বুধবার, ১১ জুন, ২০১৪

র‌্যাব ইস্যুতে খালেদা জিয়ার অবস্থান


০১. সর্বশেষ, জমি দখলের সময় দুজন র‌্যাব সদস্য গ্রেফতার হলো। এখন সবাইকে র‌্যাব নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। আমরা যারা বেগম খালেদা জিয়ার র‌্যাব বিলুপ্তির দাবির সাথে একমত হতে পারিনি, মাথাব্যথার ওষুধ মাথাকাটা নয় বলে মন্তব্য করেছি, তাদেরও ভাবনাটির নতুন করে মূল্যায়ন করতে হচ্ছে। আমাদের জানামতে, এ পর্যন্ত খালেদা জিয়া ছাড়া কোনো বাংলাদেশী র‌্যাব-এর বিলুপ্তি দাবি করেননি। এর আগে আমরা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের দাবি জানিয়েছি। এরপর র‌্যাবকে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যবহার শুরু হলে প্রতিবাদ করেছি। এখন যখন র‌্যাব অপরাধে জড়িয়ে গেছে তখন খালেদা জিয়ার বক্তব্য শুধু যৌক্তিক নয়, সময়ের দাবিও। এ ক্ষেত্রে আমরা ভুলে থাকতে চাই না যে, এই বিশেষ বাহিনী গঠনের ব্যাপারে তিনিই উদ্যোগী ছিলেন। বিশেষ বাহিনীর সব সদস্য অপরাধী হয় না। কিন্তু বিশেষ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নিয়ন্ত্রকের মাধ্যমে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করা সম্ভব। তাই সবাই দোষী না হলেও দায় নিতে হয় পুরো বাহিনীকে। এ কারণেই বিশেষ বাহিনীর বিলুপ্তি দাবি যুক্তিসঙ্গত।

বাস্তবে এলিট ফোর্সের নামে সরকারি-বেসরকারি বিশেষ বাহিনীর অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। র‌্যাব আমাদের যে বাস্তবতার মুখোমুখি করেছে, তেমনি রক্ষীবাহিনীও মানুষকে আতঙ্কিত করে তুলেছিল। জাসদের গণবাহিনীর পরিচয় ও পরিণতি দুটোই খারাপ দৃষ্টান্ত ডেকে এনেছিল। সিরাজ শিকদারের দেশপ্রেম, সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী ভূমিকা নন্দিত হওয়ার মতো; কিন্তু সর্বহারার নামে গলাকাটার রাজনীতির অভিজ্ঞতাও ব্যথাতুর। নকশাল ও মাওবাদী জঙ্গিপনার শেষটাও ভালো নয়। লাল বাহিনীর একজন খুদে সদস্য হিসেবে লাল কোর্তা পরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুকে গার্ড অব অনার দেয়ার মিছিলে শরিক ছিলাম। ডেমরার শ্রমিক এলাকা থেকে আমরা এসেছিলাম ট্রাকে চড়ে। টাকার জোগান দিয়েছিল লতিফ বাওয়ানী ও করিম জুটমিল কর্তৃপক্ষ। পাটকল লাটে ওঠার সেই দৃশ্য নিজের চোখে দেখা। আদালতে একসাথে বোমা ফাটিয়ে জঙ্গিপনার যে মহড়া দেখেছি, সেসব অনিয়মতান্ত্রিক বাহিনীর অভিজ্ঞতা কি সুখকর ছিল! রাষ্ট্রের ও সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ফারাক যারা বোঝে না, তারা পরিবর্তন প্রত্যাশী হলেও ভালো কাজ খারাপ পদ্ধতিতে করতে আগ্রহী যা বৈধ ভাবা যায় না।

মুক্তিযোদ্ধাদের পাশ কাটিয়ে, প্রবাসী মুজিবনগর সরকারকে এড়িয়ে মুজিববাহিনী গঠন করা হয়েছিল, যদিও তারা ভারতীয় বাহিনীর বিশেষ ট্রেনিং নিয়ে মাঠপর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধে শরিক হওয়ার আগেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ একটা সফল পরিণতি পেয়েছিল। কিন্তু মুজিববাহিনী-সৃষ্ট ক্ষত ও স্নায়ুযুদ্ধ ১৫ আগস্ট ট্র্যাজেডি, বাকশাল গঠন ও চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষকে অনিবার্য করেছিল কি-না, এখনো ভেবে দেখার গরজ আছে। মুজিববাহিনী ও মুজিববাদের সাথে রাষ্ট্রযন্ত্রের একটা ঠাণ্ডা লড়াই যে ছিল তা তো অস্বীকার করা সম্ভব নয়।

পাকিস্তানিরা মুক্তিযুদ্ধ ঠেকাতে এবং তাদের ভাষায় ভারতীয় মিসক্রিয়েন্ট রুখতে বিশেষ বাহিনীর জন্ম দিয়েছিল, সেইসব বাহিনীর কর্মকাণ্ড বিজয়ীর ইতিহাস লেখার দোহাই দিয়ে আড়াল করা সম্ভব নয়। তাই বলব, রাষ্ট্রের সশস্ত্র তিন বাহিনী, সীমান্তে শক্তিশালী বিডিআর (বিজিবি নয়) ও সাহায্যকারী আনসার বাহিনী ছাড়া আর কোনো বিশেষ বাহিনীর প্রয়োজন নেই। বিশেষ বাহিনীমাত্রই রাজনীতির এজেন্ডা বাস্তবায়নের হাতিয়ার। এ হাতিয়ার রাষ্ট্র, সরকার ও জনগণের জন্য কল্যাণকর না হয়ে ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়েছে। তা ছাড়া অনেকেই মনে করেন, রক্ষীবাহিনীর সাথে নিয়মিত বাহিনীর একটি মানসিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছিল। এখনো পুলিশ-র‌্যাব সম্পর্ক নিয়ে বারবার প্রশ্ন তোলা হয়। তারপরও পুলিশ অপরিহার্য; র‌্যাব নয়। এটা ঠিক, পুলিশ আমাদের কাক্সিত চাহিদা পূরণ করছে না। বন্ধু না হয়ে পুলিশ জনহয়রানির জন্য দায়ী হচ্ছে। পুলিশ মানে ঘুষখোর, চাঁদাবাজ। প্রতিপক্ষের রাজনীতি ঠেকাতে পুলিশ ব্যবহৃত হচ্ছে রাজনৈতিক লাঠিয়াল হিসেবে এতসব অভিযোগ সামনে রেখেও পুলিশের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কারো কোনো দ্বিমত নেই। আমরা এর গুণগত পরিবর্তন চাই, সংস্কার চাই, মানোত্তীর্ণ সেবাদানকারী হিসেবে তাদের দেখতে চাই। বিশেষ বাহিনী না করে পুলিশের পেশাদারিত্ব, বেতনভাতা, প্রশিক্ষণ ও নৈতিক মানোন্নয়নে নজর দিন, তাদের রাজনৈতিক ব্যবহার বন্ধ করুন; তবেই কিছু ভালো ফল মিলবে।

অপারেশন কিন হার্টে অনেক দাগি আসামি এবং চিহ্নিত অপরাধীর পতন নিশ্চিত হয়েছে। অনেকেই তখন খুশি হয়েছেন আমরা তখনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড মেনে নিতে পারিনি। প্রতিবাদ করেছি। বলেছিলাম, আল্লাহর আইনে, ঈশ্বরের বিধানে, গডের নিয়মে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কোনো স্থান নেই। প্রচলিত আইন ও সংবিধানেও এই সুযোগ নেই। আন্তর্জাতিক রীতি-নীতিও কোনো ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও জুডিশিয়াল কিলিং অনুমোদন করে না। যারা প্রতিপক্ষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে প্রাণ হারালে খুশি হন, তাদের সাথে কখনো সহমত পোষণ করি না। কারণ যারা এটা মেনে নেন, তারাই এক সময় এর শিকার হন। বাস্তবেও তাই ঘটেছে।

২. আর কোনো তদন্ত কমিটির প্রয়োজন নেই’ এই শিরোনামে কলামটি প্রকাশিত হওয়ার পর অনেকেই ফলোআপ নিয়ে আরেকটি কলাম লেখার পরামর্শ দিয়েছেন। ওই কলামটির উদ্দেশ্য ছিল তদন্ত কমিটির নামে দৃষ্টি ফেরানো ও সময়ক্ষেপণের বিষয়টি পাঠকদের সামনে তুলে ধরা। ওই কলামে যে ধারণা উপস্থাপন করেছি, এ বিষয়ে আর কোনো নতুন কথা থাকার কথা নয়। যদি ফলোআপ করার প্রশ্ন ওঠে তাহলে ফেনীর ফুলগাজী ও নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের বিষয়টি নিয়ে সরকারের আরো কিছু নাটুকেপনার কথা বলা যায়। ফেনীর নিজাম হাজারীর সংসদ সদস্য পদ থাকা নিয়ে উচ্চ আদালত প্রশ্ন তুলেছেন। তার বিষয়টি উহ্য রেখে কি জিজ্ঞাসা করা যায় না আইন-আদালত কি নিজস্ব গতিতে চলছে, না অদৃশ্য অঙ্গুলি হেলনে সবকিছু ঠিকঠাক চলছে দেখিয়ে জনমনে ধূমায়িত ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা চলছে। আমরা যা দেখছি এবং বুঝতে পারছি, তাতে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, মূল অপরাধীকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখার সব ব্যবস্থাই পাকাপোক্ত করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ চার্জশিট ও তদন্ত কমিটির যে স্বরূপ দেখেছে, সেটার ওপর কারো ভরসা নেই, আস্থাও নেই। অতীতে কোনো তদন্ত কমিটির শেষ কেউ দেখে যেতে পারেননি। বর্তমানেও পারার কথা নয়। প্রশাসনিক ও বিভাগীয় তদন্ত কমিটি আসলেই একটা ধোঁকা। বাস্তবে তদন্ত কমিটির অর্থ ঘটনা ও দুর্ঘটনার পুরো বিষয়টি সরকার বা কর্তৃপক্ষের হাতের মুঠোয় নিয়ে যাওয়া। জনরোষ ও জনগণের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিয়ে পুরো বিষয়টি দীর্ঘ দিনের জন্য যে চাপা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়, সে বিষয়টি কি আরো ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে। এখন ছিঁচকে চোরকে দিয়ে স্বীকৃতি আদায় করে হুকুমদাতাদের যে আড়ালে নেয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে, সে ব্যাপারে কারো কি কোনো সন্দেহ আছে! ওসমানপরিবারকে রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি বক্তব্যের পর নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ভাগ্য কী দাঁড়াল তার আর কোনো নতুন ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে কি?

নারায়ণগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্তরা, রানা প্লাজা, সাগর-রুনি কিংবা বিডিআর ট্র্যাজেডির শোকাহতরা হাপিত্যেশ করে এক সময় হতাশ হয়ে নীরব হয়ে যাবেন। তাদের কান্নাকাতর অস্ফুট ধ্বনি আকাশ-বাতাস ভারী করবে, তাতে কারো মন নরম হবে না। সরকার না শোনার ভান করেই যাবে, আর কাজ করবে খুনিদের রক্ষার জন্য।

সবাই জানেন এবং দেখছেন পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত পুলিশ, প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কর্মকর্তা তদন্ত করছে। পুরো ব্যাপারটিতে এক ধরনের লুকোচুরি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। যেমন ধরুন, চিফ হুইপের বিষয়টি পত্রিকায় খবর হওয়ার কারণে আমরা অর্ধসত্য হলেও জানলাম। শত শত ভূমিদস্যু আর লুটেরার খবর আড়ালে থেকে যাচ্ছে। এক সময় দেখা যাবে, শেখ পরিবারের স্বজন বাচ্চুবেসিক ব্যাংকের লুটপাটের দায়মুক্তি পেয়ে যাবেন। তিনি নাবালক বাচ্চুহিসেবেই নিরপরাধী হয়ে যাবেন। তার অপরাধের বিষপান করে অপরাধী হয়ে গলায় রশি ঝুলবে হাভাতে কোনো নিম্নভুক কর্মকর্তার। তত দিনে বেসিক ব্যাংক ফোকলা হয়ে যাবে। একই ঘটনা ঘটবে ফিরোজের বেলায়ও। অর্থমন্ত্রী যখন বলেন, এই ঋণ আদায় হওয়ার সম্ভাবনা কম, তখন ব্যাংকটির ভাগ্য নিয়ে আশাবাদী হওয়ার কোনো কারণ নেই। সাংবাদিক সমাজের এত দাবি দাওয়ার পরও সাগর-রুনির হত্যাকারী আড়ালেই থাকল। তেমনি আড়ালে থেকে যাবে বাংলাদেশজুড়ে যৌথ বাহিনীর নামে যত সব বাড়াবাড়ি হয়েছে যত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তার কোনো জবাব খুঁজে পাবেন না। যেকোনো অপরাধ প্রশাসন আড়াল করার চেষ্টা করলে, সরকার তাতে পৃষ্ঠপোষকতা দিলে কার সাধ্যি আছে সেখানে নাক গলায়।

তদন্ত ও চার্জশিট নিয়ে সরকার খেলছে। এই খেলার খেলারাম সেজে বসে আছে পুলিশ, র‌্যাবসহ সরকারের সাজানো প্রশাসনের নীতি-নৈতিকতাহীন একদল মানুষ। এরা এতটাই অন্ধ যে, এদের বিবেক কাজ করে না, অনুভূতি ভোঁতা। এরা সরকারের গোলাম সেজে বসে আছে। অথচ প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা হিসেবে এদের ভূমিকা হতে পারত নীতিনিষ্ঠ, আইনসম্মত ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষের আত্মমর্যাদাবোধের উপমা।

আমাদের বিচার বিভাগও আলাদা মুডে আছে। মামলার জট ঠেলে এরা এগোবেন সেই সাধ্য কম। তার ওপর যে দেশের আইনমন্ত্রী আগাম বিচারের রায় জানান, ফাঁসির সময়ক্ষণ বলে দেন, বিচার চলবে কি চলবে না তা জানিয়ে দেন সে দেশে বিচার বিভাগকে বিচারের মুখোমুখি করে কী লাভ! বিচারপতিদের হুমকি দিয়ে যে দেশের নির্বাহী প্রধান পার পেয়ে যান, সে দেশে মাহমুদুর রহমানরা জেলের ভাত খাবেন না তো কি জাতি উদ্ধার করবেন। সম্মানিত নাগরিকেরা সম্মান হারানোর বিকল্প পথ কিভাবে খুঁজে পাবেন!

সৈয়দ আশরাফ আরেকটি ১৫ আগস্টের আওয়াজ তুললেন কেন? সেনাবাহিনীর ভাবমর্যাদা নিয়েইবা তার এত উৎকণ্ঠা কিসের। তার ব্যাপারে সরকারের হাইব্রিডমুখপাত্ররা এত নীরব কেন। সরকার তাজউদ্দীনের মেয়ের বই নিয়েও মুখ খোলে না, যত দোষ তারেক রহমানের। তারেক রহমানকে সত্যটা বুঝিয়ে দেয়ার কিছু থাকলে তাই বলুন. বেয়াদববলে নিজেরা আদববান হবেন কিভাবে!

উপসর্গ হলেও খুন, গুম, অপহরণ, দুঃশাসন, অস্বস্তি, জননিরাপত্তার অভাব সব কিছুই রাজনৈতিক সঙ্কট থেকে জন্ম নেয়। সরকারের জবাবদিহিতা শূন্যের কোঠায় পৌঁছে গেছে। তাই বলে সরকার সুখে আছে বলে মনে করার কোনো কারণ নেই। এখনি বজ্রআঁটুনি ফসকা গেরো অবস্থা। এ কারণেই আইনমন্ত্রী বিচারের ভাষায় কথা বলেন, প্রধান নির্বাহী বক্তব্য দেন অসংযত মানুষের মতো। তার সভাসদ সদস্যরা কথা বলেন স্তাবকের মতো।

আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উত্তুঙ্গ ভাবমর্যাদা নিয়ে মন্তব্য করা এখতিয়ারবহির্ভূত কাজ বলে মনে করি। কিন্তু তিনি যখন সরকারপ্রধান তখন আমাদের সব ভাবনায় তিনি প্রাসঙ্গিক। তার দৃঢ়তা নিয়ে বহুমুখী মূল্যায়ন হতে পারে। তবে তিনি যখন নিজের দৃঢ়তা প্রমাণ করতে গিয়ে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষকে কূটনৈতিক সীমাবদ্ধতার মধ্যে ফেলে দেন, তখন অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জন্ম নেয়। কাদের মোল্লার ফাঁসি বিষয়টি হয়তো আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সরকার তার নীতি অনুসারে দৃঢ়তা যেমন দেখাতে পারে, তেমনি বিশ্বসম্প্রদায় তাদের অবস্থান ও মত ব্যাখ্যা করতে পারে। তবে সেটা খোলামেলা প্রেসকে জানিয়ে দেয়া কতটা সমীচীন সে প্রশ্ন উঠতেই পারে। বান কি মুন ও জন কেরিকে তিনি প্রত্যাখ্যান করতেই পারেন সেটা প্রকাশ্যে মিডিয়াকে জানানোর প্রয়োজন হবে কেন? যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, জাপান, চীন, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসঙ্ঘ, বিশ্বব্যাংক,্ এডিবি, আইডিবি কারো কাছে মাথানত করার দায় নেই। কিন্তু প্রত্যাখ্যান করার তথ্য প্রচার করা বাংলাদেশকে উদারনৈতিক পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণের ক্ষেত্রে বন্ধুহীন করা, বাংলাদেশের কৌশলগত নানা ধরনের স্বার্থ বিসর্জন দেয়া কিংবা কোনো কূটনৈতিক বিপর্যয় সৃষ্টি করা হচ্ছে কি না, তা অবশ্যই ভাবার বিষয়। 

এই অবস্থার উত্তরণ জরুরি। সেজন্য অরাজনৈতিক সমাধান সঙ্কট বাড়াবে, রাজনৈতিক সঙ্কট-সমস্যা ও শূন্যতা রাজনীতি দিয়ে মোকাবেলা না করলে কুইনিন জ্বর সারাবে, কুইনিন সারাবার কোনো ব্যবস্থা থাকবে না। 


 মাসুদ মজুমদার

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads