বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের মহাবিজয় নিয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে সরকার গঠনের চমক হারিয়ে যেতে খুব বেশি সময় লাগেনি। এখন ক্ষমতা ছাড়ার দেড় বছর আগেই শাসক দল আওয়ামী লীগে অস্থিরতা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। দলের নেতাকর্মীরা যেভাবে অশান্ত হয়ে উঠেছে তাতে রাজনীতিকরা তো বটেই, সাধারণ মানুষও আতঙ্কিত না হয়ে পারছে না। কিছুদিন আগে খোদ প্রধানমন্ত্রীর মুখে আগামী নির্বাচনে ১৭৫টি আসনে জয়লাভের কথা দলের ভেতরে অস্থিরতা বাড়াতেই ইন্ধন জুগিয়েছে বলা যায়। গণমাধ্যমে প্রচারিত খবরে দেশজুড়ে এমন ঘটনার প্রাধান্যই প্রকৃত অবস্থা প্রমাণ করে। সরকার সমালোচক পত্রিকা শুধু নয়, সরকার সমর্থক পত্রিকাও এখন আর বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পারছে না। গতকালের আমার দেশসহ অন্যান্য পত্রিকার খবর থেকেই পরিস্থিতি আঁচ করা যায়।
নোয়াখালীতে স্থানীয় এমপি একরামুল করিম চৌধুরী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণায় তার অনুসারীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সড়ক অবরোধ, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে মাইজদী শহরে এক অরাজক অবস্থার সৃষ্টি করে। তারা যোগাযোগ ও রেলপথমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়, জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পেট্রল ঢেলে আগুনও দেয়। আগুন নেভাতে যারা এগিয়ে আসে তাদেরও আক্রমণ করে। পুলিশ নিশ্চুপ থাকায় তারা আরও অশান্ত হয়ে রাস্তায় গাড়ি ভাংচুর করে, দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে। জানা যায়, কিছুদিন আগে রাজধানীর ধানমন্ডিতে এই এমপির মেয়ের বিয়ে অনুষ্ঠানে গোলযোগের ঘটনায় স্থানীয় থানার ওসি তার কথামত না চলায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে দল থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। এর মধ্যেই তার বিরুদ্ধে সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থা ও জেলার প্রভাবশালী মন্ত্রীর দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ এই আগুনে ঘি ঢেলেছে। সর্বশেষ ওই এমপি ধানমন্ডি থানার ওসিকে গ্রেফতার ও তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধে ১০ দিন সময় দিয়ে বলেছেন, এ সময়কাল দলীয় কার্যালয় বন্ধ থাকবে এবং দাবি পূরণ না হলে তার পদত্যাগ ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। ওদিকে রংপুরের পীরগাছায় আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটির ভোটার তালিকার তদন্ত নিয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে মারা গেছেন উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক। রাজশাহীতে বাঘা-চারঘাট আসনের দলীয় এমপিকে ভয়ভীতি দেখানো ও চাঁদা দাবি করায় আড়ানী পৌরসভার মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা আক্কাস আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আর রাজধানীর সড়ক ভবনে টেন্ডার নিয়ে গোলাগুলির ঘটনায় শ্রমিক লীগের দুই নেতা র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। তারা সড়ক ও জনপথ কর্মচারী ইউনিয়নেরও প্রভাবশালী নেতা। এছাড়া বৃহস্পতিবার দুুপুরে মাদারীপুরের সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজে ভর্তি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিমের অনুসারী দু’গ্রুপের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন আহত হওয়ার খবর ছাপা হয়েছে সরকার সমর্থক পত্রিকায়। একই কাগজে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় সদ্য কারামুক্ত সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতা নাজিমউদ্দিন আলমের সংবর্ধনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ কর্মীদের বিএনপির সভাস্থলে হামলা করার খবরও প্রকাশিত হয়েছে। নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজে ভর্তির কার্যক্রম চলাকালে বহিরাগত যুবলীগ কর্মীর হাতে কলেজ শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ায় উপস্থিত লোকজন তাকে ধরে ওই শিক্ষকের পা ছুঁয়ে ক্ষমা চাওয়ানো ও ১০ বার কান ধরে ওঠবস করার ঘটনা এলাকায় আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। এসবই মাত্র দুটি জাতীয় দৈনিকে গতকাল প্রকাশিত খবর। সব পত্রিকায় প্রকাশিত খবর দিতে গেলে নির্ধারিত জায়গায় কুলাবে না।
তবে এ থেকেই পরিষ্কার বোঝা যায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বর্তমান অবস্থা কী! সরকার পরিচালনার সাড়ে তিন বছরেই ভবিষ্যতে দলের এমপি সংখ্যা কমে যাওয়ার প্রধানমন্ত্রীর স্বীকারোক্তি থেকেও বোঝা যায়, পরিস্থিতি কারও অজানা নয়। বাকি দেড় বছরে কোনো তাত্পর্যপূর্ণ উন্নতি না হলে যে মহাধস সৃষ্টি হবে তার ফলে নির্বাচনে দলটির ভূমিকা কি হবে—সেটাই এখন দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। দলের ভেতরে নেতাকর্মীদের মারমুখী অবস্থার যেটুকু প্রকাশ পাচ্ছে, তাতেই বোঝা যায় তারা কতটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দুর্নীতি, লুটপাট, দখল, দলীয়করণের পাশাপাশি বিরোধী দল ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের ওপর হামলা-মামলায় সীমাবদ্ধ থাকাও এখন আর সম্ভব হচ্ছে না। তাই নিজেদের মধ্যে কোন্দল, মারামারি-হানাহানি ঘটনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ক্ষমতা হারানোর আগে আখের গোছাতে তাদের অধৈর্যপনা এখন দলের সীমানা পেরিয়ে সমাজে উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা বৃদ্ধির কারণ হয়ে উঠেছে। ঘটনাই প্রমাণ করছে, তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হওয়ায় সরকারি ক্ষমতা ব্যবহার করে আগামী নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণ করা এখন প্রধান লক্ষ্য হয়ে উঠেছে দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। এ জন্যই সবকিছু উপেক্ষা করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার গোঁ ধরে দেশের রাজনৈতিক সঙ্কট আশঙ্কাজনক করে তুলতেও পিছপা হচ্ছেন না তারা। তবে রাজনীতিতে একগুঁয়েমির ফল যে ভালো হয় না সেটা ভুলে যাওয়া তাদের জন্য মহাবিপদ ডেকে আনতে পারে—এমন আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না।
নোয়াখালীতে স্থানীয় এমপি একরামুল করিম চৌধুরী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণায় তার অনুসারীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সড়ক অবরোধ, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে মাইজদী শহরে এক অরাজক অবস্থার সৃষ্টি করে। তারা যোগাযোগ ও রেলপথমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়, জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পেট্রল ঢেলে আগুনও দেয়। আগুন নেভাতে যারা এগিয়ে আসে তাদেরও আক্রমণ করে। পুলিশ নিশ্চুপ থাকায় তারা আরও অশান্ত হয়ে রাস্তায় গাড়ি ভাংচুর করে, দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে। জানা যায়, কিছুদিন আগে রাজধানীর ধানমন্ডিতে এই এমপির মেয়ের বিয়ে অনুষ্ঠানে গোলযোগের ঘটনায় স্থানীয় থানার ওসি তার কথামত না চলায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে দল থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। এর মধ্যেই তার বিরুদ্ধে সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থা ও জেলার প্রভাবশালী মন্ত্রীর দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ এই আগুনে ঘি ঢেলেছে। সর্বশেষ ওই এমপি ধানমন্ডি থানার ওসিকে গ্রেফতার ও তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধে ১০ দিন সময় দিয়ে বলেছেন, এ সময়কাল দলীয় কার্যালয় বন্ধ থাকবে এবং দাবি পূরণ না হলে তার পদত্যাগ ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। ওদিকে রংপুরের পীরগাছায় আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটির ভোটার তালিকার তদন্ত নিয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে মারা গেছেন উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক। রাজশাহীতে বাঘা-চারঘাট আসনের দলীয় এমপিকে ভয়ভীতি দেখানো ও চাঁদা দাবি করায় আড়ানী পৌরসভার মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা আক্কাস আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আর রাজধানীর সড়ক ভবনে টেন্ডার নিয়ে গোলাগুলির ঘটনায় শ্রমিক লীগের দুই নেতা র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। তারা সড়ক ও জনপথ কর্মচারী ইউনিয়নেরও প্রভাবশালী নেতা। এছাড়া বৃহস্পতিবার দুুপুরে মাদারীপুরের সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজে ভর্তি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিমের অনুসারী দু’গ্রুপের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন আহত হওয়ার খবর ছাপা হয়েছে সরকার সমর্থক পত্রিকায়। একই কাগজে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় সদ্য কারামুক্ত সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতা নাজিমউদ্দিন আলমের সংবর্ধনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ কর্মীদের বিএনপির সভাস্থলে হামলা করার খবরও প্রকাশিত হয়েছে। নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজে ভর্তির কার্যক্রম চলাকালে বহিরাগত যুবলীগ কর্মীর হাতে কলেজ শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ায় উপস্থিত লোকজন তাকে ধরে ওই শিক্ষকের পা ছুঁয়ে ক্ষমা চাওয়ানো ও ১০ বার কান ধরে ওঠবস করার ঘটনা এলাকায় আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। এসবই মাত্র দুটি জাতীয় দৈনিকে গতকাল প্রকাশিত খবর। সব পত্রিকায় প্রকাশিত খবর দিতে গেলে নির্ধারিত জায়গায় কুলাবে না।
তবে এ থেকেই পরিষ্কার বোঝা যায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বর্তমান অবস্থা কী! সরকার পরিচালনার সাড়ে তিন বছরেই ভবিষ্যতে দলের এমপি সংখ্যা কমে যাওয়ার প্রধানমন্ত্রীর স্বীকারোক্তি থেকেও বোঝা যায়, পরিস্থিতি কারও অজানা নয়। বাকি দেড় বছরে কোনো তাত্পর্যপূর্ণ উন্নতি না হলে যে মহাধস সৃষ্টি হবে তার ফলে নির্বাচনে দলটির ভূমিকা কি হবে—সেটাই এখন দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। দলের ভেতরে নেতাকর্মীদের মারমুখী অবস্থার যেটুকু প্রকাশ পাচ্ছে, তাতেই বোঝা যায় তারা কতটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দুর্নীতি, লুটপাট, দখল, দলীয়করণের পাশাপাশি বিরোধী দল ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের ওপর হামলা-মামলায় সীমাবদ্ধ থাকাও এখন আর সম্ভব হচ্ছে না। তাই নিজেদের মধ্যে কোন্দল, মারামারি-হানাহানি ঘটনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ক্ষমতা হারানোর আগে আখের গোছাতে তাদের অধৈর্যপনা এখন দলের সীমানা পেরিয়ে সমাজে উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা বৃদ্ধির কারণ হয়ে উঠেছে। ঘটনাই প্রমাণ করছে, তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হওয়ায় সরকারি ক্ষমতা ব্যবহার করে আগামী নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণ করা এখন প্রধান লক্ষ্য হয়ে উঠেছে দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। এ জন্যই সবকিছু উপেক্ষা করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার গোঁ ধরে দেশের রাজনৈতিক সঙ্কট আশঙ্কাজনক করে তুলতেও পিছপা হচ্ছেন না তারা। তবে রাজনীতিতে একগুঁয়েমির ফল যে ভালো হয় না সেটা ভুলে যাওয়া তাদের জন্য মহাবিপদ ডেকে আনতে পারে—এমন আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন