মঙ্গলবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১২

দমন-পীড়নের রাজনীতি




শিবির কর্মী : পুলিশের দিকে ঢিল ছোড়ে তাণ্ডবকারী ; ছাত্রলীগ নেতা : অস্ত্রধারীর পাশে দাঁড়িয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বিরোধী রাজনৈতিক দলকে কঠোরভাবে দমনের অভিলাষ প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের ডাইরেক্ট অ্যাকশনে নেমে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্ত্রীর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা বিরোধী রাজনৈতিক দলের অফিসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজে ভর্তিপ্রস্তুতির জন্য সেরা একটি কোচিং সেন্টারের অনেকগুলো শাখা অফিস জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। কারণ এই কোচিং সেন্টারটি ছাত্রশিবিরের ছেলেরা পরিচালনা করে থাকে। অস্ত্রবাজিতে লিপ্ত লেখাপড়াবিমুখ ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা এই জ্বালাও-পোড়াও কাজটি বেশ ভালোভাবেই সম্পন্ন করছে। আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও প্রবীণ রাজনীতিক আবদুল জলিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এসব আহ্বানকে উসকানিমূলক বলে মন্তব্য করেছেন। এর আগে মার্কিন দূতাবাস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল …শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে জড়িত হওয়া একটি মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। আমরা বিশ্বাস করি, সংলাপই যেকোনো মতপার্থক্য দূরীকরণের উত্তম পন্থা। এই বিবৃতির পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া ছিলÑ আগে তাদের দমন করি। চোর-ডাকাতদের সাথে আবার কিসের সংলাপ?
বিরোধী রাজনৈতিক দলকে চোর-ডাকাত, বিপথগামী ও সন্ত্রাসী হিসেবে তুলে ধরার এই প্রবণতা দুনিয়ার বহু দেশে ঘটেছে। এ দেশেও পাকিস্তানি শাসক থেকে এরশাদের স্বৈরশাসনামলেও বিরোধী দলকে এভাবে চোর-ডাকাতের সাথে তুলনা করা হয়েছে। গাদ্দাফি আর হোসনি মোবারক সরকারবিরোধী আন্দোলনকে বলেছিলেন ইঁদুরদের লাফালাফি। আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানি সেনাশাসক থেকে এরশাদের সেনাশাসনামলেও কীর্তিমান আমলা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সব সামরিক শাসকের সেবা করেছেন। রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রাম দমনের আমলাতান্ত্রিক মানসিকতা পুরোমাত্রায় তার মধ্যে বহাল রয়েছে। আবার রাজনীতিতে তার আবির্ভাব ঘটেছে ’৯৬ সালে আমলা বিদ্রোহের মধ্য দিয়েইÑ যা ছিল আমলাতান্ত্রিক শৃঙ্খলা পরিপন্থী। সরকারের শেষ সময়ে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে তার বক্তব্য ও শারীরিক ভাষায় যে কঠোরতা দেখাচ্ছেন, তার শেষ পরণতি কতটা বিপজ্জনক হতে পারে মন্ত্রিত্বের উষ্ণ পরিবেশে সম্ভবত তা অনুধাবন করতে পারছেন না। দীর্ঘ রাজনীতির অভিজ্ঞতায় আবদুল জলিল ঠিকই বুঝতে পেরেছেন গদিনসীন মন্ত্রীদের উসকানিমূলক বক্তব্যের শেষ পরিণতি কী ঘটতে পারে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজধানীর মিরপুরে এক জনসভায় প্রতিটি ওয়ার্ড ও শহর থেকে জামায়াতের নেতাকর্মীদের খুঁজে পিটিয়ে বের করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এ ধরনের নির্দেশ শুধু আইন হাতে তুলে নেয়ার আহ্বান নয়, স্পষ্টত রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির নির্দেশনা ছাড়া আর কিছুই নয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর শারীরিক ভাষায় স্পষ্টত প্রতিহিংসার ছাপ। তার নির্বাচনী প্রতিপক্ষ সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহছানুল হক মিলনের বিরুদ্ধে ঘড়ি চুড়ি, মুরগি চুড়ি আর ৮০ বছরের বৃদ্ধাকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় মিলন দীর্ঘ দিন জেলেও ছিলেন। তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে কিভাবে দমন করতে পারেন তার নমুনা এ দেশের মানুষ অবশ্য আগেই দেখেছে।
দুর্ভাগ্যজনক দিক হচ্ছে, বিরোধী রাজনৈতিক দলকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে বা সে পথে না গিয়ে পুলিশকে যেভাবে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে তাতে এই বাহিনীর শৃঙ্খলা এখন ভেঙে পড়ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ পালন করতে গিয়ে লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে পুলিশ আবির্ভূত হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে আমরা পুলিশের একটি অনুষ্ঠানের খবর জেনে নিই। নবনিযুক্ত ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি (ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ) এস এম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান বলেছেন, রাস্তায় পুলিশ মার খাচ্ছে। পুলিশ আর বসে বসে মার খাবে না। এখন থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। আমাদের একটা পা ভাঙলে আমরা ১০টা পা ভাঙব। জামায়াতের হামলার বিরুদ্ধে পুলিশ এখন থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। তিনি বলেন, আমাদের ডিপার্টমেন্টে যদি কেউ জামায়াত-শিবিরের শুভাকাক্সী থাকেন, তাহলে এখনই অন্যত্র চলে যান। আমার রেঞ্জে কোনো জামায়াত-শিবিরের সমর্থক থাকতে পারবে না। তিনি বলেনÑ দেশকে ভালোবাসুন, সর্বশক্তি নিয়োগ করে জামায়াত-শিবিরের মূলোৎপাটন করতে হবে। ওদের শিকড় তুলে ফেলতে হবে।
পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ বলেন, আগামীতে যদি মুক্তিযুদ্ধের সপরে শক্তি মতায় না আসে তাহলে দেশ আফগানিস্তান-পাকিস্তান হয়ে যাবে। নারায়ণগঞ্জ সফরে এসে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ডিআইজি এসব কথা বলেন। সভায় জেলা পুলিশ সুপার শেখ নাজমুল আলম (পিপিএম বার) বলেন, আমরা আমাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব ঈমানের সাথে পালন করব। ডিআইজি মহোদয় যেসব সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, তা অরে অরে পালন করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। এ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের জন্য জেলা পুলিশের সব কর্মকর্তা ও সদস্যকে নির্দেশ দেন জেলা পুলিশ সুপার। (আমার দেশ ২৫ নভেম্বর ২০১২)।
আমরা এ খবর থেকে বুঝলাম পুলিশকে এখন প্রতিহিংসাপরায়ণ করে তোলা হচ্ছে, একটা পা ভাঙলে ১০টি পা ভাঙার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ এখন জামায়াত-শিবির মূলোৎপাটনের কাজে নেমে পড়েছে। পুলিশে জামায়াত-শিবিরের শুভাকাক্সী থাকলে তাদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। পুলিশে তো কোনো দলের শুভাকাক্সী থাকার কথা নয়। পুলিশ তো কোনো দলের চাকরি করে না। পুলিশ চাকরি করে রাষ্ট্রের। পুলিশে জামায়াতের শুভাকাক্সী থাকলে তাদের চলে যেতে বলা হচ্ছে; তাহলে পুলিশে কি শুধুই আওয়ামী লীগের শুভাকাক্সী থাকবে? কিংবা বিএনপির শুভাকাক্সী কি থাকতে পারবে? এই পুলিশ কর্মকর্তার পুরো বক্তব্যটি যদি আমরা দেখি তাহলে হাইব্রিড কোনো আওয়ামী লীগ নেতার বক্তব্য ও এই পুলিশ কর্মকর্তার মধ্যে কোনো পার্থক্য আমরা দেখছি না।
বাংলাদেশে জামায়াত ও শিবিরের রাজনীতি হঠাৎ করে এই নভেম্বর মাসে শুরু হয়নি। আগেও রাস্তায় জামায়াত-শিবির মিছিল সমাবেশ করেছে। ’৯৬ সালে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে রাজপথে এক পাশে জামায়াতের অপর পাশে আওয়ামী লীগের মিছিল সমাবেশ হয়েছে। আগে পুলিশের সাথে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষ হয়নি, এখন কেন হচ্ছে? এ প্রশ্নের কী জবাব দেবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী? জামায়াত-শিবিরের নেতারা বারবার বলছেন, তাদের শান্তিপূর্ণ সভাসমাবেশ করার অধিকার দেয়া হলে পুলিশের ওপর একটি ঢিলও ছোড়া হবে না। জামায়াত-শিবিরের সভাসমাবেশ করার এই অধিকার হরণ করার ফলে পুলিশের সাথে সঙ্ঘাত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সংবিধানের ৩৬ ও ৩৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জামায়াত-শিবিরের সমাবেশ ও সংগঠনের স্বাধীনতা রয়েছে। সমাবেশ করা বা সংগঠন করার অধিকারহরণ করার চেষ্টা সংবিধানের গুরুতর লঙ্ঘন। সেই অধিকার যখন হরণ করা হয় তখন পুলিশের সাথে সঙ্ঘাত-সংঘর্ষ হয়। আগেও এ ধরনের সঙ্ঘাত বাংলাদেশে হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে তা নিশ্চিত করে বলা যায়।
রাজধানীর ফার্মগেটে গত ১৩ নভেম্বর শিবিরের সাথে পুলিশ ও যুবলীগ-ছাত্রলীগের যেখানে সংঘর্ষ হয়েছে সেখানে ’৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপিবিরোধী আন্দোলনে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এক পুলিশের আঙুল কামড়ে দিয়েছিলেন। আবদুল গনি রোডে এক পুলিশকে উলঙ্গ করে ফেলা হয়েছিল। এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনেও পুলিশের অস্ত্র নিয়ে টানাটানির ঘটনা ঘটেছে। মন্ত্রীর গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলাও হয়েছে। যদিও রাজনৈতিক আন্দোলনে এ ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু এ কথাও আমাদের ভুলে গেলে চলবে না নিরাপত্তাবাহিনী দিয়ে বল প্রয়োগ করে যখন স্বাভাবিক রাজনৈতিক অধিকার হরণ করা হবে তখন তার প্রতিক্রিয়া কম-বেশি হবে। সারা দেশে বিরোধী রাজনৈতিক দলের অফিসে আগুন জ্বালালে যদি তাণ্ডব না হয়, পুলিশের সাথে সংঘর্ষ বা পুলিশের বাধার কারণে ইটপাটকেল নিক্ষেপ তাণ্ডব হয় কী করে? সরকারি প্রপাগান্ডায় নিয়োজিত গণমাধ্যমে এসব খবর যখন প্রচার করা হয়, সাধারণ মানুষের সামনে গণমাধ্যমের একচুনীতি উদোম হয়ে যায়।
পুঁজিতান্ত্রিক রাজনীতির দাশে পরিণত হওয়া সাবেক বামরা এখন জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি তুলেছে। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশন বলছে, জামায়াতের গঠনতন্ত্র সংবিধান ও আইনের সাথে সাংঘর্ষিক। যদি সাংঘর্ষিক হয় তা অবশ্যই জামায়াতকে সংশোধন করতে হবে। কারণ, বিদ্যমান সংবিধান মেনেই জামায়াতকে রাজনীতি করতে হবে। যেমন করতে হবে অপরাপর রাজনৈতিক দলকে। কিন্তু এই অজুহাতে দমন-পীড়ন বা নিষিদ্ধের দাবি তোলা শুধু অগণতান্ত্রিকই  নয়, অসাংবিধানিকও।
ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব এমন অবস্থায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এক দিকে বিরোধী রাজনৈতিক দলের আন্দোলনকারীদের চোর-ডাকাত-সন্ত্রাসী বলছেন, অপর দিকে ছাত্রলীগের একজন অস্ত্রধারী চিহ্নিত সন্ত্রাসীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। সন্ত্রাসীরা পাচ্ছে রাষ্ট্রীয় সমর্থন। সম্প্রতি আখেরুজ্জামান তাকিম নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রলীগ ক্যাডারের হাত ও পায়ের রগ কেটে দিয়েছে প্রতিপক্ষ। ২০০৭-০৮ শিাবর্ষে দর্শন বিভাগে ভর্তি হন আখেরুজ্জামান তাকিম। কাসে উপস্থিতি না থাকার কারণে  প্রথম বর্ষের পরীা দেয়ার সুযোগ পাননি। পরের বছর ২০০৯ সালেও তিনি প্রথম বর্ষ পরীার ফরম পূরণ করেননি। ২০১০ সালেও করেননি। তখন থেকেই তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব বাতিল হয়ে যায়। গত জুন মাসে গঠিত ছাত্রলীগের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সহসভাপতির পদ পান। গত ১৫ জুলাই পদ্মা সেতুর জন্য টাকা তোলা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের তুহিন গ্রুপের সাথে আখেরুজ্জামান গ্রুপের সংঘর্ষ বাধে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ছাত্রলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল হাসান। ওই ঘটনায় আখেরুজ্জামানসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। একই সাথে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত হন তিনি। তার পরও তিনি ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন। সর্বশেষ গত ২ অক্টোবর ছাত্রশিবিরের সাথে সংঘর্ষের সময় পুলিশের সামনেই আখেরুজ্জামানকে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করতে দেখা যায়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার ছবি প্রকাশিত হয়। সেই আখেরুজ্জামান এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিণে। এরই মধ্যে ছাত্রলীগ তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। (প্রথম আলো ২৪ নভেম্বর ২০১২)। এই ছাত্রত্বহীন ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে অর্থনীতি বিভাগের একজন শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানিরও অভিযোগ রয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
আখেরুজ্জামানের ওপর হামলার জন্য জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করা হয়েছে। যদিও শিবির তার ওপর হামলা করেছে তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নয়। দীর্ঘ দিন ধরে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস-ছাড়া। ছাত্রশিবিরের ওপর হামলার দায় চাপানোর পর আখেরুজ্জামানের সব অপরাধ এখন মাফ হয়ে গেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার পাশে দাঁড়িয়েছেন। ছাত্রলীগ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ছাত্রলীগের রাজনীতির আদর্শ এখন তাকিম। এখন ছাত্রলীগের স্লোগান হতে পারেÑ আমরা সবাই তাকিম হবো, জাময়াত-শিবির নির্মূল করব। কারণ জামায়াত-শিবির নির্মূলের জন্য যে তাকিমের মতো নেতার প্রয়োজন তা মন্ত্রী নিজেই প্রমাণ করে দিয়েছেন। এভাবে সন্ত্রাসীদের পক্ষে মন্ত্রীরা যখন দাঁড়ান, তখন তাণ্ডবের রাজনীতিকে আরো উসকে দেয়া হয়।
সহিংস রাজনীতি কোনো অবস্থাতেই কাম্য না হলেও জামায়াত-শিবিরের সাথে সংঘর্ষ বা সঙ্ঘাতকে রাজনীতি দমনে পুলিশের বল প্রয়োগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে বিবেচিত হবে। অপর দিকে ক্ষমতাসীন দল বিরোধী দলকে রাজনৈতিকভাবে বা আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে যেভাবে জ্বালাও-পোড়াও এবং মারধরের কর্মসূচি নিয়েছে তা ফ্যাসিবাদী রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ। প্রকৃত অর্থেই রাজনৈতিক তাণ্ডব। এই রাজনৈতিক তাণ্ডব আর সন্ত্রাসকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সমর্থন দিয়ে দেশকে অরাজকতার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।
alfazanambd@yahoo.com

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads