বৃহস্পতিবার, ১৪ জুন, ২০১২

শ্লোগান আসছেঃদু একটা......সকাল বিকেল নাস্তা করো



আবু জাফর মাহমুদঃ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমান্ডকে পূর্ব এবং পশ্চিম নামে দুইভাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্যে নতুন সেনাপ্রধান নিয়োগ হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সেনাবাহিনীকে আধুনিক করার লক্ষ্যে নাকি আগামীতে অত্যাধুনিক অস্ত্র গোলা বারুদ কিনবেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারের তহবিল ভয়ানকভাবে দূর্বল। তা ছাড়া চীন, রাশিয়া আমেরিকা- কেউই বাংলাদেশ সরকারকে আর অস্ত্র গোলা বারুদ দিচ্ছেনা। উপরন্তু নিকট এবং সূদূর অতীতের কোন নমুনা বলেনা যে, আওয়ামীলীগের বর্তমান সরকার সেনাবাহিনীর আধুনিকায়ন বা সামর্থ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেনাবাহিনীকে খণ্ডিত করছেন।বরঞ্চ নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা দাবীকরছেন, সেনাবাহিনী সংক্রান্ত সরকারের এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্তটি সেনাবাহিনী বাতিল করার প্রস্তুতির অধ্যায় মাত্র।

ভূটানের মত একটি ক্ষুদ্র চৌকিদার বাহিনী রেখে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপস্থিতি নিশ্চিত এবং নিরাপদ করা হবে বাংলাদেশে।যাতে ভারতের দাবী অনুযায়ী ৭১এর ১৬ডিসেম্বরে পাকিস্থানের কাছ হতে বাংলাদেশ হস্তান্তরের প্রতারনামূলক চুক্তি কার্যকর করা যায়। ভূটানীদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে কাজ করে ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। ভূটানিরা বৈদেশিক মুদ্রার চেহারাও ভুলে গেছে। সিকিমের গণতান্ত্রিক রাজনীতিকরা জাতীয় সংসদে ভোটাভুটির মাধ্যমে ভারতীয় ইউনিয়নের কাছে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা তুলে দিয়েছিল। সিকিমের রাজনীতিকদের এই ধরনের মহান গণতান্ত্রিক চেতনার ফলে সেনাবাহিনী পালনের খরচ হতে দেশবাসী রক্ষা পেয়েছেন। বাংলাদেশেও সরকারি বেসরকারি রাজনীতিকদের প্রবণতা সেনাবাহিনীকে দূর্বল করা। যদিও জনগণ রাষ্ট্রের নিরাপত্তার প্রশ্নে রাজনীতিকদের এই নীতির সাথে ভিন্ন মত পোষণ করেন। 
বিডিআর বাতিল করার পর সেনাবাহিনীর কমান্ড ভাঙ্গার পদক্ষেপের মাধ্যমে ইন্দিরা সরকারের সাথে ৭১এ করা আওয়ামীলীগের চুক্তি বাস্তবায়ন করতে চলেছেন শেখ মুজিবের কণ্যা শেখ হাসিনা। এতে সেনাবাহিনী এবং সাধারণ নাগরিকদের বিচলিত হতে দেখাগেলেও রাজনৈতিক নেতারা ছিলেন রহস্যময়। যাই হোক, বর্তমানে পরিস্কার হয়েছে,“মহিলা শেখ শাসন” জারি করে ভারতীয় সেনাবাহিনীর খবরদারিত্বে বাংলাদেশের এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেবার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে চলেছে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে যে ভয়াবহ পরিণতির রাস্তা নির্মাণ হবে, তাতে বাংলাদেশে আর কোন রাজনীতিক কে স্বাধীনতার কথা বলতে শোনা যাবেনা,এমনকি রাজনীতিতেও দেখবো বলে মনে হয়না। নিজেরাই নিজেদের রাজনৈতিক পরিচিতি লুকিয়ে ফেলবেন। ব্যস্ত থাকবেন পালানোয়। পরিচিত জনগণ হতে নিজেদের মুখ লুকাতে। 
দেখা যাচ্ছে যে, সেই ভয়ালভয়াবহতা যে কোন সামরিক শাসনের চেয়েও নিষ্ঠুর প্রতিশোধে মেতে উঠ্‌বে বর্তমান এবং নিকট অতীতের নিষ্ঠুরতার জবাবে। ক্ষুদ্ধ জনগণ রাগে ক্ষোভে ৭২/৭৩/৭৪ এর শ্লোগান তুলে নেবে আবার।তবে এবার আর দল বদলের জন্যে নয়, তারা পরিবর্তন চাইবেন উন্নত বিশ্বের পথের সন্ধান করতে। ভারতীয় প্রতারনা হতে মুক্ত হয়ে উন্নত রাষ্ট্রের পরিচিতি অর্জন করতে। 
“দু একটা রক্ষী ধরো, সকাল বিকেল নাস্তা করো” শ্লোগানের আদলে গর্জে উঠবে।কোরাস গাইবে গানের তালে নয়,শত্রু হননের উম্মাদনায়। গণতন্ত্র খেকো,রাজনীতি খেকো, আর্মি খেকো, স্বাধীনতা খেকো রাজনীতিকদের দৌঁড়াতে থাকবে। শ্লোগান উঠ্‌বে, “দু একটা রাজনীতিক ধরো, সকাল বিকেল নাস্তা করো”। আওয়ামী দালাল ধরো,নাস্তা করো। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা শেখ মুজিব,জিয়াদের একের পর এক হত্যা করে বাংলাদেশকে বাঁদী দাসীর রাজনৈতিক শাসনে এনেছে। বাঁদী দাসীদের মাধ্যমেই এখন রাজনীতির বাকীটাও সমূলে নির্মূল করছে রাজনৈতিক গনতান্ত্রিক ব্যবস্থার অবশিষ্টাংশ।

আমি এবছরের পর দূরের বছরের কোন স্বপ্নের কথা বলছিনে। এক/দুমাসের ভেতরের কথা আগে ভাগে বলছি।যাতে সবাই সাবধান হতে পারি। কেন না আমরা জলোচ্ছ্বাসে না মরে আবহাওয়ার সিগন্যাল বিশ্বাস করতে অভ্যাস করিনা। জলোচ্ছ্বাসের সিগন্যাল সত্যি মেনে নিতে আমাদের কষ্ট হয়।একারনে সব জলোচ্ছ্বাসেই বাংলাদেশীরা প্রাণ হারিয়েছে। রাজনৈতিক দুর্যোগ নিয়ে আমরা তামাশা করতে অভ্যস্থ। ৭১এ মনে করেছিলাম পাকিস্তানী মিলিটারি কি আমাদেরকে মারতে পারবে? বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতার রাজনীতির ক্ষমতার শক্তি মিলিটারিদের থেকে পূর্বপাকিস্তানীদের বাঁচিয়ে রাখবে। কিন্তু বাস্তব ছিলো আলাদা। রাজনীতিকরা বিপদের সময় প্রতারনা করেছিলেন। কাউকে না বলেই রাজনীতিকরা পলায়ন করেন। তারা নিজের ক্ষমতা এবং স্বার্থের জন্য নাগরিকদের জীবন বলি দেয়াকে রাজনৈতিক অধিকার বলে বিশ্বাস করেছেন।দরগায় মানত করে যেমন ছাগল,ভেড়া,গরু বলি দেয়ার রীতি আছে সমাজ জীবনে,তেমনি আমাদের রাজনীতিকরা সরল নাগরিকদের জীবন বলি দেয়ার বিনিময়ে ক্ষমতা ভোগের রাজনৈতিক পলিসি নেন। সীমান্ত রক্ষী এবং প্রতিরক্ষাবাহিনী বাতিল করার বিনিময়ে সরকারে এসে লুটপাট করার সুযোগ সন্ধান করেন প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে। 
পিলখানায় বিডি আর সদর দপ্তরে পরিকল্পিত আক্রমন করে সেনা অফিসারদের মেরে ফেলে দোষ চাপালো বিডিআর জওয়ানদের উপর। সেনা অফিসার এবং বিডিআর জওয়ানরা সীমান্তে বাংলাদেশ পাহারা দিয়ে ভারতের দখলদারিত্ব হতে বাংলাদেশ রক্ষায় সবসময়ই পরীক্ষিত। তাই ভারতীয় গুপ্ত ঘাতকরা অধিনায়কদের প্রথমে হত্যা করে হাসিনা সরকারের সহায়তায়।পরবর্তীতে ভূয়া অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দোষ হাজার হাজার বিডিআরদের চাকরিচ্যুত করা হলো ভারতীয় মিলিটারি প্রশাসকের নির্দ্দেশে।
এভাবে শেখ হাসিনারা একের পর এক যখন বাংলাদেশের নিরাপত্তার প্রতিটি খুঁটি ধ্বংশ করে চলেছেন তখন অপর রাজনীতিকরা নিয়মিত আঙ্গুল চুষে চলেছেন রাজনৈতিক ফায়দার আশায়। তারা রাষ্ট্র এবং জনগণের পক্ষে রাষ্ট্রদ্রোহী রাজনীতিকদের বিরূদ্ধে জনগণকে সফল নেতৃত্ব দেয়ায় নিজের ভূমিকা স্পষ্ট করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। বরঞ্চ ভারতীয়দের সাথে গোপন আঁতাত করেছেন ভারতীয় লুন্ঠন জায়েজ করে দেবার অঙ্গীকারে।নির্লজ্জ বেহায়াপনা করে চলেছেন শেখ হাসিনাদের চড় থাপ্পর হজম করেও। এসব রাজনীতিকদের বংশানুক্রমিক রক্তের দোষে তারা বিশ্বাস করে চলেছেন আগামীতে জাতীয় নির্বাচন হবে এবং শেখ হাসিনারা তাদের সাথে আপোষ বা সমঝোতা করবেন। যা তারা অবশ্যই বাস্তবে দেখা পাবেন না। 

সেনাবাহিনীর কমান্ড কাঠামো ভাঙ্গার পর পর বিএনপির কমপক্ষে দুইশত জন রাজনীতিক জেলে আটক হবেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।আটক বেশীর ভাগ নেতা ৫ বছরের শাস্তি ভোগ করবেন এবং নির্বাচনে প্রার্থিতায় অযোগ্য ঘোষিত হবেন। তারপরে খালেদা জিয়াকে মামলার সাজার অযুহাতে জেলখানায় আটক করা হবে। হাতে হাতকড়া পরবেন তিনি এবার। তার সাথে অসৌজন্য আচরণ করার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা আছে। বিরোধী দলীয় চীফ হুইপকে পেটানোর জন্য পুরস্কার দেয়ার চেয়ে এই পুরস্কারের মুল্য অনেক বেশী নির্ধারণ করা হয়েছে। আদালতের নৈতিকতাহীন বিচারক এবং পুলিশের দলীয় উচ্ছৃংখল অফিসার ইতিমধ্যেই প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিএনপিকে রাজনীতির ক্ষেত্রে অচল করে দিতে। ভারতীয় আদিম লক্ষ্যের সাথে হাসিনার একচ্ছত্র ক্ষমতার লোভ একাকার হওয়ায় অবিলম্বে দিল্লীর সরকার বাংলাদেশে একক আঞ্চলিক প্রভূরূপে দাবিদার হতে তাড়াহুড়ো করে চলছে। হাসিনাও নিজের শেষ মরণ-কামড় দিয়ে চ্যালেঞ্জ নিয়েছে।

উপসংহারঃ ভারতের বর্তমান সীমান্ত হতে মালাক্ষা প্রণালী পর্যন্ত আর্থিক,সাংস্কৃতিক,সামরিক এবং হিন্দুয়ানি আধ্যাত্নিক প্রভাব বলয় বিস্তারের কংগ্রেসি নেতা নেহেরু ডক্‌ট্রিন কার্যকর করবার সামরিক কৌশল অগ্রসর করে চলেছে ১৯৪৭সনে বৃটেনের উত্তরিধিকারি হবার পর হতে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন পথ অতিক্রম করার পর অবস্থান সুদৃঢ় করার কালে ভারত আভ্যন্তরীণভাবে বাংলাদেশী রাজনৈতিক পক্ষ গুলোকে ম্যানেজ করতে সক্ষম হলেও মুখোমুখী হতে হচ্ছে বিশ্ব পরাশক্তি আমেরিকার উপস্থিতি এবং চীনের বিরোধীতা।

প্রধান পরাশক্তি আমেরিকার ৭ম ও ৮ম সহ ব্যাপক সংখ্যক অত্যাধুনিক যুদ্ধ জাহাজের বহরের বঙ্গোপসাগরে আসা যাওয়ার সূচনার আভাস পেয়ে ইদানিং অস্থির দেখাচ্ছে ভারতীয় সমরবিদদের। তারই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করার পরিকল্পনা তুলে দেয়া হয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রী একে খন্দকারের হাতে।এই পরিকল্পনার কথাই অন্যভাবে পেশ করা হয়েছে “র” এর সাজানো বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে। সেনাবাহিনী আধুনিক করার ঘোষনাটি একান্তই সবাইকে বোকা বানানোর ফাঁদ।এশিয়া মহাদেশে এই প্রথম সর্বোচ্চ অপপ্রয়োগ দেখা যাবে আগামী কয়েকদিনে। 

আবু জাফর মাহমুদঃ মুক্তিযোদ্ধা এবং রাজনীতি বিশ্লেষক।নিউইয়র্কঃ জুন ১৪,২০১২। 

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads