মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

উপজেলা নির্বাচনের বার্তা


উপজেলা নির্বাচন নিয়ে এখন নানামুখী বিশ্লেষণ চলছে। সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে ক্ষমতাসীন দল বেশির ভাগ উপজেলায় পরাজিত হয়েছে এমন কথা এখন গণমাধ্যমে জোর দিয়ে বলা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাও এমন দাবি করেছেন। অথচ এত দিন আমরা শুনতাম ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর বিএনপি সাংগঠনিকভাবে তছনছ হয়ে গেছে। দলটি আর মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারবে না। সহিংসতার রাজনীতি নাকি তাদের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। এর ফলে আওয়ামী লীগ বিপুল শক্তি নিয়ে তাদের অবস্থান সংহত করছে। তাহলে উপজেলা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের ভোটের ফলাফল এমন হলো কেন? শুধুই সাংগঠনিক দুর্বলতা। জনগণের ইচ্ছা বা ভোটের কি কোনো প্রভাব ছিল না? বলা হচ্ছে অনেক উপজেলায় আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকায় তারা পরাজিত হয়েছে। কিন্তু বিএনপিরও তো সমসংখ্যক উপজেলায় একাধিক প্রার্থী ছিল। এমনকি জোটের শরিক জামায়াতের সাথেও বিএনপি প্রার্থীদের ভোটের লড়াই হয়েছে। এতে তো আওয়ামী লীগের সুবিধা পাওয়ার কথা। তারপরও আওয়ামী লীগ এতটা খারাপ ফলাফল করল কেন? এবার ৯৭টি উপজেলার ২৫টিতে বিএনপি ও ২৮টিতে জামায়াত একক প্রার্থী দিয়েছিল। বিএনপির ২৫টির মধ্যে জামায়াত পাঁচটিতে আবার জামায়াতের ২৮টির মধ্যে ২৩টি আসনে বিএনপিও প্রার্থীও দিয়েছিল। বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছে মাত্র ৩৪টি উপজেলায়। বিএনপি ৪৪ আর জামায়াত ১২ উপজেলায়। আবার ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ ২৪ ও জামায়াত ২৩। অবস্থান প্রায় সমান।
এবারের নির্বাচনের লক্ষণীয় দিক হলো আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক অপরাপর রাজনৈতিক দলগুলোর শূন্য অবস্থান। গৃহপালিত বিরোধী দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া জাতীয় পার্টি মাত্র একটি উপজেলায় বিজয়ী হয়েছে। বৃহত্তর রংপুরকেন্দ্রিক হিসেবে দলটি অনেক আগেই আঞ্চলিক দলে পরিণত হয়েছে। এবার সে অবস্থানও হারাতে বসেছে। উত্তরাঞ্চলে জামায়াত যদি তাদের অবস্থান আরো সংহত করতে পারে তাহলে এ অঞ্চলে জাতীয় পার্টির রাজনীতি বিলীন হয়ে যাবে। প্রথম দফার উপজেলা নির্বাচনে এর ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান তিনজনই নির্বাচিত হয়েছে জামায়াত থেকে। বৃহত্তর রংপুরের এই এলাকায় বিএনপি আগে থেকেই সাংগঠনিকভাবে দুর্বল। তা সত্ত্বেও এসব উপজেলায় জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ ভালো ফলাফল করতে পারেনি। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা পীরগঞ্জে বিএনপি প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে।
বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারলে জাতীয় নির্বাচনের ফল কেমন হতো প্রথম দফার উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল তার আভাস মাত্র। উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী সমর্থকদের ফলাফল যে এমন হতে পারে আওয়ামী লীগ নেতারা একেবারেই অনুধাবন করতে পারেননি তা নয়। নির্বাচনের পর কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, ‘...ভালো-মন্দ যাহাই আসুক, সত্যেরে লও সহজে।নির্বাচনে কমপক্ষে ১৬ আসনে নানা ধরনের ম্যানিপুলেশন হয়েছে। ভোটকেন্দ্র দখল, জালভোট প্রদান এমনকি পুলিশ কর্মকর্তা ব্যালট পেপার নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে সিল মেরে ব্যালটবাক্স ভরানোর ঘটনাও ঘটেছে। অনিয়মের অভিযোগ এনে ১০টি উপজেলায় বিএনপির সমর্থিত প্রার্থীরা নির্বাচন বর্জন করেছিল। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপজেলাগুলোতে এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটছে। কারচুপি ও ভোটকেন্দ্র দখলের এসব ঘটনা না ঘটলে বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যানের সংখ্যা আরো বাড়ত। এসব উপজেলায় সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা যে হেরে যেত তা তারা জানতেন।
নির্বাচনের ফলাফলে আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশি হতাশ হয়েছে নির্মূলের রাজনীতিতে ইন্ধনদাতা বুদ্ধিজীবীকুল আর ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক মিডিয়া। বিরোধী দলের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনের আন্দোলনকে এসব মিডিয়া যেভাবে সহিংসতা আর সন্ত্রাস বলে প্রচারণা চালিয়েছিল তাদের হয়তো ধারণা হয়েছিল এর মাধ্যমে বিএনপি আর জামায়াতকে রাজনীতির মাঠ থেকে তারা নির্মূল করতে পেরেছে। এদের কেউ কেউ জামায়াতের সাথে বিএনপিকেও নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছিল। উপজেলা নির্বাচনের ফলাফলে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে সরকারের পক্ষ নিয়ে বিরোধী দলের বিপক্ষে যে প্রপাগান্ডা চালানো হয়েছে তা সাধারণ মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন। আসলে এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ে বড় পরাজয় হয়েছে এসব মিডিয়ার। যারা নিপীড়নমূলক শাসনকে নানাভাবে সমর্থন দিয়ে আসছে।
স্বাধীন ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যমের বড় ভূমিকা হচ্ছে রাষ্ট্রযন্ত্রের অন্যায় আচরণ ও ভুলত্রুটির সমালোচনা করা; যাতে রাষ্ট্র নাগরিকদের প্রতি মানবিক আচরণ করে ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের গণমাধ্যম প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, যৌথবাহিনীর অভিযানের নামে মানুষের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন, ঘড়বাড়ি ভাঙচুর ও জ্বালিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে ইন্ধন জুগিয়েছে। গণমাধ্যমের তথাকথিত সংবাদ ও টকশোর নামে উসকানিমূলক বক্তব্য, সরকারের অন্যায় আচরণ ও নাগরিক অধিকার হরণের প্রচেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করেছে। এসব গণমাধ্যমের এজেন্ডা মানুষ সহজেই ধরে ফেলেছে।
নির্বাচনে জামায়াতের ফলাফল নিয়ে এসব গণমাধ্যমের বিস্ময়ের সীমা নেই। এমনকি নির্বাচনের দিন টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর স্ক্রিনে  ফলাফল দেখানো হয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের প্রাপ্ত সংখ্যা, বিএনপি সমর্থকদের প্রাপ্ত সংখ্যা এরপর অন্যান্য। জামায়াত চলে গেছে অন্যানের ঘরে। মনে হচ্ছে জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, স্বতস্ত্রÑ এসব মিলে অন্যান্য আর কি! জামায়াতের নাম নেয়া যাবে না। এসব গণমাধ্যমের কাছে একটি প্রশ্ন তোলা যেতে পারে বিএনপির মিত্র জামায়াত এমনকি হেফাজত সমর্থিত প্রার্থীরা নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে, কিন্তু জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি বা সিপিবির একজন প্রার্থীও বিজয়ী হতে পারেনি কেন? এসব দলের নেতারা জামায়াত নিষিদ্ধ তো বটেই বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার হুমকি পর্যন্ত দিয়ে আসছেন। টেলিভিশনের পর্দায় রাজনীতি নিয়ে তাদের কত ধরনের উপদেশ-নির্দেশ মানুষকে গলাধঃকরণ করতে হয়। তাদের কথা শুনলে মনে হবে ভোট দেয়ার আগে জনগণ তাদের কথা শুনে ভোট দিতে যাচ্ছেন। কিন্তু জনগণ কেন তাদের বা তাদের দলের প্রার্থীদের নির্বাচিত করেন না? এ ব্যাপারে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো অন্তত তাদের প্রশ্ন করতে পারে কেন আপনারা নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারেন না?
উপজেলা নির্বাচনে জামায়াতের এই ফল মোটেও বিস্ময়কর নয়। এসব টেলিভিশন চ্যানেলে বসে জামায়াতকে যতই জঙ্গি বলা হোক না কেন, গ্রামের মানুষের সাথে জামায়াতের নেতাদের প্রতিনিয়ত দেখা হচ্ছে। তাদের সাথে সামাজিক ও পারিবারিক সম্পর্ক আছে। সমাজে তাদের অবস্থান ও গ্রহণযোগ্যতা আছে। গণমাধ্যমে প্রচারিত জঙ্গি তত্ত্বের সাথে যখন বাস্তবের কোনো মিল থাকে না তারা এই টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে ক্ষমতাসীনদের প্রচারযন্ত্র ছাড়া আর কিছু ভাবেন না। ফলে এসব প্রচারণা ব্যর্থ হয়ে যায়।
এবারই প্রথম উপজেলা নির্বাচনে জামায়াত সমর্থিতরা বিজয়ী হয়েছে এমন নয়। ২০০৯ সালে প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে জামায়াত ৭২টি উপজেলায় প্রার্থী দিয়ে ২২ জন নির্বাচিত হয়েছিল। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছিলেন ৮৩টি উপজেলায়। সে সময় জামায়াতের ১৬ জন নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ১১ জন নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারো প্রথম দফায় ৯ জন নারী ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। নারীর ক্ষমতায়ন ও রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ নিয়ে জামায়াতের বিরুদ্ধে নানা ধরনের প্রচারণা আছে। প্রকাশ্য রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ আরো বাড়াতে না পারলে জামায়াতের ব্যাপারে এই দৃষ্টিভঙ্গিও খুব বেশি পরিবর্তন হবে না।
কিন্তু এবার প্রথম দফার নির্বাচনে ৩০টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দিয়ে ১২টিতে বিজয় নিশ্চয় বড় অর্জন। এর অর্থ হচ্ছে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে জামায়াতের সাথে সাধারণ মানুষের নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। সরকারবিরোধী আন্দোলনে তাদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতনের কারণে সাধারণ মানুষের সহানুভূতি পেয়েছে। এই প্রথম দলটিকে সরকারবিরোধী আন্দোলন বড় ধরনের আত্মত্যাগ করতে হয়েছে। প্রবলভাবে রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জনগণের কাছাকাছি না যেতে পারলে দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা যায় না। জামায়াত এই দিকটি হয়তো কিছুটা হলেও অনুধাবন করতে পেরেছে। লক্ষ করার মতো বিষয় হলোÑ যে এলাকাগুলোতে জামায়াতের লোকজন বেশি হতাহত হয়েছে সেখানে তারা বেশি নির্বাচিত হয়েছে। অর্থাৎ এক ধরনের রাজনৈতিক আত্মত্যাগের সুফল তারা পেয়েছে। এসব এলাকায় হয়তো নতুন নেতৃত্বও বেরিয়ে এসেছে। নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী যত ভোটে বিজয়ী হয়েছেন অনেক স্থানে জামায়াত সমর্থিত ভাইস চেয়ারম্যান বেশি ভোট পেয়েছেন। যেমন উল্লাপাড়ায় স্থগিত হওয়া নির্বাচনে কারাবন্দী জামায়াত নেতা শাহজাহান আলীকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কারণ তিনি পেয়েছেন এক লাখ চার হাজার ৬৯৯ ভোট। স্থগিত হওয়া দুটি ভোটকেন্দ্রে ভোট রয়েছে প্রায় আট হাজার। জামায়াত সমর্থিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী পেয়েছেন ৭০ হাজার ৬৭২ ভোট। অর্থাৎ জামায়াত প্রার্থী পপুলার ভোটে আগেই নির্বাচিত হয়েছেন। কার্যত দমন-পীড়নের মাধ্যমে ক্ষমতাসীনেরা ক্যাডারভিত্তিক রাজনৈতিক দলটিকে প্রায় নিষিদ্ধের পর্যায়ে নিয়ে এখন জনগণের কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।
 
আওয়ামীপন্থী বুদ্ধিজীবী আর মিডিয়ার নায়কেরা বুঝতে পারছেন না দেশের রাজনীতিতে এক ধরনের গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। শহুরে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর রাষ্ট্রচিন্তা ও প্রপাগান্ডার সাথে গ্রামের মানুষ বিশেষ করে মধ্যবিত্ত শ্রেণী যে মূল্যবোধে বিশ্বাস করে তার সাথে বিস্তর ফারাক রয়েছে। গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক প্রচারণায় ইসলামপন্থী রাজনীতিকে যেভাবে ঘৃণার সাথে উপস্থাপন করা হয় গ্রামের সাধারণ মানুষ তা শুধু অবিশ্বাস করেন না গ্রামীণ মধ্যবিত্ত মনকে আহত করে। প্রকৃতপক্ষে আদর্শবিচ্যুত বামরা এখন যে উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদের নামে নির্মূলের রাজনীতি শুরু করেছেন তাতে আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। উপজেলা নির্বাচনে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। মনে রাখতে হবে এরাই আওয়ামী লীগকে একতরফা নির্বাচনে জবরদস্তির মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রাখতে বুদ্ধিবৃত্তিক সহযোগিতা দিয়েছে।
জাতীয় নির্বাচনে ভোটের অধিকার হরণ করার ফলে মানুষের মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে উপজেলা নির্বাচনে ভোট দেয়ার মাধ্যমে সে ক্ষোভের কিছুটা হয়তো অবসান হবে। অপর দিকে ক্ষমতাসীন দল আরো বেশি উপজেলায় বিজয়ী হতে নানা ধরনের কৌশল প্রয়োগ করবে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনকে নানাভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করা হতে পারে। বিশেষ করে যেসব উপজেলায় বিরোধী দলের প্রার্থীদের সাথে ভোটের ব্যবধান কম হবে। ইতোমধ্যে এর আলামত দেখা যাচ্ছে। প্রথম দফা নির্বাচনের পর বিভিন্ন স্থানে বিরোধী দল সমর্থক প্রার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা বেড়েছে। বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় নতুন করে ধরপাকড় শুরু হয়েছে। অনুমান করা যায়, দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল বেশি সংখ্যক আসনে বিজয়ী হওয়ার জন্য মরিয়া প্রচেষ্টা চালাবে। উপজেলা নির্বাচনও যদি জোরপূর্বক নিজেদের বিজয়ী করা হয় তাহলে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ শুধু বাড়বে না, আওয়ামী লীগের প্রতি সাধারণ মানুষের শেষ আস্থাটুকু নিঃশেষ হয়ে যাবে। উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল বিএনপির জন্যও কিছু বার্তা বহন করছে। শত শত মামলা, দমন-পীড়ন ও হয়রানির পরও তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা আন্দোলন টিকিয়ে রেখেছিলেন। এর ফল তারা পেয়েছেন উপজেলা নির্বাচনে। বিএনপি চেয়ারপারসন তৃণমূলের আত্মত্যাগের রাজনীতির মর্যাদা যদি দিতে না পারেন তাহলে বিএনপির রাজনীতির ওপর নেতাকর্মীদের হতাশা আরো বাড়বে।

আলফাজ আনাম


 

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads