বৃহস্পতিবার, ১২ এপ্রিল, ২০১২

প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতা বাংলাদেশের জন্য নয়


॥ সিরাজুর রহমান ॥

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দয়ার শরীর। তার দয়াদাক্ষিণ্য আর বদান্যতার তুলনা নেই। সমস্যা হচ্ছে সব বদান্যতাই তিনি রিজার্ভ রেখেছেন পাশের দেশের জন্য। নিজের দেশের মানুষের দুঃখ-কষ্ট নিয়ে তার যেন কোনো মাথাব্যথা নেই।
বাংলাদেশ ধুঁকছে। মধ্যবিত্ত স্বভাবতই সুজন। উপোস থাকলেও ভিক্ষা করা তার ধাতে সইবে না। সস্তা বলে বাজারের সবচেয়ে খারাপ জিনিস কিনবে সে। যৎসামান্য সঞ্চয় অনেক আগেই বিক্রি করে খেয়েছে। সাততাড়াতাড়ি সমৃদ্ধির মুখ দেখার আশায় গ্রামের বাড়ির জমি এবং গিন্নির বাপের বাড়ি থেকে পাওয়া গয়নাগাঁটি বিক্রি করে শেয়ারবাজারে লগ্নি করেছিল। সরকারি দলের তস্কররা সেটা লুটেপুটে খেয়েছে। ছেলেপুলে ছেঁড়া কাপড় পরে স্কুলে যায়। যাদের চাকরি আছে, তারা সম্বল মাত্র একজোড়া ট্রাউজার ধুয়ে বালিশের নিচে ভাঁজ করে রাখে। সকালবেলা সেটি পরে আপিসে যাবে।
কেউ কেউ এখনো ঘুষ-উৎকোচ আর দুর্নীতির পথে যাননি। সব মানুষই স্বভাবত দুর্নীতিপরায়ণ নয়। অর্থনৈতিক চাপে পড়ে কেউ কেউ দুর্নীতির পথ ধরেছেন। ইংরেজি প্রবাদ অনুযায়ী ‘দুর্নীতিপরায়ণ সমাজ নৈতিক দেউলিয়া।’ ছেলেপুলের শুকনো মুখ দেখে কেউ কেউ নীতি-নৈতিকতার কাছ থেকে বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছেন। কিন' তারাও ভালো নেই। অস্বাভাবিক ভ্যাপসা গরমে রাতে ঘুমুতে পারেন না। সিলিংয়ের পাখাটা চালাবেন কী করে? বিদ্যুতের লোডশেডিং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ১৬ ঘণ্টা। শিশুদের স্কুলের পড়া পড়তে হয় টিমটিমে মোমবাতির আলোতে। এ অবস'া চলতে থাকলে তাদের দৃষ্টিশক্তির সমস্যা দেখা দেবে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত একবার নয়, বহুবার বলেছেন যে, অর্থনীতি সঙ্কটে আছে। আরো বলেছেন, ব্যাপক দুর্নীতির কারণে উন্নয়ন ও অর্থনীতির বিকাশ হতে পারছে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন অন্য কথা। তিনি বলেন, অর্থনীতির কোনো সমস্যা নেই, অর্থনীতি ভালো অবস'ায় আছে। তাদের মধ্যে কে সত্য কথা বলছেন? কার কথা লোকে বিশ্বাস করবে?
মাঝে মাঝে কলে পানি থাকে না। অন্য সময়ে পাওয়া যায় দুর্গন্ধময় দূষিত পানি। বহু পরিবারে সবাই পেটের অসুখে ভুগছে। যারা মারা যাচ্ছে তাদের মধ্যে শিশুরাই বেশি। পানি ফুটিয়ে খাবে, তারও উপায় নেই। চুলায় গ্যাস নেই। গিন্নিকে শেষ রাতে উঠে সামান্য কিছু রান্না করে রাখতে হয়। ও সময়ে গ্যাস আসে। সেচের অভাবে ফসল কম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্যের দাম তাতে বেড়ে যাবে। দুর্ভিক্ষ ঘটারও আশঙ্কা বাদ দেয়া যায় না। চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষে ৭০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, শিগগিরই তিনি বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করে ফেলবেন। মানুষ দেখছে উল্টোটা। বিদ্যুৎসঙ্কট এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে শোচনীয়। প্রধানমন্ত্রী সে দিন বলেছেন, ‘এত বিদ্যুৎ উৎপাদন করলাম তা যেন চোখেই পড়ে না।’

বিদ্যুৎ ঘাটতির অন্তরালে
মন্ত্রীরা বলেছিলেন, মানুষ বেশি করে, তিনবারের বদলে চারবেলা খাচ্ছে বলেই খাবারের দাম বেড়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ তো আর খাবার জিনিস নয় যে, বেশি করে খাবে! আর মওজুদ করে রাখার সামগ্রীও নয় বিদ্যুৎ। তা হলে ‘এত বিদ্যুৎ’ গেল কোথায়? লোকে কিন' বলে অন্য কথা। আসলে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে না। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কতগুলো বাণিজ্যিক গ্রুপকে ২০ হাজার কোটি টাকার কন্ট্রাক্ট দেয়া হয়েছে বিনা টেন্ডারে। জানা গেছে, এসব গ্রুপের কোনো কোনোটির মালিক প্রধানমন্ত্রীর কাছের আত্মীয়, অন্যরা আওয়ামী লীগের মহারথী। সরকারি কোষাগার ফতুর করে দেয়া সে টাকা এরাই লুটেপুটে খাচ্ছে। এদের জন্য মনে হয়, প্রধানমন্ত্রীর দয়ার সীমা নেই। আকাশচুম্বী দুর্নীতি চলছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বেলায়। জোর গুজব, এই দুর্নীতি সম্বন্ধে অনুসন্ধান চালাচ্ছিলেন বলেই সাংবাদিক দম্পতি মেহেরুন রুনি আর সাগর খুন হয়েছেন। খুনিদের গ্রেফতারে সরকারের অনীহা এসব গুজবকে আরো বিশ্বাসযোগ্য করে তুলছে। খুনিদের ধরার দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী নিজের হাতে নিয়েছেন। তাতে ফল হয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন চা-বিস্কুট খাইয়ে সাংবাদিকদের আর কত দিন শান্ত রাখবেন?
মজার ব্যাপার দেখুন! তিতাস নদীর স্রোত বন্ধ করে সে নদী আর শাখা নদী ও খালগুলোতে বাঁধ দেয়া হলো। কারণ? কারণ এই যে, ভারত আগরতলায় বড় আকারের বিদ্যুৎ উৎপাদন কারখানা তৈরি করবে, সে কারখানার জন্য বিরাট আর ভারী যন্ত্রপাতি নিতে হবে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে। ১৩৪ চাকার বিশাল ট্রেইলারে করে সেসব যন্ত্রপাতি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন' বাংলাদেশের পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতির কথা বিবেচনা করা হয়নি। তারপর শোনা গেছে, বাংলাদেশ সে কারখানা চালু রাখার জন্য গ্যাস দেবে আর সে কারখানা থেকে বিদ্যুৎ কিনে নেবে। সে রকম কারখানা কি বাংলাদেশে তৈরি করা সম্ভব ছিল না? বিশেষ করে জ্বালানি যখন দিতে হবে বাংলাদেশকে? একসময় বর্তমান বাংলাদেশ থেকে পাট নিয়ে ব্রিটেনের ডান্ডিতে চট তৈরি হতো, আর সে চটের থলির চালান যেত বাংলাদেশে। নব্য উপনিবেশবাদ দেখছি কি আমরা?
ভারতের প্রতি হাসিনার ঔদার্যের অবধি নেই। সে দেশের উত্তর-পূর্বের সাতটি অঙ্গরাজ্য বঞ্চিত এবং ক্রুদ্ধ। পাকিস্তানি আমলে আমাদের যেমন বঞ্চিত ও শোষণ করা হয়েছে, তারাও অনুরূপ শোষণের শিকার হচ্ছে দিল্লির হাতে। তাদের রকমারি প্রাকৃতিক সম্পদ দিয়ে পশ্চিম ভারতের কেরালা, মহারাষ্ট্র, গুজরাট ও পাঞ্জাবকে শিল্পোন্নত করা হয়েছে। কিন' বিনিময়ে তারা পাচ্ছে যৎসামান্য। তারা এই শোষণযন্ত্র থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছে চার দশকেরও বেশি আগে। বস'ত তাদের স্বাধীনতার যুদ্ধ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেয়েও পুরনো।
ভারত সামরিক শক্তি দিয়ে (পাকিস্তানিদের মতো) ন্যায্য অভিযোগ ও অসন্তোষকে টুঁটি টিপে মারার চেষ্টা করছে। সে রাজ্যগুলোতে অস্ত্রশস্ত্র আর সৈন্য পাঠানোর সহজ পথ বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে। ওদিকে অরুণাচলে বিস্তীর্ণ বিবদমান এলাকা দখলের জন্য চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পাঁয়তারা হচ্ছে ভারতে। চীন যদি শিলিগুড়ি হয়ে সরু সংযোগ পথটি বন্ধ করে দেয় তাহলে উত্তর-পূবের সাতটি রাজ্য সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে তখন বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ছাড়া এ রাজ্যগুলোতে যাতায়াতের অন্য কোনো পথ থাকবে না।

যা যা দেয়া হচ্ছে ভারতকে
হয়তো সে জন্যই ‘বস্তা বস্তা টাকা আর পরামর্শ’ দিয়ে ভারত শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী করেছিল। হাসিনাও সুদে-আসলে সে ঋণ পরিশোধে বিলম্ব করেননি। এশিয়ান হাইওয়ে যাওয়ার কথা ছিল টেকনাফ থেকে মিয়ানমারের ভেতর দিয়ে দক্ষিণ চীন পর্যন্ত। কলমের এক টানে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা সে পরিকল্পনা উল্টে দিলেন; বললেন যে, এশিয়ান হাইওয়ে দুই শাখায় বিভক্ত হবে; একটি যাবে বুড়িমারী থেকে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে আসামে; আবার দ্বিতীয় শাখাও শেষ হবে আসামে গিয়ে, বেনাপোল থেকে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে। যেন বাংলাদেশের জন্য এশিয়া শেষ হয়ে যাচ্ছে আসামে গিয়েই।
হাসিনা দিল্লিতে গিয়েছিলেন ২০১০ সালের জানুয়ারিতে। বাংলাদেশের মানুষ শুনেছে, সেখানে অনেক চুক্তি করে এসেছেন তিনি। কিন' চুক্তির বিষয়বস', এমনকি সংখ্যাও বাংলাদেশের মানুষকে জানতে দেয়া হয়নি, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদেরও নয়। ভবিষ্যতেও যাতে কেউ জানতে না পারে, তার ব্যবস'া করার জন্য সংবিধানও পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে সরেজমিন যা ঘটছে, তার থেকে কিছু আঁচ-অনুমান বাংলাদেশের মানুষ করতে পারছে, অনেক কিছু দেখছেও তারা। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে রেল, সড়ক ও নদীপথে উত্তর-পূর্ব ভারতে যাওয়ার করিডোর এবং চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর অবাধে ব্যবহারের অধিকার দিতে হাসিনা রাজি হয়ে এসেছেন। প্রয়োজনবোধে তিতাসের মতো অন্য নদীতেও তারা বাঁধ তৈরি করবে বৈকি! বিনিময়ে বাংলাদেশ কিছু পাবে না। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মশিউর রহমান বলেছেন, ভারতের কাছে টাকা চাইলে আমরা অসভ্য হয়ে যাবো।’ ভারতের কাছ থেকে ‘বস্তা বস্তা টাকা আর পরামর্শ‘ পাওয়ার এখতিয়ার শুধু শেখ হাসিনার।
কিছুকাল আগে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সফররত এক কর্মকর্তার কাছে প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব দিয়েছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে যেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট করা হয়। প্রমাণ হয় যে, সারা বিশ্বের ব্যাংকিং ব্যবস'া তদারকির জন্য তিনি ড. ইউনূসকে উপযুক্ত ব্যক্তি মনে করেছিলেন। ড. ইউনূস বিশ্বব্যাপী সম্মানিত। প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতার (তার ও বাকি বিশ্বের জন্য) জন্য তিনি তাকে যথাযোগ্য ধন্যবাদ দিয়েছিলেন। তবে ইউনূস বাংলাদেশের সেবা করাকেই শ্রেয় বিবেচনা করে সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। এখানে দেখা যাচ্ছে, বদান্যতার বেলায় বিদেশীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষপাতিত্ব।
ইউনূসকে তিনি বাংলাদেশে তারই স'াপিত ও পরিচালিত গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনার উপযুক্ত বিবেচনা করেননি। তাকে অত্যন্ত অশোভনভাবে নিজের গড়ে তোলা ব্যাংক থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। তখন শোনা গিয়েছিল, গ্রামীণফোনের ওপর প্রধানমন্ত্রীর পুত্রের এবং গ্রামীণ ব্যাংকের ওপর তার পৃষ্ঠপোষকদের কারো কারো লোলুপ দৃষ্টি পড়েছিল। গ্রামীণ ব্যাংকের নতুন নির্বাহী পরিচালক নিয়োগের জন্য উপযুক্ত প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করতে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী সে কমিটির সদস্য হওয়ার জন্যও ইউনূসকে যোগ্য বিবেচনা করেন না। শেখ হাসিনা শাসিত বাংলাদেশে গ্রামের যোগী ভিখ্‌্ পাবে না।

বিদেশে মর্যাদাহানি
একটা কথা মনে রাখতে হবে, ড. ইউনূসের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর গাত্রদাহ শুরু হয় ইউনূস যখন নোবেল শান্তি পুরস্কার পান তখন থেকেই। শেখ হাসিনা প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার কর্মকর্তারা তার জন্য এক ডজনেরও বেশি ডক্টরেট খরিদ করেছিলেন। বর্তমান দফায় ক্ষমতা পাওয়ার পর তিনি তার জন্য একটা নোবেল পুরস্কার সংগ্রহ করার উদ্দেশ্যে কূটনীতিক পাঠিয়েছিলেন দেশে-বিদেশে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে তার পৈতৃক সম্পত্তি মনে করেন, তার মতে নোবেল পুরস্কারসহ এ দেশের প্রাপ্য সব কিছু তার নিজের হওয়া উচিত। অন্য কেউ বাংলাদেশের জন্য সম্মান নিয়ে এলে সেটাকে গৌরব ভাবতে তার কষ্ট হয়। ড. ইউনূসের নোবেল প্রাপ্তিতে নিজের মর্মবেদনা প্রধানমন্ত্রী এখনো ভুলতে পারেননি মনে হচ্ছে।
ইউনূসের প্রতি শেখ হাসিনার অন্যায্য আচরণ বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদায় যেন এক বোতল কালি ঢেলে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন সে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে। গত সপ্তাহে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের তিন নম্বর প্রধান কর্মকর্তা ওয়েন্ডি আর শেরম্যান ঢাকা সফরে এসেছিলেন। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার আলোচনার অন্যতম বিষয় ছিল ড. ইউনূসের প্রতি সরকারের আচরণ। অতি সত্বর গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কর্মকর্তা নিয়োগের তাগিদ দিয়েছেন শেরম্যান। ওয়াশিংটন স্পষ্টতই ভয় করছে, এই আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে শেয়াল-কুকুরে কামড়াকামড়ি হতে পারে। ইউনূসকে যথাযোগ্য মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়ার অনুরোধও মিজ শেরম্যান প্রধানমন্ত্রীকে করে গেছেন বলে মনে করা হয়।
মিজ শেরম্যান প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলের নেতা বেগম খালেদা জিয়ার সাথে গোপন বৈঠকে আর যে যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেছেন বলে মনে হয়, সেগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশে সব দলের যোগদানের ভিত্তিতে নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সুনিশ্চিত করা। এটাও তিনি টের পেয়ে গেছেন যে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোনো দল তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। আওয়ামী লীগ একদলীয় নির্বাচন করলে তাদের সরকারকে স্বীকৃতি দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কঠিন হবে। তেমন অবস'ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন অথবা অন্য কোনো পশ্চিমা দেশও স্বীকৃতি দিতে চাইবে না। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারকে এ বিষয়টা গভীরভাবে বিবেচনা করতে হবে।
আগেও জানা গিয়েছিল, বর্তমান সরকারের আমলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার সম্বন্ধে ওয়াশিংটন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। বিএনপি ও সমমনা গণতান্ত্রিক দলগুলোর সভা-সমাবেশ করার গণতান্ত্রিক অধিকারে সরকার যেভাবে বাধা দিচ্ছে, সে বিষয়ে মার্কিন সরকারের অসন'ষ্টির কথাও ওয়েন্ডি শেরম্যান প্রধানমন্ত্রীকে বলে গেছেন। এই মার্কিন কর্মকর্তার সফরের কী প্রতিক্রিয়া হবে, সবাই সে দিকে দৃষ্টি রাখবে।
লন্ডন, ০৮.০৪.১২
serajurrahman@btinternet.com

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads