স্টাফ রিপোর্টার: পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর কাছ থেকে বিএনপি’র বিরুদ্ধে অর্থ নেয়ার ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল নয়াপল্টনে কৃষক দলের এক আলোচনায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, আওয়ামী লীগের এ বক্তব্য মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আইএসআই-এর ফান্ড সম্পর্কে সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এ সংক্রান্ত খবর কেবল ভিত্তিহীনই নয়, ষড়যন্ত্রমূলকও বটে। তাই প্রধানমন্ত্রীকে বলবো- দয়া করে এই রকম মিথ্যাচারের জন্য দুঃখপ্রকাশ করে জনগণের কাছে ক্ষমা চান। নইলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো। কারণ সরকারের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, নেতারা বার বার মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। আমরা বারবার এই অভিযোগ খণ্ডন করলেও প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন জনসভায় ও সংসদে একই কোরাস গেয়ে যাচ্ছেন। উল্লেখ্য, পাকিস্তানের এক সাবেক শীর্ষস্থানীয় সেনা কর্মকর্তার হলফমানার সূত্র ধরে কয়েকটি বিদেশী পত্রিকা বিএনপি’র বিরুদ্ধে আইএসআই-এর কাছ থেকে অর্থগ্রহণের সংবাদ পরিবেশন করে। সরকারপক্ষ এ নিয়ে বিএনপি’র কড়া সমালোচনা করলে এ নিয়ে দুইপক্ষের বাগ্যুদ্ধ জমে ওঠে। শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানের কাছে সে হলফনামার প্রতিলিপি চাইলে সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলে, সংবাদটি কেবল ভিত্তিহীনই নয়, বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ভাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিনষ্টের চেষ্টারও একটি অংশ। বিএনপি মহাসচিব বলেন, যার হলফনামা নিয়ে ওই অভিযোগ তোলা হয়েছে সে আসাদ দুররানিও বাংলাদেশের দৈনিক নয়া দিগন্ত ও সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকায় দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের সাক্ষ্যে তিনি কোথাও বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল বা বিএনপিকে অর্থ দেয়ার কথা বলেননি। তিনি ওই মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনের জন্য বাংলাদেশে দৈনিক প্রথম আলো, দুবাইয়ের খালিজ টাইমস ও ভারতের ইন্ডিয়া টুডেকে দায়ী করেন। মির্জা আলমগীর বলেন, আমরা এ ব্যাপারে আজ প্রথম আলোতে প্রতিবাদ পাঠাবো। তাদের বলবো- আপনারা না জেনে যাচাই না করে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করেছেন। ভবিষ্যতে এ রকম মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকবেন। তিনি গণমাধ্যমের উদ্দেশে বলেন, সংবাদপত্রে কোন সংবাদ প্রকাশের আগে যাচাই করে নেয়া উচিত। এমন কোন সংবাদ প্রকাশ করা উচিত নয়, যাতে দেশে কোন সংঘাত বা সমস্যার সৃষ্টি হয়। মির্জা আলমগীর বলেন, হিটলারও নির্বাচিত নেতা ছিলেন, আওয়ামী লীগও একটি নির্বাচিত সরকার। নির্বাচিত হয়ে তারা যা করছেন, তা হিটলারকেও হার মানিয়েছে। শেখ মুজিবকে আমরা খাটো করতে চাই না। তাকে খাটো করছে আওয়ামী লীগই। কারণ শেখ মুজিবকে বিএনপি কখনও কটাক্ষ করে কথা বলে না। তাকে আমরাও শ্রদ্ধা করি। তিনি বলেন, ২৫শে মার্চ কালো রাতে যখন পাকিস্তানিরা ক্র্যাকডাউন করে, গণহত্যা শুরু হয় তখন শেখ মুজিবের পিএস একটা ভাষণ লিখে নিয়ে যান বঙ্গবন্ধুর কাছে। তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, এ ভাষণ দেয়া যাবে না। তাতে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা হবে। কিন্তু জিয়াউর রহমান ঠিকই সকল ভয়ভীতি উপেক্ষা করে, স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে সকল মানুষকে যুদ্ধের আহ্বান জানিয়েছিলেন। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে মহানগর বিএনপি কার্যালয়ের এ আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, মহানগর সদস্য সচিব আবদুস সালাম ও মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা বক্তব্য দেন।মানব জমিন |
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন