শনিবার, ৭ জুন, ২০১৪

আপাত শান্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অস্থিতিশীলতার অশুভ পদধ্বনি



গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনী জালিয়াতির পর রাজনৈতিক ফ্রন্টে দেশ তুলনামূলকভাবে শান্ত রয়েছে। ১৯ দলীয় জোট রাজপথের আন্দোলন সাময়িকভাবে হলেও স্থগিত করেছে। যেটিকে বলা হয় সরকার ও বিরোধীদলের মধ্যে কনফ্রন্টেশন, সেটি এই মুহূর্তে প্রবল এবং তীব্র নয়। এই পরিস্থিতিকে এক কথায় মোটামুটি শান্তিপূর্ণ বলা যায়। বিরোধী দলীয় জোট এই মুহূর্তে রাজপথের আন্দোলনের সাময়িক বিরতি দেয়ার অর্থ এই নয় যে, তারা দুর্বল বা সরকারের সাথে আপোস করেছে। বিগত জালিয়াতিপূর্ণ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিকবার বলেছেন যে, ৫ জানুয়ারি যে নির্বাচন হচ্ছে সেটি নিয়ম রক্ষার নির্বাচন, অর্থাৎ সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে বলে ঐ নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচনের কিছুদিন পর সব দলের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে এবং সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য হয় এমন একটি নির্বাচন করা হবে। প্রয়োজন হলে সেটি হবে একাদশ সংসদ নির্বাচন, যেটি হবে অনেকটা মধ্যবর্তী নির্বাচনের মতো। বিরোধী দল ৫ জানুয়ারির নির্বাচন অর্থাৎ দশম সংসদ নির্বাচন মেনে নেয়নি। তারা মনে করে যে, ঐ নির্বাচন ছিল অবৈধ, সুতরাং দশম সংসদও অবৈধ। তবুও বিরোধী দল মনে করেছিল যে সরকার হয়তো বিরোধী দলের সাথে পরবর্তী নির্বাচন সম্পর্কে আলাপ আলোচনায় বসবে। তারপর ৫ মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে তারা তাদের কথা রক্ষা করেনি। বরং উল্টো তারা বলছেন যে তারা ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। ৫ বছরের আগে তারা ক্ষমতা থেকে নামবেন না। আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতারা কোন রাখঢাক না করেই বলছেন যে মধ্যবর্তী নির্বাচনের কোন প্রশ্নই ওঠে না। এ পরিস্থিতিতে বিরোধী দলের সামনে গণআন্দোলন ছাড়া কোন বিকল্প নাই। কবে কখন বিরোধী দল মাঠে নামবে সেটি এখনও তারা অফিসিয়ালী ঘোষণা করেনি। বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অবশ্য বলেছেন যে ৫ জানুয়ারির আগে সারা দেশ জুড়ে যে প্রবল গণআন্দোলন গড়ে তোলা হয়েছিল সে আন্দোলন সরকার পাশবিক শক্তি দিয়ে দমন করেছে। সে আন্দোলনে সরকারের জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায় নেমে গেছে। হাসিনার সরকার একটি ফ্যাসিস্ট এবং স্বৈরাচারী সরকার বলে দেশে বিদেশে প্রতিভাত হয়েছে। ঐ আন্দোলনের একটি বড় সাফল্য এই যে একমাত্র ভারত ছাড়া পৃথিবীর আর কোন দেশ ঐ জালিয়াতির নির্বাচনকে মেনে নেয়নি।  ইউরোপ, আমেরিকার প্রায় প্রতিটি দেশ নতুন একটি নির্বাচনের জন্য বার বার সরকারকে অনুরোধ করছে। একমাত্র ভারতের উপর নির্ভর করে সরকার অবিশিষ্ট দুনিয়ার অনুরোধ আমলে নিচ্ছে না। কিন্তু দেশে এবং বিদেশে সরকারের জনপ্রিয়তা এবং ভাবমূর্তি শেষ পর্যায়ে এসেছে।
বিরোধী দলের রাজপথ আন্দোলনের সাময়িক বিরতি থাকলে কি হবে, সরকার কিন্তু তাদের অপকর্ম এবং দুঃশাসন একের পর এক চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ডেভেলপমেন্ট ঘটেছে। জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার আব্দুস সালাম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ১৫৩ জন জাতীয় সংসদ সদস্যের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। রিট আবেদনে বলা হয়, সংবিধানে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় সংসদ গঠিত হবে। জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ ছাড়া কাউকে নির্বাচিত ঘোষণা করা সংবিধানের পরিপন্থী। এই রিট আবেদনের  প্রেক্ষিতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার বিধানের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেছিল। এককভাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী নির্বাচিত করা সংক্রান্ত ১৯ ধারা কেন অসাংবিধানিক হবে না রুলে তা জানতে চেয়েছেন আদালত। সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিবকে ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। সরকারের প্রতি এই রুল ইস্যু করা ছাড়াও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের বৈধতা রিটে গত ১২ মার্চ হাইকোর্ট ৭ জনকে এমিকাস কিউরি নিয়োগ দেন। এরা হলেন- ড. কামাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমীরুল ইসলাম, ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক, সাবেক এটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলাম, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ এবং সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। এদিকে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ব্যক্তিগত সমস্যার কথা উল্লেখ করে এ মামলায় এমিকাস কিউরি হিসেবে তার নাম প্রত্যাহারের জন্য আবেদন জানালে আদালত তা মঞ্জুর করে।
॥দুই॥
এমিকাস কিউরিদের অন্যতম ড. কামাল হোসেন তার বক্তব্য মাননীয় হাইকোর্টে দিয়েছেন। সেটি আমরা গত সপ্তাহের এই কলামে তুলে ধরেছি। ইতোমধ্যে এমিকাস কিউরির নিকট প্রবীণ ব্যারিস্টার রফিকুল হক এবং সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার তাদের বক্তব্য দিয়েছেন। ঐ সব বক্তব্য আমরা একটু পর আলোচনা করবো। এমিকাস কিউরিতে প্রদত্ত ড. কামাল হোসেনের বক্তব্য খবরের কাগজে প্রকাশিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ড. কামালের তীব্র সমালোচনা করেন। এর জবাবে ড. কামাল হোসেন পুনর্বার বলেন যে, যে নির্বাচনে ৮০ ভাগ ভোটার নির্বাচনে অংশ নেয় না সেটিকে নির্বাচন বলা যায় না। তিনি বলেন, সুপ্রিমকোর্টের রায়ের দোহাই দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করা হয়েছে। অথচ সুপ্রিমকোর্টের সাত বিচারপতি এ ব্যাপারে একমত পোষণ করেছিলেন যে, দশম এবং একাদশ সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে। ১৫ সদস্যের সংসদীয় কমিটিও একই মত দিয়েছিলেন। এ মামলার যদি বিরাজমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধান না হয় তাহলে নির্বাচন কমিশনের এখনও সুযোগ রয়েছে আরেকটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সুপ্রিমকোর্টের পরামর্শ চাওয়া।
এমিকাস কিউরিতে বক্তব্য প্রদানকালে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং সংবিধানের প্রস্তাবনায় গণতন্ত্রের কথা বলা হয়েছে। গণতন্ত্র বলতে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার ব্যবস্থাকে বুঝানো হয়েছে। ভোটারবিহীন নির্বাচন কোন নির্বাচন নয়। ভোট হলেই হবে না। নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ হতে হবে। কিন্তু ৫ জানুয়ারির নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ ছিল না। তিনি আরও বলেন, সংবিধানে সরাসরি ভোটের কথা বলা হয়েছে। অথচ বিগত নির্বাচনে ১৫৩ টি আসনের ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের কোন সুযোগ পাননি। নির্বাচনে ৭০ শতাংশ দল অংশ নেয়নি। ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ ভোটার ভোট দেননি। ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচনকে যদি বৈধতা দেয়া হয় তবে আগামী নির্বাচনে দেখা যাবে ২০০ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবে। পরের নির্বাচনে ৩০০ আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। এভাবে আমরা গণতন্ত্রকে গুডবাই জানাব।
গত ৫ মে জুন বৃহস্পতিবার এমিকাস কিউরি হিসেবে প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হক হাইকোর্টে তার লিখিত বক্তব্য পেশ করেন। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির তথাকথিত নির্বাচন আইনের চোখে কোন নির্বাচন নয়। এটি ছিল নির্বাচনের নামে তামাশা। এটা ইলেকশন নয়, সিলেকশন। এ নির্বাচন ছিল গোলকিপার ছাড়া ফুটবল খেলার মতো। তিনি বলেন, সংবিধান এ ধরনের নির্বাচনের কথা বলেনি। সংবিধানের ৬৫(২) অনুচ্ছেদে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে, সিলেকশনের কথা বলা হয়নি। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরেক প্রবীণ আইনজীবী ও সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন।
॥তিন॥
র‌্যাবের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- নিয়ে বহু বছর থেকেই প্রবল সমালোচনা চলছিল। কিন্তু কেউই কর্ণপাত করেনি। এর আগে র‌্যাবের কোন কোন সদস্যের বিরুদ্ধে সোনা চুরি এবং টাকা চুরির অভিযোগও ওঠে এবং সেগুলো প্রমাণিতও হয়। কিন্তু সব ব্যাপারেই র‌্যাব ছিল নির্বিকার। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনার পর নিহত নজরুল ইসলামের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম সর্বপ্রথম দ্ব্যর্থহীন ভাষায় অভিযোগ করেন যে ৬ কোটি টাকা ঘুষ খেয়ে র‌্যাব ১১ এর তিন অফিসার ঐ ৭ জনকে অপহরণ এবং খুন করেছেন। এই তিনজন অফিসার হলেন সেনাবাহিনীর লে. কর্নেল তারেক সাঈদ, মেজর আরিফ হোসেন এবং নৌ বাহিনীর লে. কমান্ডার এম এম রানা। প্রথমে সকলেই শহীদুল ইসলামের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিলেন। দুইটি দৈনিক পত্রিকায় ইন্টারভিউ দিয়ে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক, অর্থাৎ দুই নম্বর শীর্ষ অফিসার কর্নেল জিয়াও এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিলেন।  কিন্তু ধর্মের কল বাতাসে নড়েছে। এখন মেজর আরিফ এবং কমান্ডার রানা জবানবন্দী দিয়ে স্বীকার করেছেন যে তারা এই অপহরণ এবং হত্যাকা-ে অংশ নিয়েছিলেন। এই দুই অফিসার আরও বলেছেন যে র‌্যাবের দুই নম্বর শীর্ষ ব্যক্তি অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়ার নির্দেশেই এই হত্যাকা- সংঘটিত হয়। এরপর প্যান্ডোরার বাক্সের ঝাঁপি খুলে যায়। বেরিয়ে আসে র‌্যাবের অনেক কীর্তিকাহিনী। লক্ষ্মীপুর, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, ফেনীসহ বাংলাদেশের অনেক জায়গায় টাকার বিনিময়ে র‌্যাব অপহরণ এবং খুন করেছে। সারা  দেশে র‌্যাবের ইমেজ এখন নিন্দিত এবং ধিকৃত।
ঠিক এই পটভূমিতেই আরেকটি ঘটনা ঘটে হবিগঞ্জে চুনারুঘাটের সাতছড়ি উদ্যানে। সাতছড়ি ভারতীয় ত্রিপুরা থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে। র‌্যাব দাবি করে যে তারা এখানে বিপুল পরিমাণ রকেট লাঞ্চার, চার্জার এবং মর্টার শেলসহ ভারী অস্ত্র উদ্ধার করেছে। সাতছড়ির গহীন অরণ্যে নয়টি বাঙ্কারে এসব অস্ত্র রাখা হয়েছিল। প্রথম দিনে এই খবরটি যথেষ্ট চাঞ্চল্য সৃষ্টি করলেও দ্বিতীয় দিন থেকে এই খবরের মাঝে অনেক ফাঁক বেরিয়ে আসে। বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয় যে, বিনষ্ট ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ভারী অস্ত্র উদ্ধারের সমগ্র ঘটনার জন্য র‌্যাব যখন কৃতিত্ব নিচ্ছিল, এমনকি সংশ্লিষ্ট পুলিশ বাহিনীকেও যখন আড়ালে রেখেছিল তখন সাধারণ মানুষের মনে অনেক গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়। এই অস্ত্র উদ্ধারের কৃতিত্ব আসলে কি র‌্যাবের ? নাকি ভারতীয় গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষের ? কারণ অস্ত্র উদ্ধারের দ্বিতীয় দিনে কলকাতার সবচেয়ে প্রাচীন এবং সর্বাধিক প্রচার সম্পন্ন দৈনিক ’আনন্দবাজার’ পত্রিকা রিপোর্ট দিয়েছে যে, সাতছড়ির অস্ত্র ভা-ার সম্পর্কে ভারতীয় গোয়েন্দারা অনেকদিন থেকেই বাংলাদেশকে খবর সরবারহ করছিল। শেষের দিকে যেসব খবর ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা দেয় সেখানে অস্ত্রগুলি কোন স্থানে মজুত করা হয়েছে সেই স্থানটিও চিহ্নিত করে দেয়। সেই মোতাবেক র‌্যাব অভিযানের নামে এবং অস্ত্রগুলি উদ্ধার করে। গত ৬ জুন ’ডেইলি স্টারের’ ১৪ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত নিবন্ধে প্রশ্ন করা হয় যে, বাংলাদেশীদের জানার আগেই বাংলাদেশের অভ্যন্তরের একটি খবর ভারতীয়রা জানলো কিভাবে ? তারা আরও প্রশ্ন তুলেছে যে এই অস্ত্রের খবর জানতে ২০ বছর দেরি হলো কেন এবং ২০ বছর পরেও সেটি বিদেশীদের সূত্রে জানতে হলো কেন ? তাদের আরও প্রশ্ন, সীমান্তে বিজিবি বা প্রাক্তন বিডিআর মোতায়েন থাকা সত্ত্বেত্ত ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারলো কিভাবে ? তাহলে আমাদের কি বিশ্বাস করতে হবে যে ভারতীয় গোয়েন্দাদের বুদ্ধিশুদ্ধি আমাদের গোয়েন্দাদের চেয়েও বেশি ? তাহলে প্রশ্নটি এই দাঁড়ায় যে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কর্মরত ভারতীয় গোয়েন্দারা যদি বাংলাদেশ সম্পর্কে এত বিস্তারিত খবর রাখতে পারে তাহলে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়গুলি গোপনীয়তা কি এখনও সুরক্ষিত আছে।
আরও অনেক ঘটনা আছে যেটি একটি কলামে বা একটি নিবন্ধে শেষ করা যায় না। হাইকোর্ট র‌্যাবের ঐ তিন জন অফিসারকে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়েছিল। হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা এবং আইনমন্ত্রী যা বলেছেন সেটি আদালত অবমাননার পর্যায়ে পড়ে। অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন এটি নিয়ে একটি মামলাও দায়ের করেছেন। কিন্তু সে মামলা নিয়ে এখনও কিছু করা হয়নি। এসব ঘটনা মোটামুটি সুধী সমাজকে আলোড়িত করেছে। এসব ঘটনা নিয়ে বিরোধী দল যদি কার্যকর আন্দোলন গড়ে তুলতে পারতো তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতি এই মুহূর্তে সম্পূর্ণ ভিন্ন মোড় নিত। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩ ব্যক্তির সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়াকে কেন্দ্র করে যে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছে সেই রায় যদি আবেদনকারীর অনুকূলে হয় তাহলে গণেশ উল্টে যাবে। ড. কামাল হোসেনও মনে করেন যে এই বিষয়ে দায়ের করা মামলায় রায়টি কি হবে সেটি সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও অন্যান্য ফ্রন্টে যেসব ঘটনা ঘটছে, বিশেষ করে আদালতে যে রিট পিটিশনটি চলছে সেটির প্রতি মানুষ গভীর আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছে। 
আসিফ আরসালান

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads