গুম হওয়া ব্যক্তিদের অবিলম্বে খুঁজে বের করার জন্য বৈশ্বিক নীতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা। সময় নষ্ট না করে এখনই তা করার তাগিদ দিয়েছেন তারা। এ ক্ষেত্রে গুম হওয়া ব্যক্তির স্বজন, প্রত্যক্ষদর্শী, আইন সহায়তাকারী ও অনুসন্ধানে জড়িতদের নিরাপত্তা দিতে সব দেশের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ডে অব দ্য ভিকটিমস অব এনফোর্সড ডিজঅ্যাপেয়ারেন্স (আন্তর্জাতিক গুম দিবস) উপলক্ষে ৩০ আগস্ট এমন আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ দুটি গ্রুপ। উল্লেখ্য যে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি গুমের ঘটনা ঘটে এশিয়ায়। এ বিষয়ে জাতিসংঘে রিপোর্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের নামও রয়েছে।
যে পরিবারের সদস্যকে গুম করা হয় তারা জানেন নিষ্ঠুর ও অমানবিক এই কাজের বেদনা কত গভীর ও মর্মান্তিক। একজনের গুমের ঘটনায় একটি পরিবার অচল হয়ে পড়ে এবং তাদের জীবন থেকে শান্তি বিদায় নিয়ে আতঙ্ক ভর করে থাকে। বাংলাদেশেও আমরা দেখেছি রাজনৈতিক কারণে এবং সম্পত্তির লোভ ও ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে গুমের বহু নিষ্ঠুর ঘটনা। এদিকে গুম হওয়া ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে খসড়া চুক্তি করাসহ পদ্ধতিগতভাবে সব রকম ব্যবস্থা নিতে সরকারসমূহের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কমিটি অন এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্সেস ও দ্য ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিরেন্সেস। জেনেভা থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, গত দু’বছরে সারা বিশ্বে মোট ২৬৪টি গুমের ঘটনা নিয়ে তারা কাজ করেছেন। পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায় যে, এই বর্বরোচিত কর্মকা-ের চর্চা অনেকগুলো দেশেই চলছে। হাজার হাজার এ রকম ঘটনার মধ্যে এ সংখ্যা সামান্যই। বাকি ঘটনাগুলোর কথা প্রতিশোধ ও নিরাপত্তাভীতির কারণে রিপোর্ট করা হয়নি। গুমের এ রকম অনেক ঘটনা জাতিসংঘের কাছেও রিপোর্ট করা হয়নি।
আমরা জানি যে, কোনো সভ্য দেশে গুমের ঘটনা চলতে পারে না। তারপরও বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বহু দেশে গুমের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। জাতিসংঘ তো গুম হওয়া ব্যক্তিদের অবিলম্বে খুঁজে বের করার তাগিদ দিয়েছে, সরকারসমূহকে সহযোগিতা করারও আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আহ্বানের বিপরীত চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত পূর্বনির্ধারিত একটি অনুষ্ঠান বাতিল করে দিয়েছে জাতীয় প্রেস ক্লাব কর্তৃপক্ষ। মানবজমিনে প্রকাশিত খবরটিতে বলা হয়, ৩০ আগস্ট প্রেস ক্লাব অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা ছিল। গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার, আফাদ, এএলআরসি, এফআইডিএইচ ও অধিকার যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিল। অধিকার টিম ও ভিকটিম পরিবারগুলো জানিয়েছেন, পূর্বনির্ধারিত ওই অনুষ্ঠানে গুমের শিকার পরিবারগুলোর সাক্ষ্য ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের কথা ছিল। এ অনুষ্ঠান করার জন্য গত ১১ জুলাই প্রেস ক্লাব অডিটারিয়াম বুকিং দেয়া হয়েছিল এবং হল ভাড়াও পরিশোধ করা হয়েছিল। ২৯ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে অধিকারে ফোন করে প্রেস ক্লাবের এক কর্মচারী জানান যে, ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলামের নির্দেশে অডিটোরিয়ামের বুকিং বাতিল করা হয়েছে। এর আগে দুপুরে গুমের শিকার ব্যক্তিদের কয়েকটি পরিবারকে বিভিন্ন অজ্ঞাত স্থান থেকে ফোন করে উল্লেখিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করার জন্য ভয়ভীতি দেখানো হয়। এ ছাড়া শনিবার বিকালে সাদা পোশাকধারী লোক অধিকার অফিসের মূল গেটে এসে সংগঠনের সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খানের অবস্থান জানতে চায়। লক্ষণীয় বিষয় হলো, গুমের শিকার পরিবারগুলো তাদের মর্মবেদনার কথা দেশের মানুষ কিংবা সরকারকে জানাতে পারলো না। বাংলাদেশের মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবসটি পালন করতে পারলো না দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো। এর চাইতে দুঃখের বিষয় আর কী হতে পারে? বাংলাদেশে এমন পরিস্থিতি কেমন করে সৃষ্টি হলো? আমরা তো এ কথা জানি যে, সাংবাদিকদের ঐতিহ্যবাহী ও প্রাণপ্রিয় প্রতিষ্ঠান জাতীয় প্রেস ক্লাব সব সময় সাধারণ মানুষের পক্ষে এবং স্বাধীন মত প্রকাশের পক্ষে সাহসী ভূমিকা পালন করে এসেছে। কিন্তু এবার এমন কি হয়েছে যে গুমের শিকার পরিবারগুলোর অনুষ্ঠান বাতিল করে দিল প্রেস ক্লাব? এমন ঘটনায় জাতির সামনে মাথা হেঁট হয়ে গেছে সাংবাদিক সমাজের। অনেকে বলছেন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের বর্তমান কর্তৃপক্ষ তো প্রেস ক্লাবের সদস্যদের ভোটে বৈধভাবে নির্বাচিত কোনো কর্তৃপক্ষ নয়। তাই এমন কর্তৃপক্ষের কোনো পদক্ষেপ বা সিদ্ধান্তের দায় সাংবাদিক সমাজ নিতে পারে না। যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ দায় শুধু তাদের ওপরই বর্তাবে। দেশের নাগরিকরাও হয়তো বিষয়টি যথাযথভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন।
যে পরিবারের সদস্যকে গুম করা হয় তারা জানেন নিষ্ঠুর ও অমানবিক এই কাজের বেদনা কত গভীর ও মর্মান্তিক। একজনের গুমের ঘটনায় একটি পরিবার অচল হয়ে পড়ে এবং তাদের জীবন থেকে শান্তি বিদায় নিয়ে আতঙ্ক ভর করে থাকে। বাংলাদেশেও আমরা দেখেছি রাজনৈতিক কারণে এবং সম্পত্তির লোভ ও ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে গুমের বহু নিষ্ঠুর ঘটনা। এদিকে গুম হওয়া ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে খসড়া চুক্তি করাসহ পদ্ধতিগতভাবে সব রকম ব্যবস্থা নিতে সরকারসমূহের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কমিটি অন এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্সেস ও দ্য ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিরেন্সেস। জেনেভা থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, গত দু’বছরে সারা বিশ্বে মোট ২৬৪টি গুমের ঘটনা নিয়ে তারা কাজ করেছেন। পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায় যে, এই বর্বরোচিত কর্মকা-ের চর্চা অনেকগুলো দেশেই চলছে। হাজার হাজার এ রকম ঘটনার মধ্যে এ সংখ্যা সামান্যই। বাকি ঘটনাগুলোর কথা প্রতিশোধ ও নিরাপত্তাভীতির কারণে রিপোর্ট করা হয়নি। গুমের এ রকম অনেক ঘটনা জাতিসংঘের কাছেও রিপোর্ট করা হয়নি।
আমরা জানি যে, কোনো সভ্য দেশে গুমের ঘটনা চলতে পারে না। তারপরও বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বহু দেশে গুমের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। জাতিসংঘ তো গুম হওয়া ব্যক্তিদের অবিলম্বে খুঁজে বের করার তাগিদ দিয়েছে, সরকারসমূহকে সহযোগিতা করারও আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আহ্বানের বিপরীত চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত পূর্বনির্ধারিত একটি অনুষ্ঠান বাতিল করে দিয়েছে জাতীয় প্রেস ক্লাব কর্তৃপক্ষ। মানবজমিনে প্রকাশিত খবরটিতে বলা হয়, ৩০ আগস্ট প্রেস ক্লাব অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা ছিল। গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার, আফাদ, এএলআরসি, এফআইডিএইচ ও অধিকার যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিল। অধিকার টিম ও ভিকটিম পরিবারগুলো জানিয়েছেন, পূর্বনির্ধারিত ওই অনুষ্ঠানে গুমের শিকার পরিবারগুলোর সাক্ষ্য ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের কথা ছিল। এ অনুষ্ঠান করার জন্য গত ১১ জুলাই প্রেস ক্লাব অডিটারিয়াম বুকিং দেয়া হয়েছিল এবং হল ভাড়াও পরিশোধ করা হয়েছিল। ২৯ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে অধিকারে ফোন করে প্রেস ক্লাবের এক কর্মচারী জানান যে, ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলামের নির্দেশে অডিটোরিয়ামের বুকিং বাতিল করা হয়েছে। এর আগে দুপুরে গুমের শিকার ব্যক্তিদের কয়েকটি পরিবারকে বিভিন্ন অজ্ঞাত স্থান থেকে ফোন করে উল্লেখিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করার জন্য ভয়ভীতি দেখানো হয়। এ ছাড়া শনিবার বিকালে সাদা পোশাকধারী লোক অধিকার অফিসের মূল গেটে এসে সংগঠনের সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খানের অবস্থান জানতে চায়। লক্ষণীয় বিষয় হলো, গুমের শিকার পরিবারগুলো তাদের মর্মবেদনার কথা দেশের মানুষ কিংবা সরকারকে জানাতে পারলো না। বাংলাদেশের মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবসটি পালন করতে পারলো না দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো। এর চাইতে দুঃখের বিষয় আর কী হতে পারে? বাংলাদেশে এমন পরিস্থিতি কেমন করে সৃষ্টি হলো? আমরা তো এ কথা জানি যে, সাংবাদিকদের ঐতিহ্যবাহী ও প্রাণপ্রিয় প্রতিষ্ঠান জাতীয় প্রেস ক্লাব সব সময় সাধারণ মানুষের পক্ষে এবং স্বাধীন মত প্রকাশের পক্ষে সাহসী ভূমিকা পালন করে এসেছে। কিন্তু এবার এমন কি হয়েছে যে গুমের শিকার পরিবারগুলোর অনুষ্ঠান বাতিল করে দিল প্রেস ক্লাব? এমন ঘটনায় জাতির সামনে মাথা হেঁট হয়ে গেছে সাংবাদিক সমাজের। অনেকে বলছেন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের বর্তমান কর্তৃপক্ষ তো প্রেস ক্লাবের সদস্যদের ভোটে বৈধভাবে নির্বাচিত কোনো কর্তৃপক্ষ নয়। তাই এমন কর্তৃপক্ষের কোনো পদক্ষেপ বা সিদ্ধান্তের দায় সাংবাদিক সমাজ নিতে পারে না। যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ দায় শুধু তাদের ওপরই বর্তাবে। দেশের নাগরিকরাও হয়তো বিষয়টি যথাযথভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন