আজ পবিত্র শবেবরাত বা লাইলাতুল বরাত। বিশ্ব মুসলিমের কাছে আজকের দিবাগত রাতটি মহিমান্বিত ‘ভাগ্যরজনী’ হিসেবে চিহ্নিত। এই অনন্য রাত শুধু বরকতময়ই নয় বরং পবিত্র মাহে রমজানের আগমনবার্তা বহনকারী রাতও বটে। প্রতিবারের মতো যথারীতি এবারও শাবান মাসে শান্তি-সমৃদ্ধি ও মুক্তির সওগাত নিয়ে এসেছে শবেবরাত। হাদিস শরীফে বলা হয়েছে, এ রাতে পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা বান্দাদের জন্য তাঁর রহমতের দরজা উন্মুক্ত করে দেন। সেই রহমত প্রাপ্তির মানসে মুসলমানরা এ রাতটি অতিবাহিত করেন ইবাদত বন্দেগির মধ্য দিয়ে। আল্লাহতায়ালার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা এবং ইহলৌকিক-পারলৌকিক শান্তি প্রত্যাশায় তাঁর করুণা ভিক্ষা করেন। এ রাতের ফজিলত তথা মাহাত্ম্য সম্পর্কে হাদিস শরীফে আরও উল্লেখ রয়েছে, ‘তোমরা রাতে সালাত ও দোয়ায় মশগুল থাক এবং দিবসে সিয়াম পালন কর। কারণ এই পুণ্যময় রজনীতে মহান সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীর নিকটতম আসমানে অবতরণ করে রহমত দানের জন্য ক্ষমাপ্রার্থীদের আহ্বান করেন এবং প্রার্থনাকারীর দোয়া মঞ্জুর করে তাকে ক্ষমা করেন। শুধু তাই নয়, পরোয়ারদেগার একইসঙ্গে বরাদ্দ করেন বান্দার রিজিক ও দৌলত। দুঃখ-দুর্দশা থেকেও মুক্তিদান করেন। হাদিস শরীফ জানাচ্ছে, এ রাতে বান্দার সারা বছরের আমল পেশ করা হয় আল্লাহর দরবারে এবং আগামী এক বছরের জন্য বান্দার হায়াত-মউতসহ জীবনযাপনের নানা প্রাপ্তি বণ্টন করেন।
শাবান মাসে এই ‘নিসফে শাবান’র রাতকে আমাদের দেশে বলা হয় শবেবরাত। ‘শব’ একটি ফার্সি শব্দ। এর অর্থ রাত এবং ‘বরাত’ শব্দটি একাধারে ফার্সি ও আরবি, যার অর্থ ভাগ্য। অন্য অর্থে এই রজনী নিষ্কৃতি, দায়মুক্তি, অব্যাহতি ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত সময়কাল। এ রাতে আত্মীয়স্বজন ছাড়াও যে কারও রুহের মাগফিরাত কামনা করে কবর জিয়ারত করেন অনেক মুসলমান। আবার সারা রাত ইবাদতে কাটিয়ে পরদিন পালন করেন সিয়াম। এ অর্থে শবেবরাত পবিত্র রমজানের বার্তাবাহক। প্রকৃত প্রস্তাবে, আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে ইবাদতের মাধ্যমে তাঁর অশেষ দয়া ও ক্ষমা লাভ করা আসল কথা। এই পবিত্র রাতে তওবা ও ইস্তিগফারের মধ্য দিয়ে অতীতের সব গুনাহ থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর আনুগত্য ও রসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুমহান আদর্শ অনুসারে জীবন পরিচালনার দৃঢ় প্রত্যয় ও শপথ নেয়া প্রতিটি মুসলমানের কর্তব্য। কাজেই শবেবরাতকে নিছক আনুষ্ঠানিকতায় আবদ্ধ করে ফেলার কোনো অবকাশ নেই। এ রাতে ক্ষেত্রবিশেষে আতশবাজিসহ নানা ধরনের অনির্দেশিত প্রথা পালন করতে দেখা যায়। কিন্তু ইসলামী শরীয়া আতশবাজি বা এজাতীয় কাজের বৈধতা স্বীকার করে না। অন্যদিকে হালুয়া-রুটি বিতরণকেও বাধ্যতামূলক বলে নির্দেশ করে না। বস্তুত, পবিত্র এ ভাগ্য-রজনীতে মাগফিরাত কামনার সুযোগে একজন মুসলমান শুধু নিজের জন্যই প্রার্থনা করবেন না, বিশ্বমুসলিমসহ সার্বিক বিশ্বমানবতার জন্যও কল্যাণ কামনা করবেন। ব্যক্তিজীবন থেকে রাষ্ট্রীয় জীবন, স্বদেশের মর্যাদা সুরক্ষা, জাতীয় উন্নয়নে সবার সম্মিলিত উদ্যোগ তথা শান্তি-শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনযাপনের তওফিক লাভের উদ্দেশ্যেও মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে জানাবেন আকুল ফরিয়াদ।
বর্তমানে আমাদের দেশ নানাবিধ বিপর্যয়ের সম্মুখীন। অর্থনৈতিক সঙ্কটসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের অর্জন-অগ্রসর আশানুরূপ নয়। মানুষের অবিমৃষ্যকারিতার ফলে দারিদ্র্য, শোকসন্তাপ, আশা-নিরাশার দোলাচলে পাক খাচ্ছি আমরা। মহান আল্লাহ ব্যক্তি ও জাতিকে নিজ ভাগ্য পরিবর্তনের তাগিদ দিয়েছেন। ভাগ্য-রজনীতে সে কথাও মনে রাখা দরকার। কিন্তু অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনে নিষ্ঠাবান নই। ফি-বছর রমজানের আগে থেকেই অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যমূল্য বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের ওপর ‘খাঁড়ার ঘা’ বসিয়ে দেন। সরকার কথা দিয়েও এদের নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে না। অর্থের নির্দয় অন্বেষণ, খুনখারাবি, ঘুষ-দুর্নীতি সবকিছু মিলে জাতীয় জীবনে কেবলই দেখা দেয় দুর্যোগের ঘনঘটা। সুযোগ-সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও প্রাকৃতিক দুর্যোগে দুর্গতদের তথা জীবনযুদ্ধে পরাজিত জনগোষ্ঠীর ভাগোন্নয়নে আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্র, সরকার এবং অন্যদের ভূমিকা বরাবরই আশাব্যঞ্জক হয়ে ওঠে না। অথচ মহান আল্লাহ এসব বিষয়ে নানাভাবে আমাদের সতর্ক করেছেন।
বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অপঘাত, অশান্তি, যুদ্ধবিগ্রহ ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে। পাশাপাশি মানুষ প্রকৃতির বিরুদ্ধাচরণ করে ডেকে আনছে সর্বনাশ। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে যে বিশেষ সুযোগ দিয়েছেন মহান আল্লাহপাক তার সদ্ব্যবহার করা বান্দা হিসেবে আমাদের অপরিহার্য দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। পরিশেষে আমাদের সবার সম্মিলিত আরজ, ভাগ্য-বণ্টনের এই বরকতময় রজনীর উছিলায় হলেও আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
শাবান মাসে এই ‘নিসফে শাবান’র রাতকে আমাদের দেশে বলা হয় শবেবরাত। ‘শব’ একটি ফার্সি শব্দ। এর অর্থ রাত এবং ‘বরাত’ শব্দটি একাধারে ফার্সি ও আরবি, যার অর্থ ভাগ্য। অন্য অর্থে এই রজনী নিষ্কৃতি, দায়মুক্তি, অব্যাহতি ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত সময়কাল। এ রাতে আত্মীয়স্বজন ছাড়াও যে কারও রুহের মাগফিরাত কামনা করে কবর জিয়ারত করেন অনেক মুসলমান। আবার সারা রাত ইবাদতে কাটিয়ে পরদিন পালন করেন সিয়াম। এ অর্থে শবেবরাত পবিত্র রমজানের বার্তাবাহক। প্রকৃত প্রস্তাবে, আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে ইবাদতের মাধ্যমে তাঁর অশেষ দয়া ও ক্ষমা লাভ করা আসল কথা। এই পবিত্র রাতে তওবা ও ইস্তিগফারের মধ্য দিয়ে অতীতের সব গুনাহ থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর আনুগত্য ও রসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুমহান আদর্শ অনুসারে জীবন পরিচালনার দৃঢ় প্রত্যয় ও শপথ নেয়া প্রতিটি মুসলমানের কর্তব্য। কাজেই শবেবরাতকে নিছক আনুষ্ঠানিকতায় আবদ্ধ করে ফেলার কোনো অবকাশ নেই। এ রাতে ক্ষেত্রবিশেষে আতশবাজিসহ নানা ধরনের অনির্দেশিত প্রথা পালন করতে দেখা যায়। কিন্তু ইসলামী শরীয়া আতশবাজি বা এজাতীয় কাজের বৈধতা স্বীকার করে না। অন্যদিকে হালুয়া-রুটি বিতরণকেও বাধ্যতামূলক বলে নির্দেশ করে না। বস্তুত, পবিত্র এ ভাগ্য-রজনীতে মাগফিরাত কামনার সুযোগে একজন মুসলমান শুধু নিজের জন্যই প্রার্থনা করবেন না, বিশ্বমুসলিমসহ সার্বিক বিশ্বমানবতার জন্যও কল্যাণ কামনা করবেন। ব্যক্তিজীবন থেকে রাষ্ট্রীয় জীবন, স্বদেশের মর্যাদা সুরক্ষা, জাতীয় উন্নয়নে সবার সম্মিলিত উদ্যোগ তথা শান্তি-শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনযাপনের তওফিক লাভের উদ্দেশ্যেও মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে জানাবেন আকুল ফরিয়াদ।
বর্তমানে আমাদের দেশ নানাবিধ বিপর্যয়ের সম্মুখীন। অর্থনৈতিক সঙ্কটসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের অর্জন-অগ্রসর আশানুরূপ নয়। মানুষের অবিমৃষ্যকারিতার ফলে দারিদ্র্য, শোকসন্তাপ, আশা-নিরাশার দোলাচলে পাক খাচ্ছি আমরা। মহান আল্লাহ ব্যক্তি ও জাতিকে নিজ ভাগ্য পরিবর্তনের তাগিদ দিয়েছেন। ভাগ্য-রজনীতে সে কথাও মনে রাখা দরকার। কিন্তু অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনে নিষ্ঠাবান নই। ফি-বছর রমজানের আগে থেকেই অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যমূল্য বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের ওপর ‘খাঁড়ার ঘা’ বসিয়ে দেন। সরকার কথা দিয়েও এদের নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে না। অর্থের নির্দয় অন্বেষণ, খুনখারাবি, ঘুষ-দুর্নীতি সবকিছু মিলে জাতীয় জীবনে কেবলই দেখা দেয় দুর্যোগের ঘনঘটা। সুযোগ-সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও প্রাকৃতিক দুর্যোগে দুর্গতদের তথা জীবনযুদ্ধে পরাজিত জনগোষ্ঠীর ভাগোন্নয়নে আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্র, সরকার এবং অন্যদের ভূমিকা বরাবরই আশাব্যঞ্জক হয়ে ওঠে না। অথচ মহান আল্লাহ এসব বিষয়ে নানাভাবে আমাদের সতর্ক করেছেন।
বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অপঘাত, অশান্তি, যুদ্ধবিগ্রহ ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে। পাশাপাশি মানুষ প্রকৃতির বিরুদ্ধাচরণ করে ডেকে আনছে সর্বনাশ। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে যে বিশেষ সুযোগ দিয়েছেন মহান আল্লাহপাক তার সদ্ব্যবহার করা বান্দা হিসেবে আমাদের অপরিহার্য দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। পরিশেষে আমাদের সবার সম্মিলিত আরজ, ভাগ্য-বণ্টনের এই বরকতময় রজনীর উছিলায় হলেও আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন