বৃহস্পতিবার, ৬ জুন, ২০১৩

সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও বুকে জমানো কষ্ট

বাংলাদেশে চলছে এখন এক দিনের গণতন্ত্র একবার মতায় যেতে পারলে গণতন্ত্র, জনগণ, সংবিধান, দেশপ্রেম, আইনের শাসন প্রভৃতির একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে যান তারা পেছন থেকে ৯০ শতাংশ মানুষ কথিত এই গণতন্ত্র আমাদের দরকার নেই বলে চিৎকার করে বুক ফাটালেও তা শোনার কেউ নেই। মনোভাব হলো পাঁচ বছরের জন্য আমাদের মতায় বসিয়েছ, পাঁচ বছর যাক, তার পর তোমাদের কথা শুনব তবে কখনো কখনো জনগণের কথায় কান দিতে হয়; যেমন সিটি করপোরেশন নির্বাচন, উপনির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন প্রভৃতি। সুযোগ যখন এসেছে জনগণকে তার সদ্ব্যবহার করতে হবেই। বিগত সাড়ে চার বছরের আমলনামার প্রতিফলন ঘটবেই আগামী নির্বাচনে। আশা করা যায়, এবারের সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ভোটারেরা যেসব বিষয় সামনে রেখে সিদ্ধান্ত নেবেন, তা হচ্ছে নিম্নরূপ :
১. শেয়ারমার্কেটে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পকেট খালি। ২. পদ্মা সেতু দুর্নীতির কারণে পুরো জাতি মহাগ্লানির শিকার। ৩. হলমার্ক ও বিসমিল্লাহ গ্রপসহ কয়েকটি কেলেঙ্কারিতে বিশ্বরেকর্ড সৃষ্টির মাধ্যমে ব্যাংকব্যবস্থা অচল। ৪. ডেসটিনি, ইউনিপেটুইউর মতো বহু প্রতিষ্ঠানে জনগণের জমানো টাকা বিদেশে পাচারের মাধ্যমে মধ্যবিত্তদের পথে বসানো। ৫. ক্ষমতাসীনদের ছাত্র সংগঠন দিয়ে শিাপ্রতিষ্ঠানসহ সারা দেশে প্রকাশ্যে অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে দেশবাসীকে জিম্মি করে রাখা। ৬. সিঁদের মুখে রেলওয়ের কালো বিড়াল ধরা পড়লেও শাস্তির বদলে তাকে পুরস্কৃত করা। ৭. ব্যাপক গুম, খুন, ক্রসফায়ারসহ লিমনের মতো নিষ্পাপ কলেজছাত্রকে পায়ে গুলি করে পুরো জাতিকে আতঙ্কিত করে রাখা। ৮. নরসিংদীর মেয়র লোকমান হত্যা, সাগর-রুনি হত্যা, ত্বকী হত্যা, বিশ্বজিৎ হত্যাসহ বিভিন্ন হত্যাকাণ্ড সরকার দলীয় বাহিনী ঘটিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার নামে পুরো জাতির নাকের সামনে আশ্বাসের মুলো ঝুলিয়ে রাখা। অন্য দিকে বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে। ৯. বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশে বাতি নিভিয়ে ঘুমন্ত, নিরস্ত্র নিরপরাধ আলেমদের যে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে, তা মুসলিমসমাজ কেন, কোনো অমুসলিমও মেনে নিতে পারে না। ১০. গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি সমস্যা ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণ আজ দিশেহারা। ১১. মনোরেল, মেট্্েরারেল প্রভৃতির প্রতিশ্রুতি দিয়ে মতায় এসে ঢাকা শহরকে একটি ডেড সিটিতে পরিণত করে বিশ্বের ১ নম্বর বসবাসের অযোগ্য স্থানে পরিণত করা। ১২. নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া মতা হস্তান্তর করা যাবে না বলে অনির্বাচিত নিয়োগ দেয়া হয়েছে উপদেষ্টা, সিটি করপোরেশনের আর জেলা পরিষদের প্রশাসক প্রমুখ সরকারদলীয় অনির্বাচিত লোকদের জয়জয়কার। ১৩. সাধারণ ও শান্তিকামী মানুষ যে দলেরই হোক তারা চান শান্তি। ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে কিছু লোক ছাড়া সবাই চান এ দেশে ঐক্যবদ্ধভাবে বসবাস করতে। সহিংসতা বাদ দিয়ে নিরপে নাগরিকসমাজ দিয়ে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে একটি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের পছন্দের সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক। অথচ ক্ষমতালোলুপ দু-একজনের ষড়যন্ত্রে দেশ আজ গোল্লায় যেতে বসেছে।
জনগণের সামনে সুযোগ যখন এসেছে, তখন ড্রেস রিহার্সেলেই আলামত প্রদর্শন করে ফাইনালের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করুন। বুকের জমানো কষ্ট আর কত দিন চাপা দিয়ে রাখা যায়?


0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads