বুধবার, ২১ মার্চ, ২০১২

ক্রিকেটীয় অশিষ্টাচার!



ঢাকা : চলতি এশিয়াকাপ উপলক্ষে গত সোমবার রাতে এশিয়া ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) যৌথ আয়োজনে রাজধানীর রূপসীবাংলা হোটেলে এক ভোজসভার আয়োজন করা হয়। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সে অনুষ্ঠানে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কেউ তাতে উপস্থিত ছিলেন না। বিষয়টি অনুষ্ঠানে উপিস্থিত সবাইকে হতবাক করেছে। মোট কথা এটা সবার কাছে একটু দৃষ্টিকটুই ঠেকেছে।
অথচ এশিয়া কাপে অংশ নেওয়া বাকি সব দলের সদস্য এবং তাদের বোর্ড মেম্বাররা সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ভারতীয়দের এই অনুপস্থিতিকে অনেকে একধরনের বয়কট হিসেবেই দেখছেন। কারণ ভারত-বাংলাদেশ ক্রিকেটীয় সম্পর্কের টানাপড়েন এখন আরো কারো অজানা নয়। সেই সঙ্গে বিসিবি প্রেসিডেন্ট মোস্তফা কামালের ভূমিকায় সন্তুষ্ট নয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই।

বিশেষ করে গত বছর হংকংয়ে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রক্রিয়া চক্রাকারে করার পক্ষে ভোট দেওয়ায় কামালের ওপর ক্ষুব্ধ হয় বিসিসিআই। বিসিসিআই এই ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল।
সুতরাং বিসিবি সভাপতি কামালের ওপর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড এবং এর সভাপতি এন শ্রীনিবাসনের অসন্তোষের বিষয়টি এখানে বেশ পরিষ্কার। আর সে কারণেই অত্যন্ত অশোভন হওয়া সত্ত্বেও বিসিবির ভোজসভায় অনুপস্থিত থেকে নিকটতম প্রতিবেশী বাংলাদেশের প্রতি একটি কঠোর বার্তাই পৌঁছে দিল বিসিসিআই।
গত রোববার ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দেখার জন্য অন্যরা সবাই ঢাকায় এসেছিলেন। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট জাকা আশরাফ এবং আইসিসি’র প্রধান নির্বাহী হারুন লরগাত রূপসী বাংলার ওই ভোজসভায় উপস্থিত ছিলেন। আর শ্রীলঙ্কার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন বোর্ডের সহকারী সম্পাদক হিরানাথা পেরেরা। আর শ্রীলঙ্কা বোর্ডের প্রেসিডেন্ট উপালি ধর্মদাসা আগামী ২২ মার্চ ফাইনাল ম্যাচের সময় উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ চলাকালে বিসিসিআই’র কর্মকর্তারা ছিলেন চেন্নাইয়ে। তামিলনাড়ুর ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন কর্মকর্তাদের একটি অনুষ্ঠানে নাকি তারা ছিলেন আর ওই কর্মকর্তারা বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট এন শ্রীনিবাসনের খুব কাছের লোক।
এ-ও জানা গেছে, ২২ মার্চ ফাইনাল ম্যাচের দিনও তামিলনাড়ু রাজ্যের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক এবং কোচের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হওয়ার কথা রয়েছে তাদের।
ভোজসভায় অনুপস্থিতির ব্যাপারে ভারতীয় ক্রিকেট দলের ম্যানেজার অরিন্দম গাঙ্গুলি বলেছেন, ‘আমি জানি না কেন কেউ সেদিন উপস্থিত হলেন না।’
অপরদিকে, এসিসি’র (এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল) একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন, `সবাইকে আমন্ত্রণ করা  হয়েছিল।`
তবে যা-ই হোক বাংলাদেশ-ভারত পুরনো ক্রিকেটীয় দ্বান্দ্বিক সম্পর্কেরই ফল হতে পারে এটি। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে বিসিবি প্রেসিডেন্ট মোস্তফা কামালের ভারতের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার ঘটনা ।
তবে একই রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে শতকের শতক হাঁকানো ক্রিকেট জিনিয়াস লিটল মাস্টার শচীন টেণ্ডুলকার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে সবান্ধব উপস্থিত হন। এ ঘটনা দু’দেশের ক্রিকেটীয় ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে যে আনন্দদায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এর বিপরীতে রূপসী বাংলায় ভারতীয়দের গরহাজিরার থাকার ঘটনা ক্রিকেটীয় সংস্কৃতির জন্য ছিল খুবই অস্বস্তিকর এক নজির। কারণ, বলা হয়ে থাকে- ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা। আর সে সূত্রে এ খেলার সঙ্গে জড়িতরাও ভদ্রলোকের আচরণ করবেন- এটা আশা করা তো আর অন্যায় নয়।
পাঠকের মন্তব্য
You must be logged in to leave a commen

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads