শুরু থেকে নিজের ও সরকারের সফলতা নিয়ে কথা বলে মানুষ হাসাতে যিনি ক্লান্তিহীন, তিনি আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তার অধীনস্থ পুলিশ, র্যাব, বিজিবি প্রায়ই সংবাদ শিরোনামে স্থান পায় নিজেদের ব্যর্থতা, বেআইনি ও নির্যাতনকারী ভূমিকার জন্য। ক্ষমতাসীনরা এসব দেখেও চোখ বন্ধ করে থাকা বেশ রপ্ত করে ফেলেছেন। কিন্তু এতে করে যে পরিস্থিতি সামলানো যাচ্ছে না, তেমন খবর প্রতিদিনই সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। গতকালের আমার দেশ পাসপোর্ট বই উধাওয়ের এমনই এক খবর প্রকাশ করেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ পাসপোর্ট অধিদফতরে জালিয়াতি-দুর্নীতির খবর মোটেই নতুন নয়। পূর্ব উদ্যোগের জের ধরে বিদেশে বাংলাদেশী নাগরিকদের হয়রানি রোধকল্পে পাসপোর্ট জালিয়াতি ও নকল বন্ধ করতে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বই (এমআরপি) প্রকল্প শুরু হয় ২০১০ সাল থেকে। দু’বছরে সারাদেশে প্রায় ২৬ লাখ এই নতুন ও উন্নতমানের আমদানিকৃত পাসপোর্ট বই ইস্যু করা হয়েছে। তবে চাঞ্চল্যকর খবর হলো, এর মধ্যেই সরকারি গুদাম থেকে হাওয়া হয়ে গেছে এক লাখ বই। অতি অল্প সময়ে বিপুল সংখ্যক পাসপোর্ট বই বেমালুম গায়েব হওয়ার খবরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সর্বত্র হইচই পড়ে গেলেও, এখন পর্যন্ত দোষীদের হদিস খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। পাসপোর্ট জালিয়াতি, ভুলভ্রান্তি ও নকল রোধে উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি আন্তর্জাতিক মানের মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বই আমদানি করা হয় সুদূর পোল্যান্ড থেকে। সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশ ছাড়া কারও পক্ষে সরকারি গুদাম থেকে এই পাসপোর্ট চুরি বা নকল করা যে অসম্ভব ব্যাপার, সেটা সবাই বোঝে। কিন্তু সরকারের ভেতরের ও ঘনিষ্ঠ দুর্নীতিবাজদের ক্ষমতা ও দক্ষতা এখন এতটাই বেড়েছে যে, একটা-দুটো নয়—এক লাখ পাসপোর্ট বই হাতিয়ে নিয়েছে তারা। বেড়ায় ক্ষেত খেয়ে ফেলার উদাহরণ এর চেয়ে আর কী হতে পারে! এখন এসব পাসপোর্টই বিশাল অংকের টাকার বিনিময়ে চলে যাচ্ছে সন্ত্রাসী, অপরাধী, বিশেষ করে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গা ও ভারত-মিয়ানমারের অপরাধীদের হাতে। এর পরিণতি যে কত ভয়াবহ হতে পারে, সেটা সহজেই অনুমেয়। বিদেশে হয়রানি বন্ধে যে ব্যবস্থা নেয়া হলো, এখন তার ফলেই বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীদের মনে নতুন করে বিপদে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তারপরও মন্ত্রী-মিনিস্টাররা নিজেদের সফলতার দাবি করতেই থাকবেন। আঙুল উঁচিয়ে বলবেন—আমাদের আমলে দুর্নীতি হয় না। যা হয়েছে সব বিএনপি আমলের ঘটনা। তাদের কথায় তাল মিলিয়ে ‘স্বাধীন’ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সরকারকে সার্টিফিকেট দিতে কার্পণ্য করছে না। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা চুরি যাওয়া পাসপোর্ট বই উদ্ধারে জোর চেষ্টার কথা জানিয়ে দায়িত্ব সেরেছেন। মহাক্ষমতাধর গোয়েন্দা কর্মকর্তারা একইভাবে প্রায় দশ হাজার জাল পাসপোর্টের সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু কীভাবে, কারা এমন দুষ্কর্ম করেছে তা নিয়ে কেউ মুখ খোলেনি। এ ঘটনার প্রকৃত অপরাধীরাও হয়তোবা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে। সাধারণ মানুষের মনে এমন ধারণাই এখন জেঁকে বসেছে। কারণ শেয়ারবাজার লুটের ঘটনায় এ পর্যন্ত কেউই ধরা পড়েনি। ঋণখেলাপি হিসেবেও কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের পাঁচ মাস চলে গেলেও চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার হদিস বের করতে পারেনি কেউই। চৌধুরী আলম, ইলিয়াস আলীর মতো বিরোধী রাজনীতিকদের অপহরণের মামলা ফাইলচাপা পড়ে গেছে বলেই সবার ধারণা। এখন পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির তদন্ত দূরে থাক, সরকার দেশ-বিদেশে আলোড়ন তোলা এই অভিযোগটিও হজম করার অপচেষ্টায় সবকিছু অস্বীকার করে নতুন করে জনগণের টাকা লুটে নেয়ার পথ ধরেছে। এখন পাসপোর্ট চুরির মতো দুর্নীতির ঘটনাও কি ধামাচাপা পড়ে যাবে? সবকিছু দেখেশুনে বলতেই হয়, হার্মাদ দস্যু, দুর্নীতিবাজ-লুটেরারাই বুঝি এখন দেশ শাসন করছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ পাসপোর্ট অধিদফতরে জালিয়াতি-দুর্নীতির খবর মোটেই নতুন নয়। পূর্ব উদ্যোগের জের ধরে বিদেশে বাংলাদেশী নাগরিকদের হয়রানি রোধকল্পে পাসপোর্ট জালিয়াতি ও নকল বন্ধ করতে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বই (এমআরপি) প্রকল্প শুরু হয় ২০১০ সাল থেকে। দু’বছরে সারাদেশে প্রায় ২৬ লাখ এই নতুন ও উন্নতমানের আমদানিকৃত পাসপোর্ট বই ইস্যু করা হয়েছে। তবে চাঞ্চল্যকর খবর হলো, এর মধ্যেই সরকারি গুদাম থেকে হাওয়া হয়ে গেছে এক লাখ বই। অতি অল্প সময়ে বিপুল সংখ্যক পাসপোর্ট বই বেমালুম গায়েব হওয়ার খবরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সর্বত্র হইচই পড়ে গেলেও, এখন পর্যন্ত দোষীদের হদিস খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। পাসপোর্ট জালিয়াতি, ভুলভ্রান্তি ও নকল রোধে উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি আন্তর্জাতিক মানের মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বই আমদানি করা হয় সুদূর পোল্যান্ড থেকে। সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশ ছাড়া কারও পক্ষে সরকারি গুদাম থেকে এই পাসপোর্ট চুরি বা নকল করা যে অসম্ভব ব্যাপার, সেটা সবাই বোঝে। কিন্তু সরকারের ভেতরের ও ঘনিষ্ঠ দুর্নীতিবাজদের ক্ষমতা ও দক্ষতা এখন এতটাই বেড়েছে যে, একটা-দুটো নয়—এক লাখ পাসপোর্ট বই হাতিয়ে নিয়েছে তারা। বেড়ায় ক্ষেত খেয়ে ফেলার উদাহরণ এর চেয়ে আর কী হতে পারে! এখন এসব পাসপোর্টই বিশাল অংকের টাকার বিনিময়ে চলে যাচ্ছে সন্ত্রাসী, অপরাধী, বিশেষ করে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গা ও ভারত-মিয়ানমারের অপরাধীদের হাতে। এর পরিণতি যে কত ভয়াবহ হতে পারে, সেটা সহজেই অনুমেয়। বিদেশে হয়রানি বন্ধে যে ব্যবস্থা নেয়া হলো, এখন তার ফলেই বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীদের মনে নতুন করে বিপদে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তারপরও মন্ত্রী-মিনিস্টাররা নিজেদের সফলতার দাবি করতেই থাকবেন। আঙুল উঁচিয়ে বলবেন—আমাদের আমলে দুর্নীতি হয় না। যা হয়েছে সব বিএনপি আমলের ঘটনা। তাদের কথায় তাল মিলিয়ে ‘স্বাধীন’ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সরকারকে সার্টিফিকেট দিতে কার্পণ্য করছে না। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা চুরি যাওয়া পাসপোর্ট বই উদ্ধারে জোর চেষ্টার কথা জানিয়ে দায়িত্ব সেরেছেন। মহাক্ষমতাধর গোয়েন্দা কর্মকর্তারা একইভাবে প্রায় দশ হাজার জাল পাসপোর্টের সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু কীভাবে, কারা এমন দুষ্কর্ম করেছে তা নিয়ে কেউ মুখ খোলেনি। এ ঘটনার প্রকৃত অপরাধীরাও হয়তোবা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে। সাধারণ মানুষের মনে এমন ধারণাই এখন জেঁকে বসেছে। কারণ শেয়ারবাজার লুটের ঘটনায় এ পর্যন্ত কেউই ধরা পড়েনি। ঋণখেলাপি হিসেবেও কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের পাঁচ মাস চলে গেলেও চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার হদিস বের করতে পারেনি কেউই। চৌধুরী আলম, ইলিয়াস আলীর মতো বিরোধী রাজনীতিকদের অপহরণের মামলা ফাইলচাপা পড়ে গেছে বলেই সবার ধারণা। এখন পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির তদন্ত দূরে থাক, সরকার দেশ-বিদেশে আলোড়ন তোলা এই অভিযোগটিও হজম করার অপচেষ্টায় সবকিছু অস্বীকার করে নতুন করে জনগণের টাকা লুটে নেয়ার পথ ধরেছে। এখন পাসপোর্ট চুরির মতো দুর্নীতির ঘটনাও কি ধামাচাপা পড়ে যাবে? সবকিছু দেখেশুনে বলতেই হয়, হার্মাদ দস্যু, দুর্নীতিবাজ-লুটেরারাই বুঝি এখন দেশ শাসন করছে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন