মহল্লার ছিঁচকে মাস্তান থেকে শুরু করে পেশাদার অপরাধী-শীর্ষ সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, পকেটমারসহ বিভিন্ন চক্র নানা রকম ধান্ধাবাজির মওকা নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অপহরণ, মুক্তিপণ, ছিনতাই, ডাকাতি দেদার চলছে। আছে অজ্ঞান পার্টি, থুথু পার্টি, ধাক্কা পার্টির সীমাহীন দৌরাত্ম্য। মাদক ব্যবসায়ীরাও বেজায় ব্যস্ত। আগে থেকেই মজুদ হচ্ছে নানা রকম মাদক। ‘অজ্ঞান পার্টি’, ‘মলম পার্টি’ আর ‘টানা পার্টি’। এই তিন পার্টি সাধারণত কোন কল্যাণকামী পার্টি বা দল নয়। পার্টি বলতে সাধারণত দেশের রাজনৈতিক দলকে বোঝালেও সেই পার্টির চেয়ে ওই পার্টি তিনটি ভিন্ন। তারা অপরাধ জগতের দাপিয়ে বেড়ানো পার্টি।
দেশের অন্যান্য পার্টির (দল) সাথে তাদের কোনো কাজকর্মে মিল না থাকলেও নামের শেষে মিল রয়েছে। এই পার্টিত্রয়ের সদস্যরা দেশজাতির মঙ্গল নিয়ে চিন্তা করে না। তাদের চিন্তায় থাকে রোযা ও ঈদকে উপলক্ষ করে কামাই রুজির। বছরের বাকীটা সময় তাদের কাজকারবারে ঢিল থাকলেও প্রতি বছর রোজা ও ঈদকে সামনে রেখে জোরেশোরে কদম ফেলে জনপদে। মওসুমী অপরাধী হিসেবেও তারা খ্যাতিপ্রাপ্ত। সম্প্রতি ঢাকা মহানগরীতে ডিবি পুলিশের হাতে বেশকিছু সংখ্যক অজ্ঞান পার্টির সদস্য আটকের ঘটনা তাদের তৎপরতার জানান দেয়।
সাধারণত ঈদ, পূজাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও জাতীয় অনুষ্ঠান সামনে রেখে এরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। অনুষ্ঠান উপলক্ষে রাজধানীতে ব্যবসায়ীদের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ার সুযোগটিকেই কাজে লাগায় এরা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যদের চোখ এড়িয়ে খুব সহজেই এরা ওইসব ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষদের ফাঁদে ফেলে সর্বস্ব কেড়ে নেয়।
রাজধানীতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। একের পর ঘটছে হত্যাকা-। প্রকাশ্য দিবালোকে গুলী ও বোমা ফাটিয়ে ঘটছে ছিনতাই, ডাকাতি ও লুট। দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে ছিনতাইকারী চক্রগুলো। বসে নেই চাঁদাবাজ ও ডাকাতদলের সদস্যরা। অজ্ঞান পার্টি মলম পার্টির সদস্যরা চষে বেড়াচ্ছে গোটা রাজধানী।
প্রতিটি রমযানের আগ থেকেই রাজধানীতে চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের দৌরত্ম্য মহামারী আকার ধারণ করে। তবে ঈদের সময় রাজধানী ফাঁকা থাকায় কিছুটা কম হলে অপরাধীদের কার্যক্রম আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। বিশেষ করে ছিনতাই, ডাকাতি ও লুটপাটের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
চাঁদাবাজির ভয়ঙ্কর চিত্র এখন রাজধানীজুড়ে। প্রায় প্রতিটি এলাকায় চাঁদাবাজরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। চাঁদা না পেলেই তারা অ্যাকশনে যাচ্ছে। গুলী চালাচ্ছে। হামলা করছে। এমনকি পরিবারের সদস্যদেরও তারা টার্গেট করছে। আবার চাঁদার দাবিতে হুমকিস্বরূপ মিষ্টির বাক্সে করে বাসায় পাঠানো হচ্ছে কাফনের কাপড়, ককটেল ও হাতবোমা।
চাঁদা না পাওয়ায় দুর্বৃত্তরা গুলী করে আর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করেছে তাদের। প্রকৌশলী, চিকিৎসক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, সাংস্কৃতিক কর্মী, রাজনৈতিক নেতাদের টার্গেট করে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। এ ছাড়া খেটে খাওয়া মানুষও চাঁদাবাজদের হুমকি-ধমকিতে আতঙ্কিত। ডিএমপির কোনো না কোনো থানায় প্রায় প্রতিদিনই এ সংক্রান্ত জিডি হচ্ছে। সব মিলিয়ে চাঁদাবাজদের ভয়ে চরম অস্থিরতার মধ্যে রয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ।
জেল থেকে জামিনে ছাড়া পাচ্ছে দাগি অপরাধীরা। তারাই এখন প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করছে। অস্ত্র নিয়ে হাজির হচ্ছে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান কিংবা বাসাবাড়িতে। এ ছাড়া কারাগারে আটক ও বাইরে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নামেও চলছে ভয়ানক চাঁদাবাজি।
চাঁদাবাজির ১০০টি ঘটনা ঘটলেও সব ঘটনায় মামলা হয় না। অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ ঝামেলা এড়াতে কোনো কোনোটি আবার জিডি হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। আবার মামলা হলেও ভুক্তভোগীরা ভয়ে অনেক সময় সাক্ষ্য দিতে যান না। এসব কারণে আসামিরা ছাড়া পেয়ে যায়। এসব দমনে দরকার দক্ষ বাহিনী। তা ছাড়া রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রশ্রয় বন্ধ না হলে এ অপরাধ কমবে না।
পুলিশকে চাঁদাবাজদের খবর জানালেও কোনো লাভ হচ্ছে না। উল্টো চাঁদাবাজরা আরও বেপরোয়া হয়ে পড়ে। বাসাবাড়িতে চড়াও হয়ে পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। চাঁদার জন্য নানা কৌশল নিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। পরিবারের লোকজনের চলাফেরা অনুসরণ করে ফোনে বর্ণনা দেয় চাঁদাবাজরা। ফোনে তারা বলে, ‘আপনার ছেলে/মেয়ে এখন অমুক জায়গা থেকে বের হয়েছে। ইচ্ছা করলেই গুলী করতে পারি। টাকা না পেলে এরপর আর ফোন নয়, গুলী করব।’ এ ধরনের ফোন পাওয়ার পর অনেকেই ভয়ে চাঁদার টাকা দিয়ে দেন। (সূত্রঃ দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ২২ মার্চ ২০১৪)
রাজধানীতে ছিনতাই বেড়েই চলছে। প্রকাশ্যে দুর্বৃত্তরা গুলী করে, হাত বোমা ফাটিয়ে ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে লাখ লাখ টাকা। ছিনতাইকারীদের ছোড়া গুলী ও বোমায় ঘটছে প্রাণহানির ঘটনাও। র্যাব-পুলিশের নিয়মিত টহল ডিউটির অভাব আর গোয়েন্দা ব্যর্থতার সুযোগে নিয়মিত ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। রাজধানীর অলিগলিতে আগের মতো আর পুলিশি টহল দেখা যায় না। নেই তল্লাশি চৌকিও। বেশির ভাগ তল্লাশি চৌকিতে উল্টো সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এ কারণে ছিনতাইয়ের পর ছিনতাইকারী নির্বিঘেœ পালিয়ে যেতে পারছে।
ছিনতাইকারীরা সাধারণত এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় গিয়ে ছিনতাই করে। ছিনতাইয়ের পর নিজের এলাকায় চলে যায়। অনেক বড় বড় ছিনতাইয়ের ঘটনায় ছিনতাইকারীরা ঢাকার বাইরে আত্মগোপনে চলে যায়। (সূত্রঃ দৈনিক মানব জমিন ২৪ আগস্ট ২০১৪)
এদিকে মওসুমী অপরাধীদের দমনে তিন ধাপে বিশেষ টিম গঠন করে মাঠে নেমেছে পুলিশ। শুধু রমযানের সময়ই নয় ঈদের ছুটিতেও তৎপর থাকে অপরাধী চক্র। তাই রমযান মাস শুরু হওয়ার আগে থেকে ঈদের ছুটিকালীন পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তৎপর থাকার নির্দেশ দেয়া হয়।
ঈদকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা আসেন রাজধানীতে। আর তদেরকে টার্গেট করে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা। টানা পার্টির সদস্যরাও থাকেন বেশ তৎপর। তারা শিকারি ধরার জন্য সুবিধাজনকস্থানে ওৎ পেতে থাকে। সুযোগ বুঝেই ‘মাল’ টানতে তারা কখনও পিছপা হয় না। বিশেষ করে ঈদের ছুটিতেই যানবাহনগুলোতে টানা পার্টির তৎপরতা বেড়ে যায় অনেকাংশে।
রাজধানী ও এর আশপাশে ১০/১২টি অজ্ঞান পার্টি রয়েছে। সাধারণত সায়দাবাদ, যাত্রবাড়ী, গুলিস্তান, গাবতলী, ফুলবাড়িয়া, কাওরান বাজারে এদের তৎপরতা বেশি লক্ষ্য করা যায়।
রাজধানীতে আনাগোনা বেড়ে গেছে মওসুমী অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের। তাদের ফাঁদে পড়ে স্বর্বশান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এমনকি, তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যরাও। যাত্রীবাহী বাস লঞ্চ ফেরিতে এবং রাস্তাঘাটে হকার কিংবা সহযাত্রী-বন্ধু সেজে সাধারণ মানুষের সর্বস্ব কেড়ে নিচ্ছে এই অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা।
এভাবেই প্রতিনিয়ত অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের কবলে পড়ে কেউ সর্বস্ব হারাচ্ছেন আবার কারো জীবনও বিপন্ন হচ্ছে। বাস্তবতা হলো, অজ্ঞান পার্টির এই দুর্বৃত্তরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়লেও আইনের ফাঁক গলিয়ে কয়েক মাসের মধ্যেই বেরিয়ে এসে আবারও এ অপকর্মে যুক্ত হয়। কেউ বা আবার আদালত থেকেই জামিনে বেরিয়ে এসে একই কাজ করে।
গরমে অনেকে ফুটপাত বা রাস্তার ধারে ডাব, শসা, ক্ষীরা, গাজর, তরমুজ, লেবু, ফলের শরবতসহ নানা ধরনের পানীয় খান। এই সুযোগে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা কৌশলে খাবার ও পানীয়ের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে সর্বস্ব হাতিয়ে নেয়। রাজধানীর বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, লঞ্চঘাট, পাইকারি বাজার ও বিপণি বিতানগুলোতে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা তৎপর রয়েছে।
রাজধানীতে বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ও ফেরিঘাট, রেলওয়ে স্টেশন এবং শপিংমলসহ অন্তত ৪০টি পয়েন্টে অজ্ঞান পার্টির প্রায় শতাধিক গ্রুপ কাজ করছে। এরা প্রতিটি গ্রুপে ৪-৫ জন কাজ করে। প্রথমে তারা দু-একজনকে টার্গেট করে তার সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে। পরে সংকেত পেলে অন্যজন খাদ্যদ্রব্য বিক্রির উছিলায় তাদের কাছে যায়। এরপর কৌশলে টার্গেট-ব্যক্তিকে চেতনানাশক মেশানো খাবার খাইয়ে তার কাছ থেকে টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায় চক্রের সদস্যরা।
অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা অচেতন করতে বেশি ব্যবহার করে এপিট্রা নামে একটি তরল ওষুধ ও নকটিন ট্যাবলেট। এ ছাড়া ঘুমের ওষুধ এটিভেন, মাইলাম, ডরমিকাম এবং ধুতরা জাতীয় বনজ দ্রব্য ব্যবহার করে। এক ফোঁটা এপিট্রা মেশানো খাবার খেলে ৫-১০ মিনিটের মধ্যে ঘুম চলে আসে। আবার অতিরিক্ত খেলে এই ঘুম ২ থেকে ৩ দিনেরও বেশি দীর্ঘ হতে পারে। এ ছাড়া শারীরিকভাবে দুর্বল ব্যক্তি অতিরিক্ত সেবনে মারাও যেতে পারেন।
অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা বিভিন্ন গণপরিবহনে যাত্রীবেশে উঠে বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, লঞ্চটার্মিনালসহ জনসমাগম স্থলে ভিড়ের মধ্যে নিরীহ যাত্রী বা পথচারীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। পরবর্তীতে তাদেরকে বিস্কুট, কেক, কলা, পানি, ডাব বা অন্যান্য খাবার খাওয়ানোর আমন্ত্রণ জানিয়ে ঐসব খাদ্যদ্রব্যের সাথে অজ্ঞান করার ওষুধ মিশিয়ে নিরীহ যাত্রী ও পথচারীদের অজ্ঞান করে তাদের মোবাইল মানিব্যাগ, ল্যাপটপসহ সর্বস্ব নিয়ে পালিয়ে যায়। (সূত্রঃ দৈনিক সংগ্রাম ৩ জুলাই ২০১৫)
পেশাদার অপরাধী থেকে মওসুমী অপরাধী, রাজনৈতিক প্রভাবশালী থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযুক্ত কর্মকর্তা পর্যন্ত সবাই জড়িয়ে পড়ছেন বেশুমার চাঁদাবাজিতে। এতসব অপরাধ-অপকর্মের ধকলে হাজারো মানুষকে সর্বস্বান্ত করার মধ্য দিয়েই চলছে ‘ধান্ধা’। এসব অপরাধের বিরুদ্ধে প্রশাসনের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপও তেমন কোনো পাত্তা পাচ্ছে না। অতি সম্প্রতি পুলিশের আইজিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য কঠোর নির্দেশ দেন। চাঁদাবাজি বন্ধে রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বসানো হয়েছে সিসিটিভি। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। কিন্তু সব এড়িয়ে অসাধু পুলিশ ও স্থানীয় মাস্তানদের চাঁদাবাজি চলছেই। তারা শুধু টাকা আদায়ের কৌশল পরিবর্তন করেছে। রাজধানীর প্রবেশপথ যাত্রাবাড়ী, কাঁচপুর, সিদ্ধিরগঞ্জ, সাইনবোর্ড, বাবুবাজার ব্রিজ, কেরানীগঞ্জের কদমতলী, পোস্তগোলা ব্রিজ, সদরঘাট, মিরপুর বেড়িবাঁধ, গাবতলী পর্বতা সিনেমা হল এলাকা, উত্তরার আবদুল্লাহপুর, তুরাগের ধউর মোড়, আশুলিয়ার বাইপাইল ব্রিজসহ ১৩টি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশির নামে চলছে বেপরোয়া চাঁদাবাজি।
এখন সবচেয়ে বেশি চাঁদাবাজি হয় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও মাওয়া-কাওড়াকান্দি ফেরিঘাটে। পাটুরিয়ায় ফেরি পারাপারের গাড়িপ্রতি ৯৫০ টাকা নির্ধারিত টোলের স্থলে সেখানে আদায় করা হয় আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। সেখানে বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে গড়ে তোলা চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট এখন বেজায় তৎপর হয়ে উঠেছে। মাওয়া ফেরিঘাটেও একই অবস্থা। মাওয়া-কাওড়াকান্দি ফেরিতে নির্ধারিত ফির চেয়ে তিনগুণ বেশি টাকা দিয়ে তবেই গাড়ি পারাপারের সুযোগ মেলে। শুধু যে ফেরিঘাটে বা টার্মিনালে চাঁদাবাজি ঘটছে তা নয়, রাস্তায় রাস্তায়, মোড় পয়েন্টে নানা অজুহাতে গাড়ি থামিয়ে থামিয়েই চলছে চাঁদাবাজি।
উত্তরাঞ্চলীয় জেলাগুলো থেকে ঢাকায় পৌঁছতে অন্তত ১০টি পয়েন্টে ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে চাঁদা বাবদ তাকে ৮০০ টাকা গুনতে হয়। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সেতুতে ওঠার আগে ট্রাকের ওজন স্টেশনে ৩০০ টাকা করে দিতে হয়েছে।
প্রতি ট্রিপে চাঁদাবাবদ ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ৬০০ থেকে ৬৫০, ঢাকা-রাজশাহী-সোনামসজিদ রুটে ৬০০ থেকে ৭০০, ঢাকা-বেনাপোল রুটে ৫০০ থেকে ৬০০, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে আড়াইশ থেকে ৩০০ টাকা এবং ঢাকা-সিলেট রুটে প্রায় ৫০০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। স্থানীয় মাস্তানরা বিভিন্ন সমিতি, যানজট ক্লিয়ার করাসহ বিভিন্ন অজুহাতে এসব চাঁদা আদায় করে। রাস্তায় গাড়ি চালাতে হলে হামলা-মারধরের ভয়ে ট্রাকচালকরা এসব টাকা দিতে বাধ্য হন।
রাতে রাজধানীজুড়ে পুলিশ সোর্স পরিচয়ধারীদের ভয়ংকর প্রতারণার জাল বিস্তার লাভ করেছে। পুলিশ ও সোর্সদের সমন্বিত প্রতারণায় শত শত মানুষ সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। রীতিমতো ছিনতাই স্টাইলে ভুক্তভোগীদের টাকা-পয়সা, মূল্যবান জিনিসপত্র কেড়ে নেয়া হচ্ছে। পুলিশ ও সোর্সদের ছিনতাই স্টাইলের যৌথ অভিযান সবার কাছে ‘সামারি’ নামে পরিচিত। নগরীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে টহল পুলিশ ছাড়াও বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্টের আদলে নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়। সেসব স্থানে রাতভর পুলিশকে সহায়তা দেয়ার নামে সোর্স পরিচয়ে চিহ্নিত যুবকদের আনাগোনা থাকে। তারা রিকশাযাত্রী বা নিরীহ পথচারীর দেহ তল্লাশির নামে আশপাশে নিয়ে পকেট-মানিব্যাগ হাতড়াতে থাকে। একপর্যায়ে নিজেদের আঙ্গুলের চিপায় ইয়াবা ট্যাবলেট ঢুকিয়ে ভুক্তভোগীর পকেট থেকে তা উদ্ধার দেখায়। আবার কখনো পথচারীর মানিব্যাগ খোঁজাখুঁজি করে নিজেদেরই ঢুকিয়ে দেয়া জাল টাকা জব্দ দেখায়। শুরু হয় দরকষাকষি, হৈচৈ, চড়-থাপ্পড়। চাহিদামাফিক অর্থ আদায়ের পরই ভুক্তভোগীরা ছাড়া পান বলে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।
গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে চলছে ফ্রি স্টাইল চাঁদাবাজি। সেখানে প্রতি ঘাটে, পদে পদে চাঁদাবাজির জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে চালক, মালিক, শ্রমিকরা। টার্মিনালে গাড়ি ঢুকতে চাঁদা, ছাড়তে চাঁদা, সিরিয়াল পেতে চাঁদা, রাতে গাড়ি রাখতে চাঁদা, না রাখলেও চাঁদা-এমন ঘাটে ঘাটে চাঁদাবাজি ঘটছে প্রকাশ্যে, সবারই চোখের সামনে। টার্মিনাল পুলিশ ফাঁড়ির দেয়ালে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়েই শ্রমিক কল্যাণের নামে রাত-দিন চাঁদা তুলছে পাঁচ-সাতজন যুবক। প্রতিটি টার্মিনালের ভিতরে ও বাইরে অবৈধ স্থাপনা রয়েছে প্রায় তিন হাজার। প্রতিটি স্থাপনা থেকে দৈনিক পানির বিল ও বিদ্যুৎ বিলের নামে উঠানো হচ্ছে ২০০ টাকা ও মাসিক ভাড়া বাবদ আদায় করা হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। ছোট-বড় নানা আকারের এসব স্থাপনা থেকে ভাড়া বাবদ দুই হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন রুটে স্বল্প দূরত্বে চলাচলকারী হিউম্যান হলার (লেগুনা) থেকে চাঁদা আদায়ের উৎসব চলছে। শুধু রমযান মাসেই রাজধানীতে চলাচলকারী কয়েক হাজার ম্যাক্সি, লেগুনা, হিউম্যান হলার, চলাচল নিষিদ্ধ অটোরিকশা থেকে অন্তত পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা হাতিয়ে নিয়েছে বিভিন্ন চক্র। লাইন খরচের নামে এ টাকা আদায় করেন লেগুনা মালিকরা। এর খেসারত হিসেবে যাত্রীদের গুনতে হয় দ্বিগুণ ভাড়া। ঢাকায় ১২টি রুটে চলাচলকারী দেড় সহস্রাধিক লেগুনা গাড়ি থেকে রুটভেদে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে।
রাজধানীতে ক্রটিপূর্ণ কাগজপত্রের সিএনজি ট্যাক্সিতে ‘প্রেস-সংবাদপত্র’ লেখা স্টিকার লাগিয়ে এবং ডিসিসির লাইসেন্সবিহীন রিকশায় ক্ষমতাসীন দলের নাম্বার-প্লেট লাগিয়ে কয়েকটি চক্র লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে। দিগন্ত নিউজ অনলাইন টিভি নামের একটি অনুমোদনহীন টিভি চ্যানেলের নামে স্টিকার বানিয়ে অন্তত পাঁচ হাজার সিএনজি ট্যাক্সিতে বিক্রি করা হয়েছে। সিএনজি চালকরা জানিয়েছেন, প্রতি মাসে ওই টিভির স্টিকার ও চালকের আইডি কার্ড ব্যবহার বাবদ দুই হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। স্টিকার ও আইডি কার্ড দেখালে রাজধানীর সর্বত্রই ট্রাফিক সার্জেন্ট ও থানা পুলিশ সমীহ করে, আর কোনো রকম মাসোয়ারাও পুলিশকে দিতে হয় না। (সূত্রঃ দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ৫ জুলাই ২০১৫)
ঈদুল আযহা উপলক্ষে বাজারের সব চাইতে হৃষ্টপুষ্ট রোগমুক্ত গরু, ছাগল, ভেড়া এবং মহিষ বাংলাদেশে কুরবানী দেয়া হয়। হৃষ্টপুষ্ট এসব পশুর চামড়া খুবই উন্নতমানের। সমগ্র বিশ্বের বাজারে বাংলাদেশের পশুর এ চামড়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। উন্নতমানের এই চামড়াগুলোর আন্তর্জাতিক বাজার দর তুলনামূলক অনেক বেশি।
ট্যানারির মালিকরা সিন্ডিকেট করে চামড়ার কম মূল্য নির্ধারণ করায় কুরবানীর পশুর চামড়া সীমান্ত দিয়ে প্রতিবেশী দেশে পাচার হয়। এ সুযোগে প্রতিবেশী দেশের ব্যবসায়ীরা সীমান্ত জেলাগুলোতে বিপুল অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করে। স্থানীয়ভাবে নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি দাম দিয়ে তারা চামড়া কিনে। এতে দেশী ব্যবসায়ীরা সংকটে পড়ে। ফলে কুরবানীর চামড়া দেশে ধরে রাখা কঠিন হয়। এতে বিপর্যয়ের মুখে পড়ে মওসুমী ব্যবসায়ীরা।
এদিকে চামড়া পাচার রোধে সীমান্তের ১১টি পয়েন্ট শনাক্ত করা হয়। সাতক্ষীরার ভোমরা ও যশোরের বেনাপোল এর অন্যতম। চামড়া পাচার রোধে ভোমরা ও বেনাপোল সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়। সিন্ডিকেটের কবলে সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, যশোরসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে কুরবানীর পশুর চামড়া ভারতে পাচার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সক্রিয় থাকে দেশী-বিদেশী চামড়া পাচার সিন্ডিকেট।
গত পাঁচ বছরের মধ্যে ২০১৫ সালে চামড়ার দাম দেশে সবচেয়ে কম নির্ধারণ করা হয়েছে। ট্যানারি মালিকদের দাবি ২০১৪ সালের ঈদুল আযহার সময়ে সংগৃহীত চামড়ার ৪০ শতাংশের বেশি এখনও মওজুদ রয়েছে। এছাড়া মওসুমী ব্যবসায়ীরা ট্যানারি মালিকদের কাছে ২০১৪ সালের টাকা পাবে। এ অবস্থায় চামড়ার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা চামড়া নিয়ে এবার বিকল্প চিন্তা করে। এমন অবস্থায় প্রতিবেশী দেশের ব্যবসায়ীরা সীমান্ত জেলাগুলোতে বিপুল অংকের টাকা বিনিয়োগ করে। স্থানীয়ভাবে নির্ধারিত দামের চেয়ে দ্বিগুণ দাম দিয়ে তারা চামড়া কিনে। এতে দেশী ব্যবসায়ীরা সংকটে পড়েছে।
কোনো কোনো রুটে চামড়া পাচার হয় ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে তারও একটি তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেয়া হয়। সেখানে বলা হয়- যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, পাটকেলঘাটা, কালীগঞ্জ, নড়াইল, রাজারহাটের চামড়া বেনাপোল, সাতক্ষীরা ও কলারোয়া সীমান্ত পথ দিয়ে পাচারের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ঝিনাইদহ, মাগুরা, শৈলকুপা, কোটচাঁদপুর ও মহেশপুরের চামড়া জীবননগর সীমান্ত পথ দিয়ে পাচার হতে পারে। নাটোরের হাটের চামড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ ও রাজশাহীর গোদাগাড়ী সীমান্ত দিয়ে ও সিলেট মৌলভীবাজার জেলার চামড়া জাফলং, তামাবিল ও করিমগঞ্জ সীমান্ত পথ দিয়ে পাচার হয়। দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও জেলার চামড়া বিভিন্ন সীমান্ত পথ দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচারের সম্ভাবনা রয়েছে। এসব পয়েন্টে বিজিবির নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে। (সূত্রঃ দৈনিক সংগ্রাম ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫)
সুযোগ বুঝে কলারোয়ার কেড়াগাছির চারাবাড়ি ঘাট, কুটিবাড়ি ঘাট, রথখোলা ঘাট, গাড়াখালী ঘাট, দক্ষিণ ভাদিয়ালী ঘাট, চান্দা স্লুইচ গেট ঘাট, বড়ালী ঘাট, হিজলদী ভদ্রশাল ঘাট, হিজলদী শিশুতলা ঘাট, সুলতানপুর ঘাট, গোয়ালপাড়া ঘাট, চান্দুড়িয়া ঘাট দিয়ে মাড়োয়াড়িদের অনেক এজেন্ট বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
মাড়োয়াড়ি এজেন্টরা সীমান্তবর্তী কলারোয়া, সাতক্ষীরা, দেবহাটা, কালিগঞ্জ, শার্শা, ঝিকরগাছা উপজেলার গ্রামে গ্রামে ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে সর্ব বৃহৎ চামড়ার বাজার সাতক্ষীরার পারুলিয়া ও যশোরের রাজারহাটে চামড়া কেনার জন্য মওসুমী ব্যবসায়ীর হাতে টাকা তুলে দেয়। সরকারের বেঁধে দেয়া নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ফড়িয়া ব্যবসায়িরা বেশি দামে চামড়া কিনে।
২০১৫ সালের পশুর দাম আগের বছরের তুলনায় বেশি ছিল। সে হিসাবে চামড়ার দাম বেশি হওয়ারই কথা। বলার অপেক্ষা রাখে না, চামড়ার দাম কমিয়ে নির্ধারণের ক্ষেত্রে ট্যানারি শিল্পের মালিকদের স্বার্থটিই কেবল রক্ষা করা হয়েছে, উপেক্ষা করা হয়েছে মওসুমী ও সাধারণ ক্রেতার স্বার্থ। কোরবানির চামড়ার টাকা সাধারণভাবে দরিদ্রদের কল্যাণে ব্যয় করা হয়। দুঃখজনক যে, তাদের কথাও ভাবেননি ট্যানারি মালিকরা।
চামড়ার দাম কমানোর পেছনে মালিকদের যুক্তি হল, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম কমে গেছে। এ তথ্য যদি সত্যও হয়, তাহলেও চামড়া রফতানি করে মালিকরা যে মুনাফা করবেন তা দেশ থেকে চামড়া সংগ্রহের মূল্যের তুলনায় অনেক বেশি। আন্তর্জাতিক বাজারে বেশি রফতানি হয় ক্রাস্ট চামড়া। বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইন্সটিটিউটের (বিএফটিআই) এক রিপোর্টে দেখা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে ট্যানারির মালিকরা এক বর্গফুট ক্রাস্ট চামড়া রফতানি করেছেন গড়ে দেশীয় মুদ্রায় ১৩৪ টাকায়। চামড়ার ক্রয়মূল্য ৬৫ টাকা ধরে এর সঙ্গে আরও ৩০ শতাংশ প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যয় যোগ করলে মূল্য দাঁড়ায় ৮৫ টাকা। সেক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুট ক্রাস্ট চামড়ায় সব বাদ দিয়ে মুনাফা হয় ৪৮ টাকা।
শুধু তাই নয়, প্রতি কোরবানির ঈদ মওসুমে চামড়া কেনার জন্য ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয়া হয় সরকারি ব্যাংক থেকে। কারণ রফতানিকৃত চামড়ার ৮০ শতাংশই আসে কোরবানির পশু থেকে। দুর্ভাগ্যজনক যে, এত সুযোগ-সুবিধার পরও এক শ্রেণির উদ্যোক্তা ঋণের টাকা ফেরত দেন না। (সূত্রঃ দৈনিক যুগান্তর ৫ অক্টোবর ২০১৪)
সরকারি সিদ্ধান্তে ১ মে ২০১৫ থেকে কৃষকের কাছ থেকে ধান-চাল-গম সংগ্রহ শুরু করে খাদ্যগুদামগুলো। ৩০ আগস্ট পর্যন্ত এ খাদ্য সংগ্রহ চলে। ২০১৫ মওসুমে চাল কেনার টার্গেট ছিল ১০ লাখ, ধান এক লাখ ও গম আড়াই লাখ টন।
আমদানি করা নিম্নমানের গমের পর এবার নিম্নমানের ধান-চাল ঢুকেছে সরকারি খাদ্যগুদামে। সংশ্লিষ্ট এলাকার সরকারদলীয় প্রভাবশালী নেতারা নির্ধারণ করে দিয়েছেন, খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কার কাছ থেকে কী পরিমাণ ধান-চাল কিনতে পারবেন। এর জন্য সুপারিশকারী নেতারা নির্ধারিত টোকেন ব্যবহার করেন। ওই টোকেন নিয়ে যারা যাবেন, তাদের কাছ থেকেই ধান-চাল কিনতে বাধ্য ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। যারা এর প্রতিবাদ করছেন, তাদের ওপরই আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালায়। এসব হামলার ঘটনায় একাধিক মামলা হলেও হামলাকারীরা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। টোকেন নিয়ে আসা ব্যক্তিদের সরবরাহ করা অধিকাংশ ধান-চালই নিম্নমানের এবং আবর্জনাযুক্ত। বেশির ভাগই খাওয়ার অযোগ্য। এসব ধান-চাল কিনতে আপত্তি করায় সম্প্রতি একাধিক খাদ্যগুদামের কর্মকর্তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
জিবলু রহমান
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন