প্রক্টরের উপস্থিতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের ওপর হামলা করেছে ছাত্রলীগ। গতকাল দুপুরে মল চত্বরে ওই হামলায় ছাত্রদলের অন্তত পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছে। এ সময় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে আরও চার কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এতে ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কর্মীদের ওপর হামলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের সহাবস্থানের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে না পারার কারণে ভিসি তার পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রদল। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন নেতারা। তাদের দাবি, হামলায় আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় ছাত্রলীগের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সাদা দলের শিক্ষকরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নতুন কমিটির নেতারা ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার কথা ছিল। এ সংবাদ পেয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীরা সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রবেশ পথ, মধুর ক্যান্টিন, কলা ভবন ও প্রশাসনিক ভবনে মহড়া দিতে থাকেন।
দুপুর ২টার দিকে দুটি মোটরসাইকেলযোগে ছাত্রদলের চার কর্মী মল চত্বর হয়ে প্রশাসনিক ভবনে ঢুকতে গেলে প্রক্টর ড. আমজাদ আলী তাদের থামিয়ে পরিচয়পত্র দেখাতে বলেন। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা প্রক্টরের উপস্থিতিতে তাদের গাড়িতে রেখেই মারধর শুরু করে। এরপর মল চত্বর মাঠে নিয়ে পালাক্রমে মারতে থাকে ওই চার কর্মীকে। তারা প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পালাতে গেলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কর্মীরা চারদিক থেকে চাপাতি, রড ও হকস্টিক নিয়ে এসে বেধড়ক মারধর করে। হামলাকারী ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে ছিলেন ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল আমিন, সবুজ, সূর্যসেন হলের ছাত্র ও ঢাবি শাখার সদস্য সিয়ান, জসিমউদ্দিন হলের মেহেদী, জহুরুল হক হলের তানভীরসহ শতাধিক নেতাকর্মী। পরে উপস্থিত বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা ছাত্রলীগের হাত থেকে ছাত্রদল কর্মীদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান। গুরুতর আহত আব্বাস আলী, সোহাগ, রুহুল আমিন, মিজানুর রহমান ও রাশেদ ঢাকা মেডিকেলে চিকিত্সাধীন। এদের মধ্যে রুহুল আমিন, মিজানুর রহমান ও আব্বাস আলী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হল এবং আব্বাস আলী সলিমুল্লাহ হলের ছাত্র। তারা সবাই নিয়মিত শিক্ষার্থী বলে জানা যায়।
অন্যদিকে দুপুরে ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী একাডেমিক কার্যক্রমের জন্য প্রশাসনিক ভবনে গেলে ছাত্রলীগ তাদের বিভিন্ন কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী সমর্থক শিক্ষকরা জানতে পেরে ভিসির সঙ্গে সাক্ষাত্ করে অবরুদ্ধ ছাত্রদের উদ্ধার করতে বলেন। পরে ভিসি প্রক্টরকে পাঠিয়ে সার্টিফিকেট শাখার ৩০৮ নম্বর কক্ষ ও পরিবহন শাখার এক নম্বর কক্ষ থেকে পাঁচ ছাত্রদল কর্মীকে উদ্ধার করেন। তারা হচ্ছে শাফায়াত রিপন (জসীমউদদীন হল), আশিক (জিয়া হল), রাজু, ওয়াহিদ ও ইমদাদ হোসেন (সূর্যসেন হল)। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার জন্য বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আর আমি ছাত্রদলের জন্য অপেক্ষা করব। তবে যেহেতু সৌজন্য সাক্ষাত্, তাই আগে থেকে বলে এলেই ভালো হয়। হামলা সম্পর্কে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল রুল অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পদে থাকার অধিকার হারিয়েছে ভিসি—ছাত্রদল : নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা দেয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। ভিসির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ বর্জন করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল অভিযোগ করেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের সহাবস্থান ও শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে না পারার কারণে ভিসি তার পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছেন। সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের সভাপতি আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল বলেন, গত ৩ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। রেওয়াজ অনুযায়ী আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবগঠিত ছাত্রদল কমিটি ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা ভিসির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় চাইলে তিনি সোমবার দুপুর ২টায় আমাদের সময় দেন। সে অনুযায়ী ভিসির সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের সহায়তায় অস্ত্রধারী ছাত্রলীগ ক্যাডাররা হামলা চালায়। এতে অর্ধশতাধিক ছাত্রদল কর্মী আহত হয়।
জুয়েল বলেন, গত তিন বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলকে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। বর্তমানে ভিসির প্রত্যক্ষ মদতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ভিসির বাস ভবন, মল চত্বরসহ প্রতিটি প্রবেশ পথে চাপাতি, রামদা ও লাঠি নিয়ে পাহারা দিচ্ছে। পুলিশ তাদের সহযোগিতা করছে। সকালে এ ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অনেককে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তাদের খুঁজে বের করে হামলা করা হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, এ ঘটনার মধ্য দিয়ে ভিসি ছাত্র সমাজের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছেন। আমরা তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ বর্জন করছি। একই সঙ্গে হামলাকারীদের শাস্তি ও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দাবি করছি।
জুয়েল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নিশ্চিত ও স্বাভাবিক রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে না দেন, তাহলে এর প্রতিবাদে ছাত্রদল খুব শিগগিরই কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
ভিসি অপেক্ষা করলেও ছাত্রদলের কেউ সৌজন্য সাক্ষাত্ করতে আসেনি ভিসির এই বক্তব্যের জবাবে বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি এমপি বলেন, তিনি যে ঘটনা ঘটিয়েছেন তার পরও এ ধরনের বক্তব্য তার মুখে সাজে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সদ্য বিদায়ী ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রদলের নতুন কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব আহসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মহিদুল হাসান হিরু, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ খান পারভেজ, মহানগর উত্তরের সভাপতি আবুল মনসুর খান দীপক, দক্ষিণের সভাপতি ইসহাক সরকারসহ বিপুলসংখ্যক ছাত্রদল নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
নিরাপত্তার নামে ছাত্রদলকে মারধরের আয়োজন : বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ছাত্রলীগ ছাত্রদল কর্মীদের ওপর হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী সমর্থক সাদা দলের শিক্ষকরা। গতকাল সাদা দলের আহ্বায়ক ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে শিক্ষকরা বলেন, পূর্বপরিকল্পিতভাবে বেশ কয়েকজন ছাত্রের ওপর যে হামলা করা হয়েছে, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আমরা উদ্বেগ, ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিরাপত্তার নামে ছাত্রলীগ দিয়ে ছাত্রদলকে পেটানোর আয়োজন করেছে। কারণ সাক্ষাতের সময় দিয়ে অভ্যাগতদের নিরাপত্তা বিধান করার দায়িত্ব অবশ্যই ভিসির ওপর বর্তায়।
আমরা এ জঘন্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। আমরা চাই ক্যাম্পাসে সব ছাত্রছাত্রীর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নতুন কমিটির নেতারা ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার কথা ছিল। এ সংবাদ পেয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীরা সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রবেশ পথ, মধুর ক্যান্টিন, কলা ভবন ও প্রশাসনিক ভবনে মহড়া দিতে থাকেন।
দুপুর ২টার দিকে দুটি মোটরসাইকেলযোগে ছাত্রদলের চার কর্মী মল চত্বর হয়ে প্রশাসনিক ভবনে ঢুকতে গেলে প্রক্টর ড. আমজাদ আলী তাদের থামিয়ে পরিচয়পত্র দেখাতে বলেন। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা প্রক্টরের উপস্থিতিতে তাদের গাড়িতে রেখেই মারধর শুরু করে। এরপর মল চত্বর মাঠে নিয়ে পালাক্রমে মারতে থাকে ওই চার কর্মীকে। তারা প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পালাতে গেলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কর্মীরা চারদিক থেকে চাপাতি, রড ও হকস্টিক নিয়ে এসে বেধড়ক মারধর করে। হামলাকারী ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে ছিলেন ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল আমিন, সবুজ, সূর্যসেন হলের ছাত্র ও ঢাবি শাখার সদস্য সিয়ান, জসিমউদ্দিন হলের মেহেদী, জহুরুল হক হলের তানভীরসহ শতাধিক নেতাকর্মী। পরে উপস্থিত বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা ছাত্রলীগের হাত থেকে ছাত্রদল কর্মীদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান। গুরুতর আহত আব্বাস আলী, সোহাগ, রুহুল আমিন, মিজানুর রহমান ও রাশেদ ঢাকা মেডিকেলে চিকিত্সাধীন। এদের মধ্যে রুহুল আমিন, মিজানুর রহমান ও আব্বাস আলী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হল এবং আব্বাস আলী সলিমুল্লাহ হলের ছাত্র। তারা সবাই নিয়মিত শিক্ষার্থী বলে জানা যায়।
অন্যদিকে দুপুরে ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী একাডেমিক কার্যক্রমের জন্য প্রশাসনিক ভবনে গেলে ছাত্রলীগ তাদের বিভিন্ন কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী সমর্থক শিক্ষকরা জানতে পেরে ভিসির সঙ্গে সাক্ষাত্ করে অবরুদ্ধ ছাত্রদের উদ্ধার করতে বলেন। পরে ভিসি প্রক্টরকে পাঠিয়ে সার্টিফিকেট শাখার ৩০৮ নম্বর কক্ষ ও পরিবহন শাখার এক নম্বর কক্ষ থেকে পাঁচ ছাত্রদল কর্মীকে উদ্ধার করেন। তারা হচ্ছে শাফায়াত রিপন (জসীমউদদীন হল), আশিক (জিয়া হল), রাজু, ওয়াহিদ ও ইমদাদ হোসেন (সূর্যসেন হল)। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার জন্য বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আর আমি ছাত্রদলের জন্য অপেক্ষা করব। তবে যেহেতু সৌজন্য সাক্ষাত্, তাই আগে থেকে বলে এলেই ভালো হয়। হামলা সম্পর্কে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল রুল অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পদে থাকার অধিকার হারিয়েছে ভিসি—ছাত্রদল : নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা দেয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। ভিসির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ বর্জন করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল অভিযোগ করেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের সহাবস্থান ও শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে না পারার কারণে ভিসি তার পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছেন। সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের সভাপতি আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল বলেন, গত ৩ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। রেওয়াজ অনুযায়ী আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবগঠিত ছাত্রদল কমিটি ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা ভিসির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় চাইলে তিনি সোমবার দুপুর ২টায় আমাদের সময় দেন। সে অনুযায়ী ভিসির সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের সহায়তায় অস্ত্রধারী ছাত্রলীগ ক্যাডাররা হামলা চালায়। এতে অর্ধশতাধিক ছাত্রদল কর্মী আহত হয়।
জুয়েল বলেন, গত তিন বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রদলকে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। বর্তমানে ভিসির প্রত্যক্ষ মদতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ভিসির বাস ভবন, মল চত্বরসহ প্রতিটি প্রবেশ পথে চাপাতি, রামদা ও লাঠি নিয়ে পাহারা দিচ্ছে। পুলিশ তাদের সহযোগিতা করছে। সকালে এ ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অনেককে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তাদের খুঁজে বের করে হামলা করা হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, এ ঘটনার মধ্য দিয়ে ভিসি ছাত্র সমাজের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছেন। আমরা তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ বর্জন করছি। একই সঙ্গে হামলাকারীদের শাস্তি ও গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দাবি করছি।
জুয়েল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নিশ্চিত ও স্বাভাবিক রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে না দেন, তাহলে এর প্রতিবাদে ছাত্রদল খুব শিগগিরই কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
ভিসি অপেক্ষা করলেও ছাত্রদলের কেউ সৌজন্য সাক্ষাত্ করতে আসেনি ভিসির এই বক্তব্যের জবাবে বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি এমপি বলেন, তিনি যে ঘটনা ঘটিয়েছেন তার পরও এ ধরনের বক্তব্য তার মুখে সাজে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সদ্য বিদায়ী ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রদলের নতুন কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব আহসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মহিদুল হাসান হিরু, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ খান পারভেজ, মহানগর উত্তরের সভাপতি আবুল মনসুর খান দীপক, দক্ষিণের সভাপতি ইসহাক সরকারসহ বিপুলসংখ্যক ছাত্রদল নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
নিরাপত্তার নামে ছাত্রদলকে মারধরের আয়োজন : বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ছাত্রলীগ ছাত্রদল কর্মীদের ওপর হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী সমর্থক সাদা দলের শিক্ষকরা। গতকাল সাদা দলের আহ্বায়ক ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে শিক্ষকরা বলেন, পূর্বপরিকল্পিতভাবে বেশ কয়েকজন ছাত্রের ওপর যে হামলা করা হয়েছে, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আমরা উদ্বেগ, ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিরাপত্তার নামে ছাত্রলীগ দিয়ে ছাত্রদলকে পেটানোর আয়োজন করেছে। কারণ সাক্ষাতের সময় দিয়ে অভ্যাগতদের নিরাপত্তা বিধান করার দায়িত্ব অবশ্যই ভিসির ওপর বর্তায়।
আমরা এ জঘন্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। আমরা চাই ক্যাম্পাসে সব ছাত্রছাত্রীর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন