‘পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ’ শিরোনামে একটি খবর মুদ্রিত হয়েছে প্রথম আলো পত্রিকায়। ১৪ ফেব্রুয়ারি মুদ্রিত খবরটিতে বলা হয়, রাজধানীর দারুস সালাম থানার দক্ষিণ বিশিলে রাস্তায় বন্ধুর সঙ্গে আলাপকালে গত ১১ জানুয়ারি সৌদী প্রবাসী বাদল খানকে আটক করেন ওই থানার এস আই মশিউর রহমান। বাদল প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করেন, আটকের পর এসআই মশিউর তার কাছে টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে ইয়াবা এবং মানি লন্ডারিং মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখান। পরে পকেট থেকে মানি ব্যাগ বের করে সেখানে থাকা আড়াই হাজার টাকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেন। এসআই মশিউর প্রথমে এ অভিযোগ অস্বীকার করলেও শুক্রবার রাতে প্রথম আলোর প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে জানান, তিনি এ বিষয়টি সমাধানের জন্য প্রস্তুত আছেন। পুলিশের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে আটক করে টাকা আদায় এবং হয়রানির অভিযোগ পুরানো। তবে ২০ দলীয় জোটের অবরোধ শুরুর পর থেকে আটক বাণিজ্যের পাশাপাশি হয়রানির অভিযোগ বহুগুণ বেড়ে গেছে। রাজধানীর ৯টি থানা এলাকা থেকে পাওয়া অভিযোগ নিয়ে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে অনুসন্ধান করে এর সত্যতা মেলে। দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকেও এ ধরনের অভিযোগ আসছে।
প্রথম আলোর পক্ষ থেকে গত কয়েকদিন বিভিন্ন থানায় গিয়ে ৩৫ জন ভুক্তভোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিনা কারণে তাদের রাস্তা থেকে আটক করে থানায় নেয়া হয়েছে। তাদের কাউকে কাউকে বলা হচ্ছে বিএনপি বা জামায়াত-শিবিরের কর্মী। হরতাল-অবরোধে নাশকতার মামলায় গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করা হচ্ছে। যারা চাহিদা মত টাকা দিতে পারছে না তাদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হচ্ছে। আদালতে জামিন না পেলে যেতে হচ্ছে কারাগারে। দাবীমত টাকা না পেয়ে আটক এক যুবককে হত্যার অভিযোগও উঠেছে পল্লবী থানার ৩ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী অনেকে হয়রানির ভয়ে নাম প্রকাশ করতে চাননি। উল্লেখ্য যে, গত ৬ জানুয়ারি অবরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজধানীতে গ্রেফতার হয়েছেন এক হাজার ২০০ জন। সারাদেশে গ্রেফতারের সংখ্যা তের হাজার ৪২ জন। এদের একটি অংশ এই আটক বাণিজ্যের শিকার বলে জানা গেছে।
বর্তমান রাজনৈতিক সংকটে হরতাল-অবরোধ ও পুলিশী অভিযানে জনগণ এক আতঙ্কের পরিবেশে বসবাস করছে। এর সাথে আটক বাণিজ্যের হয়রানি যুক্ত হওয়ায় জনমনে হতাশার মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা জানি, পুলিশের দায়িত্ব দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন। এই দায়িত্ব পালন করতে গেলে অনুরাগ-বিরাগের মনোভাব পরিহার করে আইনের বিধি-বিধান মেনে কাজ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে সততা ও নীতিবোধও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কাক্সিক্ষত এই সব বিষয়ের বদলে পুলিশ যদি বর্তমান সংকটের সুুযোগে বাড়তি ক্ষমতা ও প্রশ্রয় পেয়ে অর্থের লালসায় সাধারণ মানুষকে হয়রানি করতে বেপরোয়া হয়ে ওঠে, তাহলে দেশে সংকটের মাত্রা আরো বৃদ্ধি পাবে। পুলিশের গ্রেফতার বাণিজ্যের নিষ্ঠুরতা এখনই বন্ধ করা না গেলে পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থার মাত্রা আরো হ্রাস পাবে। ফলে এমন পুলিশ দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন তথা সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ কতটা সম্ভব হবে তা ভেবে দেখার মত একটি বিষয় হয়ে উঠেছে। এ প্রসঙ্গে পুলিশের সাবেক আইজি এএসএম শাহজাহান জানান, যখন এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখন কর্মকর্তাদের উচিত পুলিশ প্রবিধান অনুসারে যেভাবে জবাবদিহির ব্যবস্থা আছে, সেটা কড়াকড়ি করা এবং কর্মকর্তাদের নজরদারি বাড়ানো। তবে পুলিশের কর্মকর্তারা পেশাগত এই দায়িত্ব পালনে কতটা সমর্থ হবেন, সে ব্যাপারে সন্দেহ আছে। কারণ পুলিশকে অনুরাগ-বিরাগের বাইরে রেখে পেশাগত দায়িত্ব পালনের যে পরিবেশ দেয়া প্রয়োজন ছিল, সরকার তা দিতে সমর্থ হয়নি। বরং রাষ্ট্রের এ বাহিনীকে অনেক ক্ষেত্রেই দলীয় বিবেচনায় ব্যবহার করা হয়েছে। এবং অনেক ক্ষেত্রে পুলিশকেও রাষ্ট্রের বাহিনীর বদলে দলীয় কর্মীর মত আচরণ করতে দেখা গেছে। এটা দেশ ও জাতির জন্য এক মন্দ চিত্র। এই চিত্র বদলানোর দায়িত্ব সরকারের। সরকার সংবিধান ও শপথের আলোকে কাজ করলে পুলিশের মধ্যেও গুণগত পরিবর্তন আসতে পারে। সরকারের সেই সুমতি হয় কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।
প্রথম আলোর পক্ষ থেকে গত কয়েকদিন বিভিন্ন থানায় গিয়ে ৩৫ জন ভুক্তভোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিনা কারণে তাদের রাস্তা থেকে আটক করে থানায় নেয়া হয়েছে। তাদের কাউকে কাউকে বলা হচ্ছে বিএনপি বা জামায়াত-শিবিরের কর্মী। হরতাল-অবরোধে নাশকতার মামলায় গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করা হচ্ছে। যারা চাহিদা মত টাকা দিতে পারছে না তাদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হচ্ছে। আদালতে জামিন না পেলে যেতে হচ্ছে কারাগারে। দাবীমত টাকা না পেয়ে আটক এক যুবককে হত্যার অভিযোগও উঠেছে পল্লবী থানার ৩ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী অনেকে হয়রানির ভয়ে নাম প্রকাশ করতে চাননি। উল্লেখ্য যে, গত ৬ জানুয়ারি অবরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজধানীতে গ্রেফতার হয়েছেন এক হাজার ২০০ জন। সারাদেশে গ্রেফতারের সংখ্যা তের হাজার ৪২ জন। এদের একটি অংশ এই আটক বাণিজ্যের শিকার বলে জানা গেছে।
বর্তমান রাজনৈতিক সংকটে হরতাল-অবরোধ ও পুলিশী অভিযানে জনগণ এক আতঙ্কের পরিবেশে বসবাস করছে। এর সাথে আটক বাণিজ্যের হয়রানি যুক্ত হওয়ায় জনমনে হতাশার মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা জানি, পুলিশের দায়িত্ব দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন। এই দায়িত্ব পালন করতে গেলে অনুরাগ-বিরাগের মনোভাব পরিহার করে আইনের বিধি-বিধান মেনে কাজ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে সততা ও নীতিবোধও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কাক্সিক্ষত এই সব বিষয়ের বদলে পুলিশ যদি বর্তমান সংকটের সুুযোগে বাড়তি ক্ষমতা ও প্রশ্রয় পেয়ে অর্থের লালসায় সাধারণ মানুষকে হয়রানি করতে বেপরোয়া হয়ে ওঠে, তাহলে দেশে সংকটের মাত্রা আরো বৃদ্ধি পাবে। পুলিশের গ্রেফতার বাণিজ্যের নিষ্ঠুরতা এখনই বন্ধ করা না গেলে পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থার মাত্রা আরো হ্রাস পাবে। ফলে এমন পুলিশ দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন তথা সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ কতটা সম্ভব হবে তা ভেবে দেখার মত একটি বিষয় হয়ে উঠেছে। এ প্রসঙ্গে পুলিশের সাবেক আইজি এএসএম শাহজাহান জানান, যখন এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখন কর্মকর্তাদের উচিত পুলিশ প্রবিধান অনুসারে যেভাবে জবাবদিহির ব্যবস্থা আছে, সেটা কড়াকড়ি করা এবং কর্মকর্তাদের নজরদারি বাড়ানো। তবে পুলিশের কর্মকর্তারা পেশাগত এই দায়িত্ব পালনে কতটা সমর্থ হবেন, সে ব্যাপারে সন্দেহ আছে। কারণ পুলিশকে অনুরাগ-বিরাগের বাইরে রেখে পেশাগত দায়িত্ব পালনের যে পরিবেশ দেয়া প্রয়োজন ছিল, সরকার তা দিতে সমর্থ হয়নি। বরং রাষ্ট্রের এ বাহিনীকে অনেক ক্ষেত্রেই দলীয় বিবেচনায় ব্যবহার করা হয়েছে। এবং অনেক ক্ষেত্রে পুলিশকেও রাষ্ট্রের বাহিনীর বদলে দলীয় কর্মীর মত আচরণ করতে দেখা গেছে। এটা দেশ ও জাতির জন্য এক মন্দ চিত্র। এই চিত্র বদলানোর দায়িত্ব সরকারের। সরকার সংবিধান ও শপথের আলোকে কাজ করলে পুলিশের মধ্যেও গুণগত পরিবর্তন আসতে পারে। সরকারের সেই সুমতি হয় কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন