শুক্রবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১২

জেলে বসে কোকো কিভাবে ব্যাংক একাউন্ট পরিচালনা করলেন ?


 
দুর্নীতি দমন কমিশনকে সরকারের এজেন্ট বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতারা। সিঙ্গাপুর থেকে আরাফাত রহমান কোকোর পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা ইস্যুতে বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা ও তার আইনজীবীরা বলেছেন, এটি সরকারের ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ। বিএনপি ও জিয়া পরিবারের ভাবমূর্তি ক্ষণ্ন করতে সরকার দুদককে ব্যবহার করছে। কোকোর পাচার করা অর্থ ফেরতের বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যানের বক্তব্য সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আরাফাত রহমান কোকোর কোন একাউন্ট নেই, ফেরত আনা অর্থও তার নয়। আরাফাত রহমান কোকোর আইনজীবী ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন এমপি বলেন, দেশে ফিরিয়ে আনা পাচার করা অর্থ কোকোর নয়। দেশে ফিরিয়ে আনা অর্থ কোকোর বলে দুর্নীতি দমন কমিশন গণমাধ্যমে যে তথ্য প্রচার করেছে তা বিভ্রান্তিমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ তথ্য গণমাধ্যমে প্রচার করে জিয়া পরিবার ও বিএনপিকে ঘায়েল করতে সরকারের যে রাজনৈতিক এজেন্ডা তা দুদক বাস্তবায়ন করেছে। ব্যারিস্টার খোকন বলেন, দুদক চেয়ারম্যান দাবি করেছেন সিঙ্গাপুরের ইউনাইটেড ওভারসিজের মাধ্যমে ২০০৭ সালের ১৬ই নভেম্বর টাকাগুলো পাচার করা হয়েছে। অথচ তার প্রায় আড়াই মাস আগে ২০০৭ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে আরাফাত রহমান কোকোকে ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় তার পক্ষে ব্যাংক হিসাব পরিচালনার সুযোগ ছিল না। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে- কারাগারে অবস্থান করে কোকো কিভাবে ব্যাংক একাউন্ট পরিচালনা করলেন। এতে প্রমাণ হয়, ওই অর্থ কোকোর নয়। ব্যারিস্টার খোকন বলেন, ২০০৯ সালের ১৭ই মার্চ দুদক কাফরুল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নং-৩০। সেখানে পরিষ্কার বলা হয়েছে- জেডএজেড (জাজ) কোম্পানিটি সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত হয় ১০ই এপ্রিল ২০০৪ সালে। দু’দিন পর ১২ই এপ্রিল সেটা একটি ব্যাংক একাউন্ট ওপেন করে। সেখানে আরাফাত রহমান কোকো পরিচালক বা শেয়ার হোল্ডার ছিলেন না। তার কোন একাউন্টও নেই। ব্যারিস্টার খোকন প্রশ্ন রেখে বলেন- এখন দুদকের মামলা সত্য নাকি দুদক চেয়ারম্যানের বক্তব্য? তিনি বলেন, আমাদের ধারণা- বিএনপি ও জিয়া পরিবারের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করতে সরকারই ওই সময় অন্য একাউন্ট থেকে টাকা ট্রান্সফার করেছে। সরকারের পক্ষে বিরোধীদলকে বেকায়দায় ফেলতে ৪ কোটি টাকা ব্যবহার করা কঠিন কিছু নয়। ব্যারিস্টার খোকন অভিযোগ করে বলেন, সরকার সিঙ্গাপুর থেকে এ অর্থ কবে এনেছে সেটা প্রকাশ করা হয়নি। এখন খালেদা জিয়া একটি সমাবেশে বক্তব্য দেয়ার পর সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে দুদক চেয়ারম্যান এ ধরনের বিভ্রান্তিকর একটি সংবাদ প্রকাশ করেছেন। বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন অসীম বলেন, সিঙ্গাপুর থেকে আরাফাত রহমান কোকোর পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার বিষয়টি স্রেফ অপপ্রচার। কোকোর নামে কোন একাউন্ট নেই। এখন যে অর্থ ফেরত আনার কথা বলছে সরকার সেটা কোকোর নয়। তিনি বলেন, সিমেন্স ও সাইমনের কোম্পানিকে অভিযুক্ত করে জরিমানা করেছে মার্কিন আদালত। সেখানে কোকোর কোন নাম আসেনি। এখন যে অর্থ ফেরত আনা হয়েছে সেটার দায় ওই কোম্পানির একাউন্ট হোল্ডারের হতে পারে কিন্তু কোন অবস্থাতেই কোকোর নয়। এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার মিথ্যা অভিযোগ এনে বিএনপি নেতাদের চরিত্র হনন করছে। তারা দুদককে তাদের এজেন্ট হিসেবে ব্যবহার করছে। খালেদা জিয়া যখন ব্যাপক জনপ্রিয়তা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন, তখনই জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে কোকোসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে দুদক। কোকোর পাচার করা অর্থ ফেরতের বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যানের বক্তব্য সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিরোধী দলের নেতাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে দুদক পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে। তিনি বলেন, তারা এখনও সরকারি দলের কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করতে পারেনি। এমনকি তারা যে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তাও স্বীকার করতে চায় না। সরকারি দলের অপরাধীদের শাস্তি না দিয়ে উল্টো ক্লিন সার্টিফিকেট দিচ্ছে। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম বলেন, বিএনপি ও জিয়া পরিবারের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করতে সরকার একটি নির্লজ্জ মিথ্যাচার করছে। একটি দায়িত্বশীল অবস্থানে থেকে সরকারের এ আচরণ পুরোপুরি অনৈতিক। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য এম কে আনোয়ার বলেন, দুদক চেয়ারম্যান কোন প্রমানপত্র ছাড়াই এ ঘোষণা দিয়েছেন। পুরো প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করলে পরিষ্কার হয় সরকার চরিত্র হননের জন্য দুদককে ব্যবহার করেছে। সুত্র- মানব জমিন 

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads