বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০১৪

জিয়া হত্যা গণতন্ত্র হত্যা এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার উপায়


মোহাম্মদ আবদুল গফুর : সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হত্যার জন্য দায়ী কে বা কারা, সে বিষয়ে দেশে যে আলোচনা চলছে তাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন- বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে রিমান্ডে নিলে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে। তাঁর বক্তব্যে তিনি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী ও তার পুত্রকেই এ হত্যার জন্য দায়ী করতে চেয়েছেন এবং সে কারণে এ দুজনকে রিমান্ডে নিলে সত্য বেরিয়ে আসবে বলে দাবি করেছেন। বলাবাহুল্য, রিমান্ডে নিয়ে রিমান্ডকৃত ব্যক্তিদের ওপর টর্চার করে সত্য-মিথ্যা অনেক কথাই স্বীকার করানো যায় বলে বাস্তবে দেখা যায়। এমন অনেক ঘটনাও দেখা গেছে কোর্টে যাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট অভিযুক্ত তার ওপর টর্চারের কারণে এসব মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য হন বলেও জানান। 
ক্ষমতাসীন কোনো নেতানেত্রী কখনো যদি নির্জলা অসত্যও বলেন তাতে আপাতত তার কোনো ভয়ের কারণ থাকে না। কিন্তু তাতে কোনো সত্য প্রমাণের নিশ্চয়তা থাকে না। কিন্তু গনেশ যদি কোনোদিন উল্টে যায় অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে যদি জনগণের অবাধ রায়ে কোনো দিন ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয়, তখন কিন্তু তার নিরপরাধ সাজার আর উপায় থাকে না।
এতো গেল পার্থিব জীবনের কথা, যেখানে অন্যায় প্রভাব খাটিয়ে অপরাধের সাথে জড়িত থেকেও পার পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু পরকালে সে উপায় নেই। যেখানে পার্থিব জীবনের প্রভাবের কোনো মূল্য থাকবে না। যার যার কর্মফল তাকে ভোগ করতেই হবে। 
আপাতত আমরা পরকালে খোদায়ী বিচারের কথা বিবেচনায় না এনেও অপরাধ সংঘটনের সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় যদি বিবেচনায় আনি, তা হলেও কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সত্য বেরিয়ে আসে। অপরাধ বিজ্ঞানে একটা কথা আছে : অপরাধীরা সবসময়ই অপরাধের সংশ্লিষ্টতা থেকে নিজেদের মুক্ত দেখানোর চেষ্টা করে থাকে একথা যেমন সত্য, তেমনি একথাও সত্য যে তাদের নিজেদেরই অজান্তে এমন কিছু করে ফেলে যার সূত্র ধরে তাদের অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়ে যায়। 
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হন ১৯৮১ সালের ৩০ মে। এর কিছুদিন আগে শেখ হাসিনা বিদেশে তার দীর্ঘ স্বেচ্ছানির্বাসন থেকে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি যেদিন দেশে ফিরে আসেন সেদিনই বলেছিলেন দেশে অল্পদিনের মধ্যে বিরাট একটা ঘটনা ঘটবে। তার এ ভবিষ্যদ্বাণী সত্য প্রমাণিত হয়েছিল। যে ঘটনাটি ছিল দেশের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হত্যাকান্ডের ঘটনা। একটা দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের হত্যাকান্ডের চাইতে বড় ঘটনা আর কিইবা হতে পারে?
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে, এ ঘটনা সম্বন্ধে তার কাছে কোনো আগাম খবর ছিল কিনা- থাকলে তা কি সূত্রে? নইলে তিনি এমন ভবিষ্যদ্বাণী কিভাবে করতে পারলেন? এখানে আরেকটি প্রশ্নও আসে- যেদিন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হন, সেদিন তিনি সীমান্ত অতিক্রম করতে গিয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে যান- এটা কি সত্য নয়?
আমরা বলি না তিনি জিয়া হত্যার সাথে কোনোভাবে জড়িত ছিলেন। কিন্তু জিয়া হত্যার আগে তার একটা বড় ঘটনার ভবিষ্যদ্বাণী এবং জিয়া হত্যাকান্ডের দিন তার ব্যক্তিগত আচরণ থেকে এটা কারো মনে হতেই পারে, তিনি জিয়াউর রহমানের হত্যার ঘটনা সম্বন্ধে পূর্বাহ্নেই অবহিত ছিলেন।
জিয়াউর রহমান  শুধু একজন প্রেসিডেন্টই ছিলেন না। ১৯৭১ সালের সেই অভিশপ্ত ২৫ মার্চের কালরাতে যখন টিক্কা বাহিনীর বর্বর আক্রমণে দেশবাসী দিশাহারা তখন সেদিনের মেজর জিয়ার কণ্ঠে স্বাধীনতার ঘোষণা শুনেই দেশবাসী স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। একথা তাজউদ্দীন আহমেদ পর্যন্ত অম্লান বদনে স্বীকার করেছেন। সেই হিসাবে জিয়া ছিলেন স্বাধীনতার ঘোষক। শুধু তাই নয়, জেড ফোর্সের অধিনায়ক জিয়া ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার। 
এতো গেল দেশের স্বাধীনতা বা একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের সাহসী ভূমিকার কথা। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও জিয়াউর রহমানের অবদান কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। যে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পেছনে দীর্ঘদিনের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ঐতিহাসিক অবদান ছিল, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর একপর্যায়ে সেই বাংলাদেশেই সব রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করে গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরে কায়েম করা হয়েছিল একদলীয় বাকশালী শাসনব্যবস্থা।
ঊনিশশপঁচাত্তরের পট পরিবর্তনের পর দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তনের ক্ষেত্রে জিয়াউর রহমানের ছিল ঐতিহাসিক ভূমিকা। বিশেষ করে আজীবন যিনি গণতান্ত্রিক রাজনীতির জন্য সংগ্রাম করেন সেই বঙ্গবন্ধুর শাসনকালে একদলীয় বাকশালী শাসনব্যবস্থা কায়েম করা ছিল যেমন চরম হতাশাব্যঞ্জক ঘটনা তেমনি যিনি মূলত ছিলেন একজন সেনাকর্মকর্তা সেই জিয়াউর রহমানের হাত দিয়ে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ছিল দেশবাসীর জন্য এক অভাবনীয় অর্জন।
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, জিয়াউর রহমানের পুনঃপ্রতিষ্ঠিত বহুদলীয় গণতন্ত্র তার নির্মম হত্যাকান্ডের পর চালু ছিল। সেই ব্যবস্থার সুবাদে তাঁর নিহত হওয়ার পর তদানিন্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুস সাত্তার প্রথমে অস্থায়ী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। পরে নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হন এবং সেনাপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে সেনা অভ্যুত্থান মারফত ক্ষমতাচ্যুত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। 
এখানে দুঃখের সাথে উল্লেখ করতে হয় যে, প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুস সাত্তারের নির্বাচিত সরকার জেনারেল এরশাদের নেতৃত্বে পরিচালিত সেনাঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এই গণতন্ত্রবিরোধী কর্মের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করা হয়। এতে প্রমাণিত হয় আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হতে না পারলে সেনাশাসন মেনে নিতেও রাজি। ১৯৮২ থেকে শুরু করে দেশে যে একটানা ৯ বছর জেনারেল এরশাদের নেতৃত্বাধীন সরকার দেশ শাসন করে। দেশবাসীর স্মরণ থাকার কথা, দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একটা সিদ্ধান্ত ছিল যতদিন জেনারেল এরশাদের সরকার ক্ষমতাসীন থাকবে ততদিন তারা নির্বাচনে অংশ নেবে না। আওয়ালীগ নেত্রী তখন একপর্যায়ে এমনও ঘোষণা দেন যে,  যে দল এরশাদ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে তারা জাতীয় বেইমানবলে পরিচিত হবে। পরে দেখা গেল নির্বাচনে আওয়ামী লীগই অংশ নিল।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র যে শক্ত ভিত্তির গড়ে উঠতে পারছে না, তার একাধিক কারণ রয়েছে। অন্তত দুটি কারণ এ পর্যন্ত সুপ্রমাণিত। এর একটি হচ্ছে একশ্রেণীর সেনা কর্মকর্তা, যারা তাদের মূল পেশাগত দায়িত্ব দেশরক্ষার চাইতে দেশ শাসনের দিকে অতি মাত্রায় উৎসাহী। জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ থেকে জেনারেল মঈন ইউ আহমদ  প্রমুখকে আমরা এই শ্রেণীর সেনাকর্তা হিসেবে দেখতে পাই। দেশে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বাধাগ্রস্ত হওয়ার পেছনে একশ্রেণীর রাজনীতিবিদের গণতন্ত্রে অবিশ্বাসও দায়ী। তারা গণতন্ত্রে নয়, দলতন্ত্রে বিশ্বাসী। তাদের নিজেদের দল ক্ষমতায় যেতে না পারলে তারা অবলীলাক্রমে অসাংবিধানিক শক্তির ক্ষমতা দখলের প্রতি সমর্থন দিতে রাজি। নির্বাচনের মাধ্যমে তারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ক্ষমতায় দেখতে মোটেই প্রস্তুত নয়।
রাজনীতিকদের এই সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির সুযোগেই একপর্যায়ে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক নেত্রীকে রাজনীতি থেকে চিরতরে নির্বাসন দিয়ে দুই প্রধান নেত্রীকে আটক করে দুই প্রধান দলের তথাকথিত সরকারপন্থীদের মাধ্যমে দেশ শাসনের চেষ্টা চালিয়েছিল অসাংবিধানিক শক্তি। দুই দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এর চরম বিরোধিতা করায় তাদের সে প্রচেষ্টা আপাতত ব্যর্থ হয়। সে সময় আটক দুই নেত্রীর একজন অসাংবিধানিক শক্তিকে আশ্বাস দেন যে  তিনি ক্ষমতায় এলে ঐ অসাংবিধানিক শক্তির সকল কাজকে বৈধতা দান করবেন। এর পর তাদের অধীনে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন হন। 
এর পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দেশে আরেকটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের অন্যতম বিএনপি তাদের দাবি স্বীকৃত না হওয়ায় এ নির্বাচন বয়কট করে। তাদের দাবি ছিল নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে, যেমনটা একাধিকবার হয়েছিল এরশাদ-পরবর্তী যুগে। আওয়ামী লীগ এ দাবি মেনে নিতে অস্বীকার করে। আওয়ামী লীগ নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দাবি অস্বীকার করে বলেন, যেভাবে অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচন হয় সেভাবে অর্থাৎ নির্বাচিত দলীয় সরকারের অধীনেই বাংলাদেশেও নির্বাচন হবে।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি কর্তৃক বর্জিত হবার ফলে ৫ জানুয়ারির এ নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হয়ে পড়ে জনগণের আগ্রহবর্জিত ভোটারবিহীন একটি নির্বাচন। এই নির্বাচনে ৩০০ আসনবিশিষ্ট জাতীয় সংসদের ১৫৩ আসনে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার নজিরবিহীন রেকর্ড সৃষ্টি হয়। অবশিষ্ট আসনগুলোতেও নির্বাচন ছিল কার্যত ভোটারবিহীন নির্বাচন। ঐ নির্বাচনকালের যেসব ছবি ঐ সময়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাতে স্পষ্ট বোঝা যায় ঐ নির্বাচনে ভোটারদের তথা জনগণের কোন আগ্রহই ছিল না। ভোটারদের অনুপস্থিতির সুযোগে সরকারি দলের সমর্থকরা ব্যালটপত্রে মহানন্দে সিল মেরে চলেছেন এমন ছবির পাশাপাশি এমন ছবিও দেখা গেছে যে, ভোটকেন্দ্রে একটি লোকও নেই। একটি কুকুর শুয়ে মহাসুখে তার দ্বিপ্রহরকালীন নিদ্রা উপভোগ করছে।
সেই ভোটারবিহীন নির্বাচন-মারফত ক্ষমতাসীন সরকার বর্তমানে দেশ চালাচ্ছে। সুতরাং দেশে গণতন্ত্রের কী অবস্থা তা সহজেই অনুমেয়। দেশে এই ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে যেমন একটি সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রয়েছে, তেমনি জাতীয় সংসদে রয়েছে একটি সংসদীয় বিরোধী দল। এই সংসদীয় বিরোধী দলের নেত্রী বেগম রওশন এরশাদ সংসদে তার উদ্বোধনী বক্তৃতায়ই সরকারের সকল কাজে সমর্থন ও  সহযোগিতা দানের আশ্বাস দিয়ে তার ইতিকর্তব্য সমাধা করেছেন। আর তার স্বামী সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী  কর্তৃক নিযুক্ত হয়েছেন বিশেষ দূত। ফলে তারা সরকারি দল না বিরোধী দল তা বুঝাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
আমরা অনেকেই বলেছি, রাজনীতিবিদ হয়েও যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস না করেন, বিশ্বাস করেন দলতন্ত্রে, দেশে গণতন্ত্র সফল না হওয়ার জন্য তারাই মূলত দায়ী। তারা নিজেদের ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থে অসাংবিধানিক শক্তির সঙ্গে আঁতাত করতে অভ্যস্ত বলেই দেশে গণতন্ত্রের ভিত্তি শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারছে না। গণতন্ত্রকে বিকশিত করে তুলতে গণতন্ত্রের মর্মবাণীকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। আর তা করতে জনগণের অবাধ রায়ের ভিত্তিতে দেশ শাসনের ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে হবে। দেশের জনগণের অবাধ রায় যাচাই করার পূর্বশর্ত হচ্ছে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ কর্তৃপক্ষের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। 
নিরপেক্ষ কর্তৃপক্ষের অধীনে জাতীয় নির্বাচনকে গুরুত্ব না দিয়ে যেনতেন প্রকারে নির্বাচন দিয়ে যদি প্রচার করা হয় যে, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা হবে চরম আত্ম-প্রবঞ্চনার শামিল। বিগত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ছিল সে ধরনের একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এমন ধরনের ঘটনার দ্বারা দেশকে শুধু পেছনের দিকেই ঠেলে দেয়া হয়নি, গণতন্ত্র নিয়েও করা হয়েছে দুঃখজনক প্রহসন। যদি শাসক দল প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্রে আদৌ বিশ্বাসী হয়ে থাকেন তাদের উচিত হবে অবিলম্বে সকল দলের গ্রহণযোগ্য একটা অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে সেই নির্বাচনে যে দল বিজয়ী হবে, সেই দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিজেদের কালিমামুক্ত করা। সকল দলের অংশগ্রহণে অবাধ জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়া ছাড়া অন্য কারো নেতৃত্বাধীন সরকার অনৈতিক বিধায় অবৈধ বিবেচিত হতে বাধ্য।


0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads