বৃহস্পতিবার, ৫ এপ্রিল, ২০১২

বরিশালে মেয়রের ভাইয়ের হস্তক্ষেপে বন্ধ হয়ে গেল সাড়ে ৫ কোটি টাকার টেন্ডার



স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল থেকে: বরিশাল মহানগর যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরনের ভাই মামুনের হুমকির মুখে এইচ.ই.ডি স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পাঁচ কোটি ৬৫ লাখ টাকার টেন্ডার কার্যক্রম গতকাল তৃতীয়বারের মতো স্থগিত করা হয়েছে। এতে দরপত্রে অংশ নিতে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ঠিকাদাররা ক্ষুব্ধ হলেও তারা প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা ও তার সহযোগীদের হামলার ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায়নি। নামপ্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা ও সাধারণ ঠিকাদাররা জানান, বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কমিউনিটি ক্লিনিক সংরক্ষণ এবং সংস্কারের জন্য এইচ.ই.ডি স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে ৭২ গ্রুপ কাজের অনুকূলে পাঁচ কোটি ৬৫ লাখ টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হয়। সে লক্ষ্যে প্রথম দফায় গত ১১ই মার্চ, দ্বিতীয় দফায় ২৫শে মার্চ ও সবশেষ তৃতীয় দফায় গতকাল বেলা এগারোটার দিকে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে টেন্ডারের মাধ্যমে উক্ত কাজ বণ্টনের জন্য উন্মুক্ত লটরির কার্যক্রম শুরু করা হয়। পিরোজপুর জেলার ৯ গ্রুপের কাজের লটারি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে দলবল নিয়ে উপস্থিত হন মহানগর যুবলীগের প্রভাবশালী সদস্য ও সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরনের ভাই মাহামুদ হোসেন মামুন। তিনি নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে জানতে চান, তাকে না জানিয়ে কেন এই লটারির আয়োজন করা হয়েছে। এ সময় তিনি (মামুন) নির্বাহী প্রকৌশলীকে গালিগালাজ করে লটারির কার্যক্রম বন্ধ করার হুকুম দেন। একপর্যায়ে তার নির্দেশেই লটারির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। সাধারণ ঠিকাদাররা অভিযোগ করেন, অজ্ঞাত কারণে এর আগেও দু’বার টেন্ডার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। এতে বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা সাধারণ ঠিকাদাররা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী দুলাল চন্দ্র সরকার বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে ফের পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দরপত্র আহ্বান করা হবে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদেকুর রহমান খান জানান, অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য লটারির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। টেন্ডার কমিটির সভাপতি নির্বাহী প্রকৌশলী পরবর্তী কার্যক্রম বিষয়ে জানিয়ে দিবেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন। একইদিন দুপুরে বরিশাল জেলা পুলিশের কার্যালয়ে ১৪ গ্রুপের ২০ লাখ টাকার অপর একটি কাজের দরপত্র ক্রয়ে সাধারণ ঠিকাদারদের বাধা দেয়া হয়েছে। ওই খানে হাসিব নামের এক যুবলীগ নেতা রুবেল নামের এক ঠিকাদারকে লাঞ্ছিত করে। এ ব্যাপারে বরিশালের পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, বাইরে সমস্যা কি হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে ঠিকাদাররা আমার কাছে আসার পর তাদের সকলকে দরপত্র দেয়া হয়েছে। 

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads