চলমান সরকারের দল, নেতা ও কর্মীদের ধর্মনীতি হলো ‘ধর্ম
যার যার,
রাষ্ট্র সবার’ এই নীতি ও স্লোগানটি খুবই আকর্ষণীয়। শুনতে ভালো লাগে। এই
সরকারের আরেকটি খুবই মূল্যবান নীতি হলো ‘জনগণই
সার্বভৌম’। সংবিধান নাগরিকের সব অধিকার নিয়ন্ত্রণ করবে বা পরিচালনা
করবে। বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলমান। বাকি ১০ শতাংশ অন্যান্য ধর্ম বা রীতিতে
বিশ্বাস করেন। যারা সত্যিকারেই ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করেন এবং মুসলমান হিসেবে
পরিচিত তারা সবাই আল্লাহ পাকের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করেন। আমাদের সংবিধান যেহেতু
আল্লাহ কিংবা ভগবান-ঈশ্বরের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না, সেহেতু আইনের দৃষ্টিতে আল্লাহর সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী একজন
মুসলমান বা একেশ্বরবাদী অপরাধী সাব্যস্ত হতে পারে। ব্রিটেনের রাষ্ট্রীয় ধর্ম
প্রটেস্ট্যান্ট খ্রিষ্টবাদ। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বা প্রধান বিচারপতি হতে হলে
একজন নাগরিককে ব্রিটেনের সরকারি ধর্মে বিশ্বাসী হতে হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী
ব্লেয়ার ছিলেন ক্যাথলিক। কিন্তু রাজনীতি করার জন্য প্রটেস্ট্যান্ট হয়ে গিয়েছিলেন।
এ কারণে ব্রিটেনে রাজনীতি করতে হলে সরকারি বা রাজার ধর্ম মানতে হবে। যদিও এরা কেউই
মূল খ্রিষ্টবাদে বিশ্বাস করেন না। খ্রিষ্টবাদ, বাইবেল
ও তৌরাত যদি বিকৃত না হতো তাহলে জগতে আল্লাহ পাক সর্বশেষ কিতাব আল কুরআন নাজিল
করতেন না। আধুনিক মহাগণতান্ত্রিক ভারত ১৯৭৬ সালে তথাকথিত সেকুলারিজম (ধর্মহীনতার) নামাবলি
পড়েছে। আর এখন মতায় আছে ধর্মবাদী দল বিজেপি। এরাই কল্পিত রাম মন্দিরের কথা বলে
সরকারের সহযগিতায় বাবরি মসজিদকে চুরমার করেছে। বিশ্বের কোনো ইসলামিক দল ভিনধর্মের
মন্দির,
গির্জা, অগ্নিমন্দির
বা সিনাগগ ভেঙেছে এমন কোনো প্রমাণ কারো কাছে নেই। ভারতে দাঙ্গার ইতিহাস পড়ুন। বিগত
৪৪ বছরে ভারতে কয়েক হাজার দাঙ্গা হয়েছে ধর্মীয় কারণে। এতে সবচেয়ে বেশি তিগ্রস্ত
হয়েছে মুসলমানেরা। মোদির বিরুদ্ধে সরাসরি দাঙ্গার অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ভারতবাসী
বিজেপিকে নির্বাচিত করেছে। আর মোদিজি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। সেকুলার
কংগ্রেসের ভণ্ডামি থেকে মুক্তিলাভের জন্যই ভারতবাসী বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন বলে
গবেষকেরা বলছেন।
বাংলাদেশও রাজনৈতিক ধোঁকাবাজির জন্য
সেকুলারিজমের জোব্বা পরিধান করেছে। আওয়ামী লীগ মতায় থাকতেও সনাতনধর্মীদের বাড়িতে
আগুন দেয়া হয় ও মন্দির ভাঙা হয়। অভিযুক্ত করা হয় ধর্মীয় দল ও আওয়ামীবিরোধী
রাজনৈতিক দলগুলোকে। যেমন ১৯৪৬ সালের মহাদাঙ্গায় অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছিল
বঙ্গবন্ধু ও সোহরাওয়ার্দীর বিরুদ্ধে। ’৪৬-এর
দাঙ্গায়ও মুসলমানেরা সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছে।
আমেরিকার রাষ্ট্রীয় ধর্ম ক্যাথলিক
খ্রিষ্টবাদ। ওবামার বাপ-দাদারা মুসলমান ছিলেন, এ নিয়ে
আমেরিকানেরা কম হইচই করেনি। ওবামা বেচারা শেষ পর্যন্ত নিজের নামের সাথে হুসেন শব্দ
ব্যবহার করা ছেড়ে দিয়েছেন। ব্রিটেন, আমেরিকাসহ
বহু পশ্চিমা দেশে বাইবেল হাতে নিয়ে শপথ নেন। আমেরিকার ডলারে বা ব্রিটেনের পাউন্ডে
রানী বা প্রেসিডেন্টের ছবি থাকে। লেখা থাকে ‘ইন গড উই
ট্রাস্ট’। বাংলাদেশে রাজার মতাসম্পন্ন নেতারা সংবিধান মোতাবেক আল্লøাহর অস্তিত্ব মানতে বাধ্য নন।
ভারতের বিকৃত ও পরিবর্তিত ও ভুলে যাওয়া
সনাতন ধর্মে এক শ্রেণীর মানুষকে অর্ধমানব হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। ভারতীয়
রাজনীতিতে ও সংবিধানে সব মানুষকে সমমর্যাদা দেয়া হয়েছে। কিন্তু বিকৃত প্রচলিত
ধর্মরীতিতে তাদের অর্ধমানব, অচ্ছুত বা হরিজন বলা হয়। গান্ধীজী আদর
করে ওদের নাম দিয়েছেন হরিজন মানে ঈশ্বরের লোক বা জন। বাংলাদেশে ৯০ শতাংশ মানুষ
ইসলামে বিশ্বাসী বলে হরিজন বা অচ্ছুতপ্রথা মুসলমানদের ভেতর নেই। তবুও কিছু হরিজন
আছেন যারা বিকৃত সনাতন ধর্মে বিশ্বাস করেন। আপনাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে ভারতে
আর্য আগমনের আগে এখানকার সব মানুষ সমমর্যাদার ছিলেন। সবাই নিরাকার একেশ্বরবাদে
বিশ্বাস করতেন। মূর্তিপূজা বা বহু ঈশ্বরের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। কোথাও কোনো
মূর্তি ছিল না। আর্যরা বহিরাগত বিজয়ী, তাই
তাদের ধর্ম,
ভাষা, রীতিনীতি, আচার-ব্যবহার চালু করেছে পরাজিতদের ভেতর।
বাংলাদেশে আমরা মানে মুসলমানেরা মসজিদে, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে, নামাজে
সারা দিনে বহুবার ‘আল্লাহু আকবর’ (আল্লাহই সর্বশক্তিমান বা আল্লাহই সর্বশ্রেষ্ঠ) উচ্চারণ করে
থাকি। এটা মুসলমানদের জন্য বাধ্যতামূলক। কিন্তু নাগরিক জীবনে সংবিধান মোতাবেক বলতে
হবে ‘জনগণ হু আকবর’ বা জনগণই সার্বভৌম। নাগরিক জীবনে আপনার
জন্য বা মুসলমানদের জন্য সংবিধানের অবস্থান আল্লাহর কিতাব পবিত্র আল কুরআনের ওপরে (নাউজুবিল্লাহ)।
আল্লাহ আমাকে মা করুন। আমাদের সংবিধান মোতাবেক দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী আমি ‘জনগণ সার্বভৌম’, ‘সংবিধান
সার্বভৌম’
বলতে বাধ্য।
বাংলাদেশে ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলমান হলেও
ইসলামি নিয়মকানুন,
আচার-বিচার, কালচার মানতে বাধ্য নই। এটা নাকি ব্যক্তিগত ব্যাপার। এ দেশে
ধর্ম মানাটা ঐচ্ছিক। নামাজ, রোজা বা ধর্মীয় আইনকানুন জারি রাখার
ব্যাপারে রাষ্ট্র বা সংবিধান সেকুলার (ধর্মহীন)। বাংলাদেশে আরবি নামধারী মুসলমান
নেতা বা মন্ত্রীরা পূজামণ্ডপে গিয়ে দেবী দর্শন করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেবী এবার নৌকায় এসেছেন, তাই
ফসল ভালো হবে। এর মানে তিনি এটা বিশ্বাস করেন। অথবা রাজনৈতিক কারণে নেতারা এমন কথা
বলে থাকেন। আমাদের দেশের তথাকথিত সেকুলার আরবি নামধারী নেতারা ছবির সামনে দাঁড়িয়ে
নীরবতা পালন করেন এবং ছবির গলায় বা ছবির বেদিতে ফুল দিয়ে সম্মান প্রদর্শন করেন। ওই
ছবির সামনে দাঁড়িয়ে মুনাজাতের মতো করে হাত তুলে ঠোঁট নাড়েন। রাজনীতিতে সত্য বা
মিথ্যা হচ্ছে কৌশল। এখানে আদর্শ, নীতি বা ধর্মীয় বিষয়টা কোনো
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। মইন-ফখরউদ্দীন সরকারের সময় একজন ধর্মমন্ত্রী ছিলেন যিনি
ব্যক্তিগত জীবনে ধর্ম মানতেন না। ধর্মবিরোধী ছিলেন। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ধর্ম
বিষয়ে জ্ঞানী কোনো মানুষকে ধর্মমন্ত্রী করা হয়নি। বরং অযোগ্য লোককেই ধর্মমন্ত্রী
করা হয়েছে।
মানুষের ধর্মবিশ্বাস ও অধিকারকে
জাতিসঙ্ঘ সনদ স্বীকৃতি দিয়েছে। বিশ্বের সব দেশেই নাগরিকদের ধর্ম মানার অধিকার আছে।
পরধর্মকে নিন্দা বা আঘাত করার অধিকার কারোই নেই। মুসলমান হিসেবে আপনার প্রতিবেশী
অন্য ধর্মের মানুষও আপনার ভাই। তাকে ভুখা বা অভুক্ত রেখে আপনি যদি খান তাহলে আপনি
মুসলমান নন। প্রতিবেশীকে রা করাও একজন মুসলমানের দায়িত্ব। কিন্তু যদি ইসলামের এই
নীতি পালন না করেন তাহলে তার মতো মুসলমানের ইসলামে প্রয়োজন নেই। জগতে কোটি কোটি
মন্দ মুসলমান আছে। এ জন্য ইসলামকে দায়ী করা অন্যায় হবে। কিন্তু চলমান
বিশ্বব্যবস্থা দেখে মনে হচ্ছে মুসলমানেরাই একমাত্র মন্দ জাতি। এমনই একটি অবস্থা ও
পরিবেশে বাংলাদেশের আবদুল লতিফ (অনুগ্রহকারীর দাস) নামে একজন মন্ত্রী সদর্পে
পবিত্র হজ,
রাসূল সা: ও তাবলিগব্যবস্থা সম্পর্কে
কটূক্তি করেছেন। এই ভদ্রলোকের নামে ‘সিদ্দিকী’ শব্দটি ব্যবহার করলাম না। কারণ তিনি একজন সিদ্দিকী এ কথা ভাবতে
আমার কষ্ট হচ্ছে। তার আব্বাজানকে এলাকার মানুষ ছিদ্দিক মোক্তার সাহেব হিসেবেই
চেনে। তিনি একজন ডাকসাইটে আইনজীবী ছিলেন। তার সন্তানেরা কিভাবে সিদ্দিকী হলেন তা
এলাকার মানুষ জানেন না। কোরাইশ বংশের মান্যগণ্য অনেক নেতাই কাফির ও মোনাফিক ছিলেন।
তারাই রাসূল সা:কে সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিয়েছেন। এমনকি রাসূল সা:-এর আপন চাচা আবু
তালেব ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেননি। কিন্তু তিনি সারা জীবন রাসূল সা:কে সাহায্য ও
নিরাপত্তা দান করেন। রাসূল সা: বিয়ের আগ পর্যন্ত আবু তালিবের ঘরেই ছিলেন। ইসলামি
আন্দোলনের প্রথম সিদ্দিকী হলেন হজরত আবু বকর রা:। আল্লাহর রাসূল সা:-ই তাকে
সিদ্দিকী উপাধি দিয়েছেন। হজরত আবু বকর সিদ্দিকী বয়স্ক পুরুষদের ভেতর প্রথম ইসলাম
গ্রহণকারী। তিনিই রাসূল সা:-এর মেরাজের প্রথম স্বীকৃতিদানকারী ও সত্যায়নকারী। তিনি
তার সব সম্পদই ইসলামের জন্য দান করেছিলেন। আল্লাহর রাসূল সা: জানতে চেয়েছিলেন, ঘরে কিছু রেখে এসেছেন কি না? উত্তরে
হজরত আবু বকর রা: বলেছেন, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল সা:কে ঘরে রেখে
এসেছি। তিনি ইসলামের প্রথম খলিফা। রাসূল সা:-এর পরে তিনিই আল্লাহ পাকের সাহায্যে
ইসলামকে রা করেছেন।
বিতাড়িত মন্ত্রী আবদুল লতিফ কেমন করে
সিদ্দিকী হলেন?
যেহেতু তিনি একজন রাজনীতিক সেহেতু
দেশবাসীর জানার অধিকার আছে তিনি কেমন করে সিদ্দিকী হলেন। কেনই বা হলেন? তার বাবাও কেমন করে সিদ্দিকী হলেন? নাম সিদ্দিক হলেই কি কেউ সিদ্দিকী শব্দটি লিখতে পারেন? এই ব্যক্তি ইতোমধ্যে ধর্মত্যাগী হয়ে গেছেন। রাসূল সা: নামের
সাথে দুরুদ পাঠ করা সব মুসলমানের জন্য বাধ্যতমূলক। আল্লাহ পাক বলেন, ‘ইন্নাল্লাহা ও মালাইকাতাহু ইয়ুসাল্লুনা আলান্নাবিয়ি। ইয়া
আইয়ুহাল্লাজিনা আমানু সাল্লু আলাইহি ওয়া সাল্লিমু তাসলিমা’ (সূরা আহজাব, আয়াত ৫৬)। বাংলা তরজমা ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা এবং তার ফেরেশতাগণ রহমত বর্ষণ করেন
সেই পয়গম্বরের প্রতি। হে মুমিনগণ! তোমরাও তার প্রতি প্রচুর দুরুদ শরিফ পাঠ করো এবং
প্রচুর সালাম পেশ করো।’ প্রিয় পাঠক, আপনারা হৃদয় দিয়ে অনুধাবন করুন, রাসূল
সা:-এর মর্যাদা আল্লাহ পাকের কাছে কোন স্তরের। আমাদের প্রিয় রাসূল সা:কে আল্লাহ
পাক নিজেই বলেছেন,
রাসূল সা: হচ্ছেন জগতের জন্য
রহমতস্বরূপ। তিনি সব নবী-রাসূলের ইমাম। আপনি যদি কলেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা: বলে ঈমান
এনে থাকেন,
তাহলে কুরআন ও রাসূল সা:কে মান্য করা
আপনার জন্য বাধ্যতামূলক। আল্লাহ বলেছেন, তোমরা
আমার রাসূলকে সা: অনুসরণ করো, তাহলেই আমাকে মানা হবে। আমার রাসূল সা:কে
ভালোবাসো,
তাহলে আমাকে ভালোবাসা হবে। বিবি আয়েশা
বলেছেন,
তোমরা নবীজীকে অনুসরণ করো, তাহলেই কুরআনকে অনুসরণ করা হবে।
এ ছাড়া জগতের মনীষীরা বলেছেন, মুহাম্মাদ সা: জগতের সর্বশ্্েরষ্ঠ মানব। টমাস কারলাইল ১৮৪০ সালে
১২ ঘণ্টাব্যাপী নবীজী সা:-এর ওপর যে ভাষণ দিয়েছেন তা পড়ুন। ‘হজরত মোহাম্মদ তার প্রতিপালকের কাছ থেকে জ্ঞানগর্ভ শরিয়ত লাভ
করেন। আমি নিজে সূর্যের মতো আলোকিত হচ্ছি তার দ্বারা।’ (সামবেদ, পুরকার্যক-২, দুরশতি ৬, মন্ত্র ৮)। মহাঋষি ব্যাসজীর লিখিত
ভবিষ্যপুরাণ উল্লেখ করেছেন যে, একজন ম্লেচ্ছ এক অজানা দেশ থেকে আসবেন
এবং তার ভাষাও কারো জানা থাকবে না। তিনি হবেন আত্মা পবিত্রকরণে দ। তিনি তার
সাথীদের সমভিব্যহারে আসবেন, তার নাম হবে মুহাম্মদ। রাজা ভুজ সেই
মহাদেবতা ফেরেশতাদের মতো উত্তম চরিত্রের আদর্শ ব্যক্তিকে গঙ্গার মোহনার পানি দিয়ে
গোসল করিয়ে অর্থাৎ সব পাপ থেকে পাকপবিত্র করেছেন। তিনি তার অন্তরের সমস্ত ভক্তি, শ্রদ্ধা এবং উপঢৌকনাদি দিয়ে তাকে সম্মানিত করেছেন এবং বলেছেন, আমি আপনার সামনে মাথা নত করে দিলাম। ‘হে বিশ্ববরেণ্য নেতা, মানব
জাতির গৌরব,
আরবের অধিবাসী শয়তান ও শয়তানি শক্তিকে
ধ্বংস করার জন্য শক্তি সংগ্রহকারী, ম্লেচ্ছ
দুশমন থেকে রাপ্রাপ্ত, হে পবিত্র সত্তা, সব দিক থেকে পাক পবিত্র সত্তা, পূর্ণাঙ্গ
নেতার বাস্তব প্রতিমূর্তি! আমি আপনার অধম এক সেবক। আমাকে আশ্রয় দিন এবং আপনার
পদতলে লুটিয়ে পড়া এক ব্যক্তি হিসেবে জেনে নিন।’ (বিষ্ণুপুরাণ, প্রকাশক : ভেকটিশোর প্রেস, বোম্বে, প্রতিমগবর, ৩য় খণ্ড, শ্লোক
৫-২৭)। এ ছাড়া যবুর, তৌরাত ও ইঞ্জিল কিতাবেও রাসূল্ল্লুাহ সা:-এর
আগমনবাণী ঘোষিত হয়েছে। আল্লাহ পাক অতীতের সব বিকৃত কিতাবকে শুদ্ধ করে শেষ নবী ও
রাসূল সা:-এর মাধ্যমে জগদ্বাসীর জন্য শেষ কিতাব হিসেবে প্রেরণ করেছেন। বিতাড়িত
ধর্মত্যাগী মন্ত্রী জগতের আলো নবীজীকে কোনো প্রকার সম্মান না দেখিয়ে বলেছেন, ‘আরবের আবদুল্লাহর পুত্র মুহাম্মদ’। একই সাথে এই বিতাড়িত মন্ত্রী পবিত্র হজ নিয়ে কটূক্ত করেছেন।
নবীজীকে আল্লাহ পাকের নির্দেশ মোতাবেক সম্মান না করলে সেই লোকের মুসলমান থাকার
কোনো অধিকার আছে কি না।
বাইশ নম্বর সূরা আল হাজের ২৬ নম্বর
আয়াতে আল্লাহ পাক বলেন, ‘হে নবী, স্মরণ
করো, যখন আমি ইবরাহিমকে এই ঘর (কাবা) নির্মাণের জন্য স্থান ঠিক করে
দিয়েছিলাম (তখন তাকে নির্দেশ দিয়েছিলাম), আমার
সাথে অন্য কিছুকে শরিক কোরো না, আমার
এই ঘর তাদের জন্য পবিত্র রেখো যারা এর তাওয়াফ করবে, যারা
এখানে নামাজের জন্য দাঁড়াবে রুকু করবে ও সাজদা করবে। আয়াত ২৭ শে আল্লাহ পাক বলেন, তাঁকে মানে (হজরত ইবরাহিম আ:কে) আদেশ দিয়েছিলাম তুমি মানুষদের
মাঝে হজের ঘোষণা করে দাও। কালামে পাকে পবিত্র কাবাঘর ও হাজ সম্পর্কে আরো অনেক
আয়াতে বর্ণনা রয়েছে। এখন আপনারাই বিবেচনা করুন কাবা, হাজ, কোরবানি, তাওয়াফ না বিশ্বাস করলে কারো পে মুসলমান
থাকা যায় কি না।
নিন্দিত ও বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা
নাসরিন ইসলাম ও মুসলমানদের সম্পর্কে কটূক্তি করে শেষ পর্যন্ত সনাতন মূর্তিপূজক
ভারতে আশ্রিতা হিসেবে বসবাস করছেন। ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলে তিনি ভারতসহ পশ্চিমা
দেশগুলোতে আদরযতœ
পেয়েছেন। এখন সবাই তাকে পরিহার করতে
শুরু করেছেন। এই তসলিমা বিতাড়িত মন্ত্রীকে সমর্থন করেছেন। তথাকথিত উদার গণতন্ত্রী
ভারত কয়েক মাস আগে সনাতন ধর্ম সম্পর্কে লিখিত একটি গবেষণা পুস্তক নিষিদ্ধ ঘোষণা
করেছে। কিন্তু তসলিমার বই লাখ লাখ কপি ছাপিয়ে বিলি করেছে।
বাজারে শোনা যাচ্ছে, মনে হয় প্রধানমন্ত্রী বিতাড়িত মন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়েছেন এখন
দেশে ফিরে না আসতে। এলে নাকি ইসলামপন্থীরা নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষায়, মনে হচ্ছে বিতাড়িত মন্ত্রীর কটূক্তিতে
শুধু ইসলামিস্টেরাই ুব্ধ হয়েছে। সারা দেশবাসী মানে মুসলমানেরা এতে ুব্ধ হয়নি। তিনি
হয়তো আওয়ামী রাজনীতির দৃষ্টিতে বিষয়টি দেখছেন। শুরুতেই বলেছি, বাংলাদেশের রাজনীতি এখন সুবিধাবাদ। ভোটার যদি চায় তাহলে হিজাব
পরে চলতে হবে। ভোটার যদি চায় তাহলে দুর্গাকে প্রণাম করা যাবে। ধর্মহীনরা যদি বলে
সংবিধান থেকে আল্লাহর নাম বাদ দিন, ভোটারের
সন্তুষ্টির জন্য তা-ও করা যাবে। সব কথার আসল কথা হলো ভোটার হলো দেবতা। যে ফুলে
দেবতা তুষ্ট হয় সেই ফুল দিয়ে বন্দনা করতে হবে। যারা ভোটারদের তুষ্ট করতে জানে না
বা বহুরূপী হতে পারে না তাদের বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার থাকবে না। এমন একটি
হৃদয়বিদারক ঘটনার পরও ওই ধর্মত্যাগীকে কোনো রকম শাস্তি দেয়া হয়নি। দল বা সরকার
জনগণের কাছে মা চাওয়া হয়নি। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা না করেও একজন মন্ত্রী ক্যাবিনেট
থেকে বাদ পড়তে পারেন। মন্ত্রিত্ব থেকে বরখাস্ত হওয়া কোনো ধরনের শাস্তি হতে পারে না।
এরশাদ মজুমদার
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন