ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দ্বারা ভস্মীভূত সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসের সামনে দাঁড়িয়ে ক’দিন আগে যখন অসহায় মানুষের মতো ভেউ ভেউ করে কাঁদলেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ, সেদিনই বোঝা গেল বঙ্গবন্ধুর সৈনিক আওয়ামী লীগের সোনার ছেলেরা আর মানুষ নেই, এরা একেকজন পরিণত হয়েছে এক একটি দানবে। ফ্রাঙ্কেস্টাইনের দানবে। শিক্ষক, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তো দূরের কথা, খোদ মন্ত্রীরা পর্যন্ত এদের সামনে নিরূপায় পুতুল এবং কম্পমান। এরা এতোটাই বেপরোয়া, অপ্রতিরোধ্য এবং নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে যে, সন্ত্রাস, খুন, ধর্ষণ, শিক্ষক লাঞ্ছনা পরিণত হয়েছে তাদের কাছে ডালভাতে। শিক্ষাঙ্গনগুলোতে বন্ধ হয়ে গেছে শিক্ষা কার্যক্রম। সেগুলো এখন পরিণত হয়েছে এক একটি কুরুক্ষেত্রে। পড়াশোনা শিকায় তুলে নিয়োগ বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখল বাণিজ্য, ভর্তি বাণিজ্য, হল দখল কর্মকাণ্ডে এরা ক্ষুধার্ত প্রাণীর মতো সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। আর প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ঘটছে তাদের আগ্রাসী তাণ্ডব। ঝরছে রক্ত। ছাই হয়ে যাচ্ছে আমাদের প্রতিষ্ঠান। আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যত্। শাসকদের আশ্রয় ও প্রশ্রয়ে লালিত পালিত এই সংঘ মাঝে সামান্য কিছু বিরতি দিয়ে আবারও স্বমূর্তি ধারণ করে উদ্যত হয়েছে সামগ্রিক সংহারে। আর অস্থিতিশীল ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীনতার চরম আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন সাধারণ এবং নিরপরাধ ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকরা।
গত শুক্রবার গায়ের জোরে দোকানির কাছ থেকে ফ্রি সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হল ও জিয়াউর রহমান হলের ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ঘটিয়েছে তুলকালাম কাণ্ড। ভাংচুর করেছে দোকানপাট। নিজেরা নিজেদের পিটিয়ে আহত করেছে। হাসপাতালে পাঠিয়েছে ১০ জনকে। এর আগে ইডেন কলেজের সিট বরাদ্দকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ কর্মীরা অবরুদ্ধ করে রাখে অধ্যক্ষকে। চুলাচুলি ও মারামারিতে ক্যাম্পাসের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীতে। একই রাতে তেজগাঁও পলিটেকনিক কলেজের ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের সঙ্গে স্থানীয় পরিবহন শ্রমিকের বাধে সংঘর্ষ। ঘটে রক্তপাত ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা। ভাংচুরের শিকার হয় ২৫টি গাড়ি। দেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বুয়েটেরও বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা। দলবাজ ভিসি ও প্রোভিসির অপসারণ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ওপর দফায় দফায় হামলা করে জঘন্য কীর্তি স্থাপন করেছে সরকারের এই ঠাঙারে বাহিনী। নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা অত্যন্ত ঘৃণ্য নজির স্থাপন করেছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে। জ্বালাও পোড়াও, ভাংচুর, বোমাবাজি গোলাগুলিতে এখন প্রকম্পিত ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মাঠের ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে সিলেটের এমসি কলেজের ঐতিহ্যবাহী ছাত্রাবাস।
ছাত্রলীগের এসব রক্তহিম করা কর্মকাণ্ড যে কেবল নিজেদের মধ্যেই আবর্তিত তা নয়। এদের সন্ত্রাস ও নির্মম অপকর্মের জ্বালায় অতিষ্ঠ বিরোধী মতের সব ছাত্র সংগঠন এখন ক্যাম্পাস ছাড়া। বিরোধীরা ক্যাম্পাসে গেলেই সশস্ত্র হামলা চালাচ্ছে ছাত্রলীগ। গত ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের সঙ্গে দেখা করতে গেলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর যেভাবে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা, তার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। একই রকম ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসও হয়েছে কলুষিত।
এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগ যেসব অপকর্ম করেছে তার খতিয়ান খুবই দীর্ঘ। বিগত পৌনে চার বছরে ছাত্রলীগের এসব সন্ত্রাস ও সংঘর্ষের কারণে ঝরে গেছে ২৩টি তরতাজা প্রাণ। আহত হয়েছে ৮ হাজার শিক্ষার্থী। তাদের নিয়ন্ত্রণহীন সন্ত্রাস ও অন্যায় কর্মকাণ্ডে দেশের প্রায় ৬০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্ধারিত সময়ে বন্ধ হয়ে গেছে। ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রামসহ সব বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই তাদের অস্ত্রাঘাতে মৃত্যুবরণ করেছে মেধাবী ছাত্ররা। সব মিলিয়ে চরম দুরবস্থায় আজ পতিত দেশের শিক্ষাঙ্গন।
এমনিতেই সরকারের অবস্থা লেজেগোবরে। তাদের চোয়ালবাজি এখন পর্যন্ত জারি থাকলেও এ দৃশ্য পরিষ্কার, স্তূপ স্তূপ ব্যর্থতার নিচে চাপা পড়ে ত্রাহি মধুসূদন দশা তাদের। এই দশাকে অতি দ্রুত মরণদশায় পরিণত করার জন্যই যেন মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে ছাত্রলীগ। সরকার এদের মুখে লাগাম পরানোর বদলে বেশ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করছে তাবত্ ধ্বংসযজ্ঞ। এ কারণে সরকারদলীয় অনেক নেতা-এমপি নিজ নিজ ভবিষ্যত্ ভেবে আঁতকে উঠলেও সরকার রয়েছে নির্বিকার। সরকারের এ নির্বিকারত্ব ও সস্নেহ প্রশ্রয় ছাত্রলীগকে করেছে আরও বিধ্বংসী এবং বেপরোয়া। লোক দেখানো তদন্ত করে দায়িত্ব শেষ করেছে। তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সর্বক্ষেত্রেই অনীহা সরকারের ভাবমূর্তিকেও করেছে আরও কালিমামলিন। একটি ঘটনারও সঠিক তদন্ত বা বিচার করেনি সরকার। অপরাধীদের পাকড়াও করে আইনের হাতে সোপর্দ করার বদলে সরকার উদোর পিণ্ডি চাপাতে চেয়েছে বুধোর ঘাড়ে। ফলে সূর্যের পাশাপাশি বালুকণার তাপে পথে বের হওয়া দায় হয়ে পড়েছে। দেশের কিংবা জনগণের স্বার্থে না হোক, সরকারের নিজের স্বার্থেই এই ফ্রাঙ্কেস্টাইনের দানবদের এখন শৃঙ্খলিত করা অতি জরুরি। নইলে এই বিষফোঁড়া ডেকে আনবে সমূহ বিপর্যয়। তখন কেঁদেও কূল পাবে না ক্ষমতাসীনরা।
গত শুক্রবার গায়ের জোরে দোকানির কাছ থেকে ফ্রি সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হল ও জিয়াউর রহমান হলের ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ঘটিয়েছে তুলকালাম কাণ্ড। ভাংচুর করেছে দোকানপাট। নিজেরা নিজেদের পিটিয়ে আহত করেছে। হাসপাতালে পাঠিয়েছে ১০ জনকে। এর আগে ইডেন কলেজের সিট বরাদ্দকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ কর্মীরা অবরুদ্ধ করে রাখে অধ্যক্ষকে। চুলাচুলি ও মারামারিতে ক্যাম্পাসের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীতে। একই রাতে তেজগাঁও পলিটেকনিক কলেজের ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের সঙ্গে স্থানীয় পরিবহন শ্রমিকের বাধে সংঘর্ষ। ঘটে রক্তপাত ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা। ভাংচুরের শিকার হয় ২৫টি গাড়ি। দেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বুয়েটেরও বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা। দলবাজ ভিসি ও প্রোভিসির অপসারণ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ওপর দফায় দফায় হামলা করে জঘন্য কীর্তি স্থাপন করেছে সরকারের এই ঠাঙারে বাহিনী। নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা অত্যন্ত ঘৃণ্য নজির স্থাপন করেছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে। জ্বালাও পোড়াও, ভাংচুর, বোমাবাজি গোলাগুলিতে এখন প্রকম্পিত ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মাঠের ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে সিলেটের এমসি কলেজের ঐতিহ্যবাহী ছাত্রাবাস।
ছাত্রলীগের এসব রক্তহিম করা কর্মকাণ্ড যে কেবল নিজেদের মধ্যেই আবর্তিত তা নয়। এদের সন্ত্রাস ও নির্মম অপকর্মের জ্বালায় অতিষ্ঠ বিরোধী মতের সব ছাত্র সংগঠন এখন ক্যাম্পাস ছাড়া। বিরোধীরা ক্যাম্পাসে গেলেই সশস্ত্র হামলা চালাচ্ছে ছাত্রলীগ। গত ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের সঙ্গে দেখা করতে গেলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর যেভাবে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা, তার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। একই রকম ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসও হয়েছে কলুষিত।
এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগ যেসব অপকর্ম করেছে তার খতিয়ান খুবই দীর্ঘ। বিগত পৌনে চার বছরে ছাত্রলীগের এসব সন্ত্রাস ও সংঘর্ষের কারণে ঝরে গেছে ২৩টি তরতাজা প্রাণ। আহত হয়েছে ৮ হাজার শিক্ষার্থী। তাদের নিয়ন্ত্রণহীন সন্ত্রাস ও অন্যায় কর্মকাণ্ডে দেশের প্রায় ৬০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্ধারিত সময়ে বন্ধ হয়ে গেছে। ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রামসহ সব বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই তাদের অস্ত্রাঘাতে মৃত্যুবরণ করেছে মেধাবী ছাত্ররা। সব মিলিয়ে চরম দুরবস্থায় আজ পতিত দেশের শিক্ষাঙ্গন।
এমনিতেই সরকারের অবস্থা লেজেগোবরে। তাদের চোয়ালবাজি এখন পর্যন্ত জারি থাকলেও এ দৃশ্য পরিষ্কার, স্তূপ স্তূপ ব্যর্থতার নিচে চাপা পড়ে ত্রাহি মধুসূদন দশা তাদের। এই দশাকে অতি দ্রুত মরণদশায় পরিণত করার জন্যই যেন মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে ছাত্রলীগ। সরকার এদের মুখে লাগাম পরানোর বদলে বেশ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করছে তাবত্ ধ্বংসযজ্ঞ। এ কারণে সরকারদলীয় অনেক নেতা-এমপি নিজ নিজ ভবিষ্যত্ ভেবে আঁতকে উঠলেও সরকার রয়েছে নির্বিকার। সরকারের এ নির্বিকারত্ব ও সস্নেহ প্রশ্রয় ছাত্রলীগকে করেছে আরও বিধ্বংসী এবং বেপরোয়া। লোক দেখানো তদন্ত করে দায়িত্ব শেষ করেছে। তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সর্বক্ষেত্রেই অনীহা সরকারের ভাবমূর্তিকেও করেছে আরও কালিমামলিন। একটি ঘটনারও সঠিক তদন্ত বা বিচার করেনি সরকার। অপরাধীদের পাকড়াও করে আইনের হাতে সোপর্দ করার বদলে সরকার উদোর পিণ্ডি চাপাতে চেয়েছে বুধোর ঘাড়ে। ফলে সূর্যের পাশাপাশি বালুকণার তাপে পথে বের হওয়া দায় হয়ে পড়েছে। দেশের কিংবা জনগণের স্বার্থে না হোক, সরকারের নিজের স্বার্থেই এই ফ্রাঙ্কেস্টাইনের দানবদের এখন শৃঙ্খলিত করা অতি জরুরি। নইলে এই বিষফোঁড়া ডেকে আনবে সমূহ বিপর্যয়। তখন কেঁদেও কূল পাবে না ক্ষমতাসীনরা।