মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০১৩

আলোচনার নতুন রঙ্গ


ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী : 
যেখানে বিরোধী দল নির্মূলের জন্য সরকার উঠে-পড়ে লেগেছে, সেখানে হুট করেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বললেন যে, সরকার বিরোধী দলের সঙ্গে যে কোনো স্থানে যে কোনো সময়ে আলোচনার জন্য প্রস্ত্তত আছে। সরকার শাহবাগে যে নাটক সাজিয়ে বসেছিলেন, তাতে এখন ভাটার টান। নেতৃত্ব ও প্রাপ্ত অর্থের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে এখন সেখানে টানাপোড়েন চলছে। শাহবাগে বিপুল হাওয়া দিয়েও আর ফুলিয়ে রাখা যাচ্ছে না। সেখানে এখন প্রাত্যহিক নাচগানের আসর বসছে। কিছু উৎসুক লোক ভিড় করছেন। নানা দলের নানা শ্লোগান উঠছে। এক-দেড়শ’ লোক সে নাচ-গান দেখছেন। শাহবাগীরা জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক বিশাল স্থায়ী মঞ্চ স্থাপন করেছে। গত কয়েকদিন শাহবাগের রাস্তা খুলে দেয়া হয়েছে। এক মাসেরও অধিক সময় ধরে শাহবাগের মতো গুরচত্বপূর্ণ মোড় বন্ধ রাখা হয়। এতে গোটা ঢাকা শহর প্রায় অকেজো স্থবির হয়ে পড়ে। পিজি ও বারডেম হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে পড়ে। লক্ষ লক্ষ রোগী বঞ্চিত হয় চিকিৎসা সেবা থেকে। সেদিকে না সরকার না আন্দোলনকারী কেউই মনোযোগ দেয়ার প্রযোজন অনুভব করেনি। ফলে এ দু’টি হাসপাতাল বিরান হয়ে যায়। আর অভিযোগ উঠেছে যে, সেসব বিরান কক্ষগুলো নাকি অসামাজিক কাজের আখড়ায় পরিণত হয়ে পড়েছিল। শাহবাগের আন্দোলন এখন ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে সারাদেশে।
সরকারবিরোধী দলকে যেখানে রাস্তায়ই দাঁড়াতে দিচ্ছে না, বিরোধী রাজনীতিকদের বুক বরাবর গুলী করছে পুলিশ, সেখানে শাহবাগীদের এই জজবা জারি রাখতে সরকার করছে না হেন কোনো জামাই আদর নেই। তথাকথিত এই আন্দোলন জারি রাখতে সরকার এর নেতাদের একবারে ভিআইপি বানিয়ে দিয়েছে। তাদের নিরাপত্তার জন্য সরকারি খরচে দেওয়া হয়েছে দেহরক্ষী বা গানম্যান। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য যেখানে পুলিশ দেওয়া যাচ্ছে না, সেখানে শাহবাগের নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে শ’য়ে শ’য়ে পুলিশ। নিরাপত্তা আর্চ বসানো হয়েছে। বসানো হয়েছে ডজন ডজন সিসি ক্যামেরা। দেয়া হচ্ছে খাবার, পানি, ভ্রাম্যমাণ টয়লেট সুবিধা আর তরচণ-তরচণীদের নানা অজাচারের সুযোগ। পুলিশের ক্যামেরায় সেসব অজাচার ধরা পড়েছিল। ফলে ক্যামেরার দায়িত্বে নিয়োজিত ঐ পুলিশ খুন হয়েছে। এই খুন নিয়ে সরকার টুঁ শব্দটিও করছে না। অন্তত এই একটি ক্ষেত্রে সরকার এই হত্যাকান্ডের জন্য জামায়াত-শিবির বা বিএনপিকে দায়ী করেনি। কোথায়ও কোনো উচ্চবাচ্যও নেই।
এদিকে দেড় শ’তাধিক মানুষ হত্যার নিষ্ঠুরতাকে সরকার শাক দিয়ে ঢাকার চেষ্টা তো আছেই। নারায়ণগঞ্জের কিশোর ত্বকি হত্যা নিয়েও আমরা নানা দোষারোপের ঘটনা ক’দিন ধরে দেখছি। নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাবিবর ছেলে ত্বকি। এই ত্বকির বাবা কবরী সারোয়ার এমপি’র সমর্থক। শুরচতে ঘোষণা করে দেয়া হলো যে, ত্বকি হত্যার জন্য জামায়াত-শিবিরই দায়ী। তারপর নারায়ণগঞ্জে হরতাল ডাকা হলো। সে হরতালে ট্রেন আটকে মিছিল করা হলো। সরকার ঘটা করে সে আয়োজন হতে দিল। জামায়াতের বিরচদ্ধে আর এক দফা বিষোদ্গার হলো। মানববন্ধন হলো। কিন্তু রফিউর রাবিব একবারের জন্যও বললেন না যে, তার ছেলেকে জামায়াত-শিবিরের লোকেরা হত্যা করেছে। বরং তিনি বললেন যে, প্রভাবশালী মহলটি নারায়ণগঞ্জে একের পর এক হত্যাকান্ড চালিয়ে আসছে, তারাই তার ছেলেকে হত্যা করেছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি সারাহ বেগম কবরী বলেছেন, বিশেষ ঐ মহলটির প্রতি সরকারের ওপরের মহলের মদত রয়েছে। তারা বলেন, এই বিশেষ মহল কারা নারায়ণগঞ্জবাসী তা ভালো করেই জানেন। এমপি কবরী বলেন, ‘গার্মেন্ট ব্যবসায়ী আশিকুর রহমান আশিক খুন হওয়ার পর আমি বিষয়টি আইন-শৃংখলা কমিটিতে উত্থাপন করেছিলাম। তখন এমপি নাসিম ওসমান বলেছিলেন, দু’ চারটি খুন হতেই পারে। ঐ সভায় জেলাপ্রশাসক বা পুলিশ সুপার কেউই আমার কথার গুরচত্ব দেননি। আশিক হত্যার জট খুললে এমনটি হতো না।’ হ্যাঁ, নারায়ণগঞ্জবাসী সত্যি জানেন, আসল খুনী কারা।
একই ধরনের ঘটনা ঘটলো খুলনার কয়রা উপজেলায়। সেখানে মধ্যরাতে সাদা পোশাকে দশ-বারোজনের একটি পুলিশ দল নাকি আসামী ধরতে গিয়েছিল। সেসব আসামী নাকি ছিল জামায়াত-শিবিরের কর্মী। তাদের দেখে ডাকাত ভেবে গোটা গ্রামের লোক একজোট হয়ে ঘেরাও করে ফেলে। সেখানে একজন পুলিশ সদস্য পায়ে আঘাত পান এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে তিনি মারা যান। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হলো জামায়াত-শিবিরের লোকেরা পুলিশকে ঘেরাও করে গুলি করেছে। কিন্তু গোটা গ্রামের মানুষই নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই একত্র হয়ে সাদা পোশাকধারী পুলিশদের ঘেরাও করেছিল। যদি গ্রেফতারের জন্যই গিয়ে থাকেন, তাহলে সাদা পোশাকের তো প্রয়োজন ছিল না। তারা তাদের ইউনিফর্ম পরেও যেতে পারতেন। তাহলে সম্ভবত এই বিপত্তি এড়ানো যেত। তাছাড়া পুলিশের গ্রেফতার বাণিজ্য এখন সর্বজনবিদিত। প্রায় প্রতিদিন দেশের পত্রপত্রিকায় এই বাণিজ্য নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে। তাই সাদা পোশাকধারীদের মূল লক্ষ্য কী ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। কিন্তু এই মুহূর্তে সবচেয়ে সহজ কাজ হলো, খুন-খারাবি যাই হোক না কেন, জামায়াতের ওপর দোষ চাপিয়ে দিলেই সব সমস্যার সমাধান। এই ধারায় দেশ এগুচ্ছে। আর সরকার একের পর এক তার রঙ্গ-তামাশার পথ খুঁজে বের করছে।
তা সত্ত্বেও শাহবাগের আন্দোলন আর বোধকরি জিইয়ে রাখা যাচ্ছে না। যদিও সরকার আশা করছে যে, এই তামাশা তারা নির্বাচন পর্যন্ত ধরে রাখবে। এখন মনে হচ্ছে, সরকার একটা বিকল্প পথও খোলা রাখতে চাইছে। কিংবা আর এক নতুন তামাশা হাজির করছে। এখনকার তামাশার নাম ‘আলোচনায় প্রস্ত্তত’। কিন্তু আলোচনাটা কী নিয়ে। বিরোধী দলের পক্ষ থেকে তো সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে, আগে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনুন, তারপর আলোচনা হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনার দাবি বিরোধী দলের যেমন, তেমনি একই দাবি করেছে মহাজোট সরকারের অনেক সঙ্গীও। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে সে দাবি করেছে সারা বিশ্ব। কিন্তু সেদিকে না গিয়ে সরকার একটা মজা করার জন্য এমন প্রস্তাব দিয়েছে। আমাদের ধারণা, সরকার মুখে শেখ ফরিদের কথা বললেও তাদের বগলে নিশ্চয়ই ইট আছে। এই প্রস্তাবের মাধ্যমে সরকার পৃথিবীকে জানান দেবে যে, তারা রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য বিরোধীদলকে আলোচনার প্রস্তাব দিল, কিন্তু বিরোধী দল যদি আলোচনায় বসতে না চায়, তা হলে তাদের কী-ই বা আর করার আছে। সুতরাং তারা এককভাবে নির্বাচন করতে বাধ্য হচ্ছে। ফন্দিটা নিতান্ত মন্দ নয়।
এ লেখাটা লিখতে বসেছিলাম সোমবার সকালে। কিন্তু আমার আশঙ্কা সত্য প্রমাণিত হতে পরদিন পর্যন্ত দেরি করতে হলো না। বিকেলেই আওয়ামী লীগের বগলের ইট আমরা দেখতে পেলাম। বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন আঠারো দলীয় জোটের সমাবেশ ছিল সোমবার। অফিসে গিয়ে টিভি খুলে দিতেই চমকে উঠলাম। একাধিক টিভি চ্যানেল সে দৃশ্য তাদের স্টেশনে সরাসরি প্রচার করছিল। প্রথমে পুলিশ বিএনপি’র সমাবেশে গুলি কাঁদানে গ্যাস নিয়ে হামলা চালালো। তাতে পন্ড হয়ে গেল সমাবেশ। তারপর দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে এলোপাতাড়ি গুলী চালাতে শুরচ করলো। পুলিশ এ কাজ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ ছাড়া যে করতে পারেনি, সেটি বোধকরি কোনো পাগলেও বলবে না। টিভি দেখতে দেখতে ভাবছিলাম, বোধকরি এই পর্যন্তই। কিন্তু অচিরেই আমাদের সে ধারণাও মিথ্যা প্রমাণিত হলো।
সরকার যখন বিএনপি’র সমাবেশ স্থলে বৃষ্টির মতো গুলী চালাতে শুরচ করলো, তখন সকল নেতা আশ্রয় নিয়েছিলেন বিএনপি অফিসের ভেতরে। তারা সংখ্যায় দুই শ’র কম নন। পুলিশ বিএনপি অফিসের ভেতরে ঢুকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরচল ইসলাম আলমগীর, বিরোধী দলের চীফ হুইপ জয়নাল আবদীন ফারচক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ঢাকা মহানগরীর আহবায়ক সাদেক হোসেন খোকা, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আমানউল­vহ আমান প্রমুখ নেতার সকলকে আটক করা হয়। পুলিশ একেবারে ঘোষণা দিয়ে বলে যে, এখানে যারা আছে তাদের সকলকে আটক করা হবে। তারপর তারা বিএনপি অফিসের বিভিন্ন রচম ভেঙে নেতাদের গ্রেফতার করে। এরপর তারা এক অদ্ভুত গ্রাম্য নাটক সাজায়। সে নাটক হলো বিএনপি অফিসের ভেতর থেকে ককটেল উদ্ধার। এ নাটক কৌতূহলোদ্দীপক। ধারণা করি, বাংলাদেশের একজন মানুষও সরকারের এ নাটকের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেনি।
এগুলো পুলিশের বস্তাপচা কৌশল। আমরা বরাবরই তা দেখে আসছি, পুলিশ যাকে ধরতে চায়, তার অফিসে বাসায় কিংবা পকেটে অস্ত্র বা মাদক গুঁজে দেয়া হয়। আমরা তো বর্তমান আন্দোলনের সময় এমনও দেখেছি যে, পুলিশ গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির হাতে পেট্রোলের বোতল ধরিয়ে দিচ্ছে। ছোট-বড় একাধিক বোতল হাতে আমরা পুলিশকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি। যাকেই সহযোগী পুলিশরা ধরে আনছে, তার হাতেই সে বোতল গুঁজে দিতে দেখেছি। অর্থাৎ পুলিশ প্রমাণ করার চেষ্টা করবে যে, ঐ অভিযুক্ত ব্যক্তি গাড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়েছে বা আগুন দিতে উদ্যত হয়েছিল। এগুলো গ্রাম্য কৌশল। সে কৌশলের অংশ হিসেবেই পুলিশ যে এই কাজ করেছে, তাতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।
এটি পুলিশের গ্রেফতার বাণিজ্যেরও একটা কৌশল। সে কৌশল যে পুলিশ নিচ্ছে, তা একজন সাধারণ মানুষও এখন বুঝতে পারে। পুলিশ বাহিনীর এই দুর্নীতির পথ যেন সরকারই উন্মোচিত করে দিয়েছে। এক সহযোগী রিপোর্ট করেছে যে, রাতের মধ্যে গ্রেফতারকৃত লোকদের দিয়ে থানা ভরে যায়, সকালে দেখা যায় সব ফাঁকা। রাতের মধ্যে আটককৃতদের পরিবারের কাছ থেকে বিপুল অর্থের বিনিময়ে বেশির ভাগকে ছেড়ে দেয়া হয়। এই কৌশল পুলিশ সরকারের নির্দেশে বিএনপি’র অফিসের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করলো। এর চেয়ে হাস্যকর ব্যাপার বোধকরি সাম্প্রতিককালে পৃথিবীর আর কোথায়ও ঘটেনি।
এখন সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের জবাব কী? তিনি বোধকরি লা-জওয়াব হয়ে গেছেন। ফলে দৃশ্যপটে এক নতুন নেতার আবির্ভাব ঘটেছে। না, আওয়ামী লীগের ফটরফটর মুখপাত্র ছিলেন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ। আওয়ামী লীগের তরফ থেকে যতো অযৌক্তিক ও আজেবাজে কথা তিনি বলেছেন, তাতে তিনি জনগণের চোখে এখন একজন ঘৃণিত ব্যক্তি। সরকারের এরকম সঙ্কটকালে তাই তাকে বুঝি দৃশ্যপটে দেখা গেলো না। বিএনপিকে গালি দেয়ার এমন একটি বিরাট মওকা তার হাতছাড়া হয়ে গেলো। সোমবার দৃশ্যপটে আসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি সাধারণত এসব বিষয় নিয়ে মাথা ঘামান না। বরং কীভাবে বিদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠকেও মন্ত্রী হয়ে তিনি উপস্থিত থাকতে পারেন, এসব নিয়েই ডা. দীপু মনি ব্যস্ত সময় কাটান। বিদেশে গিয়ে তিনি গুরচত্বপূর্ণ লোকদের সঙ্গে ছবি তোলা আর অটোগ্রাফ শিকারে ব্যস্ত থাকেন, সে রিপোর্ট আমরা পড়েছি। তিনি খুব বেশি বেশি ফটরফটর কখনও করেননি। কিন্তু ক’দিন ধরে তাকে আমরা বেশ সরব লক্ষ্য করছি। আর গত সোমবার তিনি আওয়ামী লীগের মুখপাত্রী হিসেবে প্রথম আবির্ভূত হলেন দেখলাম। তিনি সৈয়দ আশরাফের আলোচনার প্রস্তাব ফিরিয়ে নিয়ে বললেন, যারা সন্ত্রাস সৃষ্টি করে তাদের সঙ্গে কোনা আলোচনা নয়।
ফলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যে তিমিরে ছিল, সে তিমিরেই রয়ে গেল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দীন খান আলমগীর সম্পর্কে বেশি কথা না বলাই ভাল। তবু, তিনি বলেছেন, বিএনপিহর সকল লোক ক্রিমিনাল, তাদের বিরচদ্ধে পুলিশ যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তা যথাযথ হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খেয়াল করেছেন কিনা জানি না, গতকাল সংবাদপত্রে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে যে, পুলিশ পরিচয়ে দু’জন লোক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের নবনিযুক্ত প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজের বাসায় জোর করে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। না পেরে শেষে তারা হুমকি দিয়ে চলে গিয়েছে। তারা যদি সত্যি পুলিশ হয়ে থাকে, তবে পুলিশের কাজে বাধা দেয়ায় প্রসিকিউটরের বিরচদ্ধে কি ব্যবস্থা নেবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী? আর তারা যদি পুলিশ না হয়ে থাকে, তা হলে প্রমাণিত হলো যে, পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করার রেওয়াজ এখন চালু হয়ে গেছে। আর তাই খুলনার কয়রায় সাদা পোশাকের যে পুলিশদের বিরচদ্ধে গ্রামবাসী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল, তারা যথার্থ কাজই করেছিল। এই প্রেক্ষিতে বলা যায়, সরকার দেশে যে অবস্থার সৃষ্টি করেছে, তাতে গৃহযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠতে বাধ্য।  আর সে আগুন একবার জ্বলে উঠলে তা থেকে সরকারও রেহাই পাবে না।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads