দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভেতরে ভেতরে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ছে, নানা ঘটনায় তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। কোরবানির ঈদের পর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় গণতান্ত্রিক জোট নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবিলম্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে দেশব্যাপী গণআন্দোলনে নামবে, এটা তাদের আগের ঘোষণা। তার আগে ২০ দলীয় জোট বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন দ্বারা গত ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন একতরফা প্রহসনের নির্বাচনে অটো-এমপি’দের নিয়ে গঠিত একদলীয় আওয়ামী সরকারের সাথে আনুষ্ঠানিক সংলাপ চায়, এ-ও পুরনো কথা। আওয়ামী সরকার ২০ দলীয় জোটের এ দাবি মানতে কিছুতেই রাজি নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় জোটকে সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মধ্যবর্তী কোনো নির্বাচন নয়, নয় কোনো সংলাপও। ফলে দেশের রাজনীতি একটা ‘পয়েন্ট অব নো রিটার্নের’ দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ আবারো গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তি পরীক্ষার ক্ষেত্র হতে যাচ্ছে, এটা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এতে সর্বমহলেই সঙ্গত উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। আওয়ামী একদলীয় অটো সরকারের তথাকথিত উন্নয়নের জোয়ারের নামে সর্বত্র আওয়ামী দলবাজি, অনিয়ম, অব্যবস্থা, অস্ত্রবাজি, সন্ত্রাস, চুরিচামারি, ডাকাতি, ছিনতাইবাজি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, কমিশনবাজি, দখলবাজি, জালিয়াতি, প্রতারণা, আত্মসাৎ, অপহরণ, মুক্তিপণ, হত্যা, খুন-গুম, হামলা-মামলা, রিমান্ড-নির্যাতন, ঘুষ-দুর্নীতি, লুটপাট ও বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের গুরুতর অপরাধের কারণে দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী মহল পর্যন্ত সবাই অর্থনৈতিকভাবে অশ্বস্তি ও মহাসংকটের মধ্যে রয়েছে। এও ২০ দলীয় জোটের এবং গণতন্ত্রকামী সচেতন দেশবাসীর কথা।
আওয়ামী অগণতান্ত্রিক শাসন-শোষণে ঋণের বোঝায় জর্জরিত হয়ে এবং আর্থিক অনটনে অতিষ্ঠ হয়ে দিনাজপুরে একই পরিবারের তিনজন (পিতা, পুত্র, মাতা) আত্মহত্যা করেছে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষ কী দুঃসহ অবস্থায় দিনাতিপাত করছে-, এ মর্মান্তিক ঘটনা থেকে তা সম্যক উপলব্ধি করা যায়। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধিসহ জীবনযাত্রার ব্যয় যেভাবে বাড়ানো হচ্ছে, তাতে নিম্ন আয়ের মানুষ তো বটেই, মধ্যম আয়ের মানুষও আর নিজেদের নিরাপদ ভাবতে পারছে না। দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ বেকার। সরকার এসব মানুষের হাতে কোনো কাজই দিতে পারেনি। ফলে তাদের নেই কোনো আয়-রোজগারও। তাই, তাদের কাছে জীবন দুর্বহ। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের নামে বিগত পাঁচ-ছয় বছরে সারা দেশে আওয়ামী লুটেরাদের বেপরোয়া লুটপাটের একটা স্থায়ী বন্দোবস্তিতে পরিণত হয়েছে। উন্নয়ন কর্মসূচি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ভিত্তিতে নিয়মিত বাস্তবায়িত হলে গ্রাম পর্যায়ে কর্মজীবী (নারী-পুরুষ) মানুষের অন্তত কিছুটা হলেও উপায় হতে পারতো। এদিকে স্বেচ্ছাচারিতার কারণে দেশে কোনো বিনিয়োগ নেই। ব্যবসা-বাণিজ্যে চলছে স্মরণকালের খরা। প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, বিনিয়োগ মন্দা কাটিয়ে উঠা সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এতে আরো বলা হয়েছে, এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হলে সরকারের বাড়তি দরকার অন্তত ৭৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ- যা এ মুহূর্তে অসম্ভব। বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন হলে দেশের অর্থনীতি গতিশীল হতে ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেতে পারে। ব্যাংকে বিপুল পরিমাণের টাকা অলস পড়ে আছে। বিদেশীরাও বিনিয়োগে আগ্রহী। কিন্তু অগণতান্ত্রিক সরকারের অপশাসনে, প্রশাসনের সর্বত্র আওয়ামীকরণে, অনিয়ম, অব্যবস্থা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, কমিশনবাজি, ঘুষ-দর্নীতি, প্রতারণা, জালিয়াতি, লুটপাট, পাচার এবং বড় বড় অর্থনৈতিক কেলেংকারি-অপরাধের কারণে এদেশে বিনিয়োগ না করে আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ করছে।
ওদিকে গার্মেন্ট পণ্য ও জনশক্তি রফতানির আয় ক্রম হ্রাসমান। এ দু’টি খাতের কোনোটিতেই সুখবর নেই। অপর একটি প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, বৈদেশিক ঋণের প্রায় ৭৫ শতাংশই আবার চলে যায় বিদেশে। দাতা দেশ ও সংস্থার নানা রকম শর্তপূরণ, বিদেশী পরামর্শক নিয়োগ এবং সুদ পরিশোধে এ অর্থ চলে যায়। পাইপলাইনে রয়েছে বিপুল অংকের বৈদেশিক ঋণ। কিন্তু তা যথাসময়ে ছাড় হচ্ছে না। দাতা দেশগুলো প্রশাসনের আওয়ামী তল্পিবাহক আমলা-কর্মচারী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসমূহকে ব্যবহার করে বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন দ্বারা বিগত ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন একতরফা প্রহসনের নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয় জানিয়ে অর্থছাড় প্রলম্বিত করছে। সরকারের আর্থিক সংকট চরমে উঠেছে। নানা খরচের ফিরিস্তি তৈরি করে এই সংকটকে আরো চরমে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আর্থিক চাহিদা পূরণে দেশের বিভিন্ন খাত থেকে মূল্য ও কর-খাজনা বাড়িয়ে যেমন কোটি কোটি টাকা তোলা হচ্ছে, তেমনি যাচ্ছেতাই শর্ত কবুল করে বৈদেশিক ঋণ আনার জন্য সদলবলে বিশ্বের দেশে দেশে ধরনা দিয়ে যাচ্ছে। গ্যাসের মূল্য শতভাগ বাড়ানো হবে বলে পেট্রোবাংলা প্রস্তাব দিয়েছে। অন্য এক প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্যাস কেটে সার কারখানায় দেয়া হচ্ছে। এতে বিদ্যুতের সংকট ও লোডশেডিং বাড়ছে। দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমরা আগেও বহুবার লিখেছি, এখনো লিখছি- গ্যাস-বিদ্যুতের পর্যাপ্ত সংস্থান করতে না পারলে বিনিয়োগ কখনোই উৎসাহিত হবে না। সরকারের অদক্ষতা ও ভ্রান্তনীতির কারণে শুধু গার্মেন্ট পণ্যই নয়, অন্যান্য পণ্যের উৎপাদন ও রফতানিও হ্রাস পেয়েছে। সরকার ও সরকারি দলের প্রভাবশালীদের প্রতারণাপূর্ণ জোর প্রচার, প্রচারণা ও বৈষম্যনীতির কারণে এবং সর্বত্র সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, কমিশনবাজি, প্রতারণা, জালিয়াতি, ঘুষ-দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচারের মহোৎসবে শত শত কারখানা ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। আরো শত শত শিল্প-কারখানা বন্ধ হওয়ার পথে রয়েছে। সারাদেশে বেকার মানুষের মিছিল কেবলই বাড়ছে। এটাই কি আওয়ামী সরকারের আওয়ামী গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের মূল দর্শন? অর্থনৈতিক সংকট মোচনে বৈদেশিক ঋণ কার্যকর বলে প্রমাণিত না হলেও এবং দরিদ্র জনগণের ঘাড়ে ঋণের বোঝার পর বোঝা চাপলেও সরকার যদি রক্ষায় হন্যে হয়ে সেদিকেই দৌড়-ঝাঁপ দিচ্ছে। প্রশ্ন হলো, এরপরও কি কাক্সিক্ষত ঋণ পাবে এবং তাতে কি গদি রক্ষা করা সম্ভব হবে?
দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের ব্যাপারে অর্থনীতিবিদদের অভিমত নেতিবাচক। ধানাই-পানাই করে এবং জোড়াতালি দিয়ে কোনোভাবেই সুফল পাওয়া যাবে না। তাদের মতে, বিনিয়োগ বাড়ানোসহ ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের কোনো বিকল্প নেই। তারা আরো মনে করেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অস্থিরতার আশঙ্কা অর্থনৈতিক বিনিয়োগকে বিশেষভাবেই নিরুৎসাহিত করছে। এর অবসান ঘটাতে হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পথে সবাইকে অগ্রসর হতে হবে। যে রাজনৈতিক বিরোধ ও সংকট বিদ্যমান তার অবসানে সরকার ও সরকারি দল আওয়ামী লীগ এবং বিরোধী দল- বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সাথে আনুষ্ঠানিক, গঠনমূলক সংলাপ ও সমঝোতা অপরিহার্য। উভয়পক্ষের সংলাপ, সমঝোতা ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে মধ্যবর্তী নির্বাচনের মধ্য দিয়েই কেবল রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার আকাক্সক্ষা পূরণ সম্ভব। এ ব্যাপারে সরকার ও সরকারি দলকেই উদ্যোগ নিতে হবে। তবেই দেশ ও জাতির শান্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত হবে।
আওয়ামী অগণতান্ত্রিক শাসন-শোষণে ঋণের বোঝায় জর্জরিত হয়ে এবং আর্থিক অনটনে অতিষ্ঠ হয়ে দিনাজপুরে একই পরিবারের তিনজন (পিতা, পুত্র, মাতা) আত্মহত্যা করেছে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষ কী দুঃসহ অবস্থায় দিনাতিপাত করছে-, এ মর্মান্তিক ঘটনা থেকে তা সম্যক উপলব্ধি করা যায়। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধিসহ জীবনযাত্রার ব্যয় যেভাবে বাড়ানো হচ্ছে, তাতে নিম্ন আয়ের মানুষ তো বটেই, মধ্যম আয়ের মানুষও আর নিজেদের নিরাপদ ভাবতে পারছে না। দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ বেকার। সরকার এসব মানুষের হাতে কোনো কাজই দিতে পারেনি। ফলে তাদের নেই কোনো আয়-রোজগারও। তাই, তাদের কাছে জীবন দুর্বহ। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের নামে বিগত পাঁচ-ছয় বছরে সারা দেশে আওয়ামী লুটেরাদের বেপরোয়া লুটপাটের একটা স্থায়ী বন্দোবস্তিতে পরিণত হয়েছে। উন্নয়ন কর্মসূচি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ভিত্তিতে নিয়মিত বাস্তবায়িত হলে গ্রাম পর্যায়ে কর্মজীবী (নারী-পুরুষ) মানুষের অন্তত কিছুটা হলেও উপায় হতে পারতো। এদিকে স্বেচ্ছাচারিতার কারণে দেশে কোনো বিনিয়োগ নেই। ব্যবসা-বাণিজ্যে চলছে স্মরণকালের খরা। প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, বিনিয়োগ মন্দা কাটিয়ে উঠা সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এতে আরো বলা হয়েছে, এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হলে সরকারের বাড়তি দরকার অন্তত ৭৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ- যা এ মুহূর্তে অসম্ভব। বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন হলে দেশের অর্থনীতি গতিশীল হতে ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেতে পারে। ব্যাংকে বিপুল পরিমাণের টাকা অলস পড়ে আছে। বিদেশীরাও বিনিয়োগে আগ্রহী। কিন্তু অগণতান্ত্রিক সরকারের অপশাসনে, প্রশাসনের সর্বত্র আওয়ামীকরণে, অনিয়ম, অব্যবস্থা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, কমিশনবাজি, ঘুষ-দর্নীতি, প্রতারণা, জালিয়াতি, লুটপাট, পাচার এবং বড় বড় অর্থনৈতিক কেলেংকারি-অপরাধের কারণে এদেশে বিনিয়োগ না করে আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ করছে।
ওদিকে গার্মেন্ট পণ্য ও জনশক্তি রফতানির আয় ক্রম হ্রাসমান। এ দু’টি খাতের কোনোটিতেই সুখবর নেই। অপর একটি প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, বৈদেশিক ঋণের প্রায় ৭৫ শতাংশই আবার চলে যায় বিদেশে। দাতা দেশ ও সংস্থার নানা রকম শর্তপূরণ, বিদেশী পরামর্শক নিয়োগ এবং সুদ পরিশোধে এ অর্থ চলে যায়। পাইপলাইনে রয়েছে বিপুল অংকের বৈদেশিক ঋণ। কিন্তু তা যথাসময়ে ছাড় হচ্ছে না। দাতা দেশগুলো প্রশাসনের আওয়ামী তল্পিবাহক আমলা-কর্মচারী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসমূহকে ব্যবহার করে বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন দ্বারা বিগত ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন একতরফা প্রহসনের নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয় জানিয়ে অর্থছাড় প্রলম্বিত করছে। সরকারের আর্থিক সংকট চরমে উঠেছে। নানা খরচের ফিরিস্তি তৈরি করে এই সংকটকে আরো চরমে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আর্থিক চাহিদা পূরণে দেশের বিভিন্ন খাত থেকে মূল্য ও কর-খাজনা বাড়িয়ে যেমন কোটি কোটি টাকা তোলা হচ্ছে, তেমনি যাচ্ছেতাই শর্ত কবুল করে বৈদেশিক ঋণ আনার জন্য সদলবলে বিশ্বের দেশে দেশে ধরনা দিয়ে যাচ্ছে। গ্যাসের মূল্য শতভাগ বাড়ানো হবে বলে পেট্রোবাংলা প্রস্তাব দিয়েছে। অন্য এক প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্যাস কেটে সার কারখানায় দেয়া হচ্ছে। এতে বিদ্যুতের সংকট ও লোডশেডিং বাড়ছে। দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমরা আগেও বহুবার লিখেছি, এখনো লিখছি- গ্যাস-বিদ্যুতের পর্যাপ্ত সংস্থান করতে না পারলে বিনিয়োগ কখনোই উৎসাহিত হবে না। সরকারের অদক্ষতা ও ভ্রান্তনীতির কারণে শুধু গার্মেন্ট পণ্যই নয়, অন্যান্য পণ্যের উৎপাদন ও রফতানিও হ্রাস পেয়েছে। সরকার ও সরকারি দলের প্রভাবশালীদের প্রতারণাপূর্ণ জোর প্রচার, প্রচারণা ও বৈষম্যনীতির কারণে এবং সর্বত্র সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, কমিশনবাজি, প্রতারণা, জালিয়াতি, ঘুষ-দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচারের মহোৎসবে শত শত কারখানা ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। আরো শত শত শিল্প-কারখানা বন্ধ হওয়ার পথে রয়েছে। সারাদেশে বেকার মানুষের মিছিল কেবলই বাড়ছে। এটাই কি আওয়ামী সরকারের আওয়ামী গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের মূল দর্শন? অর্থনৈতিক সংকট মোচনে বৈদেশিক ঋণ কার্যকর বলে প্রমাণিত না হলেও এবং দরিদ্র জনগণের ঘাড়ে ঋণের বোঝার পর বোঝা চাপলেও সরকার যদি রক্ষায় হন্যে হয়ে সেদিকেই দৌড়-ঝাঁপ দিচ্ছে। প্রশ্ন হলো, এরপরও কি কাক্সিক্ষত ঋণ পাবে এবং তাতে কি গদি রক্ষা করা সম্ভব হবে?
দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের ব্যাপারে অর্থনীতিবিদদের অভিমত নেতিবাচক। ধানাই-পানাই করে এবং জোড়াতালি দিয়ে কোনোভাবেই সুফল পাওয়া যাবে না। তাদের মতে, বিনিয়োগ বাড়ানোসহ ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের কোনো বিকল্প নেই। তারা আরো মনে করেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অস্থিরতার আশঙ্কা অর্থনৈতিক বিনিয়োগকে বিশেষভাবেই নিরুৎসাহিত করছে। এর অবসান ঘটাতে হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পথে সবাইকে অগ্রসর হতে হবে। যে রাজনৈতিক বিরোধ ও সংকট বিদ্যমান তার অবসানে সরকার ও সরকারি দল আওয়ামী লীগ এবং বিরোধী দল- বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সাথে আনুষ্ঠানিক, গঠনমূলক সংলাপ ও সমঝোতা অপরিহার্য। উভয়পক্ষের সংলাপ, সমঝোতা ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে মধ্যবর্তী নির্বাচনের মধ্য দিয়েই কেবল রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার আকাক্সক্ষা পূরণ সম্ভব। এ ব্যাপারে সরকার ও সরকারি দলকেই উদ্যোগ নিতে হবে। তবেই দেশ ও জাতির শান্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত হবে।
বাঙ্গাল আবদুল কুদ্দুস