প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা সম্প্রতি দুটি বিষয়ে প্রকাশ্যে তার মতামত ব্যক্ত করেছেন। মতামত দুটি শুনে মনে হলো, দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়ে তিনি দুটি শক্তিশালী বোমা ফাটিয়েছেন। প্রথমে তিনি বললেন যে, নির্বাহী বিভাগ বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করছে। তিনি এতদূরও বললেন যে, নির্বাহী বিভাগ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করার চেষ্টা করছে। তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে, বিশেষ করে আইনজীবীদেরকে, এই প্রচেষ্টা প্রতিহত করার আহ্বান জানান। লক্ষ্য করার বিষয় হলো এই যে, এই ধরনের অত্যন্ত সিরিয়াস কথা এসেছে দেশের অত্যন্ত দায়িত্বশীল ব্যক্তির মুখ দিয়ে যিনি বাংলাদেশের সমগ্র বিচার বিভাগের প্রধান। দেশের আইনসভা বা সংসদের প্রধান হলেন স্পিকার। নির্বাহী বিভাগের প্রধান হলেন প্রধানমন্ত্রী। আর বিচার বিভাগের প্রধান হলেন প্রধান বিচারপতি। যে দেশে এই তিন বিভাগ তথা তিনজন বিভাগীয় প্রধানের মধ্যে সমন্বয় এবং সম্প্রীতি থাকে সে দেশে আইনের শাসন এবং সুশাসন উভয়ই বজায় থাকে। যে দেশে এই তিন বিভাগের মধ্যে সমন্বয় থাকে না সে দেশকে নানাবিধ দুর্যোগের মধ্য দিয়ে পার হতে হয়।
নির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগের মধ্যে সমন্বয় এবং সম্প্রীতি নেই, এমন কথা আমরা বলব না। তবে প্রধান বিচারপতি অতি সম্প্রতি এই ধরনের যে দু’একটি কথা বলছেন তার ফলে ধারণা করা অন্যায় হবে না যে, কোথায় যেন সমন্বয় সূতাটি ছিঁড়ে গেছে বা দুর্বল হয়ে গেছে। তা না হলে প্রধান বিচারপতির নির্বাহী বিভাগ বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ করছে, এটুকু বলেই তিনি ক্ষান্ত থাকতেন। কিন্তু তিনি সেই অশুভ হস্তক্ষেপ বা স্বাধীনতা হরণের প্রচেষ্টা প্রতিরোধ করার আহ্বান জানাতেন না। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে যে, ‘ডাল মে কুচ কালা হ্যায়’। ইতোমধ্যেই সুধী মহলে বলাবলি শুরু হয়েছে যে, ‘Something is grossly wrong somewhere’।
এছাড়া গত মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে তিনি যে মন্তব্য করেছেন সেটি বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে ভূমিকম্পের মতো কম্পন সৃষ্টি করেছে। প্রধান বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম বর্ষপূতিতে প্রদত্ত ভাষণে তিনি বলেন, অবসর গ্রহণের পর রায় লেখা আইন ও সংবিধান পরিপন্থী। কোনো কোনো বিচারপতি রায় লিখতে অস্বাভাবিক বিলম্ব করেন। আবার কেউ কেউ অবসর গ্রহণের দীর্ঘদিন পর পর্যন্ত রায় লেখা অব্যাহত রাখেন, যা আইন ও সংবিধান পরিপন্থী।’ তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ বাংলাদেশের সংবিধান, আইনের রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধানের শপথ গ্রহণ করেন। কোনো বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর তিনি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে গণ্য হন বিধায় তার গৃহীত শপথও বহাল থাকে না।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আদালতের নথি সরকারি দলিল (পাবলিক ডকুমেন্ট)। একজন বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর আদালতের নথি নিজের নিকট সংরক্ষণ, পর্যালোচনা বা রায় প্রস্তুত করা এবং তাতে দস্তখত করার অধিকার হারান। আশা করি, বিচারকগণ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এমন বেআইনি কাজ থেকে বিরত থাকবেন।’
একটি সভায় বক্তৃতা আরম্ভ করার প্রারম্ভে তার মনে হলো, আর তিনি ঐ কথা বলে দিলেন, বিষয়টি কিন্তু এমন নয়। বরং পরবর্তীতে তার ভূমিকা থেকে বোঝা যায় যে, প্রধান বিচারপতি জেনে শুনে এবং চিন্তা ভাবনা করেই ঐ কথা বলেছেন। কারণ গত শুক্রবার ২২ জানুয়ারি মৌলভীবাজারেও তিনি সেই কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন এবং আইন ও সংবিধান পরিপন্থী কোন কাজ করতে দেয়া হবে না বলে তার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে মৌলভীবাজার জেলা বার এসোসিয়েশনের ‘বার্ষিক নৈশভোজ ও সভা-২০১৬’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি পুনরায় বলেন, আইন ও সংবিধান রক্ষায় আমাদের সংশোধিত হতে হবে। দেশে এখন গণতন্ত্র আসছে, সংবিধান আছে, এখন আমরা আইনে চলবো। সেই সামরিক আইন চলবে না। আইনকে সমুন্নত রেখে চলবো। আইন ও সংবিধান পরিপন্থী কোনো কাজ হতে দেয়া হবে না। অতীতে চললেও এখন থেকে অবসরে যাওয়ার পর আর কোনো বিচাপতিকে রায় লিখতে দেয়া হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, বিচারপতিদের অবসরে যাওয়ার পর আর কোনো রায় লিখতে দেয়া হবে না। আমরা আজব দেশে বাস করি। বিশে^র অন্যান্য দেশে বিচারকরা অবসরে যাওয়ার পর আর কোনো মামলার রায় লিখতে পারেন না। আমাদের দেশে অতীতে এ রকম রায় দিলেও এখন থেকে আর এ সুযোগ দেয়া যাবে না। ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ বাংলাদেশের সংবিধান, আইনের রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধানের শপথ গ্রহণ করেন’।
মৌলভীবাজারের এই বক্তৃতায় প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, কোনো বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর তিনি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে গণ্য হন বিধায় তার গৃহীত শপথও বহাল থাকে না।
এ সময় সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দেশের উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, অনেক বিচারপতি ছুটি পেয়ে সরকারি খরচে বিদেশ চলে যান। অথচ পাঁচ-সাত বছরেও রায় লেখেন না। তিনি বিচারপতিদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা দয়া করে আইন ভঙ্গ করবেন না। আপনারা যদি আইন ভঙ্গ করেন, তাহলে সাধারণ মানুষজন কী করবে?
॥দুই॥
প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার এই বক্তব্য সরকারের আঁতে ঘা দিয়েছে। কারণ তিনি যা বলেছেন, সেটিকে যদি কাজে পরিণত করা হয় তাহলে মৌচাকে ঢিল পড়বে। কারণ বিগত ১৪-১৫ বছরে সুপ্রিম কোর্ট যেসব রায় দিয়েছে, বিচারপতি এসকে সিনহার কথা মেনে চললে তো বাংলাদেশের অতীতের অনেক রায় শুধু পাল্টেই যাবে, সেগুলো বাতিল হবে, আর না হয় গণেশ উল্টে যাবে।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন শুক্রবার বলেন, প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার সাম্প্রতিক বক্তব্যের পর কোনো আইনজীবী যদি রিভিউ বা রিট পিটিশন দায়ের করেন তাহলে বিগত দিনগুলোতে অবসরে যাওয়ার পর যে রায় লেখা হয়েছে তা প্রশ্নবিদ্ধ ও সাংবিধানিক জটিলতার সৃষ্টি করবে।
হুমকির মুখে পড়েছে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী (’৭৫ পরবর্তী সামরিক সরকারকে বৈধতা দান) ও ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায়সহ অসংখ্য ঐতিহাসিক মামলার রায়। ‘বিচারপতিদের অবসরের পর রায় লেখা আইন ও সংবিধান পরিপন্থী’ বলে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বক্তব্যের পর ঐতিহাসিক অনেক মামলার রায় সাংবিধানিক সঙ্কটের মুখে পড়েছে। এসব মামলা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কয়েক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিও। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের রায়ে স্বাক্ষর করতে না দিতে প্রধান বিচারপতি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে সংবিধানের ১৫তম, ১৩তম, পঞ্চম, সপ্তম সংশোধনীর মামলার রায়, জেল হত্যা মামলার রায়, মাজদার হোসেনের মামলার রায়সহ অনেক সাংবিধানিক গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় প্রশ্নবিদ্ধ হবে। কারণ এসব মামলার রায় বিচারপতিরা অবসরে যাওয়ার পরে লিখেছেন। ফলে প্রধান বিচারপতির সিদ্ধান্তের কারণে এসব রায় প্রশ্নবিদ্ধ হলে দেশে চরম সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টি হবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, প্রধান বিচারপতির এই সব উক্তি তো হলো তাঁর মন্তব্য। তাঁর মন্তব্য মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হলে সেটিকে ভার্ডিক্ট বা রায় হিসাবে আসতে হবে। আর সেটা করতে হলে দেশের কোনো একজন বৈধ নাগরিককে রিট পিটিশন দায়ের করতে হবে।
সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, একজন বিচারক সাংবিধানিকভাবে আইন সংরক্ষণের জন্য শপথ নেন। বিচারক যখন অবসরে যান, তখন তার আইন রক্ষা করার সাংবিধানিক ক্ষমতা নেই। প্রধান বিচারপতি তো অনেক উপরে। কারণ তিনি আইন ও সংবিধান রক্ষা করার জন্য শপথ নিয়ে এ পদে ঢোকেন। অতীতে কিছু বিচারক কাজে ভুল করেছেন। তারা জানতেন না বা জেনেও প্রধান বিচারপতি যেটা চাপিয়ে দিয়েছেন, সেটা করেছেন। প্রধান বিচারপতি নিজেও সেটা করেছেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে সাবেক প্রধান বিচারপতি, বিচারপতিদের কাছে আবেদন করব আপনারা যদি আইন ভঙ্গ করেন তাহলে সাধারণ মানুষ কি করবে? আইন ভঙ্গ করবেন না।’
॥ তিন॥
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা আরও বলেন, একজন বিচারক যখন রিটায়ার করেন তখন আপনি (সাধারণ নাগরিক) আর আমি (বিচারক) সমান হয়ে যাই। আমার কিন্তু আর কারো রক্ষা করার সাংবিধানিক ক্ষমতা নেই। সিভিল প্রশাসনের কেউ রিটায়ারমেন্টে যাওয়ার পর আর বাকি কোনো কাজ করার সুযোগ থাকে না। উদাহরণ হিসাবে দেখান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন চিফ সেক্রেটারি রিটায়ারমেন্টে চলে গেলে তিনি আর অফিসে ঢুকতেই পারবেন না। তারাতো কোনো শপথ নেন না। আর বিচারপতিরা আরও উপরে। আইন সংবিধান রক্ষা করার জন্য শপথ নেন। তাই রিটায়ার করার পর বিচারকের রায় লেখার কোনো অধিকার নেই। আমি এটি এলাও করবো না। এই সময় তিনি বলেন, আমাদের কিছু আইনজীবী তাদের রাজনৈতিক স্বার্থে বক্তব্য দেন। এই সময় তিনি ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থার বিভিন্ন উদাহরণ তুলে ধরেন। এই প্রসঙ্গে ভারতের একটি বিখ্যাত রায়ের প্রসঙ্গ টেনে প্রধান বিচারপতি বলেন সেই (ভারতের) মামলায় ১৩ জন বিচারপতি দিয়ে কন্সটিটিউশনাল বেঞ্চ হয় সুপ্রিম কোর্টে। প্রায় ছয় মাস এক নাগারে চলে মামলা। এই মামলার রায় কয়েক হাজার পাতার। এটি একটি ইতিহাস। ১৩ জন বিচারপতি যে দিন রায় দেন ঠিক তার পর দিন প্রধান বিচারপতি সিক্রি রিটায়ার করেন। আরও ২ জন বিচারক মারা যান। রিটায়ারমেন্টে যাওয়ার কারণে প্রধান বিচারপতি স্বাক্ষর করতে রাজি হননি রায়ে। রিটায়ারমেন্টের পর প্রধান বিচারপতি বলেন আমি সাধারণ নাগরিক। সেই রায়ে ১৩ জন বিচারকের মধ্যে নয়জনের স্বাক্ষর ছিল। এটি একটি ইতিহাস। সারা বিশ্ব এই রায়কে ফলো করে। আমরা অনেক কিছু জানি না। আমাদের সংশোধিত হতে হবে। তিনি আরও বলেন কিছু বিচারক আগে ভুল করেছেন। তারা জানতেন না বা তারা জেনেও প্রধান বিচারপতি এটি চাপিয়ে দিয়েছেন। প্রধান বিচারপতি নিজেও রায় লিখে যেতে পারেননি। শ্রদ্ধার সঙ্গে বিচারপতি যারা আছেন তাদের কাছে আমি আবেদন করবো আপনারা যদি আইন ভঙ্গ করেন তবে সাধারণ নাগরিকরা কি করবে? আইন ভঙ্গ করবেন না। আমি কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে দেখেছি তারা কল্পনাই করতে পারে না একজন বিচারক রিটায়ারমেন্টের পর রায় লিখবে। আমাদের দেশ একটি আজব দেশ। রিটায়ারমেন্টের পর বিচারক রায় লেখেন। এখানে তার ব্যক্তিগত কি ইন্টারেস্টে? তিনি এই সময় আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানান লেখাপড়া করার জন্য। প্রধান বিচারপতি সিনহা মোহন দাস করম চাঁদ গান্ধীর বই থেকে উদ্ধৃতি পড়ে শোনান। সম্প্রতি রিটায়ারমেন্টে যাওয়া এক বিচারপতি (শরিফ উদ্দিন চাকলাদার) আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টে প্রাকটিস করার জন্য। তার এই অধিকার আছে। তবে তিনি প্রাকটিসও করবেন আবার রায়ও লিখবেন, এটি কেমন করে হবে? অতীতে কোনো কোনো বিচারপতি অবসরে যাওয়ার পর রায় লিখেছেন। কিন্তু এটি এখন কোর্টের রায়। না জানার কারণে এটি হয়েছে। মার্শাল ল-এর আমলে এরকম অনেক কাজ হয়েছে। কিন্তু এখন দেশে আইনের শাসন আছে। গণতন্ত্র আছে।
এটি একটি হাইলি টেকনিক্যাল বিষয়। আইনশাস্ত্র সম্পর্কে প্রচুর পড়াশুনা না থাকলে এবং বিশে^র বিভিন্ন দেশের বড় বড় মামলার রায় জানা না থাকলে এ সম্পর্কে সঠিক কোন মন্তব্য করা সমীচীন হবে না। তবে আমরা একটি বাংলা ট্যাবলয়েডের গত শনিবারের সংখ্যায় প্রকাশিত এ সম্পর্কিত প্রধান সংবাদের অংশ বিশেষ নিচে উদ্ধৃত করছি, “অবসরে গিয়ে রায় লেখা সংবিধান পরিপন্থী এই মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ৫২ বছর আগে ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এ. আর কর্নেলিয়াসের দেয়া রায়ের প্রতিধ্বনি করেছেন। কাজী মেহের দীন বনাম মিসেস মুরাদ বেগম মামলায় পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে রায় দেন যে, অবসরে গিয়ে রায় লেখা যাবে না। পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, রায় লেখা একটি বিচারিক কর্ম বা জুডিশিয়াল ওয়ার্ক। কোনো বিচারক অবসরে গেলে আর বিচারক থাকেন না। তাই অবসরে রায় লেখা বৈধ নয়। পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট এ প্রসঙ্গে দেওয়ানি কার্যবিধি সিপিসির অর্ডার ২২ এর ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, সিপিসি অবসর পরবর্তী রায় প্রদানকে সমর্থন করে না। কারণ একজন বিচারক অবসরে গেলে তিনি ফাংটাস অফিসিও হয়ে যান। লাতিন আইনি পরিভাষা অনুযায়ী ফাংটাস অফিসিও মানে তিনি আর অফিসে থাকেন না। তাই অফিসে থাকার যে এখতিয়ার সেটা তিনি হারিয়ে ফেলেন।’’
নির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগের মধ্যে সমন্বয় এবং সম্প্রীতি নেই, এমন কথা আমরা বলব না। তবে প্রধান বিচারপতি অতি সম্প্রতি এই ধরনের যে দু’একটি কথা বলছেন তার ফলে ধারণা করা অন্যায় হবে না যে, কোথায় যেন সমন্বয় সূতাটি ছিঁড়ে গেছে বা দুর্বল হয়ে গেছে। তা না হলে প্রধান বিচারপতির নির্বাহী বিভাগ বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ করছে, এটুকু বলেই তিনি ক্ষান্ত থাকতেন। কিন্তু তিনি সেই অশুভ হস্তক্ষেপ বা স্বাধীনতা হরণের প্রচেষ্টা প্রতিরোধ করার আহ্বান জানাতেন না। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে যে, ‘ডাল মে কুচ কালা হ্যায়’। ইতোমধ্যেই সুধী মহলে বলাবলি শুরু হয়েছে যে, ‘Something is grossly wrong somewhere’।
এছাড়া গত মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে তিনি যে মন্তব্য করেছেন সেটি বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে ভূমিকম্পের মতো কম্পন সৃষ্টি করেছে। প্রধান বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম বর্ষপূতিতে প্রদত্ত ভাষণে তিনি বলেন, অবসর গ্রহণের পর রায় লেখা আইন ও সংবিধান পরিপন্থী। কোনো কোনো বিচারপতি রায় লিখতে অস্বাভাবিক বিলম্ব করেন। আবার কেউ কেউ অবসর গ্রহণের দীর্ঘদিন পর পর্যন্ত রায় লেখা অব্যাহত রাখেন, যা আইন ও সংবিধান পরিপন্থী।’ তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ বাংলাদেশের সংবিধান, আইনের রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধানের শপথ গ্রহণ করেন। কোনো বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর তিনি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে গণ্য হন বিধায় তার গৃহীত শপথও বহাল থাকে না।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আদালতের নথি সরকারি দলিল (পাবলিক ডকুমেন্ট)। একজন বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর আদালতের নথি নিজের নিকট সংরক্ষণ, পর্যালোচনা বা রায় প্রস্তুত করা এবং তাতে দস্তখত করার অধিকার হারান। আশা করি, বিচারকগণ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এমন বেআইনি কাজ থেকে বিরত থাকবেন।’
একটি সভায় বক্তৃতা আরম্ভ করার প্রারম্ভে তার মনে হলো, আর তিনি ঐ কথা বলে দিলেন, বিষয়টি কিন্তু এমন নয়। বরং পরবর্তীতে তার ভূমিকা থেকে বোঝা যায় যে, প্রধান বিচারপতি জেনে শুনে এবং চিন্তা ভাবনা করেই ঐ কথা বলেছেন। কারণ গত শুক্রবার ২২ জানুয়ারি মৌলভীবাজারেও তিনি সেই কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন এবং আইন ও সংবিধান পরিপন্থী কোন কাজ করতে দেয়া হবে না বলে তার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে মৌলভীবাজার জেলা বার এসোসিয়েশনের ‘বার্ষিক নৈশভোজ ও সভা-২০১৬’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি পুনরায় বলেন, আইন ও সংবিধান রক্ষায় আমাদের সংশোধিত হতে হবে। দেশে এখন গণতন্ত্র আসছে, সংবিধান আছে, এখন আমরা আইনে চলবো। সেই সামরিক আইন চলবে না। আইনকে সমুন্নত রেখে চলবো। আইন ও সংবিধান পরিপন্থী কোনো কাজ হতে দেয়া হবে না। অতীতে চললেও এখন থেকে অবসরে যাওয়ার পর আর কোনো বিচাপতিকে রায় লিখতে দেয়া হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, বিচারপতিদের অবসরে যাওয়ার পর আর কোনো রায় লিখতে দেয়া হবে না। আমরা আজব দেশে বাস করি। বিশে^র অন্যান্য দেশে বিচারকরা অবসরে যাওয়ার পর আর কোনো মামলার রায় লিখতে পারেন না। আমাদের দেশে অতীতে এ রকম রায় দিলেও এখন থেকে আর এ সুযোগ দেয়া যাবে না। ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ বাংলাদেশের সংবিধান, আইনের রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধানের শপথ গ্রহণ করেন’।
মৌলভীবাজারের এই বক্তৃতায় প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, কোনো বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর তিনি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে গণ্য হন বিধায় তার গৃহীত শপথও বহাল থাকে না।
এ সময় সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দেশের উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, অনেক বিচারপতি ছুটি পেয়ে সরকারি খরচে বিদেশ চলে যান। অথচ পাঁচ-সাত বছরেও রায় লেখেন না। তিনি বিচারপতিদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা দয়া করে আইন ভঙ্গ করবেন না। আপনারা যদি আইন ভঙ্গ করেন, তাহলে সাধারণ মানুষজন কী করবে?
॥দুই॥
প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার এই বক্তব্য সরকারের আঁতে ঘা দিয়েছে। কারণ তিনি যা বলেছেন, সেটিকে যদি কাজে পরিণত করা হয় তাহলে মৌচাকে ঢিল পড়বে। কারণ বিগত ১৪-১৫ বছরে সুপ্রিম কোর্ট যেসব রায় দিয়েছে, বিচারপতি এসকে সিনহার কথা মেনে চললে তো বাংলাদেশের অতীতের অনেক রায় শুধু পাল্টেই যাবে, সেগুলো বাতিল হবে, আর না হয় গণেশ উল্টে যাবে।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন শুক্রবার বলেন, প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার সাম্প্রতিক বক্তব্যের পর কোনো আইনজীবী যদি রিভিউ বা রিট পিটিশন দায়ের করেন তাহলে বিগত দিনগুলোতে অবসরে যাওয়ার পর যে রায় লেখা হয়েছে তা প্রশ্নবিদ্ধ ও সাংবিধানিক জটিলতার সৃষ্টি করবে।
হুমকির মুখে পড়েছে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী (’৭৫ পরবর্তী সামরিক সরকারকে বৈধতা দান) ও ত্রয়োদশ সংশোধনী (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায়সহ অসংখ্য ঐতিহাসিক মামলার রায়। ‘বিচারপতিদের অবসরের পর রায় লেখা আইন ও সংবিধান পরিপন্থী’ বলে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বক্তব্যের পর ঐতিহাসিক অনেক মামলার রায় সাংবিধানিক সঙ্কটের মুখে পড়েছে। এসব মামলা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কয়েক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিও। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের রায়ে স্বাক্ষর করতে না দিতে প্রধান বিচারপতি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে সংবিধানের ১৫তম, ১৩তম, পঞ্চম, সপ্তম সংশোধনীর মামলার রায়, জেল হত্যা মামলার রায়, মাজদার হোসেনের মামলার রায়সহ অনেক সাংবিধানিক গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় প্রশ্নবিদ্ধ হবে। কারণ এসব মামলার রায় বিচারপতিরা অবসরে যাওয়ার পরে লিখেছেন। ফলে প্রধান বিচারপতির সিদ্ধান্তের কারণে এসব রায় প্রশ্নবিদ্ধ হলে দেশে চরম সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টি হবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, প্রধান বিচারপতির এই সব উক্তি তো হলো তাঁর মন্তব্য। তাঁর মন্তব্য মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হলে সেটিকে ভার্ডিক্ট বা রায় হিসাবে আসতে হবে। আর সেটা করতে হলে দেশের কোনো একজন বৈধ নাগরিককে রিট পিটিশন দায়ের করতে হবে।
সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, একজন বিচারক সাংবিধানিকভাবে আইন সংরক্ষণের জন্য শপথ নেন। বিচারক যখন অবসরে যান, তখন তার আইন রক্ষা করার সাংবিধানিক ক্ষমতা নেই। প্রধান বিচারপতি তো অনেক উপরে। কারণ তিনি আইন ও সংবিধান রক্ষা করার জন্য শপথ নিয়ে এ পদে ঢোকেন। অতীতে কিছু বিচারক কাজে ভুল করেছেন। তারা জানতেন না বা জেনেও প্রধান বিচারপতি যেটা চাপিয়ে দিয়েছেন, সেটা করেছেন। প্রধান বিচারপতি নিজেও সেটা করেছেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে সাবেক প্রধান বিচারপতি, বিচারপতিদের কাছে আবেদন করব আপনারা যদি আইন ভঙ্গ করেন তাহলে সাধারণ মানুষ কি করবে? আইন ভঙ্গ করবেন না।’
॥ তিন॥
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা আরও বলেন, একজন বিচারক যখন রিটায়ার করেন তখন আপনি (সাধারণ নাগরিক) আর আমি (বিচারক) সমান হয়ে যাই। আমার কিন্তু আর কারো রক্ষা করার সাংবিধানিক ক্ষমতা নেই। সিভিল প্রশাসনের কেউ রিটায়ারমেন্টে যাওয়ার পর আর বাকি কোনো কাজ করার সুযোগ থাকে না। উদাহরণ হিসাবে দেখান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন চিফ সেক্রেটারি রিটায়ারমেন্টে চলে গেলে তিনি আর অফিসে ঢুকতেই পারবেন না। তারাতো কোনো শপথ নেন না। আর বিচারপতিরা আরও উপরে। আইন সংবিধান রক্ষা করার জন্য শপথ নেন। তাই রিটায়ার করার পর বিচারকের রায় লেখার কোনো অধিকার নেই। আমি এটি এলাও করবো না। এই সময় তিনি বলেন, আমাদের কিছু আইনজীবী তাদের রাজনৈতিক স্বার্থে বক্তব্য দেন। এই সময় তিনি ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থার বিভিন্ন উদাহরণ তুলে ধরেন। এই প্রসঙ্গে ভারতের একটি বিখ্যাত রায়ের প্রসঙ্গ টেনে প্রধান বিচারপতি বলেন সেই (ভারতের) মামলায় ১৩ জন বিচারপতি দিয়ে কন্সটিটিউশনাল বেঞ্চ হয় সুপ্রিম কোর্টে। প্রায় ছয় মাস এক নাগারে চলে মামলা। এই মামলার রায় কয়েক হাজার পাতার। এটি একটি ইতিহাস। ১৩ জন বিচারপতি যে দিন রায় দেন ঠিক তার পর দিন প্রধান বিচারপতি সিক্রি রিটায়ার করেন। আরও ২ জন বিচারক মারা যান। রিটায়ারমেন্টে যাওয়ার কারণে প্রধান বিচারপতি স্বাক্ষর করতে রাজি হননি রায়ে। রিটায়ারমেন্টের পর প্রধান বিচারপতি বলেন আমি সাধারণ নাগরিক। সেই রায়ে ১৩ জন বিচারকের মধ্যে নয়জনের স্বাক্ষর ছিল। এটি একটি ইতিহাস। সারা বিশ্ব এই রায়কে ফলো করে। আমরা অনেক কিছু জানি না। আমাদের সংশোধিত হতে হবে। তিনি আরও বলেন কিছু বিচারক আগে ভুল করেছেন। তারা জানতেন না বা তারা জেনেও প্রধান বিচারপতি এটি চাপিয়ে দিয়েছেন। প্রধান বিচারপতি নিজেও রায় লিখে যেতে পারেননি। শ্রদ্ধার সঙ্গে বিচারপতি যারা আছেন তাদের কাছে আমি আবেদন করবো আপনারা যদি আইন ভঙ্গ করেন তবে সাধারণ নাগরিকরা কি করবে? আইন ভঙ্গ করবেন না। আমি কানাডা, অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে দেখেছি তারা কল্পনাই করতে পারে না একজন বিচারক রিটায়ারমেন্টের পর রায় লিখবে। আমাদের দেশ একটি আজব দেশ। রিটায়ারমেন্টের পর বিচারক রায় লেখেন। এখানে তার ব্যক্তিগত কি ইন্টারেস্টে? তিনি এই সময় আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানান লেখাপড়া করার জন্য। প্রধান বিচারপতি সিনহা মোহন দাস করম চাঁদ গান্ধীর বই থেকে উদ্ধৃতি পড়ে শোনান। সম্প্রতি রিটায়ারমেন্টে যাওয়া এক বিচারপতি (শরিফ উদ্দিন চাকলাদার) আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টে প্রাকটিস করার জন্য। তার এই অধিকার আছে। তবে তিনি প্রাকটিসও করবেন আবার রায়ও লিখবেন, এটি কেমন করে হবে? অতীতে কোনো কোনো বিচারপতি অবসরে যাওয়ার পর রায় লিখেছেন। কিন্তু এটি এখন কোর্টের রায়। না জানার কারণে এটি হয়েছে। মার্শাল ল-এর আমলে এরকম অনেক কাজ হয়েছে। কিন্তু এখন দেশে আইনের শাসন আছে। গণতন্ত্র আছে।
এটি একটি হাইলি টেকনিক্যাল বিষয়। আইনশাস্ত্র সম্পর্কে প্রচুর পড়াশুনা না থাকলে এবং বিশে^র বিভিন্ন দেশের বড় বড় মামলার রায় জানা না থাকলে এ সম্পর্কে সঠিক কোন মন্তব্য করা সমীচীন হবে না। তবে আমরা একটি বাংলা ট্যাবলয়েডের গত শনিবারের সংখ্যায় প্রকাশিত এ সম্পর্কিত প্রধান সংবাদের অংশ বিশেষ নিচে উদ্ধৃত করছি, “অবসরে গিয়ে রায় লেখা সংবিধান পরিপন্থী এই মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ৫২ বছর আগে ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এ. আর কর্নেলিয়াসের দেয়া রায়ের প্রতিধ্বনি করেছেন। কাজী মেহের দীন বনাম মিসেস মুরাদ বেগম মামলায় পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে রায় দেন যে, অবসরে গিয়ে রায় লেখা যাবে না। পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, রায় লেখা একটি বিচারিক কর্ম বা জুডিশিয়াল ওয়ার্ক। কোনো বিচারক অবসরে গেলে আর বিচারক থাকেন না। তাই অবসরে রায় লেখা বৈধ নয়। পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট এ প্রসঙ্গে দেওয়ানি কার্যবিধি সিপিসির অর্ডার ২২ এর ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, সিপিসি অবসর পরবর্তী রায় প্রদানকে সমর্থন করে না। কারণ একজন বিচারক অবসরে গেলে তিনি ফাংটাস অফিসিও হয়ে যান। লাতিন আইনি পরিভাষা অনুযায়ী ফাংটাস অফিসিও মানে তিনি আর অফিসে থাকেন না। তাই অফিসে থাকার যে এখতিয়ার সেটা তিনি হারিয়ে ফেলেন।’’
আসিফ আরসালান
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন