বুধবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৩

পিপার স্প্রে কি অমানবিক নয়?



মুহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেন চৌধুরী : ইসরাইলের ভবিষ্যৎ নিয়ে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন্মসূত্রে ইহুদী হেনরি কিসিঞ্জার ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন ২০২২ সালের পর ইসরাইল জাতিটি শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু ইসরাইল যে আজকের শক্তি ও অবস্থান নিয়ে টিকে থাকবে না, অন্তত এটুকু পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আজকের ইসরাইলকে টিকিয়ে রাখার মতো আর্থিক ও কূটনৈতিক সামর্থ্য ততদিন যুক্তরাষ্ট্রের থাকবে না! এ উক্তিটি স্মরণ করতে হচ্ছে ডঃ ফখরুদ্দীন ও মঈন ইউ আহম্মেদ কর্তৃক ক্ষমতা জবরদখল করার পর প্রবীণ সাংবাদিক, রাজনীতিক, সাবেক মন্ত্রী মরহুম  আনোয়ার জাহিদ স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ নিয়ে যে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত চালানো হচ্ছে তাদের অস্তিত্বের সংকট হবে এমন মন্তব্যের মধ্য দিয়ে ইস্কাটন রোডের বাসায় বসে বলেছিলেন। বাংলাদেশে ওয়ান ইলেভেনের পর রাজনৈতিক ব্যক্তিদের রাজনৈতিক হয়রানি, মামলা ও স্বদলের  রাজনীতিবিদদের মানসিক চাপের মধ্যে রেখে অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করানোর অভিযোগ সর্বত্র! প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনকাল ৪ বছর পূর্ণ হওয়ায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে বলেন, মাইনাস টু'র প্রবর্তকরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে! এ বক্তব্য নিয়ে  আমজনতা ব্যাপক বিশ্লেষণমূলক আলোচনা শুরু করেছে। তাদের ভাষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি  উপলব্ধি করেন মাইনাস টু'র প্রবর্তকরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে! তাহলে তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না কেন? নির্বাহী বিভাগের  সকল অগণতান্ত্রিক ও মানবাধিকার পরিপন্থী কাজ স্বচ্ছ রাজনৈতিক পরিবেশ বিঘ্ন সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে  ব্যবস্থা নিতে বিচার বিভাগের অনেকেই নিরপেক্ষ অবস্থায় থাকতে পারছে না এরই বা কারণ কি অনুসন্ধান করে দেখা প্রয়োজন। আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ঝুঁকি নিয়ে আদালতে আসলেও আদালত তাকে আশ্রয় দিতে সাহস পায় নাই। ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজির আহম্মেদ বলেছেন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী দমনে পিপার স্প্রে অত্যন্ত কার্যকারী অস্ত্র। এটা লাঠিপেটার বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এ সংবাদ পত্রিকায় পড়ে অনেকেই সমালোচনা করছে বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ মিছিলে, তারপর রাজধানীতে মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকদের উপর জলকামান, মরিচগুড়া ও পিপার স্প্রে করায় পটুয়াখালীর একজন শিক্ষক মোঃ সেকেন্দার আলী মৃত্যুবরণ করেছেন। এরা পুলিশের চোখে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী হিসাবে চিহ্নিত হলেও! অপরদিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের উপর এসিড নিক্ষেপ, বিরোধীদলের অবরোধের দিন পুলিশ কর্মকর্তা হারুন-অর-রশীদের সামনে বিশ্বজিৎ দাসকে কুপিয়ে হত্যা? ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের সামনে শিক্ষকের উপর হামলা ও পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রতিপক্ষ ছাত্র সংগঠনের ছাত্রকে গুলী করে হত্যা, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের গুলীতে শিশু হত্যা এগুলো কি পুলিশ কমিশনারের দৃষ্টিতে শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম?  আর যদি তাই না হবে তাহলে তাদের উপর পিপার স্প্রে ব্যবহার করা হতো নিশ্চয়ই।  একজন প্রবীণ আইনজীবী বললেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুধু নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করছে না বরং তারা পশুর চাইতেও জঘন্যতমভাবে শান্তিপ্রিয় মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। অনেকেই এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছে। সরকার কর্তৃক সমর্থন না দেয়ায় বা না নেয়ায় বাম দলের হরতাল চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকদের উপর পিপার স্প্রে করা হয়। সম্প্রতি শিক্ষক রাজনৈতিক কর্মী ও সাংবাদিকদের উপরে যে পিপার স্প্রে করা হচ্ছে তা অত্যন্ত ক্ষতিকর জীবাণু যা চোখ নষ্ট, অঙ্গহানি কিংবা মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে এমন সংবাদ ঢাকার একটি দৈনিক পত্রিকা চিকিৎসকদের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে। তার পরও আবার ঐ বিষাক্ত পিপার স্প্রে ব্যবহার হয়েছে। অনেক স্থানে সেই গ্যানেট চার্জ হয়েছে বলে স্বচিত্র সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান শাসকজোটের মানবাধিকার রক্ষায় বিবৃতি দিলেও সংখ্যাগরিষ্ট জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় যারা শাসকজোটের জাত দুশমনে পরিণত হয়েছে তাদের ন্যায়বিচার ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগকে নিরপেক্ষ থাকার আহবান জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন। যার উহাদরণ হিসাবে এ দেশের রাষ্ট্রীয় অধিকার আদায়ের দাবিকারীদের কুকুরের সমান মর্যাদাও নেই। সম্প্রতি সিটি করর্পোরেশন কুকুর নিধন অভিযানে উত্তরায় বসবাসকারী জনৈক সচিবের কন্যার কুকুরটি সিটি কর্পোরেশনের কুকুর নিধনকারী কর্মীরা হত্যা করায় উক্ত বিভাগের একজন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ মানুষ তৈরির কারিগর যদি কুকুরের চাইতেও নিম্ন মর্যাদার অধিকারী হয়! তাহলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কোন সামাজিক, মানবিক মর্যাদাতো থাকার কথা নয়! সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর-রুনির হত্যা মামলা নিয়ে কতইনা আশ্বাস দিল সংশ্লিষ্টরা! আসলে কি শাসকদলের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যারা সত্য বলে কিংবা প্রচার করে তারা অসভ্য আচরণের শিকার হবে! এমন নীতি কি অনুসরণ হচ্ছে? যে শিক্ষককে ঐ বিষাক্ত গুড়া মরিচ স্প্রের কারণে মৃত্যুবরণ করতে হলো তার জন্য ঐ স্প্রের আমদানির পরামর্শদাতা ও অনুমতিদাতাদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে স্বপ্রণোদিত হয়ে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী রুল জারির প্রত্যাশা পূরণ হলেও পিপার স্প্রে বন্ধ হয়নি। জনগণের অর্থে জনগণকে তার ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলন স্তব্ধ করতে বিষাক্ত স্প্রে ব্যবহারের কোন জবাবদিহি চাওয়ার কারো অধিকার নেই! এই আলামত জাতিকে সংকীর্ণ করে নেই ভবিষ্যৎ শাসকজোটের জন্য অন্ধকারের মধ্যে হাবুডুবু খাওয়ার আশঙ্কা করছে প্রকৃত রাজনীতিবিদরা। সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা মহান স্বাধীনতার ঘোষক জেড ফোর্সের অধিনায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সহধর্মীনি তিন তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি সম্পন্ন শহীদ জিয়া বেগম খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠপুত্র তারেক রহমানের আবেদন আদালত কর্তৃক খারিজ। স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ  বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নামে একের পর এক মামলা দিয়ে শ্যোন অ্যারেস্ট দুই মামলায় ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন। বিএনপির যুগ্ম মহাসিচব সাবেক ছাত্রনেতা এডভোকেট রুহুল  কবির রিজভীকে দলীয় কার্যালয়ে অবরুদ্ধ। স্কাইপি সংলাপের সাথে জড়িত বিজ্ঞ ব্যক্তিত্বরা প্রতিবাদ না করায় প্রকাশিত সংবাদ সত্য প্রমাণিত হওয়ার পর তাদের গ্রহণকৃত সাক্ষীর যোগ্যতা যেখানে প্রশ্নবিদ্ধ! প্রশ্নবিদ্ধ অবস্থা থেকে গ্রহণযোগ্য করতে পুনরায় বিচার কার্য শুরু না করায় পুরাবিচার কার্যক্রম রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসাবে জনমনে সন্দেহ ঘনিভূত করেছে। এ বিষয়গুলো যদি সুষ্ঠু সমাধানের উদ্যোগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রহণ করতেন, তাহলে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণ মাইনাস টু'র প্রবর্তকরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে এটা স্ববিরোধী বলে আমজনতা মন্তব্য করতে পারতো না! আজকে প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তিনি জনগণের জন্য রাজনীতি করবেন, নাকি জনগণের অধিকার হরণকারীদের জন্য রাজনীতি করবেন? যদি জনগণের জন্য রাজনীতি করতে চান তাহলে পিপার স্প্রে আমদানির পরামর্শদাতা ও অনুমোদনকারীকে জনগণের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। তা না হলে জনগণ ও বিচার বিভাগের মধ্যে মতপার্থক্য সৃষ্টি হলে জাতির জন্য সংকট ত্বরিত ঘনীভূত হবে। পুলিশ বাহিনীর পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য বাজার মূল্যের চাইতে বেশি মূল্য দিয়ে ওয়ারেন্টিসহ ফোর্ড কোম্পানির কাছ থেকে ১৯ কোটি টাকার ১০৫টি গাড়ি ক্রয়ের ছয় মাসের মধ্যেই নষ্ট হয়ে পড়েছে বলে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এসব বিষয়ে খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তা রাষ্ট্রের নির্বাহী প্রধান হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর দেখা প্রয়োজন এমন দাবি কেউ করলে তা নিশ্চয়ই অন্যায় নয়? জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করার সাথে সাথেই চাল, ডাল, তৈলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু মানুষের আয় বৃদ্ধি পায়নি। মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ চেয়ারের মালিকদের সুযোগ-সুবিধা, চাকরি দিয়ে অর্থ আদায় আর বিদেশে ভ্রমণের ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ অর্থের যোগান দিতে হয় সংখ্যাগরিষ্ঠ মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের। তারা যাদের বিচার চায় তাদের মামলা প্রত্যাহার করে পুরস্কৃত করা হচ্ছে। আর যারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তাদের অসত্য ও বিচারকদের উপর প্রভাব খাটিয়ে শাস্তি দিয়ে মেধাসম্পন্ন রাজনীতিবিদদের ধ্বংসের পরামর্শদাতা দিল্লী হলেও দিল্লী নিজেদের আর্থিক সংকটের কারণে সাহায্য প্রত্যাহার করলে সব চক্রান্ত গোল্লায় চলে যাবে। আজকে প্রসঙ্গক্রমে বলতেই হয়, যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রি সেক্স বা মুক্ত যৌনের আইন রয়েছে, সেখানকার একজন নারী বাংলাদেশের এক কিশোরকে তালাক দিয়েছে লম্পটের আর দুর্নীতির কারণে! কে এই কিশোর করিতকর্মা দুর্নীতি দমন কমিশন কি তাকে চিহ্নিত করার যোগ্যতা রাখে কিনা তা এখন যত্রতত্র আলোচনা শুরু হয়েছে। এই কিশোরটির পরিচয় বের করে দুদুক দেশবাসীকে জানতে সক্ষম হবে কি? আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান যে বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে! সেটা সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে তদন্ত পূর্বক অভিযোগ খন্ডন করতে সক্ষম হলে জনগণ বিশ্বাস করবে ৮ জানুয়ারি বিচারক নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।  এতে বিচার বিভাগ সম্পর্কে জনগণের আস্থা আরো বৃদ্ধি পাবে। প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে যারা রাজকোষের অর্থের যোগান দেয় তাদের উপর পিপার স্প্রে নিক্ষেপকারীদের বিচার হলে স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের নাগরিক হিসাবে তাদের আস্থা ও বিশ্বাস দৃঢ় হবে। তড়িঘড়ি বিচারের পেছনে নিহিত কি রহস্য রয়েছে জনগণ এটাও জানার স্পৃহা বৃদ্ধি পাচ্ছে! নবম জাতীয় সংসদের নির্বাচনী কলা-কৌশলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী জোট ক্ষমতা গ্রহণের পর সকল কার্যক্রম জনগণ সমর্থন করে কি না তা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যদি আওয়ামী জোট সকল দলের অংশগ্রহণে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে (!) তারপরে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের নামে দায়ের করা মামলাগুলোর কার্যক্রম শুরু করলে বিচার বিভাগ নিয়ে জনমনে কোন সংশয়ের সৃষ্টি হবে না।  কারণ শাসকগোষ্ঠীকে খুশি করতে মানুষের তৈরি আইনের কারণে সক্রেটিসকে বিষ দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে। অথচ মহান আল্লাহ  পাক ন্যায় বিচারকদের বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত করবেন। আর যারা শাসকদের সন্তুষ্ট করতে পক্ষপাতমূলক বিচার করবেন তাদের জন্য কঠিন শাস্তি অপেক্ষা করছে। আল্লাহ পাক ইজ্জৎ দিতেও পারেন আবার তা ছিনিয়ে নিতেও পারেন এটাই বিধির বিধান। অনেকে দুনিয়ার উপরেই ক্ষমতার অপব্যবহারের শাস্তি ভোগ করে আর আক্ষেপ করতেও দেখা যায়। রাজকোষ অর্থ যোগান দানকারী আমজনতার আবেদন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের  অধীনে  নির্বাচন সম্পন্ন যতক্ষণ পর্যন্ত হবে না, ততক্ষণ বিচার বিভাগের মর্যাদা রক্ষা ও দেশের শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের  নামে দায়ের করা মামলা উচ্চ আদালত কর্তৃক স্থগিত রাখা, প্রয়োজন বলে শান্তি প্রিয় মানুষ আলোচনা করছে! তাদের ভাষায় রাজনীতিবিদদের নির্বাহী বিভাগ হয়রানি করতে হামলা মামলার রক্ষাকবজ আদালত ও গণমাধ্যম। দেশে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা অব্যাহত থাকলে অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙ্গে পড়বে। দুর্বৃত্ত, দুর্নীতিবাজ, সমাজবিরোধী ও সন্ত্রাসীদের হাতে রাষ্ট্রের ক্ষমতা গেলে কারো জন্যই সুখকর হবে না। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন দলের নিবন্ধনে আমজনতার বিশ্লেষণ অনুযায়ী ভালো লক্ষণ। আবেদনকারী সকল দল নিবন্ধন দেয়ার ব্যাপারে তাদের আপত্তি নেই। কিন্তু নতুন নিবন্ধিত দল ও আওয়ামী জোট থেকে বের করে বিরোধী দল বানিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন করা হলে এ জন্য দেশে কোন বিশৃক্মখলা সৃষ্টি হলে তার দায়-দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনকে বহন করতে হবে বলে সাবধান বাণী উচ্চারণ করতে শুরু করেছে। ওয়ান ইলেভেনের পর থেকে দেশে কলোনিয়াল কায়দায় আইনের প্রয়োগ শুরু হয়েছে। যার শেষ পরিণতি হচ্ছে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মৌলিক, মানবিক ও নাগরিক অধিকার থেকে এ দেশের সকল মানুষ বঞ্চিত হবে। কামার, কুমার  ও ক্ষেত মজুরের অর্থে রাষ্ট্রের কোষাগার পরিপূর্ণ হয়। তাদের অর্থ বিবেকবানদের জন্য তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় যারা সহায়ক তাদের পেছনে ছাড়া অধিকার হরণকারীদের পেছনে খরচ করার অধিকারতো গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় থাকার কথা নয়। দেশ যখন ক্রান্তিকালের মুখোমুখি হয় তখন বিচার বিভাগ ক্রান্তিকাল অতিক্রমের জন্য যারা প্রতিরোধের দেয়াল গড়ে তাদের রক্ষা কবজ হয়। গণমাধ্যম জনগণের অভিমত তুলে ধরে সুস্থ ব্যবস্থাপনা ফিরিয়ে আনার আন্দোলনকারীদের সাহস জোগায়, প্রয়োজনে দিকনির্দেশনা দেয়। আজকে চাটুকার গণমাধ্যম কর্মকর্তারাও নির্যাতন-নিপীড়ন থেকে মুক্ত নয়। এ থেকে এটা অন্তত পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার কথা অন্যায় এবং ন্যায়বিচার বিঘ্ন ঘটায় এমন কাজের সহযোগিতা করলে কেউই বিপদমুক্ত থাকতে পারে না। আজকে জাতীয়তাবাদের  মূলধারাকে শক্ত হাতে হাল ধরতে হবে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সময় নষ্ট না করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে অল্প সময়ের মধ্যে।  হেনরি কিসিঞ্জারের মন্তব্য থেকে পরিষ্কার সন্ত্রাস আর অমানবিক আচরণ করে কোন কিছুর স্থায়িত্ব ধরে রাখা যায় না।  তিন দিক শত্রু বেষ্টিত আর একদিকে বঙ্গোপসাগর! পালানোর জায়গা নেই লড়াই করেই শত্রুদের পরাস্থ করে দেশের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে হবে।  প্রধানমন্ত্রীকেও প্রমাণ করতে হবে তিনি যা বলেছেন তা বলার জন্য নয়, প্রবক্তাদের থেকে মুক্তি পেতেই বলেছেন। দেশবাসী বিশ্বাস করে প্রধানমন্ত্রী স্বউদ্যোগে সাম্রাজ্যবাদ, আধিপত্যবাদ, সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের চক্রান্ত থেকে জাতিকে মুক্ত করতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করবে। রাজনৈতিক অঙ্গনে ওয়ান ইলেভেনের মহাসঙ্কটের সময় কলম সৈনিকদের অন্যতম মাহমুদুর রহমানকে সত্য উদঘাটনের জন্য স্বাধীনতা পুরস্কার দিবেন। তার নামে দায়েরকৃত সকল মামলা প্রত্যাহার করবেন। যেমন করে ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্নজনের বিচারাধীন প্রায় ৭৩০০টি মামলা প্রত্যাহার করেছেন। স্বাধীনতার রূপকার, স্বপ্নদ্রোষ্টা ও প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টামন্ডলীর সভাপতি মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর জীবনী শিশুদের পাঠ্যপুস্তকে পুনর্মুদ্রণ করে ভবিষ্যৎ বংশধরদের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় উজ্জীবিত করবেন। বিরোধী দলের নেত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে দায়ের করা হয়লানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এর পাশাপাশি ১৮ দলীয় জোট নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ও বিচারাধীন মামলা প্রত্যাহারের মধ্যদিয়ে তাকে প্রমাণ করতে হবে তিনি গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা রক্ষায় আলোচকদের মর্যাদা প্রদান করেছেন। তাহলেই তার সকল আশঙ্কা অসাড় হয়ে যাবে।
-লেখক সাংবাদিক ও কলামিস্ট, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মফস্বল মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরাম (বামমাসাফো)

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads