শুক্রবার, ৬ এপ্রিল, ২০১২

বেসামাল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বাড়ছে খুন, ছিনতাই, চুরি ও ডাকাতি


মানব জমিন 
শনিবার, ০৭ এপ্রিল ২০১২
নূরুজ্জামান: ক্রমেই অবনতি হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। ঘরে-বাইরে ঘটছে নৃশংস ও চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ছিনতাই, চুরি ও ডাকাতি। থেমে নেই অপহরণ, গুপ্তহত্যা ও ক্রসফায়ার। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গত ১২ বছরের পরিসংখ্যানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সব সরকারই নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে। এতে পেশার প্রতি উদাসীন হয়ে রাজনৈতিক আনুগত্য প্রদর্শনের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে পড়েছে তারা। ফলে ধারাবাহিকভাবে অপরাধ প্রবণতা বেড়েই চলেছে। শাস্তির নাগালের বাইরে থেকে যাচ্ছে প্রকৃত অপরাধীরা। অন্যদিকে রাজনৈতিক বিবেচনা প্রাধান্য পাওয়ায় অপরাধের মাত্রাও কমাতে পারছে না। সমপ্রতি সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি ও সৌদি কূটনৈতিক হত্যাকাণ্ড দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচিত হলেও পুলিশ অপরাধীদের খুঁজে পাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত তারা হত্যার মোটিভও উদ্ধার করতে পারেনি। নিয়ন্ত্রণহীন এহেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিবেচনায় মৃত্যুদণ্ড মওকুফের ঘটনাও ঘটছে। মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে শাসক দলের নেতা-কর্মী পরিচয়ে। রাজনৈতিক সহিংসতায় হতাহতের ঘটনাও আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।
পুলিশ ও মানবাধিকার সূত্র জানায়, মহাজোট সরকারের গত তিন বছরে সারাদেশে প্রায় ৯ হাজার মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। ৬১২টি রাজনৈতিক খুন হয়েছে। চাঁদার দাবিতে অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ীর ওপর হামলা হয়েছে। এ সরকারের আমলে সারাদেশে প্রায় ৩৪ হাজার রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩০ হাজার রাজনৈতিক নেতা-কর্মী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে একের পর এক রাজনৈতিক নেতাসহ সাধারণ মানুষ ধরে নিয়ে যাওয়ার পর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাও বেড়েছে আশঙ্কাজনকহারে। এ সময়ে ১২৮০টি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছে ৭১ জন। ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটেছে ৪০৪টি। এর আগে ২০০০ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ৯ বছরে ৩০২৭২টি খুনের মামলা রেকর্ড করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে হত্যাকাণ্ড, চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির মতো অপরাধ বেড়ে চলেছে। খোদ পুলিশের তথ্যেই অপরাধ বৃদ্ধির তথ্য ওঠে এসেছে। গত ১২ বছরে সারাদেশে প্রায় ৪০৪৭৯টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তাদের হিসাবমতে ২০১১ সালে ৪৫২, ২০১০ সালে ৩৯৮৮, ২০০৯ সালে ৪২১৯, ২০০৮ সালে ৪০৯৯, ২০০৭ সালে ৩৮৬৩, ২০০৬ সালে ৪১৬৬, ২০০৫ সালে ৩৫৯২, ২০০৪ সালে ৩৯০২, ২০০৩ সালে ৩৪৭১, ২০০২ সালে ৩৫০১ ও ২০০০ সালে ৩৬৭৮টি হত্যা মামলা হয়েছে। এছাড়া গত ৫ বছরে ডাকাতি মামলা হয়েছে ১০,২২৮টি। এর মধ্যে ২০১১ সালে ২১১৫, ২০১০ সালে ১৭১৫, ২০০৯ সালে ২০৬২, ২০০৮ সালে ২৪৬৮ ও ২০০৭ সালে ২৩৪৫টি ডাকাতি মামলা হয়েছে। ১২ বছরে অপহৃত হয়েছেন ৮৪৭৪ জন। এর মধ্যে ২০১০ সালে ৮৭০, ২০০৯ সালে ৮৫৮, ২০০৮ সালে ৮১৭, ২০০৭ সালে ৭৭৪, ২০০৬ সালে ৭২২, ২০০৫ সালে ৭৬৫, ২০০৪ সালে ৮৯৮, ২০০৩ সালে ৮৯৬, ২০০২ সালে ১০৪০ ও ২০০১ সালে ৮৩৪টি অপহরণ মামলা হয়েছে। পুলিশের খাতায় ১০ বছরে সারাদেশে ৯০৮৫২টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ২০১০ সালে ৮৫২৯, ২০০৯ সালে ৯১৭১, ২০০৮ সালে ১২১৮৮, ২০০৭ সালে ১২০১৫, ২০০৬ সালে ৮৩৩২, ২০০৫ সালে ৮১০১, ২০০৪ সালে ৮৬০৫, ২০০৩ সালে ৮২৩৪, ২০০২ সালে ৮২৪৫ ও ২০০১ সালে ৭৪৩২টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের আইজি হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেন, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আগের তুলনায় অপরাধের মাত্রা কমে এসেছে। আসামিরাও গ্রেপ্তার হচ্ছে। এদিকে র‌্যাবের কর্মকর্তারা জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য র‌্যাব প্রশংসনীয় সাফল্য দেখিয়েছে। র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার এম সোহায়েল বলেন,  র‌্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০১২ সালের ১৮ই মার্চ পর্যন্ত ১১৭০০৯ জন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রকারের ৯৪৫৮টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে। ভ্রাম্যমাণ  আদালতের মাধ্যমে ২২৬১জন অপরাধীকে  বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের ৮৬২ জন নেতাকর্মীকে। এছাড়া ৩৭০ জন চরমপন্থি, ৭০ জন জলদস্যু, ২৪ জন বনদস্যু পাকড়াও হয়েছে। ১২৯৫ জন জালনোট ব্যবসায়ী, ২৩৬৯ জন চাঁদাবাজ ও  জিনের বাদশা গ্রেপ্তার হয়েছে ১২৪ জন। এ সময়ে অপহৃত ব্যক্তি ও অপহরণচক্র গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে র‌্যাব ৬২৬টি অভিযান পরিচালনা করেছে। এর মধ্যে ১১২০ জন অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার ও অপহৃত ৭১০ ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে লাশ উদ্ধার করেছে ২৮ ব্যক্তির।  এছাড়া বিভিন্ন প্রতারণার ঘটনায় ১৭৬৬ জন প্রতারক, ৫২ জন ভুয়া ডাক্তার, ৩৯১ জন চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামি, ৮০ জন স্বর্ণালঙ্কার ডাকাত, ১৫৮ জন ভুয়া সেনা/নৌ ও পুলিশ, ২৯২ ভুয়া র‌্যাব সদস্য, ৪৯ জন ওএমএস চাল ব্যবসায়ী, ২৩২ জন যৌন হয়রানিকারী  ও ১৮৫৭ জন অশ্লীল ভিডিও এবং পাইরেটেডে সিডি প্রস্তুতকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্র জানায়, এ সরকারের আমলে রাজনৈতিক বিবেচনায় ৭ হাজার ১শ’ জনকে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী আখ্যায়িত করে মামলা থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। এদের বেশির ভাগই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। অন্যদিকে চাঞ্চল্যকর তিন হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ২৩ আসামির দণ্ডাদেশ মওকুফ করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। সূত্র জানায়, ২০০৯ ও ২০১০ সালের তুলনায় ২০১১ সাল জুড়েই গুম ও গুপ্তহত্যা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গণপিটুনির নামে পিটিয়ে মানুষ হত্যায় সৃষ্টি হয়েছে নয়া রেকর্ড। সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতাদের টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে দেশবাসী অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। ইভটিজিংয়ের ঘটনা মাঝখানে কমে গেলেও পুনরায় তা বেড়ে গেছে।  আমিনবাজারে গণপিটুনিতে ৬ কলেজ ছাত্র নিহত হওয়ায় বেকায়দায় পড়ে যায় প্রশাসন। অভিযোগ উঠেছে- পুলিশের সহায়তায় স্থানীয় মাদক ব্যবসয়ীরা কলেজ ছাত্রদের হত্যা করে। ঢাকার ক্ষিলখেতে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা পুলিশকে পিটিয়ে অস্ত্র লুট করার ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। বহাল তবিয়তে রয়েছে মামলার আসামিরা। গত বছরের ২৩শে মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার পুরাতন জমাদ্দারহাটের সেতু থেকে নিরপরাধ কলেজছাত্র লিমনকে ধরে পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে র‌্যাব। পরে চিকিৎসকরা তার বাম পা কেটে ফেলেন। এই ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি রিপোর্টও জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়নি। গত ১৫ই জুলাই ঢাবির মেধাবী ছাত্র আবদুল কাদেরকে দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যালয়ের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করে খিলগাঁও থানা পুলিশ। পরে তাকে ছিনতাইয়ের মামলা ঢুকিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। থানার ওসির কক্ষে চাপাতি দিয়ে তার পায়ের তলা কেটে দেয়া হয়। ২৭শে জুলাই নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে ছয়জনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তার মধ্যে টেকেরহাট মোড়ে মিলন নামে এক কিশোরকে পুলিশের সামনেই স্থানীয়রা পিটিয়ে হত্যা করে। গত ৫ই জুন রাজধানীর ধানমণ্ডিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুমানা মনজুরকে তার স্বামী হাসান সাঈদ কর্তৃক নির্যাতনের ঘটনা আলোচনায় ওঠে। নির্যাতনের ফলে রুমানা দুই চোখের দৃষ্টি হারান। পরে হাসান সাঈদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৫ই ডিসেম্বর কারা হেফাজতে মারা যান হাসান সাঈদ। মহাজোট আমলে রাজনৈতিক বিবেচনায় ৭১০০ জনকে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী আখ্যায়িত করে মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। যাদের নাম প্রত্যাহার করা হয়েছে বেশির ভাগ আসামির বিরুদ্ধেই হত্যাসহ সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে। একই সময়ে আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ায় তিনটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ২৩ আসামির মৃত্যুদণ্ড মওকুফ করা হয়েছে। তার মধ্যে নাটোরে যুবদল নেতা সাব্বির আহম্মদ গামা হত্যা মামলায় ২১ জন ও লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতা এডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় একজন, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক হত্যা মামলার প্রধান আসামি আহসান হাবীব টিটুর দণ্ড মওকুফ করেন প্রেসিডেন্ট। এ সরকারে আমলে ডাবল মার্ডার, ত্রিপল মার্ডারসহ ৯ হাজার ১০৪ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে আলোচিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নরসিংদী পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা লোকমান হত্যাকাণ্ড। ১লা নভেম্বর নরসিংদীর জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে তিনি নিহত হন। ১৪ই ডিসেম্বর যশোর জেলা বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও ঝিকরগাছা উপজেলা সভাপতি নাজমুল ইসলাম ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে অপহ্রত হন। পরদিন গাজীপুরের দক্ষিণ সালনা এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। ২৩শে ফেব্রুয়ারি রাজধানীর জুরাইন কমিশনার রোডে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে কদমতলী শ্যামপুর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ ও তার গাড়িচালক হারুন-উর রশিদকে। ১৪ই জানুয়ারি ৪১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক ওরফে ফজলুকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ১৬ই অক্টোবর রংপুর মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জেলা খাদ্য ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সাজিদ পারভেজ যাদুকে হাত-পায়ের রগ কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ১লা ডিসেম্বর ফার্মগেইট থেকে অপহৃত হন জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর (উত্তর) কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও ক্যান্টনমেন্ট থানার সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক খান ওরফে দীপু। পরে ধামরাই থেকে তার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। তাছাড়া বাসা, বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি ও ডাকাতির ঘটনা কমছে না। রাজনৈতীক সহিংসতায় ৩০ হাজার নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ছাত্র নেতা শামীম এবং উত্তরার ঝুট ব্যবসায়ী আবদুল হালিম, মিরপুরের আবদুল করিম হাওলাদার নিখোঁজ হওয়ার পর তাদের খোঁজ মিলছে না। গত ১৯শে অক্টোবর রাজধানীর ৪১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী নূর মোহাম্মদ, তার জামাতা আবদুল মান্নান ও বন্ধু ইকবালকে র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ করা হয়।
 ২৮শে নভেম্বর রাজধানীর হাতিরপুল থেকে একসঙ্গে ছাত্রদল নেতা শামীম হাসান সোহেল, ইসমাইল হোসেন ওরফে আল আমিন ও মাসুম হোসেনকে অপহরণ করা হয়। তাদের মধ্যে মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরী নদী থেকে ইসমাইলের লাশ উদ্ধার হলেও বাকি দু’জনের হদিস পাওয়া যায়নি। ৩১শে জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর দয়াগঞ্জ এলাকা থেকে জুয়েল, রাজীব ও মিজান নামে তিন তরুণকে ডিবি পরিচয়ে অপহরণ করা হয়। গাজীপুর ও মুন্সীগঞ্জ এলাকায় তাদের লাশ পাওয়া যায়। বিএনপি নেতা ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর চৌধুরী আলম ও যুবলীগ নেতা লিয়াকত হোসেনের এখনও হদিস মিলছে না। তিন বছরে সারাদেশে ১২৮০টি অপহরণের ঘটনা ঘটে। তারমধ্যে ৭১ জন গুপ্তহত্যার শিকার হয় বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানিয়েছে। তিন বছরে একাধিক ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটে। ২০০৯ সালে ১৫৪ জন, ২০১০ সালে ১৬৫ জন ক্রসফায়ারে মারা যান। গত বছর বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ক্রসফায়ার বন্ধের জন্য সোচ্চার ছিল। তারপরও ওই বছর ৮৫ জন মারা যায়। ১২ই আগস্ট রাজধানীর উত্তরায় র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে পাঁচ যুবক নিহত হন। তাছাড়া সুন্দরবনে জলদস্যু ও বনদস্যুদের সঙ্গে র‌্যাব ও কোস্টগার্ডের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধেও একাধিক ডাকাত ক্রসফায়ারে পড়ে মারা গেছে।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads