সোমবার, ২৩ জুলাই, ২০১২

অবশেষে মন্ত্রী আবুল বিদায়



দুর্নীতির দায়ে অবশেষে বিদায় নিতে বাধ্য হলেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। তার পদত্যাগের বিষয়টি সরকারের নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। পদ্মা সেতু নির্মাণে পরামর্শক নিয়োগে বিশ্বব্যাংকের আনা দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে ১০ মাস আগেই দুর্নীতির এ অভিযোগ এনেছিল বিশ্বব্যাংক। তাকে মন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দিতে বিশ্বব্যাংক প্রথম থেকেই সরকারকে চাপ দিয়ে আসছিল। কিন্তু সরকার দুর্নীতি তদন্তে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ায় গত ৩০ জুন পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন চুক্তি বাতিল ঘোষণা করে বিশ্বব্যাংক। এতে পদ্মা সেতু নির্মাণ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। পদত্যাগের আগে তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী ছিলেন। গত ডিসেম্বরে তাকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে নতুন করে সৃষ্টি করা এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদের গতকালের বৈঠকেও অংশ নেননি আবুল হোসেন। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
এর আগে ঘুষ কেলেঙ্কারির দায়ে রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। বর্তমানে তিনি দফতরবিহীন মন্ত্রী। এছাড়া বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ। আবুল হোসেনের পদত্যাগের ফলে বর্তমান সরকারের তিনজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘটনা ঘটল। আওয়ামী লীগের বিগত সরকারের (১৯৯৬-২০০১) মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী ছিলেন আবুল হোসেন। পাসপোর্ট জালিয়াতির দায়ে ওই মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি।
আবুল হোসেনের পদত্যাগ করছেন—এমন গুঞ্জন গত দুই দিন ধরে ছড়িয়ে পড়ে। গত রোববার বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে আবুল হোসেন বিজ্ঞাপন দিয়ে আকস্মিকভাবে প্রকাশিত খোলা চিঠিতে পদত্যাগের ইঙ্গিত দেন। গতকাল তার পদত্যাগ নিয়ে নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। দিনভর নাটকীয়তার পর বিকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র আবুল হোসেনের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে সকালে পতাকাবিহীন গাড়ি নিয়ে নিজ বাসা থেকে বের হন। বিকাল পর্যন্ত সাংবাদিকরা বাসার সামনে অপেক্ষা করেও তার দেখা পাননি। তার ব্যবহৃত মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেছে। এ কারণে অনেক চেষ্টা করেও আবুল হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। গতকাল সকালে মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত বৈঠকে যোগ দেননি তিনি। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে তিনি আবুল হোসেনকে দেখেননি।
পদ্মা সেতুর দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত আবুল হোসেন : পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিভিন্ন কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য ঘুষ বা কমিশন চেয়েছিলেন সৈয়দ আবুল হোসেন মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান সাকো ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধিরা। আবুল হোসেনের নাম ব্যবহার করে এ ঘুষ চাওয়া হয়। কমিশন দিলে কাজ পেতে যোগাযোগমন্ত্রী নিজেই সহায়তা করবেন বলেও আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। বর্তমান সরকারের মন্ত্রী হওয়ার পরপর সাকো ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদ থেকে অব্যাহতি নেন আবুল হোসেন। এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা হলেন মন্ত্রীর স্ত্রী খাজা নার্গিস হোসেন এবং দুই মেয়ে সৈয়দা রুবাইয়াত হোসেন ও সৈয়দা ইফফাত হোসেন। অথচ তত্কালীন যোগাযোগমন্ত্রী সাকোকে কমিশন এজেন্ট করার জন্য আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে চাপ দিয়েছেন। এ জন্য তিনি ভয়ভীতিও দেখান। বিশ্বব্যাংক বিস্তারিত তদন্ত করে সাবেক এ যোগাযোগমন্ত্রীর এসব দুর্নীতির তথ্য প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও দুদককে দেয়। বিশ্বব্যাংক প্রতিবেদনটি সরকারকে দিয়ে স্পষ্ট করেই বলে দিয়েছে, এ অবস্থায় পদ্মা সেতুতে অর্থ পেতে হলে বাংলাদেশকে এ দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় পদ্মা সেতু নির্মাণে কোনো ঋণ ছাড় করা হবে না। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রীকে পদ্মা সেতুর দুর্নীতির তদন্ত প্রতিবেদনটি দেয়া হয়। বিশ্বব্যাংকের ভাষায়, অত্যন্ত গোপনীয় এ প্রতিবেদনটি দিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের ইন্টিগ্রিটি ভাইস প্রেসিডেন্ট লিওনার্ড এফ ম্যাকার্থি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সেতুর মূল অংশের প্রাকযোগ্যতা চুক্তি প্রক্রিয়ায় দুর্নীতিসংক্রান্ত অসংখ্য অভিযোগ পেয়েছে বিশ্বব্যাংক। অভিযোগগুলো মূলত যোগাযোগমন্ত্রী ও তার মালিকানাধীন কোম্পানি সাকোর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। যোগাযোগমন্ত্রীর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আসতে থাকে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করে বলা হয়, যোগাযোগমন্ত্রী ও সাকোর কর্মকর্তারা মিলে এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করেন, সাকো হলো পদ্মা সেতু নির্মাণের যেকোনো কাজ পাইয়ে দেয়ার ব্যাপারে এক ধরনের নীরব প্রতিনিধি (সাইলেন্ট এজেন্ট)। কোনো কাজ পেতে হলে বা প্রাকযোগ্যতায় টিকতে হলে সাকোকে অর্থ দিতে হবে। সাকোর পক্ষ থেকে ঠিকাদারদের ভয়ভীতি দেখানোর কথাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। যদিও আবুল হোসেন তার খোলা চিঠিতে দাবি করেছেন, পদ্মা সেতুতে কোনো দুর্নীতি হয়নি। তিনি দুর্নীতিবাজ নন।
এসএনসি-লাভালিনের কাছে ১০ শতাংশ ঘুষ : পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য কানাডাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনের কাছে ১০ শতাংশ অর্থ কমিশন চেয়েছিলেন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ তিনজন। তারা হলেন পদত্যাগী মন্ত্রী আবুল হোসেন, সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইয়া এবং পদ্মা সেতুর সাবেক প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলাম। তাদের প্রতিনিধিরা এ অর্থ কমিশন হিসেবে চান। অর্থের অবৈধ লেনদেনের জন্য গত জুন মাসে গ্রেফতার হওয়া এসএনসি-লাভালিনের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিয়েরে দুহাইমের কাছ থেকে এ তথ্য পেয়েছে কানাডার পুলিশ। আর বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে এই তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রতিবেদনে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীদের সম্পৃক্ততার তথ্যও রয়েছে। এর পরই গত দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী ও জাতীয় সংসদের হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটনের ভাই নিক্সন চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। বিশ্বব্যাংক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আবুল হাসান চৌধুরী তার আত্মীয় জিয়াউল হককে নিয়ে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনের সঙ্গে সেতু ভবনে পদ্মা সেতু-সম্পর্কিত এক বৈঠকে অংশ নেন। তার ওই আত্মীয় হচ্ছেন বাংলাদেশের কানাডিয়ান এসএনসি-লাভালিনের স্থানীয় একজন প্রতিনিধি। এছাড়া জাতীয় সংসদের হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটনের ভাই নিক্সন চৌধুরীর সঙ্গে এসএনসি-লাভালিনের বাংলাদেশী কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেনের ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে। কানাডা ও বাংলাদেশের যেসব হোটেলে তাদের নিয়মিত সাক্ষাত্ হতো তার ঠিকানা ও সময়সূচিও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের শর্ত পূরণ করছে সরকার : পদ্মা সেতু দুর্নীতির ঘটনায় চারটি শর্ত দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। সেগুলো হচ্ছে—প্রথমত, যেসব সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের দায়িত্ব থেকে অন্তত ছুটি দেয়া। দ্বিতীয়ত, এ অভিযোগ তদন্তের জন্য দুদকে একটি বিশেষ তদন্ত দল নিয়োগ করা। তৃতীয়ত, আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত বিশ্বব্যাংকের তদন্ত প্যানেলকে অভিযোগটি বস্তুনিষ্ঠভাবে তদন্তের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের সার্বিক সহায়তা প্রদান। চতুর্থত, বাংলাদেশ সরকারের আইন ও বিধি অনুযায়ী তদন্তে দোষী প্রমাণিতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। এসব শর্ত না মানায় গত ৩০ জুন পদ্মা সেতু প্রকল্পের ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ঋণচুক্তি বাতিল করে দেয়। এরপর এডিবিও তাদের চুক্তি বাতিল করেছে। কারণ হিসেবে ওই সময়ে বিশ্বব্যাংকের সদর দফতর ওয়াশিংটন থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে বিশ্বব্যাংক বলেছে, পদ্মা সেতু নির্মাণে পরামর্শক নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে বাংলাদেশ সরকার সহযোগিতা না করায় তারা এ পদক্ষেপ নিয়েছে। সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কর্মকর্তা, কানাডার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি ব্যক্তিদের যোগসাজশে বিভিন্ন সূত্র থেকে দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য তথ্য-প্রমাণ তাদের কাছে আসে। এ তথ্য-প্রমাণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী এমএ মুহিত ও দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের কাছে দেয়া হয়েছে। কিন্তু সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বিশ্বব্যাংক জানায়, পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপর্যায়ে দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য তথ্যপ্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে। বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে অবহিত করার পরও দুর্নীতি তদন্তে তেমন কোনো সাড়া না পাওয়ায় এ অর্থচুক্তি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। এরপর থেকে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা বিশ্বব্যাংকের বিষোদ্গার করে আসছেন। তারা দেশীয় অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। তবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিশ্বব্যাংকের ঋণ পাওয়ার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করে আসছেন। তিনি বিশ্বব্যাংকের চার শর্ত পালনের আশ্বাস দেন। এরপরই পদত্যাগ করলেন আবুল হোসেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন ফের ফিরিয়ে আনার জন্য আবুল হোসেনকে সরে যেতে হলো।
আবুলের দুর্নীতির তথ্য ফাঁস করেছিল উইকিলিকস : যোগাযোগমন্ত্রী থাকাকালীন সৈয়দ আবুল হোসেনের দুর্নীতির তথ্য ফাঁস করে উইকিলিকস। এতে বলা হয়, সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি আবুল হোসেনের সততা প্রশ্নবিদ্ধ বলে মন্তব্য করে ওয়াশিংটনে যে মূল্যায়ন পাঠিয়েছিলেন, তা গিয়ে পড়ে উইকিলিকসের হাতে। মরিয়ার্টির মূল্যায়নটি গত ৩০ আগস্ট প্রকাশ করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুনিয়া কাঁপানো সোশ্যাল মিডিয়া উইকিলিকস। এতে বলা হয়েছে, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি তার মূল্যায়নে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণের দায়িত্ব এমন এক মন্ত্রীর কাঁধে দিয়েছেন, যার সততা প্রশ্নবিদ্ধ। এই মন্ত্রী বলতে তিনি সৈয়দ আবুল হোসেনকেই ইঙ্গিত করেছিলেন। মার্কিন দূতাবাস থেকে তারবার্তাটি যুক্তরাষ্ট্রে যায় ২০১০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি। এতে মরিয়ার্টি লেখেন, দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে যোগাযোগমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। তার কাজের ধরন নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। চীনের সঙ্গে এই মন্ত্রীর রয়েছে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ, যা সবার জানা। মরিয়ার্টি তার বার্তায় ২০১০-এর ৩ ফেব্রুয়ারি যোগাযোগমন্ত্রীর দেয়া এক ভোজসভায় অংশ নেয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে জানান, ওই ভোজসভাতেই সৈয়দ আবুল হোসেন পদ্মা সেতু নির্মাণে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)’র শর্ত নিয়ে আপত্তি তুলে এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তদবিরের অনুরোধ করেন। এ সময় ঢাকায় উড়ালপথ (এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) নির্মাণেও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর জন্য বাংলাদেশে কাজের অনেক সুযোগ থাকবে এমন প্রলোভন দেখান। তবে আবুল হোসেনের দুর্নীতির সুস্পষ্ট প্রমাণ ফুটে ওঠে মরিয়ার্টির অন্য বক্তব্যে। ওই বার্তায় তিনি বলেন, পরবর্তী নির্বাচনে জয় নিশ্চিত করতে যোগাযোগমন্ত্রী ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক সম্প্রসারণের কাজকে ব্যবহার করতে চান। এর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সম্প্রসারণে ২০ কোটি ডলারের কাজের জন্য ১০টি দরপত্রে সাতটি বিদেশি ও তিনটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়েছে। এছাড়া মন্ত্রী একটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনার কথাও মরিয়ার্টিকে জানান। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়ে তিনি রাষ্ট্রদূতকে বলেন, ‘মহানগরীতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে আমরা এমন একটি প্রকল্প চাই, যা দুই দেশের সম্পর্কের প্রমাণ বহন করবে।’

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads