শনিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

গুলি ও নির্যাতন করে ধর্মীয় আনুভুতি দমন করা যায় না

মহানবী সা: অবমাননার প্রতিবাদে বিক্ষোভ 

হানবী সা:কে অবমাননা করে শাহবাগকেন্দ্রিক বর্তমান আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্ট বিকৃত মানসিকতার কিছু যুবকের ব্লগ ও ফেসবুকে লেখালেখির কারণে দেশের মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। ইসলাম ও তার নবীকে নিয়ে এ ধরনের ঘৃণ্য প্রচারণায় সাধারণ মানুষ ভীষণভাবে মর্মাহত হয়েছেন। তাদের এই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর। সারা দেশে প্রায় প্রতিটি মসজিদ থেকে মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মপ্রাণ সাধারণ মুসল্লিদের ওপর পুলিশ গুলি চালিয়েছে। এতে সিলেট, গাইবান্ধা ও ঝিনাইদহে মোট চার ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া রাবার বুলেট, লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপের ফলে শত শত মানুষ আহত হয়েছেন। মহানবী সা:কে অবমাননার প্রতিবাদে অরাজনৈতিক বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনা শুধু চরম নিন্দনীয় নয়, মনে হচ্ছে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

মহানবী সা:কে নিয়ে এ ধরনের অবমাননার সাথে যারা জড়িত তাদের গ্রেফতার তো করা হচ্ছে না, বরং তাদেরকে নানাভাবে আশকারা দেয়া হচ্ছে। এদের একটি অংশ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় শাহবাগে জমায়েত হয়ে আলেমসমাজ ও গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে। তাদের উসকানিতে নয়া দিগন্ত, আমার দেশ, দিগন্ত টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের অফিসে হামলা চালানো হয়েছে। আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদককে গ্রেফতারের জন্য আলটিমেটাম দেয়ার মতো ধৃষ্টতা দেখানো হচ্ছে। সরকার এদের বেআইনি কর্মকাণ্ড সমর্থন করার কারণে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। এরা বিকল্প  এক সমান্তরাল সরকার হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। এখান থেকে যে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে, সরকার নিজে তা পালন করছে এবং দেশবাসীকে পালন করতে কার্যত বাধ্য হচ্ছে।
মহানবী সা:কে অবমাননার প্রতিবাদে সারা দেশে যে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে, তা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না। কোনো রাজনৈতিক দল এই বিক্ষোভের আয়োজন করেনি। দেশের সব মতপথের আলেমরা এই বিক্ষোভের আহ্বান জানিয়েছিলেন। সব রাজনৈতিক বিশ্বাসের মুসল্লিরা এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু সরকার জনগণের এই মনোভাব উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছে। সাধারণ মুসল্লিদের নির্যাতন, নিপীড়ন ও গুলি চালিয়ে হত্যা করার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের ক্ষতকে আরো বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মানুষ আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে পারে। মনে রাখতে হবে, মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও আবেগের ওপর আঘাত করে দমন করা যায় না। সরকারের উচিত সাধারণ মানুষের ক্ষোভ প্রশমিত করার উদ্যোগ নেয়া। এ জন্য যেসব ব্লগার মহানবী সা:কে অবমাননা করে প্রচারণা চালিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনা। আমরা আশা করব, সরকার দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। একই সাথে আমরা আলেমসমাজকে আরো ধৈর্য ও সহনশীলতায় পরিস্থিতি মোকাবেলার পরামর্শ দেবো।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads