কারাগারে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন ১৮ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা। দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান এমপিসহ কারাবন্দি শীর্ষ রাজনীতিকরা। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ডিভিশনপ্রাপ্ত নেতারা লোডশেডিং ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে দুর্বল হয়ে পড়ছেন। বাকিরা দুর্ভোগ ও নিরাপত্তাহীনতায় জীবন কাটাচ্ছেন। অসুস্থ হয়ে গতকাল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা। নানা রোগযন্ত্রণায় থাকলেও সুচিকিত্সা মিলছে না দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর।
এদিকে ঢাকার বাইরে পাঠানো তিন নেতা কারাগারে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। শীর্ষ নেতাদের কারাগারের দুঃসহ জীবনের চিত্র তুলে ধরতে আজ সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করবে তাদের পরিবারের সদস্যরা। শীর্ষ নেতাদের জামিনের জন্য আজ হাইকোর্টে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।
গত ২৯ এপ্রিল হরতাল চলাকালে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অদূরে একটি বাসে আগুন দিয়ে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতিসাধনের অভিযোগে তেজগাঁও থানা পুলিশ বিএনপির শীর্ষ ৪৫ নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় ৪২ নেতাকে কারাবন্দি করা হয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এম কে আনোয়ার এমপি, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম এমপি, বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ এমপিকে গাজীপুরে কাশিমপুর কারাগারে ডিভিশনে রাখা হয়েছে। বিদ্যুতের বেসামাল পরিস্থিতি ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে এম কে আনোয়ার এমপিসহ সবাই দুর্বল হয়ে পড়ছেন বলে তাদের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন। গতকাল তাদের স্বজনরা কারাগারে সাক্ষাত্ করেন।
এদিকে একই কারাগারে হাইসিকিউরড সেলে দাগি আসামিদের সঙ্গে রাখা হয়েছে ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে। এছাড়া জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নীরব, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমসহ অনেকে সাধারণ সেলে রয়েছেন। প্রচণ্ড গরমে ফ্যান না থাকায় তারা দুর্ভোগে রয়েছেন বলে তাদের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন।
সবচেয়ে কষ্টে আছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। কেন্দ্রীয় কারাগারের সাত নম্বর সেলে অসুস্থ হয়ে দিনাতিপাত করছেন তিনি। শরীরে গুলিবিদ্ধ হওয়া স্থানে ফোসকা পড়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছেন রিজভী। সঙ্গে দেখা দিয়েছে গ্যাস্ট্রিক। এ ধরনের পরিস্থিতিতে সাধারণত তাকে অব্যাহত স্যালাইন দেয়া হলেও কারা চিকিত্সকরা কেবল ট্যাবলেট ও ইনজেকশন দিচ্ছেন। তার স্ত্রী আরজুমান্দ আরা রিজভী অবিলম্বে তাকে কারাগারের বাইরে কোনো হাসপাতালে সুচিকিত্সার দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে অসুস্থ হয়ে পড়লে গতকাল কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকাকে। বেলা সাড়ে ১১টায় হঠাত্ অসুস্থ হয়ে পড়লে কারা কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার প্রস্রাবের থলিতে টিউমার হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি কিডনি, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছেন। তাকে ইউরোলজি বিভাগে চিকিত্সা দেয়া হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় কারাগারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসও ডায়াবেটিকসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন বলে তার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন।
ময়মনসিংহ কারাগারে স্থানান্তর করায় সবচেয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম। তাকে ফাঁসির আসামিদের সেলে রাখা হয়েছে বলে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন। সেখানে একা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। কোনো ফ্যান নেই। ঘুমানোর বিছানা নেই। খাবারে দুর্গন্ধ। ওই কারাগারে ডিভিশনের কোনো সুযোগ-সুবিধাই নেই। তবে তাকে সবচেয়ে ভালো কক্ষে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেন জেলার শফিকুল আলম।
এছাড়া কুমিল্লা কারাগারে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান। তাদের ডিভিশন দেয়া হলেও ঢাকার বাইরে নেয়ায় সার্বক্ষণিক শঙ্কার মধ্যে সময় কাটছে বলে জানিয়েছেন আমানের পরিবার। গতকাল আমান উল্লাহ আমানের স্ত্রী সাবেরা আমান সাক্ষাত্ করলেও আর কোনো আত্মীয়স্বজন ও দলীয় নেতাকর্মীদের দেখা করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না।
ময়মনসিংহ কারাগারে নাজিমুদ্দিনের সঙ্গে স্ত্রীর সাক্ষাত্ : ময়মনসিংহ প্রতিনিধি জানান, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিমুদ্দিন আলমের সঙ্গে গতকাল দুপুরে ময়মনসিংহ কারাগারে সাক্ষাত্ করেছেন তার স্ত্রী ও স্বজনরা। সাক্ষাত্কারীদের মধ্যে রয়েছেন -নাজিমুদ্দিন আলমের স্ত্রী শওকত আরা নাজিম, ছোট বোন ধানমন্ডি থানা মহিলাদলের আহ্বায়ক শামসুন্নাহার চৌধুরী, কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা নুরুজ্জামান ও নাজিমুদ্দিন আলমের একান্ত সচিব সুশান্ত বিপ্লব। এছাড়া ময়মনসিংহ জেলা দক্ষিণ বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ, কোতোয়ালী বিএনপি সভাপতি কামরুল ইসলাম মো. ওয়ালিদ, নগর বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল আলম মাহবুব, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজা-উদ-দৌলা সুজা নাজিমুদ্দিন আলমের সঙ্গে কারাফটকে দেখা করেন।
সাক্ষাত্ শেষে নাজিমুদ্দিন আলমের স্ত্রী শওকত আরা নাজিম জানান, একা নাজিমুদ্দিন আলমকে ময়মনসিংহ কারাগারে স্থানান্তর করায় তিনি নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন। তার ওপর মানসিক টর্চার করা হয়েছে। এছাড়াও ডিভিশন না দিয়ে ফাঁসির আসামির সেলে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন শওকত আরা নাজিম। তিনি বলেন, যে সেলে তাকে রাখা হয়েছে তাতে বিছানা-বালিশ ও একটা ফ্যান পর্যন্ত নেই।
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে জেলার শফিকুল আলম জানান, অভিযোগ সঠিক নয়। তাকে ডিভিশনসহ প্রথম শ্রেণীর বন্দি হিসেবে সবরকম সুবিধা দেয়া হয়েছে।
ছাত্রদল নেতাদের কারাগারে নির্যাতনের অভিযোগ : ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীমকে কারাগারের কনডেম সেলে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনটি। এছাড়া ছাত্রদলের তেজগাঁও কলেজ সভাপতি মিজানুর রহমান রাজ ও তিতুমির কলেজ সভাপতি ইসমাইল হোসেন শাহীনকে গ্রেফতারের পর পা ভেঙে দেয়া হয়েছে। নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে কারাগারে অমানবিক জীবন কাটালেও তাদের চিকিত্সা দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হয়।
গতকাল দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহীদুল ইসলাম বাবুল সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমিরুজ্জামান শিমুল। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি হায়দার আলী লেলিন, দুলাল হোসেন, ওমর ফারুক সাফিন, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুল হক রয়েল, শহীদুল্লাহ ইমরান, আনোয়ার হোসেন টিপু প্রমুখ।
শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, ছাত্রদল সভাপতি ও ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদককে জেল কোড অনুযায়ী তাদের প্রাপ্য কোনো সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে না। যা খুবই খারাপ দৃষ্টান্ত। সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে কনডেম সেলে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ এনে তিনি বলেন, দাগী আসামিদের যে কনডেম সেলে রাখা হয়, সেখানে একজন ছাত্রনেতাকে রেখে সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।
আমিরুজ্জামান খান শিমুল কারাবন্দি নেতাদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, ‘সরকার এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র ধর্মঘটের মতো কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। লিখিত বক্তব্যে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জোটের শীর্ষ নেতাদের মুক্তি দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ছাত্রদলের উদ্যোগে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আলোকচিত্র ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হবে। এতে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে ঢাকার বাইরে পাঠানো তিন নেতা কারাগারে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। শীর্ষ নেতাদের কারাগারের দুঃসহ জীবনের চিত্র তুলে ধরতে আজ সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করবে তাদের পরিবারের সদস্যরা। শীর্ষ নেতাদের জামিনের জন্য আজ হাইকোর্টে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।
গত ২৯ এপ্রিল হরতাল চলাকালে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অদূরে একটি বাসে আগুন দিয়ে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতিসাধনের অভিযোগে তেজগাঁও থানা পুলিশ বিএনপির শীর্ষ ৪৫ নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় ৪২ নেতাকে কারাবন্দি করা হয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এম কে আনোয়ার এমপি, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম এমপি, বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ এমপিকে গাজীপুরে কাশিমপুর কারাগারে ডিভিশনে রাখা হয়েছে। বিদ্যুতের বেসামাল পরিস্থিতি ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে এম কে আনোয়ার এমপিসহ সবাই দুর্বল হয়ে পড়ছেন বলে তাদের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন। গতকাল তাদের স্বজনরা কারাগারে সাক্ষাত্ করেন।
এদিকে একই কারাগারে হাইসিকিউরড সেলে দাগি আসামিদের সঙ্গে রাখা হয়েছে ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে। এছাড়া জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নীরব, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমসহ অনেকে সাধারণ সেলে রয়েছেন। প্রচণ্ড গরমে ফ্যান না থাকায় তারা দুর্ভোগে রয়েছেন বলে তাদের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন।
সবচেয়ে কষ্টে আছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। কেন্দ্রীয় কারাগারের সাত নম্বর সেলে অসুস্থ হয়ে দিনাতিপাত করছেন তিনি। শরীরে গুলিবিদ্ধ হওয়া স্থানে ফোসকা পড়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছেন রিজভী। সঙ্গে দেখা দিয়েছে গ্যাস্ট্রিক। এ ধরনের পরিস্থিতিতে সাধারণত তাকে অব্যাহত স্যালাইন দেয়া হলেও কারা চিকিত্সকরা কেবল ট্যাবলেট ও ইনজেকশন দিচ্ছেন। তার স্ত্রী আরজুমান্দ আরা রিজভী অবিলম্বে তাকে কারাগারের বাইরে কোনো হাসপাতালে সুচিকিত্সার দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে অসুস্থ হয়ে পড়লে গতকাল কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকাকে। বেলা সাড়ে ১১টায় হঠাত্ অসুস্থ হয়ে পড়লে কারা কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার প্রস্রাবের থলিতে টিউমার হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি কিডনি, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছেন। তাকে ইউরোলজি বিভাগে চিকিত্সা দেয়া হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় কারাগারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসও ডায়াবেটিকসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন বলে তার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন।
ময়মনসিংহ কারাগারে স্থানান্তর করায় সবচেয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম। তাকে ফাঁসির আসামিদের সেলে রাখা হয়েছে বলে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন। সেখানে একা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। কোনো ফ্যান নেই। ঘুমানোর বিছানা নেই। খাবারে দুর্গন্ধ। ওই কারাগারে ডিভিশনের কোনো সুযোগ-সুবিধাই নেই। তবে তাকে সবচেয়ে ভালো কক্ষে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেন জেলার শফিকুল আলম।
এছাড়া কুমিল্লা কারাগারে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান। তাদের ডিভিশন দেয়া হলেও ঢাকার বাইরে নেয়ায় সার্বক্ষণিক শঙ্কার মধ্যে সময় কাটছে বলে জানিয়েছেন আমানের পরিবার। গতকাল আমান উল্লাহ আমানের স্ত্রী সাবেরা আমান সাক্ষাত্ করলেও আর কোনো আত্মীয়স্বজন ও দলীয় নেতাকর্মীদের দেখা করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না।
ময়মনসিংহ কারাগারে নাজিমুদ্দিনের সঙ্গে স্ত্রীর সাক্ষাত্ : ময়মনসিংহ প্রতিনিধি জানান, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিমুদ্দিন আলমের সঙ্গে গতকাল দুপুরে ময়মনসিংহ কারাগারে সাক্ষাত্ করেছেন তার স্ত্রী ও স্বজনরা। সাক্ষাত্কারীদের মধ্যে রয়েছেন -নাজিমুদ্দিন আলমের স্ত্রী শওকত আরা নাজিম, ছোট বোন ধানমন্ডি থানা মহিলাদলের আহ্বায়ক শামসুন্নাহার চৌধুরী, কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা নুরুজ্জামান ও নাজিমুদ্দিন আলমের একান্ত সচিব সুশান্ত বিপ্লব। এছাড়া ময়মনসিংহ জেলা দক্ষিণ বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ, কোতোয়ালী বিএনপি সভাপতি কামরুল ইসলাম মো. ওয়ালিদ, নগর বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল আলম মাহবুব, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজা-উদ-দৌলা সুজা নাজিমুদ্দিন আলমের সঙ্গে কারাফটকে দেখা করেন।
সাক্ষাত্ শেষে নাজিমুদ্দিন আলমের স্ত্রী শওকত আরা নাজিম জানান, একা নাজিমুদ্দিন আলমকে ময়মনসিংহ কারাগারে স্থানান্তর করায় তিনি নিরাপত্তাহীন বোধ করছেন। তার ওপর মানসিক টর্চার করা হয়েছে। এছাড়াও ডিভিশন না দিয়ে ফাঁসির আসামির সেলে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন শওকত আরা নাজিম। তিনি বলেন, যে সেলে তাকে রাখা হয়েছে তাতে বিছানা-বালিশ ও একটা ফ্যান পর্যন্ত নেই।
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে জেলার শফিকুল আলম জানান, অভিযোগ সঠিক নয়। তাকে ডিভিশনসহ প্রথম শ্রেণীর বন্দি হিসেবে সবরকম সুবিধা দেয়া হয়েছে।
ছাত্রদল নেতাদের কারাগারে নির্যাতনের অভিযোগ : ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীমকে কারাগারের কনডেম সেলে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনটি। এছাড়া ছাত্রদলের তেজগাঁও কলেজ সভাপতি মিজানুর রহমান রাজ ও তিতুমির কলেজ সভাপতি ইসমাইল হোসেন শাহীনকে গ্রেফতারের পর পা ভেঙে দেয়া হয়েছে। নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে কারাগারে অমানবিক জীবন কাটালেও তাদের চিকিত্সা দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হয়।
গতকাল দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহীদুল ইসলাম বাবুল সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমিরুজ্জামান শিমুল। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি হায়দার আলী লেলিন, দুলাল হোসেন, ওমর ফারুক সাফিন, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুল হক রয়েল, শহীদুল্লাহ ইমরান, আনোয়ার হোসেন টিপু প্রমুখ।
শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, ছাত্রদল সভাপতি ও ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদককে জেল কোড অনুযায়ী তাদের প্রাপ্য কোনো সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে না। যা খুবই খারাপ দৃষ্টান্ত। সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে কনডেম সেলে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ এনে তিনি বলেন, দাগী আসামিদের যে কনডেম সেলে রাখা হয়, সেখানে একজন ছাত্রনেতাকে রেখে সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।
আমিরুজ্জামান খান শিমুল কারাবন্দি নেতাদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, ‘সরকার এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র ধর্মঘটের মতো কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। লিখিত বক্তব্যে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জোটের শীর্ষ নেতাদের মুক্তি দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ছাত্রদলের উদ্যোগে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আলোকচিত্র ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হবে। এতে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন