ঈদ মোবারক। পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে সবাইকে জানাই ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মুসলিম জীবনে শুধু আনন্দ বিনোদনের বিষয় নয়। ঈদের সাথে জড়িয়ে আছে পবিত্র চেতনা ও দায়িত্ববোধ। ঈদুল আযহার প্রধান বিষয় হলো কুরবানী। আল্লাহতায়ালার নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে চতুষ্পদ হালাল জন্তু আল্লাহর নামে জবাই করার মাধ্যমে আমরা কুরবানীর দায়িত্ব পালন করে থাকি। ইমাম আবু হানিফা (র.) ও ইমাম ইবনে তাইমিয়া (র.)-এর মতে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য কুরবানী করা ওয়াজিব। আর সাহাবী আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে বলা হয়, “যে ব্যক্তি কুরবানীর পশু ক্রয় করবার মতো আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন করলো অথচ কুরবানী দিল না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের ধারে কাছেও না আসে।” (ইবনে মাজাহ) রাসূল (সা.)-এর এমন বক্তব্য থেকে কুরবানীর গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়।
মুসলিম উম্মাহর মধ্যে কুরবানীর ঈদের যে প্রচলন রয়েছে তার সাথে জড়িয়ে আছে এক গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস। সূরা সাফ্ফাত-এর ১০২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “সেই ছেলে যখন পিতার সাথে দৌড়ঝাঁপ করার বয়স পর্যন্ত পৌঁছল, তখন (একদিন) ইবরাহিম তাঁর পুত্রকে বললেন, হে প্রিয় বৎস! আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আমি তোমাকে জবাই করছি। এখন তুমি বল, তোমার কী অভিমত? ছেলে বলল, আব্বাজান! আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনাকে যে হুকুম দেয়া হয়েছে, আপনি তাই করুন। ইনশাআল্লাহ আপনি আমাকে সবরকারী পাবেন।” এরপর হযরত ইবরাহিম (আ.) পুত্র ইসমাইল (আ.) এর গলায় ছুরি চালিয়ে দিলেন। পিতা-পুত্রের এমন অভূতপূর্ব আনুগত্য দেখে মহান আল্লাহ ইসমাইল (আ.)-এর বদলে একটি দুম্বা জবাই-এর ব্যবস্থা করে দিলেন। বেঁচে গেলেন ইসমাইল (আ.)। এভাবেই ঈমানের অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন পিতা-পুত্র দু’জনেই। এ ঘটনা মানবজাতির জন্য অবিস্মরণীয় এক ইতিহাস হয়ে রইল। মহান সে ঘটনার ধারাবাহিকতায় মুসলিম উম্মাহ প্রতিবছর পালন করে থাকে কুরবানীর ঈদ। কুরবানীর ঈদের মূল বার্তা হলো, মহান আল্লাহর আনুগত্য ও সন্তুষ্টির জন্য প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে যে কোনো মুসলমানকে। আর কুরবানীর ঈদ যে শুধু পশুর গোশত ও রক্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় তা উপলব্ধি করা যায় সূরা হাজ্জ-এর ৩৭ নম্বর আয়াতে। উক্ত আয়াতে বলা হয়, “(কুরবানীর পশুর) গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, তার কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া।”
কুরবানী এবং কুরবানী ঈদ প্রসঙ্গে আমরা পবিত্র কুরআন ও হাদিস থেকে যে বার্তা পেলাম তা ভেবে দেখার মতো। কুরবানী ঈদ এমন একটি ঈদ, যা আমাদের পশু কুরবানীর প্রতীকের মাধ্যমে জীবন-সংগ্রামে মহান আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মানতে গিয়ে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে গিয়ে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের শিক্ষা দেয়। আর কুরবানীর ঈদে আমরা জবাইকৃত পশুর গোশত আত্মীয়-স্বজন ও দরিদ্র মানুষদের মধ্যে যেভাবে বণ্টন করে থাকি, তা সমাজে সম্পদ ও আনন্দকে ভাগ করে দেয়ার চেতনা জাগ্রত করে দেয়। তাই বলতে হয়, কুরবানীর ঈদ আনন্দ-বিনোদনের সাথে আমাদের মানুষ হিসেবে মানুষের প্রতি সামাজিক ও মানবিক দায়িত্ব পালনেও উদ্বুদ্ধ করে থাকে। আনন্দ উৎসবের এমন ব্যতিক্রমী উদাহরণ পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি লক্ষ্য করা যাবে না। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কুরবানীর ঈদ আমাদের যে আহ্বান জানিয়ে যায়, যে চেতনা জাগ্রত করতে চায়, তা আমরা বাস্তব জীবনে কতটা চর্চা করছি? আমাদের পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে আমরা অনাকাক্সিক্ষত যেসব চিত্র লক্ষ্য করছি, তার সাথে তো কুরবানীর চেতনার কোনো মিল নেই। আমাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে অনাকাক্সিক্ষত যেসব চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সেখানে কুরবানীর ত্যাগ-তিতীক্ষা ও তাকওয়ার চেতনা কোথায়? ঈদ আসে ঈদ যায়, কিন্তু ঈদের বার্তা আমরা সবাই গ্রহণ করি না। তাই তো ঈদের ফল্গুধারায় পুরো জাতি আনন্দমুখর হতে পারছে না। এই দৈন্য দূর করাই এখন আমাদের জাতীয় কর্তব্য।
মুসলিম উম্মাহর মধ্যে কুরবানীর ঈদের যে প্রচলন রয়েছে তার সাথে জড়িয়ে আছে এক গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস। সূরা সাফ্ফাত-এর ১০২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “সেই ছেলে যখন পিতার সাথে দৌড়ঝাঁপ করার বয়স পর্যন্ত পৌঁছল, তখন (একদিন) ইবরাহিম তাঁর পুত্রকে বললেন, হে প্রিয় বৎস! আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আমি তোমাকে জবাই করছি। এখন তুমি বল, তোমার কী অভিমত? ছেলে বলল, আব্বাজান! আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনাকে যে হুকুম দেয়া হয়েছে, আপনি তাই করুন। ইনশাআল্লাহ আপনি আমাকে সবরকারী পাবেন।” এরপর হযরত ইবরাহিম (আ.) পুত্র ইসমাইল (আ.) এর গলায় ছুরি চালিয়ে দিলেন। পিতা-পুত্রের এমন অভূতপূর্ব আনুগত্য দেখে মহান আল্লাহ ইসমাইল (আ.)-এর বদলে একটি দুম্বা জবাই-এর ব্যবস্থা করে দিলেন। বেঁচে গেলেন ইসমাইল (আ.)। এভাবেই ঈমানের অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন পিতা-পুত্র দু’জনেই। এ ঘটনা মানবজাতির জন্য অবিস্মরণীয় এক ইতিহাস হয়ে রইল। মহান সে ঘটনার ধারাবাহিকতায় মুসলিম উম্মাহ প্রতিবছর পালন করে থাকে কুরবানীর ঈদ। কুরবানীর ঈদের মূল বার্তা হলো, মহান আল্লাহর আনুগত্য ও সন্তুষ্টির জন্য প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে যে কোনো মুসলমানকে। আর কুরবানীর ঈদ যে শুধু পশুর গোশত ও রক্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় তা উপলব্ধি করা যায় সূরা হাজ্জ-এর ৩৭ নম্বর আয়াতে। উক্ত আয়াতে বলা হয়, “(কুরবানীর পশুর) গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, তার কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া।”
কুরবানী এবং কুরবানী ঈদ প্রসঙ্গে আমরা পবিত্র কুরআন ও হাদিস থেকে যে বার্তা পেলাম তা ভেবে দেখার মতো। কুরবানী ঈদ এমন একটি ঈদ, যা আমাদের পশু কুরবানীর প্রতীকের মাধ্যমে জীবন-সংগ্রামে মহান আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মানতে গিয়ে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে গিয়ে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের শিক্ষা দেয়। আর কুরবানীর ঈদে আমরা জবাইকৃত পশুর গোশত আত্মীয়-স্বজন ও দরিদ্র মানুষদের মধ্যে যেভাবে বণ্টন করে থাকি, তা সমাজে সম্পদ ও আনন্দকে ভাগ করে দেয়ার চেতনা জাগ্রত করে দেয়। তাই বলতে হয়, কুরবানীর ঈদ আনন্দ-বিনোদনের সাথে আমাদের মানুষ হিসেবে মানুষের প্রতি সামাজিক ও মানবিক দায়িত্ব পালনেও উদ্বুদ্ধ করে থাকে। আনন্দ উৎসবের এমন ব্যতিক্রমী উদাহরণ পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি লক্ষ্য করা যাবে না। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কুরবানীর ঈদ আমাদের যে আহ্বান জানিয়ে যায়, যে চেতনা জাগ্রত করতে চায়, তা আমরা বাস্তব জীবনে কতটা চর্চা করছি? আমাদের পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে আমরা অনাকাক্সিক্ষত যেসব চিত্র লক্ষ্য করছি, তার সাথে তো কুরবানীর চেতনার কোনো মিল নেই। আমাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে অনাকাক্সিক্ষত যেসব চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সেখানে কুরবানীর ত্যাগ-তিতীক্ষা ও তাকওয়ার চেতনা কোথায়? ঈদ আসে ঈদ যায়, কিন্তু ঈদের বার্তা আমরা সবাই গ্রহণ করি না। তাই তো ঈদের ফল্গুধারায় পুরো জাতি আনন্দমুখর হতে পারছে না। এই দৈন্য দূর করাই এখন আমাদের জাতীয় কর্তব্য।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন