রাষ্ট্রযন্ত্র যখন সন্ত্রাসে
পৃষ্ঠপোষকতা দেয়, তখন তা যে কত নিষ্ঠুর ও নৃশংস রূপ নিতে পারে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক
সহিংস কিছু ঘটনায় তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ক্ষমতাসীন দলের গডফাদারদের ইচ্ছাপূরণে নারায়ণগঞ্জে
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একসাথে সাতজনকে পলিথিনে মুড়িয়ে গলাটিপে হত্যার পর পেট
ফুটো করে নদীতে লাশ ডুবিয়ে গুম করেছিল। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফেনীতে ক্ষমতাসীন
দলের একজন উপজেলা চেয়ারম্যানকে গুলি করে, কুপিয়ে হত্যার পর তার গাড়িতে
আগুন ধরিয়ে লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয়। সর্বশেষ মিরপুরে বিহারিপল্লীতে ঘর তালাবদ্ধ করে আগুন
ধরিয়ে দিয়ে একই পরিবারের ৯ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ তিনটি হত্যাকাণ্ডের পেছনের
কারণ আধিপত্য বিস্তার ও দখলবাণিজ্য।
৫ জানুয়ারি
নির্বাচনের নামে এ দেশের মানুষ যে নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বসবাস করছে, তার প্রভাব এখন সমাজজীবনে পড়তে শুরু করছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা ক্ষমতাসীন দলের
একেকজন নেতা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন। তারা হয়ে উঠেছেন একেক এলাকার মাফিয়া। ক্ষমতাসীন
দলের ছাত্র ও যুবকর্মীদের নিয়ে বাহিনী গড়ে আধিপত্য বিস্তার করে নিজ নিজ এলাকা শাসন
করছেন। তাদের কথায় পুলিশ প্রশাসন পরিচালিত হচ্ছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা
অনেক আগেই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। ফলে মাঠে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই; কিন্তু নিজেদের মধ্যে প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা আছে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে
নিজ দলের প্রতিপক্ষের মধ্যেই রক্তাক্ত লড়াই হচ্ছে।
মধ্য আফ্রিকার
বিভিন্ন দেশে জাতিগত নিধনযজ্ঞ ও ক্ষমতার লড়াইয়ে যেভাবে নৃশংস কায়দায় প্রতিপক্ষের ওপর
হামলা চালানো হয়, বাংলাদেশে অনেক ক্ষেত্রে তার চেয়েও ভয়ঙ্কর রূপ আমরা দেখছি। রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, কঙ্গো কিংবা সাম্প্রতিক মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে যে রক্তক্ষয়ী
সহিংসতা চলছে, তাতে পুড়িয়ে মানুষ মারার খবর এসেছে বলে মনে পড়ে না; কিন্তু বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা একের পর এক ঘটলেও সব কিছু যেন সহনীয় হয়ে উঠেছে।
মানুষ নির্বিকার হয়ে পড়েছে।
মিরপুরে
বিহারিপল্লীতে শবেবরাতের রাতে যে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, তার সাথে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে।
শবেবরাতের ভোর রাতের এ ঘটনা প্রথম দিকে গণমাধ্যমে আতশবাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ
হিসেবে প্রচার করা হলেও সময় যত গড়িয়েছে ঘটনার প্রকৃত চিত্র ততটা স্পষ্ট হয়েছে। সংসদ
সদস্যের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি বস্তিতে বিদ্যুৎ সংযোগ না দেয়ার ক্ষোভ থেকে শিশু ও গর্ভবতী
নারীসহ ৯ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। সংসদ সদস্যের পরিকল্পনা এই বিহারিপল্লী উচ্ছেদ
করে জমি নিয়ন্ত্রণে নেয়া। নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান, নূর হোসেন, ফেনীতে নিজাম হাজারী, লক্ষ্মীপুরে আবু তাহেরের পর মাফিয়া হিসেবে মিরপুরে
ইলিয়াস মোল্লার নাম এ ঘটনার পর দেশের মানুষ জানতে পারল।
৯ জনকে
পুড়িয়ে মারার নেপথ্য কারণ গণমাধ্যমে বিস্তারিত এসেছে। একটি সংবাদপত্রের অনুসন্ধানী
রিপোর্ট থেকে আমাদের কাছে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হবে। বিহারি ক্যাম্পের পাশে রাজু নামে
একটি বস্তি ছিল। ওই বস্তিতে স্থানীয় মতাসীন দলের লোকজন পাশের বিহারি ক্যাম্প থেকে অবৈধভাবে
বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়। এতে বাধা দেন বিহারি ক্যাম্পের লোকজন। এতে রাজু বস্তির লোকজন তাদের
ওপর প্তি ছিল। আর এ ঘটনায় প্রত্য ও পরো মদদ ছিল আওয়ামী লীগের স্থানীয় এমপি ইলিয়াস মোল্লার।
যুবলীগ নেতা জুয়েল রানার নেতৃত্বে হামলা হয় বলেও অভিযোগ করেছেন ক্যাম্পের বাসিন্দারা।
বিহারি
ক্যাম্পের বাসিন্দাদের সংগঠন স্ট্র্যান্ডেড পাকিস্তানিজ জেনারেল রিপ্যাট্রিয়েশন কমিটির
(এসপিজিআরসি) চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন ভল্টু বলেন, ‘এ ঘটনার পেছনে এমপির ইন্ধন আছে।
বিদ্যুতের সংযোগ দিতে না দেয়ায় তার লোকজন আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এ ছাড়া
হামলার সময় এমপির অনেক লোকজনকে দেখেছে ক্যাম্পের বাসিন্দারা।’ তিনি বলেন, এতবড় ঘটনা ঘটল, এমপি একবারও এলাকায় এলেন না কেন? এতেই সন্দেহ হয় তিনি এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত কি না?
সংগঠনটির
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুন্না হোসেন দাবি করেন, পল্লবীর সেকশন ১২/ই কুর্মিটোলা
বিহারি ক্যাম্পের পাশে নতুন কুর্মিটোলা বিহারি ক্যাম্প (রাজু বস্তি বলে পরিচিত)। ওই
জমির মালিক সরকারি একটি সংস্থা। তিন বছর আগে সেটি ফাঁকা বালুর মাঠ ছিল। বাঙালি ছিন্নমূল
ও বিহারি পরিবারের লোকজন ওই মাঠে বসতি গড়ে তোলে।
তিনি আরো
বলেন, আগে রাজু বস্তিতে বিদ্যুৎ লাইন ছিল না। পরে রাজু বস্তির লোকজন
স্থানীয় এমপি ইলিয়াস মোল্লার প্রভাব খাটিয়ে পাশের মূল বিহারি ক্যাম্প থেকে অবৈধভাবে
বিদ্যুৎ লাইন নেয়। বিহারি ক্যাম্প থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়ার কারণে তাদের বিদ্যুতের
বিল পরিশোধ করতে হতো না। স্থানীয় এমপির লোকজন ওই বস্তিতে প্রতিটি বাড়ি থেকে বিদ্যুৎ
বিলের টাকা উঠাত এবং নিজেরা ভাগভাটোয়ারা করত। সরকারি সংস্থার প থেকে জানানো হয় কুর্মিটোলা
বিহারি ক্যাম্প থেকে অবৈধভাবে নেয়া রাজু বস্তির বিদু্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হবে।
এ নিয়ে চাপ দেয়া হয় (এসপিজিআরসি) কর্তৃপকে। তখন কুর্মিটোলা বিহারি ক্যাম্পের লোকজন
১১ জুন বুধবার রাতে রাজু বস্তির অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ বিছিন্ন করতে যায়। তখন রাজু
বস্তির লোকজন এতে বাধা দেয়। এ সময় উভয় পরে মধ্যে হাতাহাতি ও তর্কাতর্কির ঘটনা ঘটে।
মুন্না হোসেন বলেন, খবর পেয়ে স্থানীয় এমপি ইলিয়াস মোল্লা ঘটনাস্থলে
হাজির হন। সেখানে এমপি এক সংপ্তি সমাবেশে বলেন, ‘রাজু বস্তিতে বিদ্যুৎ লাইন থাকবে।
এই লাইন বৈধ না অবৈধ এবং কোথা থেকে এসেছে এটি দেখার দরকার নেই। কে বিদ্যুৎ লাইন বিছিন্ন
করার আদেশ দিলো সেটিও বিবেচনায় আনার দরকার নেই। শেখ হাসিনার সরকার জনগণের সরকার। তাই
জনগণের জন্য যেটি মঙ্গল হবে সেটিই করা হবে। তার এই বক্তব্যে ক্যাম্পের লোকজনের মধ্যে
ােভ ছড়িয়ে পড়ে। মুন্না দাবি করেন, ওই দিন বিুব্ধ লোকজন ইলিয়াস মোল্লার পাঞ্জাবির কলার
ছিঁড়ে ফেলে এবং ধাক্কাধাক্কিতে ইলিয়াস পড়ে যান। এরপর এমপি বিহারি ক্যাম্পের লোকজনকে
দেখে নেয়ার হুমকি দেন।
তিনি অভিযোগ
করে বলেন, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে ইলিয়াস মোল্লার ইন্ধনে পল্লবী থানায়
রাজু বস্তির বাসিন্দা ও স্থানীয় যুবলীগ নেতা মাদক ব্যবসায়ী মো: রিয়াজ বাদি হয়ে বিহারি
ক্যাম্পের লোকজনের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ এনে মামলা করেন। মামলা নম্বর ৫। এতে আসামি
করা হয় ২০ জনকে। শুক্রবার বিহারি ক্যাম্পে মামলার তদন্ত করতে আসে পুলিশ। বিহারি ক্যাম্পের
লোকজন যেন রাজু বস্তির বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে না যায়, এ জন্য ক্যাম্পের বাসিন্দাদের পুলিশও সতর্ক করে যায়।
ক্যাম্পের
বাসিন্দারা জানান, বুধবার রাতের ঘটনার পর স্থানীয় এমপি ইলিয়াস মোল্লা ও তার লোকজনের
বিহারি ক্যাম্পের বাসিন্দাদের প্রতি আক্রোশ বেড়ে যায়। এ ছাড়া বাউনিয়াবাদ এলাকার কিছু
সরকারদলীয় লোকজনের বিহারি ক্যাম্পের জমি দখলের ওপর দৃষ্টি ছিল। তারা পরিকল্পনা করে
আতশবাজির নাম করে বিহারি ক্যাম্পে এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। (মানবজমিন ১৫ জুন)
এই হত্যাকাণ্ডের
পর পুলিশ আবার বিহারিদের আসামি করে মামলা করেছে। পুলিশের গুলিতে আজাদ নামে একজন নিহত
হন। তাকেও আসামি করা হয়েছে। পুলিশের ভাষ্য ছিল, পটকা ফোটানো নিয়ে বিহারিদের দুই
গ্রুপের সংঘর্ষে নাকি এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সংসদ সদস্য আর ঘটনার সাথে জড়িত ক্ষমতাসীন
দলের সন্ত্রাসীদের রক্ষার জন্য পুলিশের এমন ভাষ্য ছাড়া আমরা আর কী আশা করতে পারি?
বিহারিপল্লীতে
আগুনে পুড়িয়ে মারার এ ঘটনা যে আতশবাজির কারণে বিক্ষুব্ধ মানুষ ঘটায়নি তা শিশুরা বুঝলেও
পুলিশের কাছে তা বোধগম্য নয়। কারণ ওপরের নির্দেশের বয়ান যা তাই তারা বাস্তবায়ন করবে।
সত্য মিথ্যা বা তদন্ত সবই হবে সাজানো। মিরপুরে সংসদ সদস্যের প্রতিশোধের আগুনে পুড়ে
মারা গেছে ৯টি প্রাণ। যেমন ফেনীর সংসদ সদস্য নিজাম হাজারীর প্রতিশোধে মারা গেছেন আওয়ামী
লীগের জনপ্রিয় উপজেলা চেয়ারম্যান একরাম।
রাজধানীর
বুকে এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের পরও আমাদের মানবাধিকারজীবী ও তথাকথিত বিবেকবান বুদ্ধিজীবীরা
আশ্চর্যজনক নীরবতা পালন করে আসছেন। কারণ কি এরা বিহারি বলে? এরা কি হতদরিদ্র মানুষ বলে? এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ক্ষমতাসীন
স্থানীয় নেতাকর্মীরা জড়িত বলে? এই হত্যাকাণ্ডের পর একজন বিক্ষুব্ধ বিহারি নারী
সাংবাদিকদের কাছে প্রশ্ন করেছেন, আপনার গায়ে যে রক্ত আমাদের গায়েও তো সেই রক্ত, তাহলে আমাদের কেন মারা হচ্ছে? এই প্রশ্নের কী জবাব দেবেন আমাদের
বিবেক বাণিজ্যকারী মানবাধিকার ও বুদ্ধিজীবী সমাজ।
মিরপুর
ও মোহাম্মদপুরে বিহারিপল্লীতে ভাগ্যবিড়ম্বিত এই মানুষগুলো বছরের পর বছর অমানবিক জীবন
যাপন করছে। ’৪৭-এ ভারত বিভক্তির সময় শুধু ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে এরা স্বদেশ ত্যাগ করে এ দেশে আসতে বাধ্য হয়েছিল। এরা সবাই বিহারের
বাসিন্দা ছিলেন তা নয়। ভারতের অন্য প্রদেশ থেকে উর্দুভাষী এই মুসলমানেরা এ দেশে এসেছিলেন।
কেন তারা ’৪৭ সালে নিজ ভূমিতে থাকতে পারল না, সে প্রশ্ন এখন আমাদের করতে হবে। বিহারিপল্লীতে যাদের জন্ম হয়েছে, তারা বাংলাদেশের নাগরিক। আদালতের রায়ে তারা ভোটাধিকার পেয়েছেন; কিন্তু এরা সমাজের মূল স্রোতে যেমন আসতে পারছে না; আবার অনেকে এখনো পাকিস্তান ফিরে যেতে চায়। আজ সরকার নানা কূটনৈতিক সাফল্যের
মহিমা প্রচার করছে; কিন্তু কেন এই আটকে পড়া লোকদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে
কূটনৈতিক সাফল্য দেখাতে পারছে না। এক সময় পাকিস্তান এদের ফেরত নিতে ইচ্ছুক ছিল। সৌদি
আরবের একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে কিছু উর্দুভাষী পাকিস্তানে গিয়েছিল। এখন কেন এমন
উদ্যোগ নিতে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। সরকারি দলের মন্ত্রী-এমপিরা বহু লোককে পাকিস্তান ফেরত
পাঠানোর হুমকি দেন; কিন্তু সত্যিকার অর্থে যারা পাকিস্তানে ফিরতে চায়, তাদের ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ কেন নেয়া হচ্ছে না। কেন পাকিস্তানের কাছে সে দাবি
জানানো হচ্ছে না। বিহারিদের নতুন প্রজন্ম এ দেশের নাগরিক হিসেবে সব ধরনের নাগরিক অধিকার
পাওয়ার কথা। এটাই সভ্য রাষ্ট্রের নিয়ম; কিন্তু তাদের জমি দখলের জন্য
কিংবা বিদ্যুৎ না দিয়ে আরো অমানবিক জীবনযাপনে বাধ্য করতে ক্ষমতাসীনেরা এখন সন্ত্রাসী
দিয়ে পুড়িয়ে মারছে।
বিরোধী
রাজনীতিবিহীন এই দেশে এখন ক্ষমতাসীনেরা পুড়িয়ে, গুম করে কিংবা আরো নৃশংসভাবে
আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। দেশ আজ এমন এক পরিস্থিতির মুখে পড়েছে, আজ বিহারিদের পুড়িয়ে মারা হচ্ছে, কয়েক দিন পর প্রতিপক্ষ রাজনীতিক
দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে আগুন দিয়ে এভাবে হত্যা করা হবে। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের
মধ্যে একের পর এক আগুনে পুড়িয়ে মারার ঘটনা অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। ৫ জানুয়ারির
নির্বাচনের আগে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে আগুন দেয়ায় বহু লোক হতাহত
হয়েছিল। তখন ক্ষমতাসীন দল এসব ঘটনার জন্য বিরোধী দলকে দায়ী করেছে। বিদেশী রাষ্ট্রদূত
আর মানবাধিকার সংগঠনগুলো বিরোধী দলের সহিংস রাজনীতির সমালোচনা করেছিল। ক্ষমতাসীন দলের
প্রপাগান্ডা মেশিন হিসেবে পরিচিত টেলিভিশন ও সংবাদপত্রগুলোয় অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু নির্বাচনের
দাবির চেয়ে বাস পোড়ানোর সহিংস রাজনীতির খবর বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল; কিন্তু এখন পর্যন্ত যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়ার একটি ঘটনারও সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি।
বিচারের মুখোমুখি করা যায়নি মূল অপরাধীদের। যুবলীগের এক নেতার মালিকানাধীন একটি পরিবহন
বাসে সবচেয়ে বেশি আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটত। বিরোধী দলের আন্দোলন সহিংস প্রমাণের জন্য তখন
ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে আগুন দেয়ার ঘটনাগুলো ঘটেছিল কি না, তা এখন বড় প্রশ্ন হয়ে রয়েছে। এখন দেশের বিভিন্ন স্থানে যেভাবে আগুন দিয়ে মানুষ
মারার ঘটনা ঘটছে, তাতে এ ধরনের কাজের সাথে ক্ষমতাসীনদের সংশ্লিষ্টতার সন্দেহ বাড়ছে। ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে আগুনে মানুষ মারার এই রাজনীতি
শেষপর্যন্ত ক্ষমতাসীনদেরই পুড়িয়ে মারতে পারে। আগুন নিয়ে খেলার পরিণতি সব সময় ভালো হয়
না। আগুনে পুড়িয়ে ফেনীতে একরাম হত্যা ছিল তার ইঙ্গিত।
আলফাজ আনাম
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন