শুক্রবার, ৯ নভেম্বর, ২০১২

কেতাবে আছে বাস্তবে নেই

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিনিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে; গুম, হত্যা, নারী নির্যাতন বেড়েছে; দুর্নীত কমেনি
ফজলুল হক শাওন
‘দিন বদলের সনদ’, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া’, ‘রূপকল্প ২০২১’ ইত্যাদি বিশেষণ লাগিয়ে ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করলেও ক্ষমতায় এসে সেই ইশতেহার এখন কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। বর্তমান বাস্তবতার সাথে নির্বাচনী ইশতেহারের কোনো মিল নেই। চার বছর আগে নির্বাচনী ইশতেহারে পাঁচটি অগ্রাধিকারভিত্তিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ। এই কর্মসূচির মধ্যে ছিল নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানো, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সমস্যার সমাধান, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা। সরকার গঠনের চার বছরের মাথায় কর্মসূচি বাস্তবায়ন নিয়ে শুধু সাধারণ মানুষ নয়, মহাজোট সরকারের শরিকেরাই বিব্রত বোধ করছে।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠনের পরপরই চাল, ডাল ও তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর ঘোষণা দেয়। কিন্তু গত চার বছরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম যেভাবে বেড়েছে তাতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। দেশে খাদ্যশস্যের বাম্পার ফলনে কৃষককুল আজ হতাশাগ্রস্ত। মহাজোট সরকারের শরিকেরাও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর দামের ঊর্ধ্বগতিতে প্রকাশ্যে ােভ প্রকাশ করেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য চাল, ডাল, তেল, লবণ ও চিনিসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর দামের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ আজ চোখে মুখে অন্ধকার দেখছে। নির্বাচনের আগে মহাজোট ১০ টাকা কেজি চাল, দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা,  সিন্ডিকেটমুক্ত বাজার, কৃষকদের বিনামূল্যে সার প্রদান, প্রতি পরিবারে একজনকে চাকরি দেয়া, সবার জন্য বাসস্থান নিশ্চিত করাসহ নানা ধরনের স্বপ্ন দেখিয়েছিল। কিন্তু সরকারের চার বছরের মাথায় এসেও সেসব স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়নি। তবে সরকারের দাবিÑ এক সঙ্কটময় মুহূর্তে দায়িত্বভার গ্রহণ করে সরকার তার নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী দ্রব্যমূল্য বিশেষ করে খাদ্যপণ্যের মূল্য দ্রুত জনগণের ক্রয়মতার মধ্যে নামিয়ে আনতে পেরেছে। বিশ্বমন্দা থাকলেও সরকারের গৃহীত পদেেপ দেশে বিশ্বমন্দার প্রভাব তেমনভাবে পড়েনি। ফসলের বাম্পার ফলনের মাধ্যমে কৃষি খাতে দেশ আবারো স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে এগিয়ে চলেছে। কৃষকদের মধ্যে পর্যাপ্ত সার সরবরাহ করা হচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী জোরদার করার ফলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ায় দেশ থেকে মঙ্গা দূরীভূত হয়েছে, যা বর্তমান সরকারের অন্যতম অর্জন বলে মনে করছেন সরকারের নীতিনির্ধারকেরা।
ইশতেহারের দ্বিতীয় কর্মসূচিতে বলা হয়েছিল, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে এই প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। মতাধরদের বার্ষিক সম্পদ বিবরণী দিতে হবে। রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বস্তরে ঘুষ-দুর্নীতি উচ্ছেদ, অনুপার্জিত আয়, ঋণখেলাপি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, কালো টাকা ও পেশিশক্তি প্রতিরোধ ও নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রতি দফতরে গণ-অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নাগরিক সনদ উপস্থাপন করা হবে। সরকারি কর্মকাণ্ড ব্যাপকভাবে কম্পিউটারাইজড করে দুর্নীতির পথ বন্ধ করা হবে।
এ ধরনের প্রতিশ্রুত সত্ত্বেও চার বছরে সরকার প্রশাসনসহ কোনো ক্ষেত্রেই দুর্নীতি কমাতে পারেনি। সম্প্রতি টিআইবির জরিপে বলা হয়েছে, সংসদ সদস্যদের ৯৭ ভাগ অনৈতিক কাজে জড়িত। এতে আরো বলা হয়, অনেক সংসদ সদস্য দুর্নীতিতেও জড়িত। রেলে কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে তৎকালীন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। হলমার্ক কেলেঙ্কারির মাধ্যমে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করার ঘটনা দেশের শিশু থেকে শুরু করে আবালবৃদ্ধবণিতা পর্যন্ত জানে। এ ছাড়া শেয়ার কেলেঙ্কারির মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষকে নিঃস্ব করা হয়েছে। সরকার গঠনের পর থেকেই ছাত্রলীগ যুবলীগ টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজিতে ব্যাপকভাবে জড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন সময় চাপাতি, কিরিচ, হকি স্টিকসহ বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এভাবে প্রতিনিয়তই দেশের কোনো-না-কোনো শিাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও মারামারির ঘটনা ঘটতে থাকায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা একপর্যায়ে ছাত্রলীগের সাথে তার সম্পর্ক ছিন্ন করেন।
দেশের বিভিন্ন স্থানে টেন্ডার নিয়ে আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনায় সাধারণ মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন, গুম, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা অহরহ ঘটছে। সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনাও ব্যাপক। বিরোধী দলের নেতাদের রিমান্ডে নির্যাতন, গণমাধ্যমের ওপর আঘাত ও আমার দেশ, চ্যানেল ওয়ান বন্ধসহ মিডিয়া দলন, সাংবাদিক হত্যা, ক্রসফায়ারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ মানবাধিকার লঙ্ঘন, হত্যা-গুম, সীমান্তে প্রতিনিয়ত বিএসএফের হাতে বাংলাদেশীদের হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ইভটিজিং বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক কিশোরীকে জীবন দিতে হয়েছে। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার মতো লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে। সাংবাদিকেরা কয়েক মাস ধরে একের পর এক কর্মসূচি পালন করেও এ হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার পাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনকে বিদায় নিতে হয়েছে।
নির্বাচনী ইশতে হারে বলা হয়েছিল, আগামী তিন বছরে অর্থাৎ ২০১১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন পাঁচ হাজার মেগাওয়াটে, ২০১৩ সালের মধ্যে সাত হাজার মেগাওয়াটে এবং ২০২১ সালে ২০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করা হবে।
অথচ বাস্তবতা হচ্ছে সরকারের প্রায় চার বছরের মাথায় বিদ্যুৎ খাতের সফলতার চেয়ে ব্যর্থতাই বেশি ফুটে উঠেছে। ২০১৩ সালের মধ্যে সাত হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করার কথা থাকলেও কাগজে কলমে সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের বেশির ভাগ বেসরকারি খাতের হওয়ায় জাতির ঘাড়ে বাড়তি ব্যয়ের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের কারণে খরচ বেশি পড়ছে। এ কারণে এ পর্যন্ত পাঁচবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এভাবেই কুইক রেন্টালের খেসারত দিতে হচ্ছে জনগণকে। কুইক রেন্টালের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়ে সরকারের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে বারবার বিরোধিতা করলেও সরকার তা শোনেনি। জ্বালানি গ্যাস খাতেও তেমন কোনো সাফল্য নেই। এ সরকারের সময় বিভিন্ন  শিল্প এবং আবাসিক ক্ষেত্রে গ্যাস সংযোগ না থাকায় দেশের শিল্প উৎপাদন চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে। তবে কেউ কেউ বলছেন, গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের চেয়ে বিদ্যুৎ সঙ্কট অনেকটা নিরসন হয়েছে। যে কারণে আগের তুলনায় এখন লোডশেডিং কম হচ্ছে।
এ ছাড়া মহাজোট সরকারের শাসনামলে ভারতের সাথে বিতর্কিত চুক্তি, বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে ভারতে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণে পরো সমর্থন জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। গার্মেন্টসহ শিল্পাঞ্চলে বিশৃঙ্খলার কারণে দেশে বিনিয়োগ কমেছে। মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদের হিসাব দেয়ার প্রতিশ্রুতি ইশতেহারে থাকলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করেনি মহাজোট সরকার। চার বছরে সরকার পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন ধরে রাখতে সম হলেও মুসলিম দেশগুলোর সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। শ্রমবাজারেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিরোধী দলবিহীন জাতীয় সংসদ এরই মধ্যে প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছে। তবে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ফাঁসিতে ঝোলানো এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরুকে সরকার নিজেদের বড় সাফল্য হিসেবে দেখছে। হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে সংসদকে পাশ কাটিয়ে সংবিধান সংশোধন করে ফেলাকেও সরকার তাদের বড় সাফল্য হিসেবে দেখছে। শিা ও কৃষি ছাড়া অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের পারফরম্যান্স নিয়ে খোদ সরকারের ভেতরেই প্রশ্ন উঠেছে। এরই মধ্যে মহাজোট সরকার বিতর্কিত ও পছন্দসই লোকদের নিয়োগ ও সুপারসিডের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিয়ে নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। প্রশাসনে নিরঙ্কুশ দলীয়করণের মাধ্যমে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সম হয়েছে বর্তমান সরকার। দুর্নীতি রোধের স্লে­াগান নিয়ে মতায় এসে দুর্নীতি দমন কমিশনের মতাকেই খর্ব করেছে বর্তমান সরকার।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের পাঁচটি অগ্রাধিকার বিষয় সম্পর্কে নয়া দিগন্তের প্রশ্নের জবাবে দলের অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, নির্বাচনের আগে যেকোনো রাজনৈতিক দল তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে। সরকার গঠনের পর সব কর্মসূচি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারবে, এটা কখনোই সম্ভব নয়। সদ্য দ্বিতীয়বার বিজয়ী আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, আমেরিকার মতো দেশের অর্থনৈতিক কর্মসূচি পুরোপুরি বাস্তবায়ন তিনি করতে পারেননি। এ কথা বারাক ওবামা নিজেই স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, মহাজোট সরকারের আমলে, কৃষি, বিদ্যুৎ, শিক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন হয়েছে। লাখ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বেশি হয়েছে। তিনি প্রশ্ন করেন, একটু ভেবে দেখুন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার আগে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি কেমন ছিল। আর এখন কেমন আছে, তুলনা করলেই উত্তর পেয়ে যাবেন। রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট বসানোর কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে। তার পরও জনগণের চাহিদা মোতাবেক আমরা বিদ্যুৎ দিতে পারছি। আরো কিছু বিদ্যুৎ প্লান্ট চালু হচ্ছে। এ ছাড়া ভারত ও নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনার সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। এখন যতটুকু সমস্যা হচ্ছে আশা করি আর কিছু দিন পর তা-ও থাকবে না। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সহনীয় অবস্থায় আছে। আগের সরকারগুলোর সময় লক্ষ করলে দেখা যাবে ঈদ ও পূজার সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ থাকত। এ সরকারের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তুলনামূলক অনেক ভালো। কক্সবাজারের রামু প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে তেমন কিছু বলব না, এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।
জাসদের কার্যকরী সভাপতি মইনুদ্দিন খান বাদল এমপি এ প্রসঙ্গে নয়া দিগন্তকে বলেন, মহাজোট সরকারের আমলে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, হলমার্ক কেলেঙ্কারি, ডেসটিনি কেলেঙ্কারিসহ যত ঘটনা ঘটেছে তার প্রত্যেকটির সমাধান নিয়ে আমরা সরকারের সাথে কথা বলেছি। এসব ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিচার দাবি করেছি। এসব ঘটনার সদুত্তর না দিতে পারলে সরকারের সততা নিয়ে জনগণ প্রশ্ন তুলবে। একের পর এক ঘটে যাওয়া অঘটনের বিচার না হলে জনগণ এর জবাব সরকারকে দেবে। আমরা শঙ্কিত আগামী জাতীয় নির্বাচনেই এর প্রভাব পড়বে।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কাজী ফিরোজ রশিদ নয়া দিগন্তকে বলেন, নির্বাচনের আগে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বর্তমান সরকার কাজ করছে না। গত সাড়ে তিন বছরে একের পর এক ঘটনায় মহাজোটের শরিক হিসেবে আমরা শুধু বিব্রতই নই, শঙ্কিতও। তিনি বলেন, রেলের ঘুষ কেলেঙ্কারি, শেয়ারবাজার ও হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় এখন পর্যন্ত কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সরকারের এসব কেলেঙ্কারির দায় আমরা নেবো না। আওয়ামী লীগ নির্বাচনের আগে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সে অনুযায়ী সাফল্য দেখাতে পারছে না।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বিমল বিশ্বাস নয়া দিগন্তকে বলেন, মহাজোট সরকারের আমলে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড, হলমার্ক কেলেঙ্কারি ও শেয়ারবাজারে ধস সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে। পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতিসহ অনেক ব্যাপারেই সরকারের ব্যর্থতা আছে। তিনি বলেন, এ সরকারের আমলে যেসব ঘটেছে তার অনেক ঘটনার সাথেই সরকারের ঘনিষ্ঠজনেরা জড়িত। এ কারণে তারা পদক্ষেপ নিতে পারছে না। আওয়ামী লীগ জনগণকে যে অঙ্গীকার দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে তা পূরণ করতে না পারলে এর প্রভাব আগামী নির্বাচনে অবশ্যই পড়বে।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads