শনিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

ফিরে এলো ৭২-৭৫ : দেখা মাত্র গুলি, শেখ মুজিব থেকে বেনজীর আহমদ



আ ব দু ল হা ই শি ক দা র

ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশের নির্বাচনে গোহারা মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর পর এবার আরেক ‘অমর কীর্তি’ স্থাপন করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) তাজুল ইসলাম। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার রসুল্লাবাদ ইউএ খান উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে সভাপতি পদে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলামের কাছে পরাজিত হয়েছেন। মহাজোট সরকারের মন্ত্রীদের জনপ্রিয়তার বহর দেখুন। বলিহারি এদের আক্কেল! গাছে তো চড়েছিস বাবা, তো গাছেই থাক। কিন্তু কয়লা ধুলেও ময়লা যায় না। খাসলত বদলাবে কী কারণে। নিচেরটা খাওয়ার অভ্যাসও ছাড়তে চায় না।
এ না চাওয়ার কারণেই আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের চোখে প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মূসা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, মানসিক ভারসাম্যহীন, বঙ্গবন্ধু বিদ্বেষী প্রতিক্রিয়াশীল।
নূরে আলম সিদ্দিকীর বিরুদ্ধেও একই বিষোদগার। কারণ এরা আওয়ামী লীগের ‘পাপ’কে পাপ বলেই চিহ্নিত করেছেন। আর আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করলে, শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে কথা বললে তো মুক্তিযোদ্ধাও হয়ে যান রাজাকার, আর পক্ষে কথা বললে রাজাকার হয়ে যান বীর মুক্তিযোদ্ধা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। ১৬ ডিসেম্বর দেশে ফিরে আওয়ামী লীগ ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধিয়েছিল। তারা এবং এক কোটি শরণার্থী ছাড়া আর সবাইকে যুদ্ধাপরাধী বানিয়ে ফেলেছিল। হলি ডে-তে মরহুম এনায়েতুল্লাহ খান বাধ্য হয়ে লিখেছিলেন—‘দেশে তাহলে সাড়ে ৬ কোটি রাজাকার।’
কিন্তু আমার আজকের বিষয় সেই সমস্যাও নয়। আজকে আমি আপ্লুত। অভিভূত। উদ্বিগ্ন। আতঙ্কিত। কারণ মৃত্যুর ৩৮ বছর পর আবার ইথারে ইথারে মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের কণ্ঠের প্রতিধ্বনি শুনলাম। এমনিতে ১৫ আগস্টসহ যে কোনো ছুঁতানাতায় শেখ মুজিবের ৭ মার্চের ভাষণ শুনতে শুনতে ওটা এখন ডাল-ভাতে পরিণত হয়ে গেছে। কিন্তু কথা সে ভাষণ নিয়ে নয়। আমাদের প্রিয় রাজধানী ঢাকা মহানগরের পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমদের কণ্ঠে ভর করেছে শেখ মুজিবের বিদেহী আত্মা। অথবা তিনি হাসিল করেছেন মুজিবীয় ফয়েজ। সেই কারণে তিনি ঠাস ঠাস করে সহকর্মীদের বলে দিয়েছেন—‘এখন থেকে শিবির দেখলেই গুলি করবা।’ আইজি হাসান মাহমুদ খন্দকারের সামনেই তিনি তার প্রিয় নেতর কণ্ঠের প্রতিধ্বনি করেন।
শেখ মুজিবুর রহমান দেশের বামপন্থী নেতা-কর্মী ও বিরোধী দলের কণ্ঠ স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য তার রক্ষীবাহিনী, পুলিশ ও লালবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ‘নকশাল দেখামাত্র গুলি করবা।’ তিনি তার প্রতিপক্ষকে নির্মূলের জন্য ঘোষণা করেছিলেন সারা দেশে লাল ঘোড়া দাবড়িয়ে দেব। তার এই হুঙ্কারের পরই ওইসব বাহিনী মেতে ওঠে হত্যাযজ্ঞে। ধারণা করা হয়, প্রায় ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয় ওই খুনিদের হাত।
অবিকল সেই একই ভঙ্গিতে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বশীল ব্যক্তি দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছেন। প্রয়োজনে শিবিরের ঠ্যাং ভেঙে দিতে বলেছেন।
শেখ মুজিবের কণ্ঠের প্রত্যাবর্তনে আমি অভিভূত। একই সঙ্গে আতঙ্কিত, না জানি এবার এই বেনজীর সাহেবদের হাতে কয় ৪০ হাজার বিরোধী কণ্ঠ নিকাশ হয়।
বেনজীর আহমদকে ধন্যবাদ, তিনি আওয়ামী লীগের সব স্তরের নেতাকর্মীকে পেছনে ফেলে হাসিল করেছেন নেতার আওয়াজ। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জন্য মায়া লাগছে যে তারা ‘সামান্য একজন কমিশনার’-এর কাছে পরাজিত হলেন।
অবশ্য স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার সময়ও তারা ফেল করেছিলেন ‘সামান্য একজন মেজরের’ কাছে। এবারও ফেল করলেন। তারা উল্টাপাল্টা অনেক কথা বলেছেন বটে, কিন্তু সেগুলো বেনজীর আহমদের ডায়ালগের কাছে নিতান্তই তুচ্ছ। ক্ষুদ্র। আর এই বেনজীর আহমদের ঘোষণা দেয়ার ফলও দ্রুত ফলছে। এরই মধ্যে গত ৩১ জানুয়ারি পুলিশ ও ছাত্রলীগের গুলি ও চাপাতির কোপে বগুড়ায় ৪ জন শিবির কর্মী নিহত হয়েছে।
দুই.
ফ্যাসিবাদ সম্পর্কে হারুনুর রশীদের ‘রাজনীতি কোষ’ গ্রন্থে বলা হয়েছে—
‘লগ্নিপুঁজির উগ্র সাম্রাজ্যবাদী মর্মবস্তু, উগ্র জাত্যাভিমান এবং উগ্র প্রতিক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে উদ্ভূত সন্ত্রাসবাদী একনায়কত্ব। শাসকগোষ্ঠী যখন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আর সামাল দিতে পারে না, তখনই এই পথের আশ্রয় নেয়। ফ্যাসিবাদীরা আঘাত হানে প্রধানত প্রগতিশীল শক্তি ও শ্রমিকশ্রেণীর ওপর। সর্বপ্রথম (১৯২২ সালে) ইতালিতেই ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়। তারপর এর গোড়াপত্তন হয় জার্মানিতে (১৯৩৩)। জার্মানিতে ‘জাতীয় গণতন্ত্র’-এর মুখোশে একে কায়েমি করার প্রয়াস চালানো হয়। ফ্যাসিবাদের দুই প্রধান মহানায়ক ছিলেন ইতালির বেনিটো মুসোলিনি এবং জার্মানির এডলফ্ হিটলার। বস্তুত ফ্যাসিবাদ পুঁজিবাদেরই সন্তান। পুঁজিবাদীরা ফ্যাসিবাদের আশ্রয় নেয় দুটি সময়ে—এক. তার বিকাশের সময়ে এবং দুই. তার ধ্বংসের সময়ে। পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদের পতনের যুগে বিশ্বের অনুন্নত দেশগুলোয় ক্লাসিক্যাল ধারায় পুঁজির বিকাশ আর সম্ভবপর নয়। তাই সম্রাজ্যবাদী স্বার্থ এবং সংশ্লিষ্ট দেশের আধাকাঁচড়া ও কমবেশি মুত্সুদ্দি চরিত্রসম্পন্ন পুঁজির স্বার্থকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে এবং শোষিত শ্রেণীর আন্দোলন ও ক্ষমতাদখলকে ঠেকানোর উদ্দেশ্যেই অনুন্নত দেশগুলোর প্রতিক্রিয়াশীল শাসকগোষ্ঠীও ক্ষেত্রবিশেষে ফ্যাসিবাদের আশ্রয় নেয়। এ কাজে তারা প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে রাষ্ট্রযন্ত্রকে, বিশেষত সামরিক বাহিনীকে।’
উগ্র জাত্যাভিমান ও উগ্র প্রতিক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে মাথা তোলে সন্ত্রাসবাদী একনায়কত্ব। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যখন টিকে থাকার পথ পায় না তখন বেছে নেয় হিংস্র দমন-পীড়নের পথ। আবেগাক্রান্ত হঠকারী স্লোগান এক্ষেত্রে টনিকের মতো কাজ করে। দমন-পীড়নের নানা বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত করে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে। সেজন্যই এদের দরকার অস্থিরতা, হানাহানি, বিভেদ, সন্ত্রাস। কারণ ফ্যাসিবাদের জনক বেনিটো মুসোলিনি বলে গেছেন, ‘জগতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে ফ্যাসিজম কখনও তা বিশ্বাস করে না। এর প্রয়োজনীয়তাও স্বীকার করে না। কাজেই শান্তিপ্রিয়তার নীতিকে ফ্যাসিজম ঘৃণা করে থাকে। সংগ্রামে অনাসক্তি ও ভীরুতা থেকেই শান্তিপ্রিয়তার সৃষ্টি।’ এজন্য ফ্যাসিস্টদের কাছে হাঙ্গামা ও যুদ্ধই মূল কথা। শান্তিপ্রিয়তা তাদের কাছে অনিষ্টকর। কারণ শান্তিপ্রিয়তা গায়ের জোরে অন্যের ওপর আধিপত্য বিস্তারকে সমর্থন করে না।
তিন.
আওয়ামী লীগের চেহারা-চরিত্রে যে ফ্যাসিবাদের উপকরণ আছে তা তো বলাই বাহুল্য। কারণ তাদের কাছে ‘সবার উপরে আওয়ামী লীগ সত্য, তাহার উপরে নাই।’ মুজিব আমলে তো এই ফ্যাসিবাদ পুরোপুরি ছিল। সদ্য স্বাধীন দেশে বলা হতে থাকলো, ‘এক নেতা এক দেশ, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ।’ বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তার টুঁটি ছিঁড়ে ফেলা হবে। যেমন কথা তেমনই কাজ। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল দেশ। তাতে কী? মুজিববাদ কায়েম করতে হলে রক্ত তো লাগবেই।
ইতিহাসের অনিবার্য রায়ে ক্ষমতার বাইরে ছিটকে পড়লো আওয়ামী লীগ। তারপর বহু বহু দিন নির্বাসনে কাটিয়ে, মাথায় হিজাব হাতে তসবিহ নিয়ে ক্ষমাটমা চেয়ে ক্ষমতার মসনদ ফিরে পেয়েই বিস্তার ঘটালো গডফাদার তন্ত্রের। জয়নাল হাজারী, আবু তাহের, শামীম ওসমান আরও কত রক্ত হিম করা নাম।
তারপর ফখরুদ্দীন-মইন উ’র সিলসিলা ধারণ করে ক্ষমতায় বসে এবার দেশকে পরিণত করেছে হিরক রাজার দেশে। দুর্নীতি, সন্ত্রাস, গুম, খুন, ধর্ষণ এগুলো এখন শাসক দলের নৈমিত্তিক কাজ। অথচ মুখে পবিত্র ‘বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু’ বাণী সারাক্ষণ। গায়ে গণতন্ত্রের লেবাস। কিন্তু আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক পথে যাচ্ছে না। তাদের মাথার ভেতর সারাক্ষণ ঘুর ঘুর করে বাকশালের ভূত। সেজন্যই তারা সেদিনের মতোই আবার বলা শুরু করেছে, দেখামাত্র গুলি কর। ধরে ধরে হত্যা কর।
আমাদের একজন শিক্ষক বলতেন, দেখো কেউ যদি বলে হিমালয় পর্বত ২০০ মাইল সরে গেছে, আমি বিশ্বাস করবো। কারণ এটা হতে পারে। বিষয়টি প্রাকৃতিক। কিন্তু কেউ যদি বলে তার স্বভাব বদলে গেছে, তা আমি কখনোই বিশ্বাস করবো না। যেমন বিশ্বাস করবো না আওয়ামী লীগের স্বভাবের পরিবর্তন হয়েছে।
চার.
মুজিব আমলের সঙ্গে হাসিনা আমলের প্রধান পার্থক্য হলো, সেদিন মওলানা ভাসানীর মতো জননায়ক ছিলেন। যিনি সরোষে বলেছিলেন, ‘মজিবর নকশাল কারও গায়ে লেখা থাকে না। অতএব সাবধান।’ সিংহাসনে বসে সিংহাসনের অপমান করো না। দাবি তুলেছিলেন লাল বাহিনীকে বেআইনি ঘোষণার। বলেছিলেন, নইলে তোমার দশা চিয়াং কাই সেকের মতো হবে।
শেখ হাসিনার এই পর্বের শেষ বছরে এসে মনে হচ্ছে সরকার দেশে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিতে চাচ্ছে। চাচ্ছে গৃহযুদ্ধ। চাচ্ছে নীল হেলমেট নিয়ে আসতে।
কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, ভাসানীর মতো আজ আর কেউ বলছে না, ‘শেখ হাসিনা, আপনার বেনজীর আহমদকে সামলান। মন্ত্রীদের সামলান। ছাত্রশিবির কারও গায়ে লেখা থাকে না। ছাত্রশিবির কোনো নিষিদ্ধ সংগঠন নয়। আপনার ছাত্রলীগের মতো ‘কীর্তিমান’ও নয়। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটানোর অধিকার কে আপনাকে দিয়েছে? একটি বৈধ সংগঠনকে সভা, সমাবেশ, মিছিল, সেমিনার কিছুই করতে দেবেন না। আর তারা বসে বসে আঙুল চুষবে—এ আপনি ভাবলেন কী করে? রক্তপাত শুধু রক্তপাতকেই ডেকে আনে। দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এই সর্বনাশা রাজতান্ত্রিক মানসিকতা থেকে ফিরে আসুন। দেশটা যেমন আপনার, তেমনি শিবিরের নেতাকর্মীদেরও। মানবাধিকার শুধু আপনি ও আপনাদের দলের নেতাকর্মীদের একচেটিয়া সম্পত্তি নয়। তাছাড়া ক্ষমতার মসনদ কারও জন্যই চিরস্থায়ী কিছু নয়। ওখান থেকে আপনাকেও নামতে হবে। তো সেই নামার জায়গাটুকু রাখুন। দেশের মানুষ জন্তু-জানোয়ার নয় যে তারা আপনার হম্বিতম্বি দেখে লেজ গুটিয়ে পালিয়ে যাবে।’
পাঁচ.
শাসক আওয়ামী লীগের বড় সুবিধা কিংকর্তব্যবিমূঢ় বিরোধী দলগুলো। তাদের কাণ্ড-কারখানা আওয়ামী লীগের জন্য বড় আরামের কারণ হয়েছে। একটা গল্প বলে শেষ করি আজাকের লেখা—এক বিষাক্ত সাপ গেল পীর সাহেবের কাছে। হুজুর, আমি ভালো হতে চাই। পীর সাহেব বললেন, খুব ভালো কথা। আগে মানুষকে দংশন করা বন্ধ কর। তারপর অন্য পরামর্শ দেব। এর কিছুদিন পর সাপ আবার এলো পীরের কাছে। পীর দেখেন সাপের শারীরিক অবস্থা কাহিল। সারা গায়ে জখমের দাগ। বললেন, ব্যাপার কী? সাপ বললো, হুজুর দংশন করা বন্ধ করে দেয়ার পর মানুষ সুযোগ পেলেই আমাকে মারে। তাই তো এ অবস্থা। পীর সাহেব বলেন, আরে বোকা, আমি তোমাকে দংশন করা বন্ধ করতে বলেছিলাম। কিন্তু মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য ফোঁস ফোঁস করা তো বন্ধ করতে বলিনি। সেটুকু করলেও তো তোমার এ হাল হতো না।
এই ফোঁস ফোঁস করাটুকুও যেন হারিয়ে বসে আছে বিরোধী দলগুলো। নইলে তারা অন্তত মওলানা ভাসানীর হক-কথার ভাষায় বলতো—
‘সভা ও মিছিলে বিক্ষোভ প্রতিবাদ,
উচ্ছেদ কর ফ্যাসিবাদী বুনিয়াদ।
পদাঘাতে ভাঙ্গো শোষকের কারাগার,
হক-কথা আজ প্রত্যেক জনতার।’
a_hyesikder@yahoo.com

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads