সোমবার, ৬ আগস্ট, ২০১২

বিদ্রোহীদের অস্ত্র জমা দেয়া ছিল লোক দেখানো : সাক্ষ্য প্রদানকালে সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ



২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের সময় জওয়ানদের অস্ত্রসমর্পণ ছিল লোক দেখানো। ২৫ তারিখ ঘটনার রাতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পিলখানার ভেতরে গেলেও তাদের দরবার হলে যেতে দেয়া হয়নি। গতকাল পুলিশের সাবেক আইজি নূর মোহাম্মদ বিডিআর হত্যা মামলার সাক্ষ্যে এসব কথা বলেন।
২০০৯ সালে বিদ্রোহের সময় নূর মোহাম্মদ পুলিশের আইজি ছিলেন। পিলখানায় নিহত হয়েছেন তার জামাতা। তার মেয়ে আটকা পড়েছিলেন পিলখানার ভিতরে। পরে নূর মোহাম্মদকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
নূর মোহাম্মদ জবানবন্দিতে বলেন, ‘ঘটনার সময় পিলখানার ভেতর জওয়ানরা যে অস্ত্রসমর্পণ করেছিল, তা ছিল লোক দেখানো। ওইদিন তারা আমাদের দরবার হলে যেতে দেয়নি। আটক অফিসার ও তাদের পরিবারের সদস্যরা কোথায়, কী অবস্থায় আছে তাও জানায়নি। জওয়ানরা সশস্ত্র ও উত্তেজিত ছিল বলে আমরা তাদের চাপ দিতে পারিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইন প্রতিমন্ত্রীসহ সরকারের পক্ষ থেকে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু জওয়ানরা টালবাহানা করে সময়ক্ষেপণ করে।’ নূর মোহাম্মদ আরও বলেন, ‘বিদ্রোহের দ্বিতীয় দিন আইন প্রতিমন্ত্রী আমার মেয়েসহ কয়েকজনকে পিলখানা থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।’ জবানবন্দিতে তিনি ডিএডি তৌহিদুর রহমান, ডিএডি আবদুল জলিল, ডিএডি নাসির ও ডিএডি আবদুর রহিম, সিপাহী সেলিম রেজা ও মনিরকে অভিযুক্ত করেন। দুপুর ১২টার দিকে তাকে জেরা করা শেষে হলে তিনি আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
নূর মোহাম্মদ বর্তমানে মরক্কোয় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। গত ২ জুলাই তাকে ও সাবেক সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদকে সমন জারি করেন আদালত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আদালতে সমন পাওয়ার পর তিনি সাক্ষ্য দিতে আসেন। গতকাল সকালে তিনি আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষী দেন এবং আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তকে জেরা করেন।
এ মামলায় নৌবাহিনীর প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল জহির উদ্দিন আহম্মেদ ও বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান এয়ার মার্শাল শাহ মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীনসহ কয়েকজন ভিআইপি সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন এবং তাদরেকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেছেন।
এছাড়া এই মামলার ভিআইপি সাক্ষীর তালিকায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক, আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সংসদ সদস্য মির্জা আজম, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলুল করিম সেলিমও রয়েছেন। এছাড়া বর্তমান আইজিপি ও র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার, ডিএমপির সাবেক কমিশনার ও অতিরিক্ত আইজিপি নাইম আহমেদ এবং বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার সৈয়দ ফকর উদ্দিন মাসুদও রয়েছেন সাক্ষীর তালিকায়।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads