মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০১৩

সেই খাঁটি তত্ত্বাবধায়কে প্রধানমন্ত্রীর জেল ভয়ের কারণ নেই


গত ১৫ই জুন দেশের চার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে বিশ্লেষকদের নানা বাহাস চলছে। বিশ্লেষণের প্রধানত দুটি ধারা। একটি ধারা হলো: আহা, মেয়র নির্বাচনে যারা হেরে গেলেন তারা বড়ই ভালো লোক ছিলেন। এলাকার জন্য বহুৎ উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের জাতীয় রাজনীতির কারণে তারা হেরে গেলেন। আর এক ধরনের বিশ্লেষণ অনেক গভীর। তারা মনে করেন, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরকার সম্ভবত হেরেই যেতে চেয়েছে। হেরে গিয়ে বিশ্ববাসীকে দেখাতে চেয়েছে যে, তাদের অধীনেও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। সুতরাং বিরোধী দল যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করছে, সেটি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। তারা তাদের মুরুব্বীদের এটাও বোঝাতে পারবে যে, একই ধরনের ব্যবস্থায় মুরুব্বী দেশেওতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। আর তা সর্বমহলে গৃহীত হয়। এখানে সূক্ষ্ম আরো একটি বিষয় ছিলো আর তা হলো, এই নির্বাচনে ইসলামী জঙ্গীবাদী-মৌলবাদীরা বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের পক্ষ নিয়েছিলো। সুতরাং তত্ত্বাবধায়কের দাবি মেনে নিয়ে বিএনপিকে ক্ষমতায় আসার পথ করে দিলে বাংলাদেশ মৌলবাদ-জঙ্গীবাদীদের এক অবাধ লীলাভূমিতে পরিণত হবে। যা নিশ্চয়ই পশ্চিমা শাসকদের কারো কাছে কাম্য হতে পারে না।
ঐ নির্বাচনকে যারা খুব সরলীকরণ করেছেন তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন। তারা আসলে এ কথাই বলতে চেয়েছেন যে, এই সাড়ে চার বছরে দেড়শগুণ সম্পদের মালিক হলেও আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা খুবই ভালো, কর্মঠ ও উন্নয়ন প্রবণ ছিলেন। কখনো কখনো মনে হয়, আহা, বিএনপি’র লোকদের সম্পর্কেও যদি তাদের একই রকম দরদ থাকত তাহলে কতই না ভালো হতো। যতো দুর্নীতিই করুক লোকটা ভালো ছিলো- এমন কথা দুনিয়ার ইতিহাসে খুব বেশি শুনতে পাওয়া যাবে না। কিন্তু আমাদের কোনো কোনো বিশ্লেষক ও মিডিয়া এ কথার ওপরই অনেক জোর দিয়েছেন। তাদের বক্তব্য হলো, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার প্রবর্তন নিয়ে সরকারের খামখেয়ালি, পদ্মাসেতু দুর্নীতি, হলমার্ক প্রভৃতি আর্থিক কেলেঙ্কারী, আওয়ামী লীগের লুটপাট ও দুর্ব্যবহার, ছাত্রলীগের তা-ব এগুলোই ছিলো এই চার মেয়রের বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার কারণ। এর কোনোটির সঙ্গেই আওয়ামী লীগের ‘ভালো মেয়ররা জড়িত ছিলেন না। অথচ তাদের ভাগ্যের নির্মম পরিহাস এই যে, সেই পাপের দায়ভার এই প্রার্থীদের বহন করতে হলো।’
সরকারের ঘনিষ্ঠ সমর্থক এক পত্রিকা সত্যি সত্যি আন্তর্জাতিক মানের জরিপ করে দেখিয়েছে যে, ৯০ শতাংশ মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে। কারণ তারা মনে করেন যে, এই ব্যবস্থার মাধ্যমেই কেবল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ, অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। আর ৮৫ শতাংশ মানুষ মনে করে যে, দেশ ঠিক মতো চলছে না। সরকার যদিও এসব জরিপ টরিপ তুরি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে। বলেছে, এগুলো সব ফাল্তু কথা। বরং বেশিরভাগ মানুষ শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন চায়। চার সিটি কর্পোরেশনে পরাজয়ের জন্য গত ১৯ জুন আর এক দেশ-কাঁপানো তথ্য আবিষ্কার করেছেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। এটি কারো সাথে মিলবে না। তিনি সব সময়ই সৃজনশীল মানুষ। ঘটনা সৃজনে তার জুড়ি মেলা ভার। তিনি বলেছেন, ধর্মীয় অপপ্রচার, গৃহদাহ আর টক-শোর কারণে চার সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে গেছে। সেই সঙ্গে তিনি আরো একটি কথা বলেছেন যে, মতিঝিলে শাপলা চত্ত্বরে গোলাগুলীর কোনো ঘটনাই ঘটেনি। আর তিন হাজার লোক মারা গেলে এতো লাশ কয়েক ঘন্টার মধ্যে অপসারণ করা সম্ভব ছিলো না। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীরা যা দেখেছেন তা হলো, ভোর চারটা থেকে দমকল বাহিনী তাদের শক্তিশালী হোসপাইপ দিয়ে গোটা মতিঝিলের ফুটপাত রাস্তা, আশপাশের দেয়াল ধুয়ে দিয়েছে। যাতে এক ফোঁটা রক্তের দাগও না থাকে।
সরকার অনেক টাইট দিয়েছিলো। গত ৫-৬ মে রাতে প্রায় আড়াই লাখ হেফাজতে ইসলাম কর্মী ঢাকা অবরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে মতিঝিলের ফুটপাতে ঘুমিয়ে ছিলেন, কেউ জিকির করছিলেন। অভিযান শুরুর কিছু আগে সাংবাদিকরা যে সংবাদ সংগ্রহের জন্য প্রোডিয়াম তৈরি করেছিলো সেটি সরিয়ে দেয়া হয়। আর সাংবাদিকদের নিরাপদ দূরত্বে চলে যেতে বলা হয়। তারা গিয়েছিলেনও তাই। তারপর শুরু হয়েছিলো সরকারি বাহিনীর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ। সেখানে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি মিলে দেড় লক্ষাধিক গুলী ছুড়েছিলো। ছুড়েছিলো গ্রেনেড ও সাউন্ড গ্রেনেড। তারপরেও পর দিনের সংবাদপত্রে এতো সব আয়োজন সত্ত্বেও ডজন ডজন মানুষের ছিন্ন ভিন্ন লাশের ছবি প্রকাশিত হয়েছে।  এদের মধ্যে কোনো কোনো লাশ ছিলো গলাকাটা। অর্থাৎ ইসলাম অনুরাগী ও ঐ মুসলমানদের শুধু মাত্র গুলী করেই হত্যা করা হয়নি। একদল ঘাতক বাহিনী বুলেটের আড়ালে জবাইয়ের যন্ত্র নিয়ে জনতার মাঝে ঢুকে পরে ঘুমন্ত মানুষকে এলোপাতাড়ি জবাই করেছিলো। প্রধানমন্ত্রীসহ তার লাল্লু-পাঞ্জুরা যে এতোদিন ধরে বলে আসছেন সেখানে কোনো গোলাগুলীর ঘটনাই ঘটেনি। সেটি আর সত্য প্রমাণিত থাকেনি। তাছাড়াও হেফাজতে ইসলামের আমির মওলানা আহমেদ শফি এখন পর্যন্ত প্রতিনিয়ত বলে যাচ্ছেন যে, ঐ দিন রাতে হেফাজতের বেশ কয়েক হাজার কর্মী নিহত হয়েছেন।
যদিও ফ্যাসিবাদী হিটলারের প্রচারমন্ত্রী গোয়েবলস এর তত্ত্ব অনুযায়ী একটি মিথ্যা কথা বার বার বললে এক সময় মানুষ তাকে সত্য বলে মানতে শুরু করে। সে কারণে ঐ মন্ত্রে দিক্ষীত হয়ে প্রধানমন্ত্রী ও তার দোহারীরা এখনো গেয়ে যাচ্ছে যে ৫-৬ মে’র রাতে শাপলা চত্ত্বরে গোলাগুলীর কোনো ঘটনাই ঘটেনি। অথচ আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যম আল জাজিরা দাবি করেছে যে তাদের কাছে ঐ রাতের ঘটনার বিস্তারিত ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। সেই ফুটেজ থেকে অনুমান করা যায় যে, ঐ রাতে কমপক্ষে তিন হাজার লোক সরকারি বাহিনীর হাতে খুন হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্ভবত ঐ ঘটনাকে ধর্মীয় অপপ্রচার হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। ‘আর কিছু নাহি?’ থাকবেনা কেন আছে। সংবিধান থেকে আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস তুলে দেয়া। পাঠ্যপুস্তকে কোরবানি এবং বলীকে সমার্থক করে তোলা। ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে ইসলামের বিরুদ্ধে সর্বত্র জিগির জারি করা। শাহবাগে আল্লাহর দুশমনদের দুই মাস ধরে পাহারা দিয়ে খেদমত করা। এমনি আরো বহু কিছু আছে। এর সব কিছুতেই প্রধানমন্ত্রী এক কথায় অপপ্রচার বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
আর বলেছেন, গৃহদাহ। সেটিও সত্য। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছ্বাসেবক লীগ, ঘাট-শ্রমিকলীগ, গোড়খদক লীগ- এমনি অসংখ্য লীগ স্বার্থে দ্বন্দ্বে পরস্পরের জান কেড়ে নিতেও কসুর করেনি। কোথায়ও সরকার এসব ঘটনাকে উস্কে দিয়েছে, কোথাও আবার নীরব দর্শকের মতো তাকিয়ে থেকেছে। কোথায়ও  কোনো এক গ্রুপের পক্ষ অবলম্বন করেছে। এর কোনো ক্ষেত্রেই অপরাধীর শাস্তির কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে গৃহদাহ তথা নিজদের মধ্যে খুনোখুনি স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। সরকার আগে এসবের প্রতি কোনো গুরুত্বই দেয়নি। নির্বাচনের পর মনে হলো খানিকটা গুরুত্ব তারা দিলো। সেই বা মন্দ কী।
আর টেলিভিশনের টক-শো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জানি দুশমন। শুধু এখন থেকে নয়। অনেক দিন আগে থেকেই টেলিভিশনের টক-শো ও টক-শোতে অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে যেন যুদ্ধই ঘোষণা করে বসেছেন। বলেছেন টক-শোগুলো ভারি টক। খানিকটা মিষ্টি দিলে ভালো হতো। তারপর টক-শো তে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা কমিয়ে এনেছে। যারা সত্য বলতে পারেন তাদের উপস্থিতি এখন ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে। উপরন্তু অবিরাম টক-শোতে অংশগ্রহণকারী আলোচকদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে।
নির্বাচনে জয় পরাজয়ের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর ভাষ্য মতে টক-শো এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর অর্থ হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্তত ব্যক্তিগতভাবে হলেও প্রতিরাতে টক-শো’র দর্শক। সে আলামতকে ভালই বলতে হবে। এখন টক-শো বলতে যা বোঝায় তা আর নেই বললেই চলে। শুধু মাত্র রাত ১২ টার পরে ঐ দিনের সংবাদপত্র নিয়ে যা আলোচনা হয় সেটাই টক-শো। তার বাইরে আর তেমন কিছু নেই। যা কিছু আছে তা হলো শেখ হাসিনা ও তার সরকারের গুণকীর্তন। শুধু মাত্র সংবাদপত্রের আলোচনা নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর এতোটা গাত্রদাহ হবে সেটা সহজে ভাবা যায় না।
তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী ধরেই নিয়েছেন যে, তার মতো পল্লী গ্রামেরও সকল লোক রাত ১২টা একটা পর্যন্ত জেগে নিয়মিত টক-শো দেখেন যারা চার সিটি নির্বাচনে ভোটার ছিলেন। আমারতো মনে হয় ঐ ভোটারদের ২০ ভাগ লোকও রাত জেগে টক-শো দেখেন না। সেখানকার অধিকাংশ মানুষ কৃষক কিংবা শ্রমিক।  ভোর রাতে জমি চাষ করতে কিংবা শ্রম বিক্রি করতে তাদের বেরিয়ে পড়তে হয়। এদের পক্ষে টক-শো বিলাসিতা সহজ ঘটনা নয়। সেক্ষেত্রে নিশ্চিত করেই বলা যায় যে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে টক-শো তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাই রাখেনি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর গাত্রদাহ আর অস্পষ্ট থাকল না। এখানেও হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর বড় বেশি ভুল হয়ে গেল।
এবার ভিন্ন চিন্তার বিশ্লেষকদের কথায় আসা যাক। তারা বলছেন সরকার আসলে এ চারটি সিটি কর্পোরশেন নির্বাচনে হেরেই যেতে চেয়েছিলেন। এই স্কুলের চিন্তা গ্রহণ করা খুব সহজ কাজ নয়। সরকার চাইলে কি হবে যারা প্রার্থী ছিলেন তারা নির্বাচনে বিজয়ী হতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। সেটাই স্বাভাবিক। নির্বাচনে দাঁড়িয়ে কেউ কাউকে ছেড়ে দেয় না। দুঃখ শেখ হাসিনারও কম হয়নি। তা না হলে জাতীয় সংসদে তিনি যেসব অসংলগ্ন কথা বলেছেন তা কস্মিন কালেও বলতে পারতেন না।
আর কী ফ্যাক্টর? তা হলো আওয়ামী ঘরানার পত্রিকাগুলো একটাও এমন কোনো ছবি ছাপেনি যাতে দেখা যায় যে জোব্বা পরা কিংবা টুপি দাড়িওয়ালা কোনো লোক আওয়ামী লীগকে ভোট দিচ্ছেন। অথবা আওয়ামী লীগের জন্য ভোট চাইছে। যতো জোব্বা পরা, টুপি দাড়িওয়ালা লোক কিংবা হিজাব পরা মহিলা সবাই বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটকে ভোট দিচ্ছে। অর্থাৎ সব টুপি দাঁড়ি ও জোব্বাওয়ালারা ১৮ দলীয় জোটের পক্ষে। এই জোট যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশ আলকায়দা বা তালেবানি রাষ্ট্র হয়ে যাবে। অতএব শেখ হাসিনা তার অধীনে যে নির্বাচন করতে চাইছেন তাতে যেন বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদী শক্তিগুলো তাকে সমর্থন দেয়। তা না হলে সামনে ভয়াবহ বিপদ।
কিন্তু এই সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন, নির্বিচার খুন, বিচার বিভাগ দলীয়করণ, জুডিশিয়াল কিলিং এমন এক পর্যায়ে পৌছেছে যে বিশ্ব সমাজ তাকে আর সমর্থন দিতে পারছে না। সেইখানে “রাধার বিপদ ভারী হলো।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে এটি টের পাননি তা নয়। এ বিপদ টের পেয়েই এখন তিনি বলতে শুরু করেছেন যে, তত্ত্বাবধায়ক চাইলে নির্বাচনই হবে না। এবং প্রথমে বলছিলেন তত্ত্বাবধায়ক এলে বেগম খালেদা জিয়াকে জেলের ভাত খেতে হবে ও দেশ ছাড়া হতে হবে। এর কিছুদিন পর আবার কথাটা ঘুরিয়ে বলেছেন যে, তত্ত্বাবধায়ক এলে তাদের দু’জনকেই জেলের ভাত খেতে হবে। অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাইলে তিনি এই রাষ্ট্র ব্যবস্থা এমন কারো কাছে হস্তান্তর করে যাবেন যারা সহজে আর নির্বাচন দেবে না। নির্বাচন না হলেতো আর খালেদা জিয়া ক্ষমতায় যেতে পারছেন না। অর্থাৎ শেখ হাসিনা ধরেই নিয়েছেন যে তত্ত্বাবধায়কের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বেগম খালেদা জিয়া অবধারিতভাবে ক্ষমতায় আসীন হবেন।  অতএব এতো হল্লাচিল্লা না করে  তিনি বিরোধী দলে আছেন বিরোধী দলে থাকুন। শেখ হাসিনা সম্রাজ্ঞী আছেন তাকেই সম্রাজ্ঞী থাকতে দিন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোটা জাতিকে আস্তো বেকুব বলে ঠাঁওরেছেন। তত্ত্বাবধায়ক কালচার এখন থেকে বাংলাদেশে চালু হয়নি। ১৯৯১ সালে একবার সংবিধান বহির্ভূত সমঝোতার মাধ্যমে তত্বাবধায়ক ব্যবস্থা চালু হয়েছিলো বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে। নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছিলো। ১৯৯৬ সালে সাংবিধানিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তিত হলে বিচারপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে নির্বাচন মোটামুটি সুষ্ঠু হয়েছিলো। এরপর ২০০১ সালে বিচারপতি লতিফুর রহমানের নেতৃত্বে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। এরা সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান ছিলেন। কিন্তু ২০০৭ সালে সংবিধান লঙ্ঘন করিয়ে সেনাপতির নেতৃত্বে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ডেকে এনেছিলেন শেখ হাসিনা সেই সরকারের আমলে তিনি জেলের ভাত খেয়েছেন। আমরা ১৯৯৬ সালে সংবিধান সংশোধন করে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আনা হয়েছিলো সেই সরকার ফিরিয়ে চাই। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাচন দিয়ে তিন মাসের মধ্যে ক্ষমতা হস্তান্তর করে ফিরে গিয়েছিলো সেই খাঁটি তত্ত্বাবধায়কে শেখ হাসিনারও জেলের ভাত খাওয়ারও কোনো আশঙ্কা নেই।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads