নারীদের আমরা ধৈর্যশীল, সহনশীল ও মমতাময়ী মানুষ হিসেবে জানি। কিন্তু এ কেমন নারী! আমরা এক ছাত্রনেত্রীর কথা বলছি। পত্রিকায় মুদ্রিত খবরে বলা হয়, ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে আর সম্পৃক্ত না থাকতে চাওয়ার অপরাধে রাজধানীর গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের ছয় ছাত্রীকে হল ছাড়তে হয়েছে। কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফারজানা আক্তার সুপর্না তাদের মেরে হল থেকে বের করে দেয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সুপর্নাকে সহযোগিতা করে।
আহত ছাত্রীরা জানিয়েছে, ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে আর সম্পৃক্ত না থাকার সিদ্ধান্ত নিলে দলের সভাপতি সুপর্না তাদের মেরে হল থেকে বের করে দেয়। তারা অভিযোগ করে, গত ৪ বছর ধরে ওই নেত্রীর সাথে তারা রাজনীতি করে আসছে। এই দীর্ঘ সময় ধরে ছাত্রলীগ নেত্রী সময়ে-অসময়ে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। এমন কি কখনও কখনও তাদেরকে প্রোগ্রামের নামে আপত্তিকর জায়গাতেও নিয়ে যেত ওই ছাত্রনেত্রী। তারা বলে, আমরা এর প্রতিবাদ করলে আমাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হতো। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আর ছাত্রলীগ করবো না এমন সিদ্ধান্তে অটল হই আমরা। বিষয়টি কলেজ সভাপতি ও টিচারদের জানাই। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগের ওই নেত্রী তার বাহিনী নিয়ে লাটি ও রড দিয়ে মেরে আমাদের হল থেকে বের করে দেয়। এ সময় হলের আবাসিক শিক্ষকরা উপস্থিত থাকলেও তারা কোনো প্রতিবাদ করেননি।
যেকোনো সুস্থ মানুষের বিবেচনায় এমন ঘটনা অনাকাক্সিক্ষত ও দুঃখজনক বলে বিবেচিত হবে। ছাত্রলীগের রাজনীতি ও কার্যকলাপ সাম্প্রতিক সময়ে যে অবক্ষয়ের পথে হাঁটছে, তাতে কেউ কেউ বলতে পারেন- এ আর কি বড় ঘটনা। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাস, মাদক ব্যবসা ও হত্যাকা-ের মতো যেসব মারাত্মক অপরাধে ছাত্রলীগের একশ্রেণির নেতাকর্মী জড়িয়ে গেছে, সে তুলনায় ছয় ছাত্রীকে মেরে হল থেকে বের করে দেয়ার ঘটনা কমমাত্রার অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। কিন্তু অপরাধ তো অপরাধই। আমরা জানি, নারী- শিক্ষা সমাজ ও দেশের প্রগতি ও অগ্রগতির জন্য খুবই জরুরি বিষয়। বাবা-মায়েরাও খুবই আশা করে তাদের মেয়েদের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার জন্য পাঠিয়ে থাকেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এ কেমন শিক্ষার পরিবেশ? এক সময় ছাত্রনেতারা তো শিক্ষার অধিকার ও শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কাঁধে কাঁধ রেখে কাজ করতেন। ছাত্র নেতাদের তখন শিক্ষার অগ্রগতিতে দিশারী হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন তো একশ্রেণির ছাত্রনেতাকে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন লক্ষ্যে তৎপর থাকতে। ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থ কিংবা শিক্ষার পরিবেশ রক্ষা তাদের কাছে যেন কোনো বিষয়ই নয়। তারা বরং অর্থনৈতিক ও প্রতিপত্তি রক্ষার স্বার্থকে সবকিছুর ওপরে স্থান দিয়ে রেখেছে। এমন স্বার্থ রক্ষায় সন্ত্রাস এবং হত্যাকা-ের মতো অপরাধ করতেও তারা কুণ্ঠিত নয়। ছাত্রী নেতৃত্বও ওদের পদাঙ্কই অনুসরণ করছে। সব চাইতে পরিতাপের বিষয় হলোÑ নীতি-নৈতিকতার তন্ত্রীগুলো একে একে তারা ছিঁড়ে ফেলছে; এমন কি নারীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ ইজ্জত-আব্রুও লুটিয়ে দিতে বাধ্য করা হচ্ছে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের। এ নিয়ে কিছুদিন আগে দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় রিপোর্ট মুদ্রিত হয়েছিল। সেইসব রিপোর্ট দেশের রাজনীতি ও রাজনীতিকদের মাথা হেঁট করে দিয়েছিল। রিপোর্টে লক্ষ্য করা গেছে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে এসে যারা রাজনীতিতে জড়াতে বাধ্য হয়েছে, তাদের অনেকেই পরিণত হয়েছে ভোগের সামগ্রীতে। শুধু ছাত্রনেতা বা মুরুব্বি সংগঠনের লোকেরাই নয়, অন্য লোকজনও তথাকথিত রাজনীতির ছত্রছায়ায় ছাত্রীদের সম্ভ্রম লুণ্ঠনের সুযোগ পেত। আলোচ্য ঘটনায়ও আমরা তেমন অভিযোগ পেলাম। গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের ওই ছয় ছাত্রী প্রোগ্রামের নামে আপত্তিকর জায়গায় যেতে অসম্মতি জানিয়েছে। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। ফলে তারা মারপিটের শিকার হয়েছে এবং হল থেকে লেখাপড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে এমন ঘৃন্য পরিবেশ সৃষ্টি করাই কি ছাত্রনেতাদের কাজ? এমন ঘটনায় প্রশ্ন জাগে, ছাত্রনেতারা এমন অছাত্রসুলভ আচরণে অভ্যস্ত হলো কেমন করে? শিক্ষার আলোকিত সংস্কৃতির বদলে তারা এমন অপসংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হলো কেমন করে? তারা কি হঠাৎ করেই এমন হয়ে গেলো, নাকি তাদের মুরুব্বিরা, গুরুরা তাদের এই ঘৃন্য পথে নিয়ে এসেছে? আসলে দেশের মূল রাজনীতিতে যখন আদর্শ ও ত্যাগ-তিতিক্ষার বদলে ক্ষমতা ও ভোগদখল গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, তখন রাজনীতি তার পথ হারায়। প্রকৃত পথ হারালে রাজনীতি পড়ে যায় দুর্বৃত্তায়নের কবলে। দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি যখন শক্তিশালী হয়ে ওঠে, তখন তার সাথে জড়িত সব প্রতিষ্ঠান ও অঙ্গ সংগঠন বিকৃত হয়ে পড়ে। এই রাহুর কবল থেকে ছাত্র সংগঠনও মুক্ত থাকতে পারে না। বিষয়টি রাজনীতির গুরুরা উপলব্ধি করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই দেশ ও জনগণের মঙ্গল।
আহত ছাত্রীরা জানিয়েছে, ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে আর সম্পৃক্ত না থাকার সিদ্ধান্ত নিলে দলের সভাপতি সুপর্না তাদের মেরে হল থেকে বের করে দেয়। তারা অভিযোগ করে, গত ৪ বছর ধরে ওই নেত্রীর সাথে তারা রাজনীতি করে আসছে। এই দীর্ঘ সময় ধরে ছাত্রলীগ নেত্রী সময়ে-অসময়ে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। এমন কি কখনও কখনও তাদেরকে প্রোগ্রামের নামে আপত্তিকর জায়গাতেও নিয়ে যেত ওই ছাত্রনেত্রী। তারা বলে, আমরা এর প্রতিবাদ করলে আমাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হতো। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আর ছাত্রলীগ করবো না এমন সিদ্ধান্তে অটল হই আমরা। বিষয়টি কলেজ সভাপতি ও টিচারদের জানাই। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগের ওই নেত্রী তার বাহিনী নিয়ে লাটি ও রড দিয়ে মেরে আমাদের হল থেকে বের করে দেয়। এ সময় হলের আবাসিক শিক্ষকরা উপস্থিত থাকলেও তারা কোনো প্রতিবাদ করেননি।
যেকোনো সুস্থ মানুষের বিবেচনায় এমন ঘটনা অনাকাক্সিক্ষত ও দুঃখজনক বলে বিবেচিত হবে। ছাত্রলীগের রাজনীতি ও কার্যকলাপ সাম্প্রতিক সময়ে যে অবক্ষয়ের পথে হাঁটছে, তাতে কেউ কেউ বলতে পারেন- এ আর কি বড় ঘটনা। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাস, মাদক ব্যবসা ও হত্যাকা-ের মতো যেসব মারাত্মক অপরাধে ছাত্রলীগের একশ্রেণির নেতাকর্মী জড়িয়ে গেছে, সে তুলনায় ছয় ছাত্রীকে মেরে হল থেকে বের করে দেয়ার ঘটনা কমমাত্রার অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। কিন্তু অপরাধ তো অপরাধই। আমরা জানি, নারী- শিক্ষা সমাজ ও দেশের প্রগতি ও অগ্রগতির জন্য খুবই জরুরি বিষয়। বাবা-মায়েরাও খুবই আশা করে তাদের মেয়েদের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার জন্য পাঠিয়ে থাকেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এ কেমন শিক্ষার পরিবেশ? এক সময় ছাত্রনেতারা তো শিক্ষার অধিকার ও শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কাঁধে কাঁধ রেখে কাজ করতেন। ছাত্র নেতাদের তখন শিক্ষার অগ্রগতিতে দিশারী হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এখন তো একশ্রেণির ছাত্রনেতাকে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন লক্ষ্যে তৎপর থাকতে। ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থ কিংবা শিক্ষার পরিবেশ রক্ষা তাদের কাছে যেন কোনো বিষয়ই নয়। তারা বরং অর্থনৈতিক ও প্রতিপত্তি রক্ষার স্বার্থকে সবকিছুর ওপরে স্থান দিয়ে রেখেছে। এমন স্বার্থ রক্ষায় সন্ত্রাস এবং হত্যাকা-ের মতো অপরাধ করতেও তারা কুণ্ঠিত নয়। ছাত্রী নেতৃত্বও ওদের পদাঙ্কই অনুসরণ করছে। সব চাইতে পরিতাপের বিষয় হলোÑ নীতি-নৈতিকতার তন্ত্রীগুলো একে একে তারা ছিঁড়ে ফেলছে; এমন কি নারীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ ইজ্জত-আব্রুও লুটিয়ে দিতে বাধ্য করা হচ্ছে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের। এ নিয়ে কিছুদিন আগে দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় রিপোর্ট মুদ্রিত হয়েছিল। সেইসব রিপোর্ট দেশের রাজনীতি ও রাজনীতিকদের মাথা হেঁট করে দিয়েছিল। রিপোর্টে লক্ষ্য করা গেছে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে এসে যারা রাজনীতিতে জড়াতে বাধ্য হয়েছে, তাদের অনেকেই পরিণত হয়েছে ভোগের সামগ্রীতে। শুধু ছাত্রনেতা বা মুরুব্বি সংগঠনের লোকেরাই নয়, অন্য লোকজনও তথাকথিত রাজনীতির ছত্রছায়ায় ছাত্রীদের সম্ভ্রম লুণ্ঠনের সুযোগ পেত। আলোচ্য ঘটনায়ও আমরা তেমন অভিযোগ পেলাম। গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের ওই ছয় ছাত্রী প্রোগ্রামের নামে আপত্তিকর জায়গায় যেতে অসম্মতি জানিয়েছে। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। ফলে তারা মারপিটের শিকার হয়েছে এবং হল থেকে লেখাপড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে এমন ঘৃন্য পরিবেশ সৃষ্টি করাই কি ছাত্রনেতাদের কাজ? এমন ঘটনায় প্রশ্ন জাগে, ছাত্রনেতারা এমন অছাত্রসুলভ আচরণে অভ্যস্ত হলো কেমন করে? শিক্ষার আলোকিত সংস্কৃতির বদলে তারা এমন অপসংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হলো কেমন করে? তারা কি হঠাৎ করেই এমন হয়ে গেলো, নাকি তাদের মুরুব্বিরা, গুরুরা তাদের এই ঘৃন্য পথে নিয়ে এসেছে? আসলে দেশের মূল রাজনীতিতে যখন আদর্শ ও ত্যাগ-তিতিক্ষার বদলে ক্ষমতা ও ভোগদখল গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, তখন রাজনীতি তার পথ হারায়। প্রকৃত পথ হারালে রাজনীতি পড়ে যায় দুর্বৃত্তায়নের কবলে। দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি যখন শক্তিশালী হয়ে ওঠে, তখন তার সাথে জড়িত সব প্রতিষ্ঠান ও অঙ্গ সংগঠন বিকৃত হয়ে পড়ে। এই রাহুর কবল থেকে ছাত্র সংগঠনও মুক্ত থাকতে পারে না। বিষয়টি রাজনীতির গুরুরা উপলব্ধি করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই দেশ ও জনগণের মঙ্গল।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন