বৃহস্পতিবার, ২৯ মার্চ, ২০১২

বিভিন্ন স্থানে বিএনপির সমাবেশে পুলিশের বাধা : ১০ জুনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক না হলে সরকার পতন আন্দোলনের হুশিয়ারি



১২ মার্চ চারদলীয় জোটের ঢাকা চলো কর্মসূচি ও মহাসমাবেশ বানচালে সরকারের ষড়যন্ত্র, পথে পথে বাধা দান, গণপরিবহন বন্ধ করে রাজধানী ঢাকাকে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা, নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন, হামলা-মামলা-গ্রেফতার, ২৬ মার্চে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যেতে বিরোধীদলীয় নেত্রীকে বাধা দান এবং বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান সরকারের নির্দেশে বন্ধের প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল অনুষ্ঠিত এসব বিক্ষোভ সমাবেশে বিভিন্ন স্থানে বাধা দিয়েছে পুলিশ। বিস্তারিত আমাদের আঞ্চলিক অফিস ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে :
খুলনায় বিএনপির প্রতিবাদ : সরকারবিরোধী দলের রাজপথের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনকে ন্যক্কারজনক পন্থায় পদে পদে বাধাগ্রস্ত করার পর এবার দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যেতে বাধা দেয়া হয়েছে। প্রখ্যাত সাংবাদিক শফিক রেহমানের বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার নামে বানচাল করে স্বাধীন মত প্রকাশের পথ চূড়ান্তভাবে রুদ্ধ করেছে। এভাবে জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে মসনদ টিকিয়ে রাখা যাবে না উল্লেখ করে ১০ জুনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেয়া না হলে ফ্যাসিবাদী সরকার পতনে এক দফার আন্দোলন শুরু হবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপি নেতারা।
১২ মার্চ চারদলীয় জোটের ঢাকা চলো কর্মসূচি ও মহাসমাবেশ বানচালে সরকারের ষড়যন্ত্র, পথে পথে বাধাদান, গণপরিবহন বন্ধ করে রাজধানী ঢাকাকে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা, নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন, হামলা-মামলা-গ্রেফতার, ২৬ মার্চে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যেতে বিরোধীদলীয় নেত্রীকে বাধা দান এবং বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান সরকারের নির্দেশে বন্ধের প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির যৌথ প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপি নেতারা ওই সব কথা বলেন। গতকাল বিকালে নগরীর কেডি ঘোষ রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু এমপি। প্রধান অতিথি ছিলেন চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এম নুরুল ইসলাম দাদু ভাই। এতে বক্তৃতা করেন মনিরুজ্জামান মনি, অ্যাডভোকেট এসএম শফিকুল আলম মনা, সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, অধ্যাপক ড. গাজী আবদুল হক, অ্যাডভোকেট স ম বাবর আলী, শেখ মোশারফ হোসেন, কওসার জমাদ্দার, মীর কায়সেদ আলী, অ্যাডভোকেট ওয়াহিদুর রহমান দীপু, শেখ মোশারফ হোসেন, জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, জলিল খান কালাম, সিরাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট ফজলে হালিম লিটন, অ্যাডভোকেট বজলার রহমান, ফখরুল আলম, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, আরিফুজ্জামান অপু, মনিরুজ্জামান মন্টু, শেখ আবদুর রশিদ, আসাদুজ্জামান মুরাদ, সিরাজুল হক নান্নু, এসএম আরিফুর রহমান মিঠু প্রমুখ। সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
বরিশালে জেলা ও মহানগর বিএনপির বিক্ষোভ : দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখলে বাঁকা পথে চলছে। কারচুপি ও ষড়যন্ত্র করে জয়ের লক্ষ্যে সর্ব মহল স্বীকৃত তত্ত্বাবধায়ক সকরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বাংলাদেশের মাটিতে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। জনগণের দাবি আদায়ে কোনো হামলা-মামলা-নির্যাতন জিয়ার সৈনিকদের রুখতে পারবে না। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বরিশালে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এ কথা বলেন। নগরীর অশ্বিনী কুমার টাউন হলের দলীয় কার্যালয়ের সামনে জেলা ও মহানগর বিএনপি পৃথক পৃথকভাবে এ বিক্ষোভ-সমাবেশের আয়োজন করে।
গতকাল দুপুরে মহানগর বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার। মহানগর সম্পাদক কামরুল আহসান শাহিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন বিএনপি নেতা মনিরুজ্জামান ফারুক, জিয়াউদ্দিন শিকদার, আলহাজ মন্টু খান, মাহবুবুর রহমান পিন্টু, আফরোজা খানম নাসরিন প্রমুখ। এর আগে একই স্থানে কেন্দ্রীয় মত্স্যবিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি আহসান হাবিব কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় জেলা বিএনপির সমাবেশ। এতে বক্তৃতা করেন জেলা বিএনপির সম্পাদক ও সাবেক এমপি বিলকিস জাহান শিরিন, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান নান্টু, অ্যাডভোকেট সাইয়্যেদ আহম্মেদ মধু, হাবিবুর রহমান টিপু, কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা মোমেন সিকদার, অ্যাডভোকেট আখতারুজ্জামান শামিম, জিএম আতায়ে রাব্বি, জাহাঙ্গীর সিকদার, রুস্তুম আলী মল্লিক, জাহিদুর রহমান রিপন, নুরুল আমিন কয়েস, আমিনুল ইসলাম লিপন, মিজানুর রহমান পলাশ, নাজমুল হাসান সবির, সাইফুল ইসলাম সুজন, মুশফিকুল হাসান মাসুম প্রমুখ। উভয় সমাবেশ শেষে পৃথক পৃথকভাবে দুটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
সিলেটে বিক্ষোভ সমাবেশ : নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধ ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগেও গতকাল সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্টে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিম। এতে বক্তৃতা করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ শফি আহমদ চৌধুরী, মহানগর সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকী, জেলা সহসভাপতি মোজাহিদ আলী, আলহাজ শেখ মো. মকন মিয়া চেয়ারম্যান, তারেক আহমদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন আশুক, আলী আহমদ, মাহবুবুর রব চৌধুরী ফয়ছল, অ্যাডভোকেট এটিএম ফয়েজ, আজমল বখত চৌধুরী ফয়েজ, আনহার মিয়া, গৌছ খান, যুবদল নেতা নজিবুর রহমান নজিব, ছাত্রদল নেতা সালাউদ্দিন মামুন, রায়হান আহমদ প্রমুখ।
ধামরাইয়ে পুলিশের ধাওয়া আহত ১০ : ঢাকার ধামরাইয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় বিএনপির কর্মসূচি হিসেবে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিছিল শেষে সমাবেশে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে ১০ বিএনপি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের সাভার ও ধামরাইয়ে চিকিত্সা দেয়া হয়েছে।
বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা জেলার বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ ধামরাইয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি ধামরাই থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক রকিবুর রহমান খান ফরহাদ, যুবদল নেতা আনোয়ার জাহিদ তালুকদার, জালাল আহমেদ, আবদুল হাই, আবদুল কাদের, এনায়েত হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, আবদুল মান্নান প্রমুখ। সমাবেশের একপর্যায়ে ধামরাই থানা পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে।
চুয়াডাঙ্গায় পুলিশি বাধা : বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে পুলিশি বাধার মধ্য দিয়ে চুয়াডাঙ্গায়ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সকালে সাড়ে ১১টায় শহরের শহীদ আবুল কাশেম সড়কে জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের শহীদ হাসান চত্বরে পৌঁছালে পুলিশ মিছিলটিতে বাধা দেয়। বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। এ সময় সমাবেশে বক্তৃতা করেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি এম জেনারেল ইসলাম, মজিবুল হক মালিক মজু, শহিদুল ইসলাম রতন, শরীফ-উর-জামান সিজার প্রমুখ।
রাজশাহী জেলা বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ : দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বিকালে রাজশাহী জেলা বিএনপি নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। বিকাল ৫টার দিকে মিছিল নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সাহেববাজারে সমাবেশ করে। সমাবেশে রাজশাহী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল মনির বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষ যখন দিশেহারা, তখন সরকার অযৌক্তিকভাবে দফায় দফায় গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে।
সরকার জনগণকে গ্যাস, বিদ্যুত্ ও পানি দিতেও ব্যর্থ হয়েছে, ফলে তাদের আর ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। তিনি আন্দোলনের মাধ্যমে ভারতের তাঁবেদার এ সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি গত ৩০ জানুয়ারি বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর দ্রুত বিচার আইনে মিথ্যা মামলা দেয়া এবং উপজেলা পর্যায়ের ছাত্রদল নেতাদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের নিন্দা জানান। অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত নেতাদের মুক্তির দাবি জানান।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Ads