বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত এত বেশি
অনাকাক্সিত, অমানবিক, মর্মান্তিক, হৃদয়স্পর্শী এবং বীভৎস অঘটন ঘটে, যার কোনো একটির সুরাহার আগেই ঘটে যায় তার চেয়েও বহুগুণে ভয়াবহ আরো কোনো অঘটন।
সাগর-রুনি, ইলিয়াস আলী, লিমন, বিশ্বজিৎ, ত্বকী, কালো বিড়াল, হলমার্ক, ডেসটিনি কিংবা রানা প্লাজা এখন
আর মিডিয়ার শিরোনামে নেই, আছে নিত্য-নৈমিত্তিক ‘গুম-খুন যার অন্যতম নারায়ণগঞ্জের লোমহর্ষক সাত খুনের ঘটনা। প্রতিনিয়ত লম্বা
হচ্ছে এসব গুম-খুনের তালিকা। নারায়ণগঞ্জ হত্যাকাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই ঘটে যায়
ফেনী, লক্ষ্মীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আরো বেশক’টি মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড। চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনে দৈনিক মাথাভাঙা পত্রিকার
সাংবাদিকের ১০ টুকরো লাশ পাওয়া যায়। নারায়ণগঞ্জের নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের শ্বশুর
সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ছয় কোটি টাকার বিনিময়ে র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা
সাতজনকে অপহরণের পর খুন করেছেন। তিনি জানান, নজরুলকে ফেরত পেতে র্যাবের সিওকে
তিনি দ্বিগুণ টাকা দিতে চেয়েছিলেন।
সরকারের
এলিট ফোর্স র্যাবের বিরুদ্ধে অতীতে যেসব অভিযোগ উঠেছে, তার একটিরও সুষ্ঠু তদন্ত বা কোনো বিচার হয়েছে বলে শোনা যায়নি। ঝালকাঠির লিমনের
কথা দেশবাসী নিশ্চয়ই ভোলেনি। পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে সম্ভাবনাময় এ হতভাগা তরুণকে গুলি করার
অভিযোগ রয়েছে এ বাহিনীর বিরুদ্ধেই। লিমনের সে পাটি কেটে ফেলতে হয়েছে। অজপাড়াগাঁয়ের
এক নির্দোষ, নিরপরাধ যুবককে অপরাধী বানাতে এই বাহিনী তখন এমন কোনো সুকর্ম (!)
নেই যেটি করেনি। দেশী-বিদেশী নানা মানবাধিকার সংস্থা যখন লিমনের পাশে দাঁড়িয়েছিল পুরো
রাষ্ট্রযন্ত্র তখন লিমনের বিপে কাজ করেছে। লিমন এখন এক পায়ের খোঁড়া এক তরুণ। লিমনের
সেই কাটা পায়ের অবশিষ্টাংশ যেন এখনো আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে পচন ধরা
বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। সরকার যদি গুম-খুনের তদন্তে ব্যর্থ হয়, হারিয়ে যাওয়া অগণিত মানুষের খোঁজ দিতে না পারে তবে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যদি ঘাতকের অভিযোগ ওঠে, রাষ্ট্রযন্ত্র যদি ঘাতকের ভূমিকায়
থাকে, তার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে যদি খুন, গুম, চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণ বা অপহরণের মতো জঘন্য অভিযোগ
উত্থাপিত হয় বা তাতে রাষ্ট্রের যদি বিন্দুমাত্র প্ররোচনা প্রকাশ পায় সে রাষ্ট্র কি
ব্যর্থ হতে বাধ্য নয়? কোনো রাষ্ট্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যত বেশি অস্ত্র
ও লাঠির চর্চা হয়, সে রাষ্ট্রে জ্ঞান, বুদ্ধি ও বিবেকের চর্চা তত হ্রাস
পায়। অস্ত্র মুখ্য হলে সেখানে কলম, বিবেক ও বুদ্ধি গৌণ হয়ে যায়।
দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশ তথা জনগণের জানমালের রক। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পোষা
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাষ্ট্র তথা জনগণের চাকর। চাকর যদি অত্যাচারী হয়ে মনিবের ভূমিকায়
অবতীর্ণ হয় সেটা রাষ্ট্রের জন্য, জনগণের জন্য কখনো সুখকর নয়। একটি স্বাধীন দেশ এভাবে
গুম-খুনের অভয়ারণ্য হতে পারে না, এভাবে নির্বিচারে মানুষ মরতে পারে না। এ কথা নিঃসন্দেহে
সত্য যে, প্রথম দিকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে র্যাব ব্যাপক
সফলতা দেখায়। এ ছাড়া র্যাবের সব সদস্যের বিরুদ্ধে এমন দুর্নীতি বা খুনের অভিযোগও নেই।
কিছু সদস্যের বিপথগামিতার কারণে জনগণের আশীর্বাদপুষ্ট র্যাবকে আমরা অবশ্যই রীবাহিনী
হতে দিতে চাই না।
গত ১ মে
গাজীপুরে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, হত্যা ও গুমের সাথে বিএনপি জড়িত। নারায়ণগঞ্জ, ফেনী কিংবা লক্ষ্মীপুরের ঘটনায় কি তা প্রমাণিত হয়? অন্য দিকে নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর একের পর এক লাগামছাড়া
বক্তব্য সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি শান্ত না হলে আসামি ধরা যাচ্ছে না’ এবং ‘শীতল্যায় কোনো গুম হয় নাই, সাঁতার না জানার কারণেই তারা
ডুবে মারা গেছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যাদের গ্রেফতার করতে চাচ্ছি, তারা তো এখন আর জনসমে নেই, আত্মগোপনে চলে গেছে।’ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে কি দেশে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার কার্যকারিতা
বিন্দুমাত্রও প্রকাশ পায়? দেশের এমন পরিস্থিতিতে তার বিদায় নেয়া উচিত কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমাদের পদত্যাগ কেউ চায় তা আপনার
কাছে প্রথম শুনলাম।’ দুর্ভাগ্য আমাদের, এত ব্যর্থতার পরেও তাদের ভাষায় তারা সফল (!)। এ লজ্জা আমরা রাখি কোথায়?
দুই
স্বাধীনতার
৪০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবীসহ নানা শ্রেণীপেশার ৩৩৮ জন বিশিষ্ট নাগরিক
ও সংগঠনকে সম্মাননা ক্রেষ্ট দেয় সরকার। প্রতিটি ক্রেস্টে এক ভরি স্বর্ণ ও ৩০ ভরি রুপা
থাকার কথা ছিল। সম্প্রতি অভিযোগ ওঠে ক্রেস্টে সোনা-রুপার পরিমাণে জালিয়াতি নিয়ে। এ
নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে ক্রেস্টের নমুনা পরীা করিয়ে তাতে
কোনো সোনা-রুপার অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি। পত্রিকায় খবর বের হয়, ‘ক্রেস্টের স্বর্ণ ১৬ আনাই মিছে!’ এ জালিয়াতির জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক
মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী, সাবেক সচিব, বর্তমান সচিব, অতিরিক্ত সচিবসহ মন্ত্রণালয়ের আরো বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে দায়ী করে তদন্ত কমিটি।
তদন্ত প্রতিবেদনে রাষ্ট্রের আর্থিক তি ছাড়াও অপূরণীয় সম্মানহানি ও ভাবমর্যাদা নষ্টের
কথাও বলা হয়। গত ৪৩ বছরে এ জাতির যতগুলো অর্জন আছে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা
লাভ তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন। মুক্তিযুদ্ধ করেছেন এ দেশের কৃষক, মজুর, তাঁতি, জেলে, ছাত্র, শিকসহ সব শ্রেণীপেশার ল কোটি জনতা। নয় মাসের রক্তয়ী যুদ্ধ, ত্রিশ লাখ শহীদ আর অগণিত মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত হয় এ স্বাধীনতা।
কিছু অর্থ আত্মসাৎ করতে গিয়ে যারা এ জালিয়াতি করল তারা কি পুরো মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত
করল না? রাষ্ট্র পরিচালনার এ সব নায়কের চুরি-চামারি আর নির্লজ্জতার সীমা
কোথায়? তাদের দেশপ্রেম কি শুধু চেতনায় (!), কথায় আর বক্তৃতায়? সমাজের উঁচুস্তরের এই কিছু জ্ঞানপাপী দেশের ১৬ কোটি
মানুষকে বিশ্ববাসীর কাছে কতটুকু হেয় করেছে তা বোঝার যোগ্যতা তাদের আছে কি? তাদের বিবেকের কাছে তারা কি একবারও প্রশ্ন করে দেখেছে দেশের জন্য এটা কতটা
লজ্জার?
সম্মাননা
পাওয়া জুলিয়ান ফ্রান্সিস দৈনিক প্রথম আলোতে লেখেন, ‘এর বিরুদ্ধে যাতে সঠিক ও কঠিন
পদপে নেয়া হয় প্রধানমন্ত্রী তা নিশ্চয়ই দেখবেন।’ তার প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘আমি বিস্মিত! এটা খুবই দুঃখজনক। এটা সরকারের ভাবমর্যাদার প্রশ্ন। দেশের প্রধানমন্ত্রী
নিজ হাতে এ ক্রেস্ট দিয়েছিলেন। আমি আর কী বলব? আমি মনে করি, যারা এটা করেছে তারা বড় ধরনের অপরাধ করেছে। তাদের
আইনের আওতায় নিয়ে আসা উচিত। কারণ, এটা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত লজ্জার।’ বিদেশী বন্ধু ফ্রান্সিস আর কী বলে তার ােভ প্রশমিত করতে পারতেন? ভাবতে অবাক লাগে, জাতি হিসেবে আমরা কতটা নিকৃষ্ট আর কত নীচু মনের
মানুষদের কাছে আমরা আমাদের ভাগ্য ছেড়ে দিয়েছি। মুক্তিযুদ্ধ এবং দেশের সম্মান যারা এভাবে
কলঙ্কিত করল তাদের কী শাস্তি হওয়া উচিত বা রাষ্ট্র তাদের কী শাস্তি দেবে তা আমরা জানি
না। গিনেস বুকে পৃথিবী শ্রেষ্ঠ চোরদের যদি কখনো স্থান হয়, বোধ করি তখন আমাদের হারিয়ে সে স্থান কেউ দখল করতে পারবে না।
গত ১৯
মে ওই ব্যক্তিদের পুনরায় সঠিকভাবে ক্রেস্ট তৈরি করে দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে
রিট করা হয়। আমরা জানি না আদালত কী রায় দেবেন। ষোলো আনা ভেজাল দিয়ে যেসব বিদেশী বন্ধুদের
ক্রেস্ট দেয়া হয়েছিল সে অপমান ভুলে দ্বিতীয়বার আবার তারা সবাই নির্ভেজাল ক্রেস্ট নিতে
এ দেশে আসবেন তা ভাবার কি কোনো কারণ আছে? আর দ্বিতীয়বার যে ক্রেস্টগুলো
ষোলো আনাই নিখাদ হবে তার কি কোনো নিশ্চয়তা আছে? একই সাথে জনগণ তো এতটুকু আশা
করতেই পারে যে, দ্বিতীয়বার দেয়া ক্রেস্ট নিশ্চয়ই জনগণের ট্যাক্সের টাকায় তৈরি
হবে না বরং তা দোষীদের কাছ থেকে আদায় করা অর্থেই হবে। যে দেশের বিমানবন্দরে এমনকি বিমানের
টয়লেটে পর্যন্ত প্রতিনিয়ত কেজি কেজি সোনা পাওয়া যায়, সে দেশে উঁচুস্তরের এই মানুষগুলো
কেন এক ভরি সোনার লোভ সামলাতে পারল না? ‘স্বর্ণকারেরা মায়ের সোনাও চুরি
করে’ বলে যে প্রবাদ চালু আছে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়
আর ওই ক্রেস্ট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সে প্রবাদকেও হার মানিয়েছে। এ লজ্জা আমরা
রাখি কোথায়?
তিন
একের পর
এক প্রশ্নপত্র ফাঁসের মধ্য দিয়ে শেষ হতে যাচ্ছে এ বছরের এইচএসসি পরীা। দেশের শিাব্যবস্থা
লাটে ওঠার উপক্রম; তবুও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় তথা সরকার নির্বিকার। একজন ছাত্র বা
ছাত্রীর জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীা এটি। কারণ এই পরীার ফলাফলের সাথে মেডিক্যাল
কলেজ, বুয়েটসহ উচ্চশিা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তি সম্পর্কযুক্ত। গত ৩ এপ্রিল
শুরু হওয়া এ পরীায় প্রায় প্রতিটি পরীার আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ঊঠলেও সরকারের
তরফ থেকে তেমন কোনো কার্যকর পদপে নেয়া হয়নি। বরং ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রেই সব পরীা সম্পন্ন
হতে যাচ্ছে। শিামন্ত্রী থেকে শুরু করে বোর্ডের চেয়ারম্যানরা কখনো এটাকে ‘গুজব’ আবার কখনো ‘সাজেশন’ বলে দায় এড়াতে চেয়েছেন। যারা
পরীার আগে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পেয়ে পরীা দিয়েছে তারা স্বভাবতই যেসব মেধাবী ছাত্রছাত্রী
ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পায়নি তাদের চেয়ে অনেক ভালো ফল করবে। ফলে যোগ্যরা মেডিক্যাল কলেজ
ও বুয়েটে ভর্তির েেত্র বৈষম্যের শিকার হবে, দেশের প্রকৃত মেধাবীরা হারিয়ে
ফেলবে তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন। এভাবে মেধা খুনের দায় কি শিা মন্ত্রণালয় তথা সরকারের
ওপর বর্তায় না? সাধারণ মানুষ কার কাছে এর প্রতিকার চাইবে?
সাম্প্রতিক
সময় সব পাবলিক পরীা এমনকি বিসিএস পরীা এবং বিভিন্ন নিয়োগ পরীার প্রশ্নপ্রত্র ফাঁসেরও
অভিযোগ ওঠে। অথচ অদ্যাবধি একটি পরীার প্রশ্নপত্র ফাঁসের উৎস কিংবা এর সাথে জড়িত কারো
দৃষ্টান্তমূলক কোনো শাস্তি হয়েছে বলে শোনা যায়নি। এ ব্যর্থতা কার? শিা মন্ত্রণালয় তথা সরকার কেন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না? এভাবে চলতে থাকলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ধ্বংস অনিবার্য। এসব প্রশ্নপত্র
ফাঁসকারীরা কি সরকারের চেয়েও শক্তিশালী? বিজি প্রেসে কতজন কর্মকর্তা-কর্মচারী
নিয়োজিত আছে? তাদের খুঁটির জোর কোথায়? আমার পরিচিত একজন সরকারি কলেজের
প্রবীণ শিক বোর্ডের খাতা দেখা থেকে তার নাম প্রত্যাহার করেছেন। কারণ হিসেবে তিনি আমায়
বলেছেন, ‘ফাঁস হওয়া প্রশ্নের উত্তরপত্র দেখতে তিনি ঘৃণা বোধ
করছেন।’ তার এই ঘৃণাবোধ কি রাষ্ট্রযন্ত্রের ওপর নয়? একটি ফেরিডুবির ঘটনার সব দায় মাথায় নিয়ে সম্প্রতি দণি কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী
চাং হং উন পদত্যাগ করার ঘোষণা দেন। বাংলাদেশ কবে সেরকম দেশ হবে? আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের এ থেকে শিা নেয়ার কি কিছুই নেই? পদত্যাগ কিংবা মা প্রার্থনা তো দূরের কথা, শত ব্যর্থতার পরও কোনো দিন তারা
কোনো ভুল স্বীকার করছে বলেও কোনো নজির নেই, প্রশ্নপত্র ফাঁস তার একটি প্রকৃষ্ট
উদাহরণ। জাতি হিসেবে এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার।
এমন গুম-খুনের
ভীতসন্ত্রস্ত বাংলাদেশ আমরা চাইনি, যেখানে মানুষের জীবনের কোনো মূল্য
নেই, জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই। আমরা এমন দুর্নীতিগ্রস্ত বাংলাদেশ
চাইনি, যে দেশের মন্ত্রী কিংবা সচিব এক ভরি সোনার লোভ সামলাতে পারবেন
না কিংবা যাদের দেশপ্রেম এক ভরি সোনার চেয়েও কম মূল্যবান। স্বাধীন দেশে এমন ন্যায়নীতিভ্রষ্ট, দায়িত্বহীন শিা বোর্ড কিংবা মন্ত্রণালয় আমরা চাইনি যারা প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার
পরেও সেই প্রশ্নে পরীা নিয়ে শিার মান বাড়ছে বলে আস্ফালন করবে। একটি মুক্তিযুদ্ধে দেশ
স্বাধীন হয়েছে বটে, কিন্তু যে স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন
করেছিল বাস্তবে স্বাধীনতার ৪২ বছর পরেও সে স্বপ্নের কানাকড়িও কি এ দেশের সাধারণ মানুষ
পেয়েছে? তা হলে দেশের ষোলো কোটি মানুষ প্রতিদিন যে অন্যায়, অবিচার কিংবা দুর্নীতির মুখোমুখি তা থেকে পরিত্রাণের এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে
রার জন্য কি দরকার আর একটি মুক্তিযুদ্ধ ?
প্রফেসর ড. মো: হারুনর রশীদ খান
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন