তিনদিনের সফর শেষে গত ২৫ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী ডেসমন্ড সোয়েইন বলেছেন, বাংলাদেশে যেভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলছে তা মেনে নেয়া যায় না। এ ধরনের প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করা, অপরাধে জড়িত দোষীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো এবং তাদের বিচার করা জরুরি। বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করে ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেছেন, এখানে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সুরক্ষা করা উচিত। তাই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড মেনে নেয়া যায় না। এ ধরনের অপরাধের তদন্ত ও বিচার করার দায়িত্ব সরকারের। গণমাধ্যম প্রসঙ্গে ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেছেন, গণমাধ্যমের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং নাগরিক সমাজের কাজের ক্ষেত্র নিশ্চিত করার মতো বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্রিটেন বাংলাদেশে এমন একটি সমাজ দেখতে চায়, যেখানে সক্রিয় নাগরিক সমাজ এবং গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান সরকারকে জবাবদিহিতায় আনবে। প্রতিমন্ত্রী ডেসমন্ড সোয়েইন অবশ্য সাংবাদিকদের কিছু প্রশ্ন পাশ কাটিয়ে গেছেন। বলেছেন, প্রতিটি বিষয়ে সমস্যার সমাধান বাংলাদেশকেই করতে হবে, বিদেশী হিসেবে সেগুলো বলে দেয়াটা তার কাজ নয়।
আমরা মনে করি, ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রীর মূল কথাগুলো অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ- যেখানে তিনি বলেছেন, কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড মেনে নেয়া যায় না এবং এ ধরনের প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করে বিচার করা জরুরি। লক্ষণীয় যে, দোষীদের পাশাপাশি তিনি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকলকেও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর কথা বলেছেন। এর মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ মন্ত্রী আসলে বুঝিয়েছেন, দৃশ্যত র্যাব ও পুলিশের মতো বিশেষ কোনো বাহিনীকে দায়ী মনে হলেও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আর এ সিদ্ধান্ত কেবল সরকারের দিক থেকেই আসতে পারে। সহজবোধ্য কারণে ব্রিটিশ মন্ত্রী শুধু এটুকু বলতেই বাকি রেখেছেন যে, বাস্তবে সরকারের সিদ্ধান্ত ও নির্দেশেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটানো হচ্ছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, মন্ত্রী ডেসমন্ড সোয়েইন সামান্যও বাড়িয়ে বলেননি। বস্তুত বর্তমান সরকারের আমলে গুম ও গ্রেফতারের পাশাপাশি ক্রসফায়ার ও বন্দুকযুদ্ধের মতো নানা নামের আড়ালে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে কল্পনার সকল সীমা ছাড়িয়ে গেছে। দু’একদিন পরপরই দেশের কোথাও না কোথাও হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। গুমও করা হচ্ছে অনেককে। ক’দিন পর তাদের লাশ পাওয়া যাচ্ছে এখানে-সেখানে। সম্প্রতি আবার ছাত্রলীগ ও যুবলীগেরও কয়েকজন নেতাকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে দেখা গেছে। আপত্তি ও উদ্বেগের কারণ হলো, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য পুলিশ ও র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নাম জড়িয়ে পড়েছে। কোনো কোনো ঘটনার ক্ষেত্রে এ সম্পর্কিত তথ্য-প্রমাণও পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে জনমনে শুধু ভীতি-আতঙ্কই ছড়াচ্ছে না, জীবনের নিরাপত্তার জন্য সরকারের ওপর মানুষের আস্থাও কমে যাচ্ছে। ওদিকে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন উপলক্ষে অভিযোগ করা হয়েছে, সরকারের বাহিনীগুলো তালিকা করে এবং বেছে বেছে দল দু’টির নেতা-কর্মীদের হত্যা করছে। বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোটের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও একই অভিযোগ করেছেন। গত বছরের ৫ জানুয়ারি আয়োজিত ভোটারবিহীন নির্বাচনের আগে-পরে বিভিন্ন এলাকায় মানুষের বাড়িঘরে ঢুকে হামলা ও ভয়াবহ নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে বেগম জিয়া একথা পর্যন্ত বলতে বাধ্য হয়েছিলেন, মানুষ বিশ্বাস করতে পারছে না- এরা বাংলাদেশের বাহিনী, না অন্য কোনো রাষ্ট্রের বাহিনী। কারণ বাংলাদেশের পুলিশ, র্যাব ও অন্য বাহিনী নিজ দেশের মানুষের ওপর এতটা নিষ্ঠুর নির্যাতন চালাতে পারে না। দেশের সার্বভৌমত্ব অটুট তথা অক্ষুণ্ন রয়েছে কিনা- সে প্রশ্নও তুলেছিলেন বেগম জিয়া।
বস্তুত পুলিশের তো বটেই, এলিট বাহিনী হিসেবে পরিকল্পিত র্যাবের কর্মকাণ্ড দেখেশুনেও মনে হচ্ছে যেন কয়েকদিন পরপর ক্রসফায়ার ও এনকাউন্টার ধরনের বিভিন্ন নামে বিচারবহির্ভূত হত্যা করাটাই এ বাহিনীর প্রধান কাজ হয়ে উঠেছে! গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কারণে সব মিলিয়েই অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, যখন বিরোধী দলের নেতা-কর্মী মাত্রকেই ভীতসন্ত্রস্ত থাকতে হচ্ছে। সে সত্য কথাটাই বেরিয়ে এসেছে ব্রিটিশ মন্ত্রীর মুখ থেকে। কূটনৈতিক সৌজন্য ও রীতি-নীতির কারণে তিনি সরাসরি মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকলেও আমরা মনে করি, ঘটনাপ্রবাহে সরকারের জন্য দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। কারণ প্রতিটি ঘটনায় পুলিশ ও র্যাবের অংশগ্রহণ সম্পর্কে জানা যাচ্ছে প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায়। এ সত্যও গোপন থাকছে না, সামনে র্যাব ও পুলিশকে রাখা হলেও পেছনে আসলে রয়েছে সরকার। সরকারই এ দু’টি বাহিনীকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হত্যার কাজে ব্যবহার করছে। এমন অবস্থা নিঃসন্দেহে ভীতিকর। ব্রিটিশ মন্ত্রীর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আমরাও তাই মনে করি- গণতান্ত্রিক কোনো রাষ্ট্রে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলতে দেয়া যায় না। সরকারের উচিত অবিলম্বে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া। সরকারকে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্তের এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার করে কঠোর শাস্তি দেয়ারও ব্যবস্থা করতে হবে। সব মিলিয়েই সরকারের উচিত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সুরক্ষা করা- যার পরামর্শ ব্রিটিশ মন্ত্রী দিয়ে গেছেন।
আমরা মনে করি, ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রীর মূল কথাগুলো অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ- যেখানে তিনি বলেছেন, কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড মেনে নেয়া যায় না এবং এ ধরনের প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করে বিচার করা জরুরি। লক্ষণীয় যে, দোষীদের পাশাপাশি তিনি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকলকেও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর কথা বলেছেন। এর মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ মন্ত্রী আসলে বুঝিয়েছেন, দৃশ্যত র্যাব ও পুলিশের মতো বিশেষ কোনো বাহিনীকে দায়ী মনে হলেও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আর এ সিদ্ধান্ত কেবল সরকারের দিক থেকেই আসতে পারে। সহজবোধ্য কারণে ব্রিটিশ মন্ত্রী শুধু এটুকু বলতেই বাকি রেখেছেন যে, বাস্তবে সরকারের সিদ্ধান্ত ও নির্দেশেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটানো হচ্ছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, মন্ত্রী ডেসমন্ড সোয়েইন সামান্যও বাড়িয়ে বলেননি। বস্তুত বর্তমান সরকারের আমলে গুম ও গ্রেফতারের পাশাপাশি ক্রসফায়ার ও বন্দুকযুদ্ধের মতো নানা নামের আড়ালে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে কল্পনার সকল সীমা ছাড়িয়ে গেছে। দু’একদিন পরপরই দেশের কোথাও না কোথাও হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। গুমও করা হচ্ছে অনেককে। ক’দিন পর তাদের লাশ পাওয়া যাচ্ছে এখানে-সেখানে। সম্প্রতি আবার ছাত্রলীগ ও যুবলীগেরও কয়েকজন নেতাকে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে দেখা গেছে। আপত্তি ও উদ্বেগের কারণ হলো, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য পুলিশ ও র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নাম জড়িয়ে পড়েছে। কোনো কোনো ঘটনার ক্ষেত্রে এ সম্পর্কিত তথ্য-প্রমাণও পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে জনমনে শুধু ভীতি-আতঙ্কই ছড়াচ্ছে না, জীবনের নিরাপত্তার জন্য সরকারের ওপর মানুষের আস্থাও কমে যাচ্ছে। ওদিকে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন উপলক্ষে অভিযোগ করা হয়েছে, সরকারের বাহিনীগুলো তালিকা করে এবং বেছে বেছে দল দু’টির নেতা-কর্মীদের হত্যা করছে। বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোটের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও একই অভিযোগ করেছেন। গত বছরের ৫ জানুয়ারি আয়োজিত ভোটারবিহীন নির্বাচনের আগে-পরে বিভিন্ন এলাকায় মানুষের বাড়িঘরে ঢুকে হামলা ও ভয়াবহ নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে বেগম জিয়া একথা পর্যন্ত বলতে বাধ্য হয়েছিলেন, মানুষ বিশ্বাস করতে পারছে না- এরা বাংলাদেশের বাহিনী, না অন্য কোনো রাষ্ট্রের বাহিনী। কারণ বাংলাদেশের পুলিশ, র্যাব ও অন্য বাহিনী নিজ দেশের মানুষের ওপর এতটা নিষ্ঠুর নির্যাতন চালাতে পারে না। দেশের সার্বভৌমত্ব অটুট তথা অক্ষুণ্ন রয়েছে কিনা- সে প্রশ্নও তুলেছিলেন বেগম জিয়া।
বস্তুত পুলিশের তো বটেই, এলিট বাহিনী হিসেবে পরিকল্পিত র্যাবের কর্মকাণ্ড দেখেশুনেও মনে হচ্ছে যেন কয়েকদিন পরপর ক্রসফায়ার ও এনকাউন্টার ধরনের বিভিন্ন নামে বিচারবহির্ভূত হত্যা করাটাই এ বাহিনীর প্রধান কাজ হয়ে উঠেছে! গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কারণে সব মিলিয়েই অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, যখন বিরোধী দলের নেতা-কর্মী মাত্রকেই ভীতসন্ত্রস্ত থাকতে হচ্ছে। সে সত্য কথাটাই বেরিয়ে এসেছে ব্রিটিশ মন্ত্রীর মুখ থেকে। কূটনৈতিক সৌজন্য ও রীতি-নীতির কারণে তিনি সরাসরি মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকলেও আমরা মনে করি, ঘটনাপ্রবাহে সরকারের জন্য দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। কারণ প্রতিটি ঘটনায় পুলিশ ও র্যাবের অংশগ্রহণ সম্পর্কে জানা যাচ্ছে প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায়। এ সত্যও গোপন থাকছে না, সামনে র্যাব ও পুলিশকে রাখা হলেও পেছনে আসলে রয়েছে সরকার। সরকারই এ দু’টি বাহিনীকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হত্যার কাজে ব্যবহার করছে। এমন অবস্থা নিঃসন্দেহে ভীতিকর। ব্রিটিশ মন্ত্রীর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আমরাও তাই মনে করি- গণতান্ত্রিক কোনো রাষ্ট্রে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলতে দেয়া যায় না। সরকারের উচিত অবিলম্বে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া। সরকারকে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্তের এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার করে কঠোর শাস্তি দেয়ারও ব্যবস্থা করতে হবে। সব মিলিয়েই সরকারের উচিত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সুরক্ষা করা- যার পরামর্শ ব্রিটিশ মন্ত্রী দিয়ে গেছেন।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন