গত ১৭ সেপ্টেম্বর জনপ্রতিনিধিত্বহীন
জাতীয় সংসদে বিচারপতিদের অভিশংসন-সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধন পাস হয়েছে। তাতে সরকার
ও অদ্ভুত বিরোধী দলের ৩২৭ জন সদস্য প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এবারের জাতীয়
সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩ জনই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্যপদ অলঙ্কৃত
করেছেন। এদের কেউ কেউ নিতান্ত কৌতুকবশত মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। নির্বাচনী
এলাকায় যাননি,
প্রচার-প্রচারণা চালাননি, সারা সন্ধ্যা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়েছেন, বন্ধুদের সাথে ঠাট্টা-মশকরা করেছেন। কেউ কেউ মনোনয়নপত্র জমা
দেয়ার মজাদার ঘটনা বর্ণনা করেছেন। স্বাভাবিকভাবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে জীবন নিয়ে
ফিরতে পারবেন কি না, এমন সংশয়েও ছিলেন। অ্যাম্বুলেন্সের
সাইরেন বাজিয়ে সটান চিৎ হয়ে শুয়ে স্যালাইনের দড়ি-টরি বেঁধে গিয়ে নেমেছেন একেবারে
রিটার্নিং অফিসের সামনে। এরপর হুটপুট মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে ওই অ্যাম্বুলেন্সে করেই
সোজা ঢাকার আড্ডায় চলে এসেছেন। সকালে উঠে শোনেন, তিনি
এমপি হয়ে গেছেন। এ রকম ডজন ডজন ঘটনা ঘটেছে। এভাবেই দশম জাতীয় সংসদে এমপিরা ‘নির্বাচিত’ হয়েছেন।
এদের অনেকেরই না আছে কোনো রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড, না আছে জাতীয় সংসদে এমপিগিরি সম্পর্কে কোনো ধারণা, লেখাপড়ার মানও অতি নিচুস্তরের। জাতীয় সংসদের কিংবা জনসমাবেশে তাদের কথাবার্তার ধরনে সেটি আর অস্পষ্ট থাকেনি। কে যে কোথায় কী বলছেন, তার সত্যাসত্য নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ খুব কমই। অনেকটা গাঁজার নৌকা পাহাড় ঠেলে যাওয়ার মতো। আরো আশ্চর্যের ঘটনা, এই নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে বহু কেন্দ্রে একটিও ভোট পড়েনি। সেসব কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের পোলিং এজেন্ট ও নেতাকর্মী মিলে এক-দেড় শ’ লোক উপস্থিত থাকার কথা। কিন্তু এরা ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত থেকেও ভোট দেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি। কারণ, ওই সব নেতাকর্মী উপলব্ধি করেছিলেনÑ এ নির্বাচন একটি প্রহসন মাত্র। এখানে ভোট দেয়া-না-দেয়া সমান। এই নিয়ে দশম জাতীয় সংসদ।
সংসদে একটি আজব বিরোধী দল রয়েছে। এরা সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য এবং বিভিন্ন সুবিধা ও উচ্ছিষ্টভোগী। সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধী দলের দায়িত্ব সরকারের সমালোচনা করে সরকারকে সঠিক পথে রাখা। কিন্তু তথাকথিত বিরোধী দল জাতীয় পার্টি এখন অবলুপ্তির মুখে। সমালোচনা তো দূরের কথা, আওয়ামী লীগের নি¤œশ্রেণীর শিক্ষাবঞ্চিত নেতাদের চেয়েও জোরেশোরে এরা সরকারের সব অপকর্ম সমর্থন করে যাচ্ছে। অভিশংসন আইন পাসের ক্ষেত্রেও কিছুতেই মনে হলো না, বিরোধী দল বলে এই অনির্বাচিত সংসদে কোনো কিছু আছে। কেউ কোনো আলোচনা করলেন না। কেউ কোনো প্রশ্ন তুললেন না। কেবল হাত তুলে সমর্থন জানালেন। সংসদের অধিবেশন আগে টিভিতে লাইভ দেখতাম। এখন ফিরে তাকাতেও ইচ্ছে করে না। বিধি অনুযায়ী সম্ভবত স্পিকার শিরীন শারমিন তিনবার বলেছেন, ‘হ্যাঁ, জয়যুক্ত হয়েছে’, ‘হ্যাঁ জয়যুক্ত হয়েছে’, ‘হ্যাঁ জয়যুক্ত হয়েছে’। আর অনির্বাচিত একটি সংসদের হাতে বিচারপতিদের অভিশংসন ক্ষমতা চলে গেছে।
এই ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাত থেকে জাতীয় সংসদে নিয়ে যাওয়ার কোনো প্রয়োজনই ছিল না। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী মন্ত্রীরা ও মন্ত্রী হতে ইচ্ছুক কালো বেড়ালেরা অবিরাম ঢেঁড়া পিটাচ্ছেন, তারা ’৭২-এর সংবিধানে ফেরত গেলেন। কিন্তু সংবিধান যারা প্রণয়ন করেছিলেন, তারা পইপই করে বলেছেন যে, ১৯৭২-এ যা প্রয়োজন ছিল, ২০১৪তে তার প্রয়োজন নেই। সময় বদলেছে। আমাদের সময়ের সাথে চলতে হবে। ১৯৭২ সালের সংবিধান যদি সে রকম নাজেলকৃত গ্রন্থই হয়ে থাকে, তাহলে শেখ মুজিবুর রহমান কেন মাত্র তিন বছরে চার-চারবার এই সংবিধান সংশোধন করেছিলেন। তা করে কি তিনি মহা অপরাধ করেছিলেন? নাকি সময় ও তার ব্যক্তিগত ইচ্ছা এবং রাজনৈতিক অভিপ্রায় বাস্তবায়নের জন্য করেছিলেন? তিন বছরে চারবার সংবিধান সংশোধন করে তিনি কি তবে খুবই গর্হিত কাজ করেছিলেন? সে কথা তো বলা যাবে না। সেসব কথা বলতে মানা।
এর মধ্যে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ট্রাইব্যুনাল ‘যুদ্ধাপরাধের’ দায়ে সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। আপিল বিভাগ তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন। জামায়াতের আশা ছিল, সাঈদী নির্দোষ প্রমাণিত হবেন এবং তাকে বেকসুর খালাস দেয়া হবে। তাদের দাবি, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে সরকারপক্ষ ‘দেইল্যা রাজাকার’ বলে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছে। সাঈদী ও তার আইনজীবীরা অবিরাম বলে এসেছেন যে, তিনি সেই ‘দেইল্যা রাজাকার’ নন। এ ছাড়া সরকারপক্ষের সাক্ষী সুখরঞ্জন বালী যখন তার মত পরিবর্তন করে সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে এসেছিলেন, তখন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীর গাড়ি থেকে বালীকে সরকারের লোকেরা অপহরণ করে নিয়ে যায়। এখন সুখরঞ্জন বালী আছেন ভারতের কারাগারে।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়ায় জামায়াতের যেন খুশিতে আটখানা হওয়া উচিত ছিল। তা না হয়ে তারা হরতাল ডাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুশি হননি। তিনি বলেছেন, তবে কি জামায়াত সাঈদীর ফাঁসিই চেয়েছিল? এখানেই শেষ নয়। অনির্বাচিত সংসদের সমাপ্তি অধিবেশনে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় কাক্সিত ছিল না। তার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসিই কাক্সিত ছিল। সেটি হলেই মানুষ খুশি হতো। তবে বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষ। স্বাধীনভাবেই উচ্চ আদালত এ রায় দিয়েছেন। এখানে আমাদের বলার কিছু নেই।’ সন্দেহ নেই, সাধু বাক্য।
প্রধানমন্ত্রীর স্মরণ থাকার কথা, ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। তখন সরকার ও ভারতের মদদে শাহবাগে কিছু লোক গণজাগরণ মঞ্চ নামে এক বেলেল্লাপনার আয়োজন করে। অভিযোগ আছে, সেই মঞ্চের লোকদের মধ্যে শত শত কোটি টাকা বিতরণ করা হয়। হাজার হাজার প্যাকেট বিরানি, পানি, ভ্রাম্যমাণ টয়লেট, তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতীদের অবাধ রাতযাপন এ দেশের কৃষ্টি-সংস্কৃতি ইতিহাস-ঐতিহ্যকে ধূলিসাৎ করে দেয়। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সে দেশের নামীদামি গায়কেরা শাহবাগে এসে গান গান। তাল দেন। যেন জনগণ কিছুই বোঝেন না। বিচার নয়, এই মঞ্চের লোকদের দাবি কাদের মোল্লার শাস্তি যাবজ্জীবন হলে চলবে না। তাকে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। যাবজ্জীবন সাজার বিরুদ্ধে মূল আইনে শুধু দণ্ডিত ব্যক্তি আপিল করার ক্ষমতা রাখতেন। কিন্তু শাহবাগীদের দেখিয়ে সরকার ঝটপট সে আইনে পরিবর্তন আনল এবং বিধান করল যে, সরকারও আপিল করতে পারবে। তারপর প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিলেন, আদালত রায় দিলেই হবে না, গণদাবির প্রতি তাদের নজর দিতে হবে। কী ভয়ঙ্কর কথা! তথ্য নেই, প্রমাণ নেই, সাক্ষী নেই, শাহবাগে কিছু ছেলেপেলে মৃত্যুদণ্ডের দাবি তুলেছে, অতএব আদালতকে সে দাবি মেনে নিতে হবে। কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দিতে হবে এবং আশ্চর্য ঘটনা। উচ্চতর আদালত ২০১৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর কাদের মোল্লার আপিল শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতে কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।
কী অবাক কথাÑ শেখ হাসিনা একবার বললেন, জনগণের আকাক্সক্ষা অনুযায়ী বিচারকদের রায় হতে হবে। এখন আবার বলছেন, বিচারকেরা স্বাধীনভাবে রায় দিয়েছেন, তিনি মেনে নিলেন। এখানে হাসিকান্নার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশে এক ব্যক্তির শাসন চলছে। তিনি যখন যা বলেন, সেটাই আইন। জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।
ঘোর গণতন্ত্রবিরোধী সামরিক শাসকদের ডেকে আনা সুশীলসমাজের এক প্রভাবশালী সম্পাদক ১৯ সেপ্টেম্বর এক চমৎকার নিবন্ধ লিখেছেন। শিরোনাম : ‘নো হেড অ্যাভাব কিং’। কারো মাথা রাজার ওপরে থাকবে না। সে ক্ষেত্রে তিনি পঞ্চাশের দশকের এক মুভির কথা বলেছেন, যার নাম ‘দ্য কিং অ্যান্ড আই’। থাইল্যান্ডের এক রাজা তার সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য এক ইংরেজ গভর্নেসকে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু ওই নারী উচ্চতায় থাই রাজার চেয়ে অনেক বেশি ছিলেন। ফলে তিনি যতবার থাই রাজার সাথে দেখা করতে আসতেন, ততবার তাকে হাঁটু গেড়ে বসতে হতো, যাতে তার মাথা রাজার ওপরে না ওঠে।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন এমন যে, কারো মাথা প্রধানমন্ত্রীর ওপরে উঠতে পারবে না। সে নীতির শিকার নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস। শুধু ক্ষমতা বিবেচনায় নয়, ব্যক্তিত্ব বিবেচনায়ও না। কিন্তু গত ১৭ সেপ্টেম্বর দেশে এমন একটা আইন পাস হলো যে, কোনো প্রতিষ্ঠানও প্রধানমন্ত্রীর ওপরে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। তাদের হাঁটু গেড়ে বসতে হবে। এটি জাতীয় সংসদকে চমৎকার শক্তিশালীকরণের অংশ। তিনি বলেছেন, ১৯৯১ সালের পর থেকে এ দেশে কখনো জাতীয় সংসদ সার্বভৌম ছিল না। সেখানে সব কিছুই নিয়ন্ত্রিত হতো প্রধানমন্ত্রীদের দিয়ে। এখনো হচ্ছে। বিচারপতিদের অভিশংসন ক্ষমতা সেভাবেই প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় জাতীয় সংসদের হাতেই চলে গেল।
কিন্তু কেন এর প্রয়োজন হলো? আমরা দেখেছি, প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার বাইরে বিচার বিভাগ তেমন কিছুই করতে পারছে না। যখন নারায়ণগঞ্জে সাত খুন নিয়ে বিচার বিভাগ স্বতন্ত্র তদন্ত কমিটি গঠন করল, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তারাই যদি সব করে, তাহলে আমাদের আর কী করার আছে? বিচার বিভাগ এই হস্তক্ষেপের ফলে নাকি সেই তদন্তকাজ বিলম্বিত হচ্ছে। এরপর প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের পেছনের নায়ক বলে কথিত শামীম ওসমান ও তার পরিবারের পক্ষে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন। এরপর বিচার বিভাগের করার আর কী আছে? তার আগে ত্বকী হত্যার আসামিরা সবাই ওসমান পরিবারের সদস্য। কিন্তু সবাইকে জামিনে জেল থেকে বের করে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। যদি কেউ মনে করে এখানেও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ আছে, তবে কি তাকে দোষ দেয়া যাবে?
বিচারপতিদের অভিশংসন ক্ষমতা এই অনির্বাচিত সংসদের হাতে দেয়ার অর্থ হলো, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বাইরে তারা স্বাধীনভাবে কোনো সিদ্ধান্তই আর নিতে পারবেন না। সেখানে আদালত আর আদালত থাকবে না, ক্যাঙারু আদালতে পরিণত হবে। আর এর মাধ্যমে বাংলাদেশে এক জঙ্গি আইন প্রবর্তিত হলো।
সরকার কেবলই পেছনে ফিরতে চায়। ৪৪ বছর আগে কী হয়েছিল, তাই নিয়ে বিভিন্ন অযৌক্তিক ও আবেগময় কথা বলার চেষ্টা করছে এই সরকার। পঞ্চদশ সংশোধনীতে এরা এমন সব বিধিবিধান করেছে যে, বাংলাদেশ যত দিন টিকে থাকবে তত দিন তাদের বিধিবিধান নিয়ে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। এমন অপরিণামদর্শী চিন্তা কেউ করতে পারে এটা ভাবনারও অতীত। অথচ আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরেরা যদি রাষ্ট্র ও জনগণের প্রয়োজনে এর সংশোধনীর চিন্তা করে, তাহলে আমিও কবর থেকে উঠে তার প্রতিবাদ করতে পারব না, শেখ হাসিনাও পারবেন না। সুতরাং ভবিষ্যৎ, ভবিষ্যৎ বংশধরদের হাতেই রেখে যাওয়া ভালো।
আমাদের সংবিধানে এমন এক বিধান দুই বড় রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে লিপিবদ্ধ হয়েছে, যাতে গণতন্ত্রের বদলে স্বৈরতন্ত্র প্রাধান্য পেয়েছে। কোনো দল যদি সিদ্ধান্ত নেয় যে, কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে তারা সমর্থন করবে তাহলে সেই দলের কোনো সদস্যই এর বিরুদ্ধে কোনো রকম বক্তব্য দিতে পারবেন না, এমনকি ভোটও দিতে পারবেন না। যদি তিনি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভোট দেন তাহলে সাথে সাথে তার সংসদ সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে। গণতন্ত্রের ইতিহাসে এর চেয়ে নিকৃষ্ট উদাহরণ আর নেই। আমি আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হয়েছি, তাই বলে আমি স্বাধীনভাবে কোনো ইস্যুতে কথা বলতে পারব না? আমি আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের পক্ষে দাঁড়াতে পারব না? আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি বিশ্বাস করি, আমি বিএনপির রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। কিন্তু আমি একজন ব্যক্তিমানুষ। আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। আমি আমার কথা বলব। যদি বলি, তাহলে রাজনীতি থেকে বাদ। এমন গণতন্ত্রের ভেতরে আছি। সামনে যে আশু সুদিন অপেক্ষা করছে, এমন আশা করি না।
এদের অনেকেরই না আছে কোনো রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড, না আছে জাতীয় সংসদে এমপিগিরি সম্পর্কে কোনো ধারণা, লেখাপড়ার মানও অতি নিচুস্তরের। জাতীয় সংসদের কিংবা জনসমাবেশে তাদের কথাবার্তার ধরনে সেটি আর অস্পষ্ট থাকেনি। কে যে কোথায় কী বলছেন, তার সত্যাসত্য নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ খুব কমই। অনেকটা গাঁজার নৌকা পাহাড় ঠেলে যাওয়ার মতো। আরো আশ্চর্যের ঘটনা, এই নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে বহু কেন্দ্রে একটিও ভোট পড়েনি। সেসব কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের পোলিং এজেন্ট ও নেতাকর্মী মিলে এক-দেড় শ’ লোক উপস্থিত থাকার কথা। কিন্তু এরা ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত থেকেও ভোট দেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি। কারণ, ওই সব নেতাকর্মী উপলব্ধি করেছিলেনÑ এ নির্বাচন একটি প্রহসন মাত্র। এখানে ভোট দেয়া-না-দেয়া সমান। এই নিয়ে দশম জাতীয় সংসদ।
সংসদে একটি আজব বিরোধী দল রয়েছে। এরা সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য এবং বিভিন্ন সুবিধা ও উচ্ছিষ্টভোগী। সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধী দলের দায়িত্ব সরকারের সমালোচনা করে সরকারকে সঠিক পথে রাখা। কিন্তু তথাকথিত বিরোধী দল জাতীয় পার্টি এখন অবলুপ্তির মুখে। সমালোচনা তো দূরের কথা, আওয়ামী লীগের নি¤œশ্রেণীর শিক্ষাবঞ্চিত নেতাদের চেয়েও জোরেশোরে এরা সরকারের সব অপকর্ম সমর্থন করে যাচ্ছে। অভিশংসন আইন পাসের ক্ষেত্রেও কিছুতেই মনে হলো না, বিরোধী দল বলে এই অনির্বাচিত সংসদে কোনো কিছু আছে। কেউ কোনো আলোচনা করলেন না। কেউ কোনো প্রশ্ন তুললেন না। কেবল হাত তুলে সমর্থন জানালেন। সংসদের অধিবেশন আগে টিভিতে লাইভ দেখতাম। এখন ফিরে তাকাতেও ইচ্ছে করে না। বিধি অনুযায়ী সম্ভবত স্পিকার শিরীন শারমিন তিনবার বলেছেন, ‘হ্যাঁ, জয়যুক্ত হয়েছে’, ‘হ্যাঁ জয়যুক্ত হয়েছে’, ‘হ্যাঁ জয়যুক্ত হয়েছে’। আর অনির্বাচিত একটি সংসদের হাতে বিচারপতিদের অভিশংসন ক্ষমতা চলে গেছে।
এই ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাত থেকে জাতীয় সংসদে নিয়ে যাওয়ার কোনো প্রয়োজনই ছিল না। শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী মন্ত্রীরা ও মন্ত্রী হতে ইচ্ছুক কালো বেড়ালেরা অবিরাম ঢেঁড়া পিটাচ্ছেন, তারা ’৭২-এর সংবিধানে ফেরত গেলেন। কিন্তু সংবিধান যারা প্রণয়ন করেছিলেন, তারা পইপই করে বলেছেন যে, ১৯৭২-এ যা প্রয়োজন ছিল, ২০১৪তে তার প্রয়োজন নেই। সময় বদলেছে। আমাদের সময়ের সাথে চলতে হবে। ১৯৭২ সালের সংবিধান যদি সে রকম নাজেলকৃত গ্রন্থই হয়ে থাকে, তাহলে শেখ মুজিবুর রহমান কেন মাত্র তিন বছরে চার-চারবার এই সংবিধান সংশোধন করেছিলেন। তা করে কি তিনি মহা অপরাধ করেছিলেন? নাকি সময় ও তার ব্যক্তিগত ইচ্ছা এবং রাজনৈতিক অভিপ্রায় বাস্তবায়নের জন্য করেছিলেন? তিন বছরে চারবার সংবিধান সংশোধন করে তিনি কি তবে খুবই গর্হিত কাজ করেছিলেন? সে কথা তো বলা যাবে না। সেসব কথা বলতে মানা।
এর মধ্যে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ট্রাইব্যুনাল ‘যুদ্ধাপরাধের’ দায়ে সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। আপিল বিভাগ তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন। জামায়াতের আশা ছিল, সাঈদী নির্দোষ প্রমাণিত হবেন এবং তাকে বেকসুর খালাস দেয়া হবে। তাদের দাবি, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে সরকারপক্ষ ‘দেইল্যা রাজাকার’ বলে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছে। সাঈদী ও তার আইনজীবীরা অবিরাম বলে এসেছেন যে, তিনি সেই ‘দেইল্যা রাজাকার’ নন। এ ছাড়া সরকারপক্ষের সাক্ষী সুখরঞ্জন বালী যখন তার মত পরিবর্তন করে সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে এসেছিলেন, তখন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবীর গাড়ি থেকে বালীকে সরকারের লোকেরা অপহরণ করে নিয়ে যায়। এখন সুখরঞ্জন বালী আছেন ভারতের কারাগারে।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়ায় জামায়াতের যেন খুশিতে আটখানা হওয়া উচিত ছিল। তা না হয়ে তারা হরতাল ডাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুশি হননি। তিনি বলেছেন, তবে কি জামায়াত সাঈদীর ফাঁসিই চেয়েছিল? এখানেই শেষ নয়। অনির্বাচিত সংসদের সমাপ্তি অধিবেশনে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় কাক্সিত ছিল না। তার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসিই কাক্সিত ছিল। সেটি হলেই মানুষ খুশি হতো। তবে বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষ। স্বাধীনভাবেই উচ্চ আদালত এ রায় দিয়েছেন। এখানে আমাদের বলার কিছু নেই।’ সন্দেহ নেই, সাধু বাক্য।
প্রধানমন্ত্রীর স্মরণ থাকার কথা, ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। তখন সরকার ও ভারতের মদদে শাহবাগে কিছু লোক গণজাগরণ মঞ্চ নামে এক বেলেল্লাপনার আয়োজন করে। অভিযোগ আছে, সেই মঞ্চের লোকদের মধ্যে শত শত কোটি টাকা বিতরণ করা হয়। হাজার হাজার প্যাকেট বিরানি, পানি, ভ্রাম্যমাণ টয়লেট, তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতীদের অবাধ রাতযাপন এ দেশের কৃষ্টি-সংস্কৃতি ইতিহাস-ঐতিহ্যকে ধূলিসাৎ করে দেয়। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সে দেশের নামীদামি গায়কেরা শাহবাগে এসে গান গান। তাল দেন। যেন জনগণ কিছুই বোঝেন না। বিচার নয়, এই মঞ্চের লোকদের দাবি কাদের মোল্লার শাস্তি যাবজ্জীবন হলে চলবে না। তাকে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। যাবজ্জীবন সাজার বিরুদ্ধে মূল আইনে শুধু দণ্ডিত ব্যক্তি আপিল করার ক্ষমতা রাখতেন। কিন্তু শাহবাগীদের দেখিয়ে সরকার ঝটপট সে আইনে পরিবর্তন আনল এবং বিধান করল যে, সরকারও আপিল করতে পারবে। তারপর প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিলেন, আদালত রায় দিলেই হবে না, গণদাবির প্রতি তাদের নজর দিতে হবে। কী ভয়ঙ্কর কথা! তথ্য নেই, প্রমাণ নেই, সাক্ষী নেই, শাহবাগে কিছু ছেলেপেলে মৃত্যুদণ্ডের দাবি তুলেছে, অতএব আদালতকে সে দাবি মেনে নিতে হবে। কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দিতে হবে এবং আশ্চর্য ঘটনা। উচ্চতর আদালত ২০১৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর কাদের মোল্লার আপিল শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতে কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।
কী অবাক কথাÑ শেখ হাসিনা একবার বললেন, জনগণের আকাক্সক্ষা অনুযায়ী বিচারকদের রায় হতে হবে। এখন আবার বলছেন, বিচারকেরা স্বাধীনভাবে রায় দিয়েছেন, তিনি মেনে নিলেন। এখানে হাসিকান্নার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশে এক ব্যক্তির শাসন চলছে। তিনি যখন যা বলেন, সেটাই আইন। জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।
ঘোর গণতন্ত্রবিরোধী সামরিক শাসকদের ডেকে আনা সুশীলসমাজের এক প্রভাবশালী সম্পাদক ১৯ সেপ্টেম্বর এক চমৎকার নিবন্ধ লিখেছেন। শিরোনাম : ‘নো হেড অ্যাভাব কিং’। কারো মাথা রাজার ওপরে থাকবে না। সে ক্ষেত্রে তিনি পঞ্চাশের দশকের এক মুভির কথা বলেছেন, যার নাম ‘দ্য কিং অ্যান্ড আই’। থাইল্যান্ডের এক রাজা তার সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য এক ইংরেজ গভর্নেসকে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু ওই নারী উচ্চতায় থাই রাজার চেয়ে অনেক বেশি ছিলেন। ফলে তিনি যতবার থাই রাজার সাথে দেখা করতে আসতেন, ততবার তাকে হাঁটু গেড়ে বসতে হতো, যাতে তার মাথা রাজার ওপরে না ওঠে।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন এমন যে, কারো মাথা প্রধানমন্ত্রীর ওপরে উঠতে পারবে না। সে নীতির শিকার নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস। শুধু ক্ষমতা বিবেচনায় নয়, ব্যক্তিত্ব বিবেচনায়ও না। কিন্তু গত ১৭ সেপ্টেম্বর দেশে এমন একটা আইন পাস হলো যে, কোনো প্রতিষ্ঠানও প্রধানমন্ত্রীর ওপরে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। তাদের হাঁটু গেড়ে বসতে হবে। এটি জাতীয় সংসদকে চমৎকার শক্তিশালীকরণের অংশ। তিনি বলেছেন, ১৯৯১ সালের পর থেকে এ দেশে কখনো জাতীয় সংসদ সার্বভৌম ছিল না। সেখানে সব কিছুই নিয়ন্ত্রিত হতো প্রধানমন্ত্রীদের দিয়ে। এখনো হচ্ছে। বিচারপতিদের অভিশংসন ক্ষমতা সেভাবেই প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় জাতীয় সংসদের হাতেই চলে গেল।
কিন্তু কেন এর প্রয়োজন হলো? আমরা দেখেছি, প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার বাইরে বিচার বিভাগ তেমন কিছুই করতে পারছে না। যখন নারায়ণগঞ্জে সাত খুন নিয়ে বিচার বিভাগ স্বতন্ত্র তদন্ত কমিটি গঠন করল, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তারাই যদি সব করে, তাহলে আমাদের আর কী করার আছে? বিচার বিভাগ এই হস্তক্ষেপের ফলে নাকি সেই তদন্তকাজ বিলম্বিত হচ্ছে। এরপর প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের পেছনের নায়ক বলে কথিত শামীম ওসমান ও তার পরিবারের পক্ষে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন। এরপর বিচার বিভাগের করার আর কী আছে? তার আগে ত্বকী হত্যার আসামিরা সবাই ওসমান পরিবারের সদস্য। কিন্তু সবাইকে জামিনে জেল থেকে বের করে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। যদি কেউ মনে করে এখানেও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ আছে, তবে কি তাকে দোষ দেয়া যাবে?
বিচারপতিদের অভিশংসন ক্ষমতা এই অনির্বাচিত সংসদের হাতে দেয়ার অর্থ হলো, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বাইরে তারা স্বাধীনভাবে কোনো সিদ্ধান্তই আর নিতে পারবেন না। সেখানে আদালত আর আদালত থাকবে না, ক্যাঙারু আদালতে পরিণত হবে। আর এর মাধ্যমে বাংলাদেশে এক জঙ্গি আইন প্রবর্তিত হলো।
সরকার কেবলই পেছনে ফিরতে চায়। ৪৪ বছর আগে কী হয়েছিল, তাই নিয়ে বিভিন্ন অযৌক্তিক ও আবেগময় কথা বলার চেষ্টা করছে এই সরকার। পঞ্চদশ সংশোধনীতে এরা এমন সব বিধিবিধান করেছে যে, বাংলাদেশ যত দিন টিকে থাকবে তত দিন তাদের বিধিবিধান নিয়ে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। এমন অপরিণামদর্শী চিন্তা কেউ করতে পারে এটা ভাবনারও অতীত। অথচ আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরেরা যদি রাষ্ট্র ও জনগণের প্রয়োজনে এর সংশোধনীর চিন্তা করে, তাহলে আমিও কবর থেকে উঠে তার প্রতিবাদ করতে পারব না, শেখ হাসিনাও পারবেন না। সুতরাং ভবিষ্যৎ, ভবিষ্যৎ বংশধরদের হাতেই রেখে যাওয়া ভালো।
আমাদের সংবিধানে এমন এক বিধান দুই বড় রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে লিপিবদ্ধ হয়েছে, যাতে গণতন্ত্রের বদলে স্বৈরতন্ত্র প্রাধান্য পেয়েছে। কোনো দল যদি সিদ্ধান্ত নেয় যে, কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে তারা সমর্থন করবে তাহলে সেই দলের কোনো সদস্যই এর বিরুদ্ধে কোনো রকম বক্তব্য দিতে পারবেন না, এমনকি ভোটও দিতে পারবেন না। যদি তিনি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভোট দেন তাহলে সাথে সাথে তার সংসদ সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে। গণতন্ত্রের ইতিহাসে এর চেয়ে নিকৃষ্ট উদাহরণ আর নেই। আমি আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হয়েছি, তাই বলে আমি স্বাধীনভাবে কোনো ইস্যুতে কথা বলতে পারব না? আমি আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের পক্ষে দাঁড়াতে পারব না? আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি বিশ্বাস করি, আমি বিএনপির রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। কিন্তু আমি একজন ব্যক্তিমানুষ। আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। আমি আমার কথা বলব। যদি বলি, তাহলে রাজনীতি থেকে বাদ। এমন গণতন্ত্রের ভেতরে আছি। সামনে যে আশু সুদিন অপেক্ষা করছে, এমন আশা করি না।
ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন