষিপ্ত আদেশের ভিত্তিতেই তারা সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনী এনেছেন। বিরোধী দলকে বাইরে তো রেখেছেনই, আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ের জন্যও অপেক্ষা করেননি। অথচ পূর্ণাঙ্গ রায়ে ভাষার মারপ্যাঁচ খাটিয়ে গুরুত্বহীন করে ফেলা হলেও সংক্ষিপ্ত আদেশে সুস্পষ্টভাবেই বলা হয়েছিল, পরবর্তী দুটি সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে। কিন্তু আদেশের এই অংশটুকুর ধারে-কাছে যাননি ক্ষমতাসীনরা। শুধু তা-ই নয়, সংসদে প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি যে ‘ফর্মুলা’ পেশ করেছেন সেটাও আসলে সংবিধানসম্মত নয়। কারণ, পঞ্চদশ সংশোধনীসংবলিত সংবিধানে বিদ্যমান সংসদকে বহাল রেখেই পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান রাখা হয়েছে, যে ব্যবস্থায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সম্ভব নয়। ওদিকে সংক্ষিপ্ত আদেশের দীর্ঘ ১৬ মাস পর যে পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষণা করা হয়েছে সেখানেও নির্বাচনের ৪২ দিন আগে সংসদ ভেঙে দেয়ার এবং ‘নির্বাচিত’ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ছোট আকারের মন্ত্রিসভা গঠনের নির্দেশনা রয়েছে। অথচ সংসদই যদি না থাকে তাহলে ‘নির্বাচিত’ ব্যক্তিদেরও পাওয়া যাবে না, যাদের সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে। এভাবেই একদিকে সর্বোচ্চ আদালতের বিতর্কিত সাবেক প্রধান বিচারপতি এবং অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের অনেক বাইরে চলে গেছেন—যাকে সংবিধান লংঘন বলা যায়। এ কথাগুলোই দিনাজপুরের সমাবেশে বলেছেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি তাই বলে কেবলই সমালোচনা ও আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানোর হুমকি দিয়ে থেমে যাননি, প্রকৃত দেশপ্রেমিক জাতীয় নেত্রীর অবস্থান থেকে একই সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের জন্য সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার পথও দেখিয়েছেন। বলেছেন, সংবিধানে আরও একবার সংশোধনী আনতে হবে এবং সেই সংশোধনীতে এমন একটি নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের বিধান রাখতে হবে, যার অধীনে জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বেগম জিয়া বলেছেন বলে নয়, দ্রুত ঘনীভূত হতে থাকা রাজনৈতিক সঙ্কট এবং আগামী দিনের সম্ভাব্য সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতেও বলা দরকার, এ প্রস্তাবটির মধ্যেই রয়েছে সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার এবং নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণকে নিশ্চিত করার গ্রহণযোগ্য পন্থা। সংসদীয় পদ্ধতির বহুদলীয় গণতন্ত্রের বিকাশকে বাধাহীন করার সদিচ্ছা থাকলে এবং সত্যিই জনগণের ধাওয়ার মুখে পড়তে না চাইলে ক্ষমতাসীনদের উচিত বেগম খালেদা জিয়ার দেখানো পথে পা বাড়ানো। প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনায় লগি-বৈঠার হত্যা-সন্ত্রাসের মতো ধ্বংসাত্মক কিছু থাকলে অবশ্য ভিন্ন কথা!
লেখক : সাংবাদিক ও ইতিহাস গবেষক
shahahmadreza@yahoo.com
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন