মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০১৩

রাষ্ট্রঘাতী ষড়যন্ত্র


ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী :
 এই শিরোনামটি লেখার সময় আমার মনে হয়েছে, সত্যি সত্যি কি রাষ্ট্রের বিনাশ ঘটানো সম্ভব? এরকম কথা বললেই এক শ্রেণীর লোক আছে, যারা হই হই রই রই করে উঠবেন : রাষ্ট্র কী এতই সস্তা যে, চাইলেই তার বিনাশ ঘটানো সম্ভব? হয়তো অতোখানি সস্তা নয়। কিন্তু বিনাশ ঘটানো যে সম্ভব, তার ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে ইতিহাসে। খুব বেশি দূর যাওয়ার দরকার নেই। আমরা তাকাতে পারি প্রতিবেশী সিকিম ও মণিপুরের দিকে। ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় এ দুটি দেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তাদের নিজস্ব জাতীয় সংসদ ছিল। পতাকা ছিল। সংবিধান ছিল। কিন্তু এ দুটি রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিলোপের ষড়যন্ত্র করছিল সেখানে ক্ষমতাসীন সরকারেরা। মণিপুরের প্রিয়বাত্তা সরকার আর সিকিমের লেন্দুপ দর্জি সরকার তাদের স্বাধীন রাষ্ট্রকে ভারতের পদতলে সপে দেয়ার ষড়যন্ত্রে শরীক হয়েছিল। সে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমেই এ দুটি রাষ্ট্র ভারত গ্রাস করে নেয়। দুটি ক্ষেত্রেই সেখানকার বিশ্বাসঘাতক সরকার মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
বাংলাদেশেও আজ তেমনই এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্রিয়বাত্তা আর লেন্দুপ দর্জি সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে শেখ হাসিনা সরকার। কিন্তু মণিপুর বা সিকিম যেভাবে দখল করে নিয়েছিল ভারত, ঠিক সেভাবে বাংলাদেশ দখল করে নেয়া সহজ কাজ নয়। দখলের চেয়ে বাংলাদেশর ওপর আধিপত্য বিস্তার তাই সম্ভবত ভারতীয় আধিপত্যবাদীদের মূল লক্ষ্য। বাংলাদেশ কাগজে-কলমে স্বাধীন রাষ্ট্রই থাকবে। কিন্তু ভারত যেভাবে চাইবে, ঠিক সেভাবেই বাংলাদেশকে ব্যবহার করতে পারবে। এক্ষেত্রে ভারতের কৌশল ভিন্ন। একেবারে ভিতর থেকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের যে ভিত্তি, সেটাকে আলগা করে দিতে চাইছে সরকার। একথা মানতেই হবে যে, এদেশের মানুষ মুসলমান প্রধান বলেই তারা ভারতের সঙ্গে নয়, পাকিস্তানের সঙ্গে ভোটের মাধ্যমে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কয়েক দিন আগে বলে বসেছেন যে, আমাদের পূর্বপুরচষরা পাকিস্তানে যোগ দিতে চাননি। তাহলে তারা কি ভারতের অন্তর্ভুক্ত থাকতে চেয়েছিলেন? এ ক্ষেত্রে বলতেই হয় যে, সৈয়দ আশরাফ হয় মূর্খ নয়তো জ্ঞানপাপী। তা না হলে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা তিনি বলতে পারতেন না।
এই সত্য আমাদের মানতেই হবে যে, পাকিস্তান হয়েছিল বলেই আমরা যুদ্ধ করে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি। ভারতের অন্তর্ভুক্ত থাকলে তা কিছুতেই সম্ভব হতো না। আমরা দেখছি যে, ভারতের অনেক রাজ্যই অর্ধশত বছর ধরে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করে আসছে। কিন্তু স্বাধীনতা অর্জন করতে পারেনি। আর বাংলাদেশ যদি হিন্দুপ্রধান অঞ্চল হতো তাহলে পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নও আসতো না। কারণ ভারত বিভক্তির সময় আমরা লক্ষ্য করেছি যে, যখন মুসলিম লীগের আবুল হাশিম আর কংগ্রেসের শরৎ বসু অভিন্ন বাংলা নিয়ে একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য দৌড়-ঝাঁপ করছিলেন। তখন ভারতীয় হিন্দুপ্রধান দলের নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বলছিলেন যে, গোটা ভারত যদি একটি রাষ্ট্র হিসেবেও স্বাধীন হয়, তা হলেও বাংলা ভাগ করতে হবে। এর কারণ ব্যাখ্যা করেছেন জয়া চ্যাটার্জি তার ‘বাংলা ভাগ হলো’ গ্রন্থে। কারণ ছিল, বাংলা ভাষাভাষী জনপদের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষই মুসলমান। বাংলায় যখন নির্বাচন অনুষ্ঠান শুরচ হলো, তখন তাই তাতে সরকার গঠন করল মুসলমানরাই। প্রথমে শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, তারপর এলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। হিন্দু নেতারা আশঙ্কা করছিলেন যে, বাংলা যদি ভাগ না হয়, তাহলে বাংলার শাসন ক্ষমতায় হিন্দুরা কখনও আসীন হতে পারবে না। আর তাই বাংলা যেভাবেই হোক ভাগ করতে হবে। সৈয়দ আশরাফের এসব বিষয়ে কোনো ধারণা আছে বলে মনে হলো না। কিংবা তিনি নতুন প্রজন্মকে এমন ধারণা দিতে চাইলেন যে, আমাদের যে সীমান্ত, তা অত্যন্ত কৃত্রিম, এটা রাখার কোনো প্রয়োজন নেই।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সৈয়দ আশরাফের পিতা সৈয়দ নজরচল ইসলাম ছিলেন বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি। বাংলাদেশকে স্বাধীনতা যুদ্ধে সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যে অস্থায়ী সরকারের সঙ্গে ভারত পাঁচ দফার বশ্যতা চুক্তি স্বাক্ষরে বাধ্য করে। সে চুক্তি ছিল পুরোপুরি বশ্যতা চুক্তি। সৈয়দ আশরাফ আশা করি জানেন যে, ঐ চুক্তিতে সই করে সৈয়দ নজরচল অজ্ঞান হয়ে চেয়ার থেকে পড়ে গিয়েছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমান দেশে ফিরে ঐ চুক্তি মেনে নিতে অস্বীকার করেন। ফলে চুক্তি তার কার্যকারিতা হারায়। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই ভারত সরকার এ দেশকে পুনরায় বশ্যতায় আনার জন্য সে চুক্তির পুনরচজ্জীবন ঘটিয়েছে। বিডিআর বিলুপ্ত করে বিজিবি গঠন তার একটি উদাহরণ। একইভাবে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভারতীয় করিডোর প্রদানও সে চুক্তির আর একটি ধারা বাস্তবায়ন। ধারণা করা হচ্ছে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে সে চুক্তির সকল ধারা বাস্তবায়িত হবে এবং বাংলাদেশ ভারতের একটি স্যাটেলাইট রাষ্ট্রে পরিণত হবে। ভারতের লক্ষ্যও তাই।
আর সে জন্যই ভারত বারবার জানান দিচ্ছে যে, বাংলাদেশে পরিস্থিতি যাই হোক না কেনো, ভারত সব সময় শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকবে এবং তাকে পুনরায় ক্ষমতায় আনার জন্য সব রকম সহায়তা দেবে। সে জন্যই পিলখানা গণহত্যার সময় ভারত বলেছিল শেখ হাসিনাকে রক্ষার জন্য ভারতীয় স্থল ও বিমানবাহিনী প্রস্ত্তত আছে। আর এবার দেখালেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। তিনি এমন এক সময় বাংলাদেশ সফরে এলেন, যখন সরকারের বিরোধিতায় বাংলাদেশ উত্তাল। প্রণব মুখার্জির বাংলাদেশে অবস্থানকালেই শেখ হাসিনা দেশের অর্ধ শতাধিক মানুষ খুন করে দেখিয়ে দিলেন যে, ভারতের স্বার্থ রক্ষায় তিনি নির্বিচারে যত খুশি মানুষ হত্যা করতে কসুর করবেন না। প্রণব বাবু তাতে বোধ করি সন্তুষ্ট হয়েই ফিরেছেন। তিনি বুঝে গিয়েছেন, ভারতের স্বার্থ রক্ষায় শেখ হাসিনা পারেন না, এমন কোনো কাজ নেই। আর তাই ভারতীয় মিডিয়া একযোগে কোরাস ধরলো যে, শেখ হাসিনাকে আগামী মেয়াদে ক্ষমতায় আনার জন্য ভারতকে সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে। প্রণবের বক্তব্যেও তার আভাস মেলে।
শেখ হাসিনা সম্ভবত সে সুখ স্বপ্নে বিভোর হয়ে আছেন। তিনিও এমন ঘোরের মধ্যে আছেন যে, ভারত যেহেতু সমর্থন দেবে, তাহলে তাকে আর ফেরায় কে। কিন্তু ভারতীয় শাসকগোষ্ঠীও আশা করি এটা অনুধাবন করেন যে, সব সময় পরিকল্পিত ছক অনুযায়ী সব কিছু হয় না। জেনারেল মইন যখন ভারত ও অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সহায়তায় ক্ষমতায় আসীন হয়েছিল, তখন ভারতের বাকবাকুম ছিল দেখার মতো। ভারত গলা উঁচু করে বলছিল যে, জেনারেল মইনের মতো এত বড় বন্ধু সরকার বাংলাদেশের ক্ষমতায় আর কোনোদিন আসীন হয়নি। তখন মনে হয়েছিল বাদ হয়ে গেল শেখ হাসিনা। বাদই হয়ে যেত, যদি জেনারেল মইনকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখা যেত। কিন্তু জেনারেল মইনের মাত্র দু বছরের অপশাসন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে,তাকে আর ক্ষমতায় রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে দৃশ্যপট বদলে গেলো। জেনারেল মইনকে পালিয়ে বাঁচতে হলো। ভারত তার দিকে ফিরেও তাকালো না। শেখ হাসিনা যেভাবে গণবিরোধী অবস্থান নিচ্ছেন, গণহত্যা চালাচ্ছেন, লুণ্ঠনের মহোৎসবে মেতে উঠেছেন, তাতে গণবিদ্রোহের সূত্রপাত হলে শেখ হাসিনাকে ছেঁড়া ন্যাকড়ার মতো ছুঁড়ে ফেলে দিতে ভারতের এক সেকেন্ডও সময় লাগবে না।
তবে ভারতকে খুশি করতে সরকার আরও একটি কাজ ধারাবাহিকভাবে করতে শুরচ করেছে। আর তা হলো বাংলাদেশের মানুষের ধর্ম যে ইসলাম তাকে বিকৃত করতে শুরচ করেছে। আল­vহতায়ালাকে টেনে দেব-দেবীর সমতুল্য করেছে (নাউজুবিল­vহ)। ইসলামের অপব্যাখ্যা সন্নিবেশিত করেছে। এভাবে আমাদের জাতিসত্তার মূল শেকড় কেটে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
সরকারের সকল অপকর্ম থেকে জনগণের দৃষ্টি ফেরাবার জন্য ভারতীয় পরামর্শে ও ভারতের সর্বাত্মক সহায়তায় শাহবাগে যে জজবার আয়োজন করেছিল সরকার তাতে অব্যাহত ভারতীয় সমর্থনের কথা ভারত গোপন রাখেনি। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ বাংলাদেশ সফরে এসে খুব খোলামেলাভাবেই বলে গেছেন যে, শাহবাগের তরচণ প্রজন্মের আন্দোলনে তাদের সমর্থন রয়েছে। কিসে সমর্থন দিলো ভারত? তা হলো, আদালতের রায় মানি না। আমরা যা চাই, সে রায়ই আদালতকে দিতে হবে। কিন্তু খোদ ভারতেও বোধকরি কল্পনা করা যায় না, এমন আন্দোলনের প্রতি সরকার তো দূরের কথা, কোনো নাগরিকও তা সমর্থন করবে। সালমান খুরশিদের কাছে আমাদের প্রশ্ন, ভারতে কেউ এ ধরনের আন্দোলন করলে, তারা সে আন্দোলন নস্যাৎ করে দিতো। কিন্তু বাংলাদেশে সরকার সে আন্দোলনকারীদের পুলিশী নিরাপত্তা, পানি-খাবার, টাকা-পয়সা দিয়ে একেবারে জামাই আদরে রাস্তাঘাট আটকে প্রায় দেড় মাস ধরে সযতনে ধরে রাখলো আর সালমান খুরশিদ তাতে সমর্থন দিলেন। তারও কারণ অস্পষ্ট নয়। এতে যদি শেখ হাসিনা সরকারের কল্যাণ হয়, তাহলে যুক্তি বড় কথা নয়। শেখ হাসিনা থাকুন ক্ষমতায়।
এদিকে আবার শাহবাগী আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানাতে দলে দলে আসতে থাকলো ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পীরা। তারা শাহবাগের মঞ্চে এসে নেচে কুঁদে গান গেয়ে মাতাবার চেষ্টা করলো। ইস্যুটি আমাদের, তাতে ভারতীয়দের এতো উৎসাহের কারণ সাধারণ মানুষের কাছে অস্পষ্ট থাকে না। ভারতীয় পত্র-পত্রিকাই তো বলেছে, শাহবাগের আন্দোলনে ভারত কীভাবে মদদ দিয়েছে। কিন্তু শাহবাগ দিয়ে কি শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, পদ্মা সেতুর দুর্নীতি, হলমার্ক কেলেঙ্কারি, ডেসটিনি কেলেঙ্কারি, ভাড়া বিদ্যুতে লুণ্ঠন, খুন-গুম-এসব মুছে ফেলা যাবে? এদিকে আবার এসব ডামাডোল সৃষ্টি করে এই ফাঁকে ভারতের সঙ্গে পুনরায় বেশ কিছু দেশবিরোধী চুক্তি সম্পাদন করেছে সরকার। ভারতের জন্য ট্রানজিটের ব্যবস্থাও হয়ে গেছে। আবারও আখাউড়ায় খালাস হচ্ছে ভারতীয় পণ্য, কোনোরূপ চুক্তি ছাড়াই। তাতে দেশের দু পয়সাও লাভ হচ্ছে না। তিস্তার পানির হিস্যাও মিলছে না। ভারতের নেতারা কেবল মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে এদেশের জনগণকে বুঝ দেবার চেষ্টা করছেন।
কিন্তু এখন বোঝা যাচ্ছে যে, জনগণ সরকারের ধোঁকা টের পেতে শুরচ করেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে জনতার প্রতিরোধ গড়ে উঠতে শুরচ করেছে। তা এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে, মন্ত্রী-এমপিরা এখন তাদের নির্বাচনী এলাকায় যেতেও সাহস পাচ্ছেন না। তাদের অপকর্মের ভার এতোই বিপুল হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সরকার মনে করেছিল যে, মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে দেড় শতাধিক মানুষ খুন করে তারা জনগণকে ভয় পাইয়ে দেবেন। কিন্তু জনগণ তো ভয় পেলোই না, বরং তারা আরও কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুললো। জনতার প্রতিরোধ কতোটা ভয়াবহ, সরকার আশা করি তা উপলব্ধি করে।
এদিকে আর এক ভয়াবহ খেলা শুরচ করেছে সরকার। তা হলো সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা। সরকারের লোকেরা সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা চালিয়ে তা বিরোধী দলের কাঁধে চাপিয়ে দেবার চেষ্টা করছে। কিন্তু যেখানেই হামলাকারীরা ধরা পড়ছে সেখানেই দেখা যাচ্ছে, তারা সরকারি দলের লোক। রামুর বৌদ্ধ পল­xতে সরকার দলের লোকেরা হামলা চালিয়ে প্রথমে সে দায় চাপানোর চেষ্টা করছিল বিরোধী দলের ওপর। তারপর দেখা গেল, হামলাকারীরা সবাই সরকার দলের লোক। এবার এলো শহীদ মিনার ভাঙার প্রশ্ন। সরকার দলের লোকেরা দেশের বিভিন্ন স্থানে শহীদ মিনারে হামল চালিয়ে তার দায় চাপানোর চেষ্টা করে জামায়াত শিবিরের ওপর। কিন্তু সম্প্রতি শহীদ মিনার ভাঙার সময় জনতা এক যুবককে আটক করে। দেখা গেল, সে শিবির নয়, স্থানীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। পুলিশ তাকে অপ্রকৃতিস্থ বলে ছেড়ে দিয়েছে।
এরপর নারায়ণগঞ্জে খুন হলো কিশোর ত্বকী। সে স্থানীয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাবিবর ছেলে। রাবিবও আওয়ামী লীগের একজন সমর্থক। ত্বকী খুন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগ করা হলো জামায়াত-শিবির তাকে খুন করেছে। তা নিয়ে মিছিল সমাবেশ মানববন্ধন হলো। কিন্তু ত্বকীর বাবা একবারও বললেন না যে, তার ছেলেকে জামায়াত-শিবিরই খুন করেছে। পিতা রাবিব, এমপি কবরী, মেয়র আইভি সবাই একযোগে বললেন যে, ত্বকীকে হত্যা করেছে নারায়ণগঞ্জের ত্রাস শামীম ওসমান ও তার পরিবার। শামীম ওসমান শেখ হাসিনার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন। দেখা যাক শেখ হাসিনা শামীম ওসমানের বিরচদ্ধে কী ব্যবস্থা নেন। ত্বকীর বাবা আওয়ামী লীগ করলেও তিনি শামীম ওসমানের সমর্থক নন। তিনি আইভি ও কবরীর সমর্থক। তার জের ধরেই ত্বকীকে হত্যা করা হয়েছে।
সরকার মনে করছে তারা ঘোলা পানিতেই মাছ শিকার করবে। কিন্তু ইতিহাস বলে এভাবে যারা ঘোলা পানিতে শিকার করতে চায়, তারা ঘোলা পানিতেই শেষ পর্যন্ত খাবি খেতে খেতে তলিয়ে যায়।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads