উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে সুবিধা নেয়ার স্বভাব বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মজ্জাগত। এই দলটি তার জন্মলগ্ন থেকেই নাশকতা ও ধ্বংসাত্মক রাজনীতির ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে এসেছে। মুসলিম লীগ থেকে আওয়ামী মুসলিম লীগ এবং আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে আওয়ামী লীগ গঠনের বিবর্তন প্রক্রিয়া এবং পাকিস্তান ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তার বিচরণ, সংঘাত, সংঘর্ষ, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, পরমত অসহিষ্ণুতা, অভ্যন্তরীণ কোন্দল, প্রতিদ্বন্দ্বী নিধন এবং বিদ্বিষ্ট আচরণে ভরপুর। ফ্যাসিবাদ দলটির প্রধান বৈশিষ্ট্য। প্রতারণা তার প্রধান কর্মকৌশল। বিরোধী দলের চলমান আন্দোলন মোকাবিলায় দলটির এই বৈশিষ্ট্যই ফুটে উঠেছে।
গত শুক্রবারের দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পাঁচ কলাম হেডিং-এ একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ প্রকাশ করেছে। সংবাদটির শিরোনাম হচ্ছে “জামিনের জন্য আওয়ামী লীগের প্রত্যয়নপত্র : বোমাবাজরা সৎ ও মেধাবী।” প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ঢাকাস্থ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ছাত্র মো: রেজাউল ইসলামকে মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ পেট্রোল বোমাসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করেছিল। এই ঘটনার পর রেজাউলের আইনজীবী আদালতে আসামীর জামিনের পক্ষে একটি প্রত্যয়নপত্র জমা দেন। আওয়ামী লীগের পাবনা সদর উপজেলা সভাপতি আলহাজ্ব মো: মোশাররফ হোসেন স্বাক্ষরিত এই প্রত্যয়নপত্রে বলা হয়, “আসামী রেজাউল ইসলাম আওয়ামী লীগের সদস্য। সে সৎ ও মেধাবী। সে কোন রাষ্ট্র বিরোধী কাজে জড়িত নয়।”
শুধু মোহাম্মদপুর থানার এই একটি ঘটনাই নয়, সারা দেশে নাশকতার সাথে জড়িত এমন শত শত আসামীর পক্ষে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রত্যয়নপত্র দিয়ে জামিনে ছাড়িয়ে নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ প্রতিদিন নাটোরের মশিন্দা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কর্তৃক প্রদত্ত এ ধরনের একটি প্রত্যয়নপত্রের ফটোকপিও প্রকাশ করেছে এবং তাদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলেছে যে, সারা দেশে হরতাল-অবরোধ চলাকালে ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ-বোমাবাজি প্রভৃতি মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামীদের এভাবে প্রত্যয়নপত্র দিয়ে কোর্ট থেকে জামিন করিয়ে নিচ্ছে এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে যে, সরকারপন্থী হিসেবে পরিচিত এলাকার আইনজীবীরাই আসামীদের পক্ষে কাজ করেন। পত্রিকাটি আরো বলেছে যে, ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিভিন্ন নাশকতার মামলায় আসামী পক্ষ পাঁচশতাধিক প্রত্যয়নপত্র দাখিল করেছে। প্রত্যয়ন পত্রসমূহের কোন কোনটিতে আওয়ামী লীগ নেতারা বোমাবাজদের সৎ ও মেধাবী হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদের জামিনের সুপারিশ করেন। আবার কোন কোনটিতে এই মর্মেও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয় যে, আসামী ছাত্রলীগ, যুবলীগ কিংবা আওয়ামী লীগের সদস্য। এইসব মামলায় অভিযুক্তদের পুলিশের পক্ষ থেকেও পক্ষপাতিত্ব করে বিনা শাস্তিতে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। তারা মামলা নেয়ার বা দেয়ার সময় অভিযুক্তদের নাম ঠিকানার হেরফের করেন। পূর্ণাঙ্গ নামের পরিবর্তে সংক্ষিপ্ত নাম দেন। বাবার নাম ও বাড়ির ঠিকানায় ভুল থাকে এবং সাথে কোন জব্দ তালিকাও থাকে না। ফলে মামলা আদালতে টিকে না।
৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবারের পত্রিকাসমূহে যানবাহনে বোমা হামলার সাথে ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতার আরও বেশ কিছু রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত এসব রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে, ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা বোমা বানাতে গিয়ে কিংবা বোমা হামলা করতে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিপুল সংখ্যায় হতাহতও হচ্ছে এবং পুলিশ তাদের গ্রেফতারও করছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের কর্মী হওয়ায় তাদের ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠছে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ছোনাব এলাকায় বোমা বানাতে গিয়ে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের চার কর্মী গুরুতর আহত হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতা শাহীন মিয়ার ঝুটের গুদামে বোমা বানাতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ফেইস বুকের অফিসিয়াল পেইজে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ ও হামলার দায় স্বীকার করে পোস্ট দেয়া হয়েছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথ দিঘী ইউনিয়নের কেচকিমোড় এলাকা থেকে পেট্রোল বোমাসহ দুই যুবলীগ নেতাকে পুলিশ আটক করেছে। ফেব্রুয়ারির দুই তারিখে পেট্রোল বোমা, ককটেল ও দেশীয় অস্ত্রসহ বিজিবি ৬ জন আওয়ামী লীগ কর্মীকে আটক করেছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের নেতারা তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে বলে জানা যায়।
লক্ষ্মীপুরে গত ১ ফেব্রুয়ারি যাত্রীবাহী সিএনজি ও পিকআপ ভ্যানে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপের দায়ে পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগ নেতা কামরুল হোসেন, যুবলীগ কর্মী পিচ্চি রুবেল, শামীম, মাসুদ ও জেলা ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক মুরাদ হোসেন জয়সহ ১০/১২ জন ধরা পড়ে। কিন্তু পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রতিবাদ করলেও তা কোন কাজে আসেনি।
গতকালও দেশের জাতীয় দৈনিকসমূহে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে যুবলীগ কার্যালয় থেকে পুলিশ কর্তৃক ১০টি পেট্রোলবোমা উদ্ধারের সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ অনুযায়ী পুলিশ বোমা প্রাপ্তির স্থানটিকে পুরাতন ভবনের বাথ রুম এবং ক্লাব ঘরের পিছনে টিনের ছাউনি দেয়া ঘর বললেও প্রকৃতপক্ষে সেটি হচ্ছে ২৭ নং দক্ষিণ আগ্রাবাদস্থ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ওয়ার্ড অফিস। এই অফিসে সার্বক্ষণিকভাবে এই তিন লীগের নেতাকর্মীদের মিটিং ও আড্ডা চলে। পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। সারা দেশ থেকেই এই ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
শুধু মোহাম্মদপুর থানার এই একটি ঘটনাই নয়, সারা দেশে নাশকতার সাথে জড়িত এমন শত শত আসামীর পক্ষে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রত্যয়নপত্র দিয়ে জামিনে ছাড়িয়ে নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ প্রতিদিন নাটোরের মশিন্দা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কর্তৃক প্রদত্ত এ ধরনের একটি প্রত্যয়নপত্রের ফটোকপিও প্রকাশ করেছে এবং তাদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলেছে যে, সারা দেশে হরতাল-অবরোধ চলাকালে ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ-বোমাবাজি প্রভৃতি মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামীদের এভাবে প্রত্যয়নপত্র দিয়ে কোর্ট থেকে জামিন করিয়ে নিচ্ছে এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে যে, সরকারপন্থী হিসেবে পরিচিত এলাকার আইনজীবীরাই আসামীদের পক্ষে কাজ করেন। পত্রিকাটি আরো বলেছে যে, ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিভিন্ন নাশকতার মামলায় আসামী পক্ষ পাঁচশতাধিক প্রত্যয়নপত্র দাখিল করেছে। প্রত্যয়ন পত্রসমূহের কোন কোনটিতে আওয়ামী লীগ নেতারা বোমাবাজদের সৎ ও মেধাবী হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদের জামিনের সুপারিশ করেন। আবার কোন কোনটিতে এই মর্মেও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয় যে, আসামী ছাত্রলীগ, যুবলীগ কিংবা আওয়ামী লীগের সদস্য। এইসব মামলায় অভিযুক্তদের পুলিশের পক্ষ থেকেও পক্ষপাতিত্ব করে বিনা শাস্তিতে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। তারা মামলা নেয়ার বা দেয়ার সময় অভিযুক্তদের নাম ঠিকানার হেরফের করেন। পূর্ণাঙ্গ নামের পরিবর্তে সংক্ষিপ্ত নাম দেন। বাবার নাম ও বাড়ির ঠিকানায় ভুল থাকে এবং সাথে কোন জব্দ তালিকাও থাকে না। ফলে মামলা আদালতে টিকে না।
৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবারের পত্রিকাসমূহে যানবাহনে বোমা হামলার সাথে ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতার আরও বেশ কিছু রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত এসব রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে, ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা বোমা বানাতে গিয়ে কিংবা বোমা হামলা করতে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিপুল সংখ্যায় হতাহতও হচ্ছে এবং পুলিশ তাদের গ্রেফতারও করছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের কর্মী হওয়ায় তাদের ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠছে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ছোনাব এলাকায় বোমা বানাতে গিয়ে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের চার কর্মী গুরুতর আহত হয়েছে। ছাত্রলীগ নেতা শাহীন মিয়ার ঝুটের গুদামে বোমা বানাতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ফেইস বুকের অফিসিয়াল পেইজে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ ও হামলার দায় স্বীকার করে পোস্ট দেয়া হয়েছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথ দিঘী ইউনিয়নের কেচকিমোড় এলাকা থেকে পেট্রোল বোমাসহ দুই যুবলীগ নেতাকে পুলিশ আটক করেছে। ফেব্রুয়ারির দুই তারিখে পেট্রোল বোমা, ককটেল ও দেশীয় অস্ত্রসহ বিজিবি ৬ জন আওয়ামী লীগ কর্মীকে আটক করেছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের নেতারা তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে বলে জানা যায়।
লক্ষ্মীপুরে গত ১ ফেব্রুয়ারি যাত্রীবাহী সিএনজি ও পিকআপ ভ্যানে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপের দায়ে পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগ নেতা কামরুল হোসেন, যুবলীগ কর্মী পিচ্চি রুবেল, শামীম, মাসুদ ও জেলা ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক মুরাদ হোসেন জয়সহ ১০/১২ জন ধরা পড়ে। কিন্তু পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রতিবাদ করলেও তা কোন কাজে আসেনি।
গতকালও দেশের জাতীয় দৈনিকসমূহে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে যুবলীগ কার্যালয় থেকে পুলিশ কর্তৃক ১০টি পেট্রোলবোমা উদ্ধারের সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ অনুযায়ী পুলিশ বোমা প্রাপ্তির স্থানটিকে পুরাতন ভবনের বাথ রুম এবং ক্লাব ঘরের পিছনে টিনের ছাউনি দেয়া ঘর বললেও প্রকৃতপক্ষে সেটি হচ্ছে ২৭ নং দক্ষিণ আগ্রাবাদস্থ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ওয়ার্ড অফিস। এই অফিসে সার্বক্ষণিকভাবে এই তিন লীগের নেতাকর্মীদের মিটিং ও আড্ডা চলে। পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। সারা দেশ থেকেই এই ধরনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
অপরাধীরা পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে। যাদের আটক করা হচ্ছে তারা হয় জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মী, নয়তো বিএনপি-ছাত্রদলের সাথে সম্পৃক্ত অথবা সাধারণ মানুষ, নিরীহ পথচারী। আবার এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের কোথাও কোথাও গুম করে দেয়া হচ্ছে, আবার কোথাও ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে গুলী করে হত্যা করা হচ্ছে। প্রকৃত অপরাধীরা উৎসাহিত হচ্ছে। পুলিশ সদর দফতরের বরাত দিয়ে প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুযায়ী পুলিশ প্রশাসন রাজধানীর ২৯টি এলাকায় নাশকতার সাথে জড়িত বলে কথিত জামায়াত-বিএনপি’র ১০৪৬ জনের একটি তালিকা প্রণয়ন করেছে। এর মধ্যে ১০০ জন বোমাবাজকে গ্রেফতার করার জন্য থানাগুলোকে আদেশ দেয়া হয়েছে। যতদূর জানা গেছে ক্ষমতাসীন দলের কোনও সন্ত্রাসী বোমাবাজের নাম এখনো তালিকাভুক্ত করা হয়নি। এখানে মাঠের বাস্তবতা এবং পুলিশ প্রশাসনের বাস্তবতার সাথে কোনও মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বোমাবাজ যারা ধরা পড়ছে এবং ধরার বাইরে থেকে অহরহ সন্ত্রাস- নৈরাজ্য চালিয়ে যাচ্ছে তারা তালিকাভুক্ত হবে না কেন? পুলিশকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে সহযোগিতা করার জন্য? গত পরশু অভ্যন্তরীণ কোন্দলে নিহত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র জুবায়ের হত্যা মামলার রায় ঘোষিত হয়েছে। এতে ছাত্রলীগের ৫ জন নেতাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে এবং ছয়জনকে দেয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদন্ড। এরা কি খুনি সন্ত্রাসী নয়? ঢাকাসহ সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাদের সন্ত্রাসী তান্ডব, প্রতিপক্ষের ওপর হামলার সচিত্র রিপোর্ট কি প্রশাসন দেখছেন না? সম্ভবত গত বছর পত্রপত্রিকায় এই মর্মে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছিল যে, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা এবং বিরোধী দল দমনের জন্য ক্ষমতাসীন দল তাদের ছাত্র সংগঠন এবং যুব সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মীকে গেরিলা কর্মকান্ডের উপর প্রতিবেশী একটি দেশ থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ দিয়ে সারা দেশে কাজে লাগিয়ে দিয়েছে। বিরোধী দলের অবরোধ-হরতালে আমরা কি এখন ঐ সব প্রশিক্ষিত ব্যক্তির তান্ডবের প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি? সরকার বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হুকুমের আসামী বানাচ্ছেন। যদি তর্কের খাতিরে ধরে নেয়া হয় যে, তারা হুকুম দিয়েছেন। তাহলেও দেখা যায় যে, এই হুকুম তামিল করছেন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা। এই এক আজব দেশ। দেশকে সরকার কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন তা ভেবে দেখা দরকার। দেশব্যাপী সন্ত্রাস ও বোমাবাজি করছে ক্ষমতাসীনদের লোকেরা আর দোষ চাপানো হচ্ছে জামায়াত-শিবির ও বিএনপি-ছাত্রদলের ওপর। এর বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া দরকার বলে আমি মনে করি। উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর প্রবণতা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলী চলতে পারে না।
১৯৭১ সালের মার্চ মাসে প্রদত্ত মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাষণের অংশ বিশেষ আমি এখানে উদ্ধৃত করছি। পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছিলেন: “আমার পয়সা দিয়ে অস্ত্র কিনেছি বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য। আজ সেই অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে আমার দেশের গরীব-দুঃখী, নিরস্ত্র মানুষের বিরুদ্ধে। তাদের বুকের উপর হচ্ছে গুলি।” পরিতাপের বিষয় হচ্ছে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে তার দল ক্ষমতায় এসে পাকিস্তানী সৈন্যদের ট্রাডিশনই অনুশীলন করেছিলেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দলীয় বাহিনী ও রক্ষী বাহিনীর বর্বরতা মানুষ ভুলেনি। এখন প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহারের উন্মুক্ত লাইসেন্স প্রদান এই কথাগুলোকেই স্মরণ করিয়ে দেয়। সীমান্তে পাহারা থেকে বিজিবিকে উঠিয়ে এনে জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষের রাজস্বের অর্থে কেনা অস্ত্র তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার অবশ্যই অমার্জনীয় একটি অপরাধ।
সরকার জামায়াত ও বিএনপিকে নির্মূল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের শীর্ষ নেতৃত্ব, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী সব সময় এই ঘোষণা দিচ্ছেন। জামায়াত-শিবিরকে নির্মূলের মাধ্যমে এদেশে ইসলামী আন্দোলনকে ধ্বংস করে দেয়া এবং তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক শক্তি বিএনপিকে ধ্বংস করার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছেন। তথাকথিত যুদ্ধাপরাধের মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগে তারা জামায়াতের প্রবীণ, অভিজ্ঞ, ইসলামী জ্ঞানে সমৃদ্ধ দক্ষ জনশক্তিকে ফাঁসি দিয়ে নির্মূল করবেন। কিন্তু ১৯৭১ সালের পরে যাদের জন্ম হয়েছে কিংবা ঐ সময়ে যারা শিশু ছিলেন তাদের কিভাবে নির্মূল করবেন? তাদের এবং উঠতি নেতৃত্বের উৎস ধ্বংস করার জন্য একটি অছিলা দরকার। নিজেরা সন্ত্রাস-বোমাবাজি করে তাদের ওপর দায় চাপিয়ে তারা ঐ অছিলাই সৃষ্টি করছেন বলে মনে হয়। এই অছিলাকে ব্যবহার করেই তারা বিচারবহির্ভূতভাবে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের হত্যা করছেন।
একই অবস্থা চলছে বিএনপির ক্ষেত্রেও। আদর্শিক এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করে এদেশে নির্বিঘ্নে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন এই আশা দুরাশা বলেই আমার বিশ্বাস। মিথ্যার আবরণে সত্যকে সন্দেহযুক্ত করে এবং সত্যের বিরোধিতা করে অতীতে কেউ টিকে থাকতে পারেননি, এখনো পারবেন না। দেশবাসীর উচিত ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে আল্লাহ্ সাহায্য কামনা করা এবং অভীষ্ট লক্ষ্যে আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়া।
১৯৭১ সালের মার্চ মাসে প্রদত্ত মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাষণের অংশ বিশেষ আমি এখানে উদ্ধৃত করছি। পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছিলেন: “আমার পয়সা দিয়ে অস্ত্র কিনেছি বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য। আজ সেই অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে আমার দেশের গরীব-দুঃখী, নিরস্ত্র মানুষের বিরুদ্ধে। তাদের বুকের উপর হচ্ছে গুলি।” পরিতাপের বিষয় হচ্ছে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে তার দল ক্ষমতায় এসে পাকিস্তানী সৈন্যদের ট্রাডিশনই অনুশীলন করেছিলেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দলীয় বাহিনী ও রক্ষী বাহিনীর বর্বরতা মানুষ ভুলেনি। এখন প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহারের উন্মুক্ত লাইসেন্স প্রদান এই কথাগুলোকেই স্মরণ করিয়ে দেয়। সীমান্তে পাহারা থেকে বিজিবিকে উঠিয়ে এনে জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষের রাজস্বের অর্থে কেনা অস্ত্র তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার অবশ্যই অমার্জনীয় একটি অপরাধ।
সরকার জামায়াত ও বিএনপিকে নির্মূল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের শীর্ষ নেতৃত্ব, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী সব সময় এই ঘোষণা দিচ্ছেন। জামায়াত-শিবিরকে নির্মূলের মাধ্যমে এদেশে ইসলামী আন্দোলনকে ধ্বংস করে দেয়া এবং তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক শক্তি বিএনপিকে ধ্বংস করার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছেন। তথাকথিত যুদ্ধাপরাধের মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগে তারা জামায়াতের প্রবীণ, অভিজ্ঞ, ইসলামী জ্ঞানে সমৃদ্ধ দক্ষ জনশক্তিকে ফাঁসি দিয়ে নির্মূল করবেন। কিন্তু ১৯৭১ সালের পরে যাদের জন্ম হয়েছে কিংবা ঐ সময়ে যারা শিশু ছিলেন তাদের কিভাবে নির্মূল করবেন? তাদের এবং উঠতি নেতৃত্বের উৎস ধ্বংস করার জন্য একটি অছিলা দরকার। নিজেরা সন্ত্রাস-বোমাবাজি করে তাদের ওপর দায় চাপিয়ে তারা ঐ অছিলাই সৃষ্টি করছেন বলে মনে হয়। এই অছিলাকে ব্যবহার করেই তারা বিচারবহির্ভূতভাবে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের হত্যা করছেন।
একই অবস্থা চলছে বিএনপির ক্ষেত্রেও। আদর্শিক এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করে এদেশে নির্বিঘ্নে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন এই আশা দুরাশা বলেই আমার বিশ্বাস। মিথ্যার আবরণে সত্যকে সন্দেহযুক্ত করে এবং সত্যের বিরোধিতা করে অতীতে কেউ টিকে থাকতে পারেননি, এখনো পারবেন না। দেশবাসীর উচিত ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে আল্লাহ্ সাহায্য কামনা করা এবং অভীষ্ট লক্ষ্যে আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়া।
ড. মোঃ নূরুল আমিন
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন