শুক্রবার, ১১ মে, ২০১২

র‌্যাবই গুম করেছে ইলিয়াসকে।



র‌্যাবই গুম করেছে ইলিয়াসকে।

‘ইলিয়াস আলী নিখোঁজ রহস্য, ফেঁসে যাচ্ছেন সুরঞ্জিত, র‌্যাব হেফাজতেই আছে ইলিয়াস: দাবি পরিবারের, ঘটনার রাতে র‌্যাব সাদা পোশাকের দুটি টিম অংশ নেয়’ শিরোনামে গত ২৪ এপ্রিল ‘দৈনিক ভোরের ডাক’ পত্রিকায় রিপোর্ট করার কারনে সিনিয়র রিপোর্টার তুহিন সানজিদকে অপহরন করে র‌্যাব। 

সানজিদ জানায়, গতকাল বিকাল ৪টার দিকে বাংলা একাডেমির সামনে একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাস আমাকে বহনকারী রিকশার গতিরোধ করে। এ সময় মাইক্রোবাসের ভেতরে থাকা ক’জন আমার হাত ধরে টেনে মাইক্রোবাসের ভেতরে নিয়ে যায়। এরপর কালো কাপড় দিয়ে আমার চোখ বেঁধে ফেলে। বেশকিছু সময় চলার পর আমাকে একটি ভবনের রুমে নেয়া হয়। আমার চোখ খুলে দেয়ার পর দেখি র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) পোশাক পরা এক কর্মকর্তা চেয়ারে বসে আছেন।

তিনি জানতে চান, গত ২৪ এপ্রিলের ‘ইলিয়াস আলী নিখোঁজ রহস্য, ফেঁসে যাচ্ছেন সুরঞ্জিত, র‌্যাব হেফাজতেই আছে ইলিয়াস : দাবি পরিবারের, ঘটনার রাতে র‌্যাবের সাদা পোশাকের দুটি টিম অংশ নেয়’ শিরোনামে প্রকাশিত রিপোর্টটি আমার লেখা কিনা। উত্তরে হ্যাঁ বলার সঙ্গে সঙ্গে ওই কর্মকর্তা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। এরপর তিনি জিজ্ঞেস করেন, ইলিয়াস আলী অপহরণে ‘ঘটনার রাতে র‌্যাবের সাদা পোশাকের দুটি টিম অংশ নেয়’—একথা কেন লিখেছি এবং এ তথ্য কে জানিয়েছে। আমি সোর্সের নাম জানাতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি পিস্তল বের করে আমার মুখের ভেতর ঢুকিয়ে বলেন, ‘সোর্সের নাম বল, না হলে গুলি করব।’ আমি অস্বীকৃতি জানালে দু’দফা ইলেকট্রিক শক দেয়া হয় আমাকে। পরে বলেন, তিন দিন সময় দিলাম, এর মধ্যে ওই সোর্সের নাম না বললে তোর লাশ কেউ খুঁজে পাবে না বলে শাসিয়ে দেন। নানা ধরনের নির্যাতন করে পরে আমাকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে যায়। এ সময় তারা শাসায়, ‘এ ঘটনা যদি কারও সঙ্গে বলিস, তাহলে রাস্তায় গুলি করে মেরে ফেলব।’ এ ঘটনায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তুহিন সানজিদ।

ঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁঁ
আমাদের নিজস্ব অনুন্ধানেও জানা গেছে, র‌্যাবের দু’টি গাড়ি ব্যবহার হয়েছিল ইলিয়াস অপহরনে। ঘটনার পরের সকালে র‌্যাবের এক অফিসার ইলিয়াসের ভাইয়ের কাছে স্বীকার করেছে, ইলিয়াস তাদের কাছে আছে। বনানী থানার সহকারী সাব ইন্সপেক্টর নিজেই দেখেছেন, পুলিশের চেয়েও ক্ষমতাশালী এক বাহিনী ইলিয়াসকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। এরপরে আর কোনো কথার দরকার নাই।

আজকে যারা র‌্যাবের কর্নধার, তাদের মনে রাখা উচিত, ক্ষমতা কারো চিরস্থায়ী নয়। ইলিয়াসকে হজম করে পার পাওয়া যাবে না। এ ঘটনায় জড়িতে প্রত্যেকের জন্য ফাঁসির রজ্জু অপেক্ষমান। আওয়ামীলীগের ক্ষমতা টলটলায়মান। যে কোনো সময় পড়ে যাবে। এর পরে কে বাঁচাবে জড়িতদের? র‌্যাবের ভাইয়েরা, আপনারাও এ মাটির সন্তান। এমন কোনো হঠকারী কাজ করবেন না, যাতে আপনারা নিজেদের এবং দেশের সমুহ বিপদ আসে। রাজনৈতিক কিলিং আপনাদের কাজ নয়। আপনারা মনে করুন, ব্রিগেডিয়ার চৌধুরী ফজলুল বারী আপনাদের পূর্বসূরি ছিলেন। সাহস শক্তিতে আপনাদের চেয়ে বেশী বই, কম ছিলেন না। তার বাড়াবাড়িও দেখেছেন, এরপরে পতনও সবার জানা। সে পালিয়ে বেড়াচ্ছে আমেরিকায়। এ দেশেও কোনো দিন ফিরতে পারবে না আর। আপনারা ওইসব কথা স্মরণ করুন। জ্যান্ত ইলিয়াসকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিন। অন্যথায়, ইলিয়াস গুমের জন্যই হয়ত আপনারা হবেন শেখ হাসিনার পতনের কারন! কথাটি মনে রাখবেন।

<এসব কথা লেখার জন্য আবার আমার পিছনে লাগবেন নাকি? গুম করার চেষ্টা করবেন না যেন

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads